জালাল-আবাদ

মানববসতি

জালাল-আবাদ (ঝালাল-আবাদ, জালাল-আবাত, জালালাবাত নামেও উচ্চারণ করা হয়; কিরগিজ: Жалал-Aбат, কালাল-আবাত/জালাল-আবাত, جالال-ابات) হল কিরগিজস্তানের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জালাল-আবাদ প্রদেশের প্রশাসনিক এবং অর্থনৈতিক অঞ্চল। এর আয়তন ৮৮ বর্গকিলোমিটার (৩৪ বর্গমাইল) এবং ২০০৯ সালে এখানে ৯৭,১৭২ মানুষ বসবাস করত।[১] এটি বাবাশ আতা পর্বতের পাদদেশে এবং ফেরগানা উপত্যকাকোগার্ট নদী উপতক্যতার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শেষের দিকে অবস্থিত। জালাল-আবাদ উজবেকিস্তান সীমান্তের একদম কাছেই অবস্থিত।

জালাত-আবাদ
Жалалабат
ঝালাল-আবাদ
জালাত-আবাদের পতাকা
পতাকা
জালাত-আবাদের অফিসিয়াল সীলমোহর
সীলমোহর
জালাত-আবাদ কির্গিজস্তান-এ অবস্থিত
জালাত-আবাদ
জালাত-আবাদ
স্থানাঙ্ক: ৪০°৫৬′ উত্তর ৭৩°০′ পূর্ব / ৪০.৯৩৩° উত্তর ৭৩.০০০° পূর্ব / 40.933; 73.000
দেশ কিরগিজস্তান
প্রদেশজালাল-আবাদ
আয়তন
 • শহর৮৮ বর্গকিমি (৩৪ বর্গমাইল)
উচ্চতা৭৬৬ মিটার (২,৫১৩ ফুট)
জনসংখ্যা (২০০৯)[১]
 • শহর৯৭,১৭২
 • জনঘনত্ব১,১০০/বর্গকিমি (২,৯০০/বর্গমাইল)
 • পৌর এলাকা৮৯,০০৪
সময় অঞ্চলইউটিসি+৬
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট

কিছু তথ্য সম্পাদনা

জালাল-আবাদ এর আশপাশের খনিজ পানির ঝরনার জন্য বিখ্যাত। আযরেটি-আয়ুপ-পয়গম্বর নামে খনিজ পানির ঝরনাটি এর কাছেই অবস্থিত। অনেকেই বিশ্বাস করে এর পানি কুষ্ঠরোগ ভালো করতে পারে। সোভিয়েত আমলে অনেক হাসপাতাল নানা রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত পানিবাহিত রোগের চিকিৎসা প্রদান করত। জালাল-আবাদের খনিজ পানি বোতলে ভর্তি করে সারাদেশে এমনকি বিদেশেও সরবরাহ করা হয়।

ইতিহাস সম্পাদনা

কিরগিজস্তানের মধ্য দিয়ে রেশম পথের অনেক রাস্তা অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে একটি রাস্তা জালাল-আবাদের ওপর দিয়েও গেছে। এই অঞ্চলটি হাজার হাজার বছর ধরে পর্যটকদের আকর্ষণ করে আসছে। যদিও এখন খুব একটা বেশি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন অবশিষ্ট নেই। তবে দূরবর্তী এলাকাগুলোতে কিছু কিছু নিদর্শন এখনো পাওয়া যায়; যেমন সাইমালু তাশ এবং ছাতকাল উপত্যকা। এইসব এলাকায় অনেক পর্যটক, ব্যবসায়ী, ভ্রমণপিপাসু মানুষ, সন্ন্যাসীর (নানা তীর্থস্থানে) সমাগম হয়। অসুস্থ মানুষেরা আয়ুব তাউ পাহাড়ের ঝরনায় আরোগ্য লাভের আশায় আসে। যা শহর থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত।

একটি কিংবদন্তি প্রচলিত আছে যে আযরেটি-আয়ুপ-পয়গম্বর ঝরনাটির পানি কুষ্ঠরোগ ভালো করতে পারে। কিংবদন্তি অনুযায়ী খনিজ পানির ঝরনাটি কাছে একটি কবর, মসজিদ এবং খানের প্রাসাদ ছিল।

"আবাদ" হল একটি ফরাসি প্রত্যয়, যেটি নানা ফরাসী সমাজভুক্ত শহরের নামের শেষে যুক্ত করা হয়। এটি দ্বারা একজন ব্যক্তিকে নির্দেশ করা হয় যিনি একটি শহর, জনপদ বা কোন স্থানে বসতি গড়ে তুলেছেন। বলা হয়ে থাকে, জালাল আদ দীন নামে একজন ব্যক্তি এই অঞ্চলে বসবাস করতেন। তিনি ভ্রমণপিপাসু মানুষদের বা দূর থেকে পবিত্র পাহাড়ি ঝরনা দেখতে আসা মানুষদের থাকার ব্যবস্থা করে দিতেন। জালাল আদ দীনের নামানুসারেই এই অঞ্চলের নাম হয় জালাল-আবাদ।

১৯ শতকের প্রথমদিকে এখানে কোকান্দ দুর্গ তৈরি করা হয় এবং এটিকে কেন্দ্র করে একটি জনবসতি গড়ে ওঠে। এই মানুষগুলো মূলত কৃষিকাজ, ব্যবসা এবং দূর থেকে খনিজ পানির ঝরনা দেখতে আসা মানুষদের সেবা করত। ১৮৭০-এর দশকে, রুশরা এই অঞ্চলে আসে। তারা একটি গ্যারিশন শহর এবং একটি সামরিক হাসপাতাল গড়ে তোলে।

জলবায়ু সম্পাদনা

জালাল-আবাদের জলবায়ু গরম (শুষ্ক-গ্রীষ্মকালীন মহাদেশীয়)। এখানে গ্রীষ্মের চেয়ে শীতকালে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। জালাল-আবাদের বার্ষিক গড় তাপমাত্রা হল ১২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৫৪.১ ডিগ্রি ফারেনহাইট)। বাৎসরিক ৪১৬ মিলিমিটার (১৬.৩৮ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হয়।

জালাল-আবাদ-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য
মাস জানু ফেব্রু মার্চ এপ্রিল মে জুন জুলাই আগস্ট সেপ্টে অক্টো নভে ডিসে বছর
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) ১.৭
(৩৫.১)
৪.৬
(৪০.৩)
১২.৫
(৫৪.৫)
২১.২
(৭০.২)
২৬.৫
(৭৯.৭)
৩১.৫
(৮৮.৭)
৩৩.১
(৯১.৬)
৩১.৫
(৮৮.৭)
২৭.১
(৮০.৮)
১৯.৭
(৬৭.৫)
১১.২
(৫২.২)
৪.০
(৩৯.২)
১৮.৭
(৬৫.৭)
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) −৭.৮
(১৮.০)
−৫.৩
(২২.৫)
১.৬
(৩৪.৯)
৮.৫
(৪৭.৩)
১৩.০
(৫৫.৪)
১৬.৫
(৬১.৭)
১৮.১
(৬৪.৬)
১৬.১
(৬১.০)
১১.১
(৫২.০)
৫.৩
(৪১.৫)
−০.৪
(৩১.৩)
−৪.৭
(২৩.৫)
৬.০
(৪২.৮)
অধঃক্ষেপণের গড় মিমি (ইঞ্চি) ৩৭
(১.৫)
৪৪
(১.৭)
৫৮
(২.৩)
৬২
(২.৪)
৫২
(২.০)
২৩
(০.৯)
১২
(০.৫)

(০.২)

(০.৪)
৪৩
(১.৭)
৩৫
(১.৪)
৩৬
(১.৪)
৪১৬
(১৬.৪)
উৎস: Climate-Data.org

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "2009 population census of the Kyrgyz Republic: Jalal-Abad Region" (পিডিএফ)। ১০ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-১০ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা