জন ক্লারেন্স উডস (৫ জুন ১৯১১ – ২১ জুলাই ১৯৫০) ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর একজন মাস্টার সার্জেন্ট। ১৯৪৬ সালের ১৬ অক্টোবর তিনি ও জোসেফ মাল্টা উভয়ে নুরেমবার্গ‌ বিচারে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত থার্ড রাইখের দশজন শীর্ষ নেতার ফাঁসির সময় জল্লাদের দায়িত্বপালন করেছেন।

জন ক্লারেন্স উডস
জন্ম(১৯১১-০৬-০৫)৫ জুন ১৯১১
উইচিটা, কানসাস
মৃত্যু২১ জুলাই ১৯৫০(1950-07-21) (বয়স ৩৯)
এনিওয়েটক, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ
সমাধি
টরন্টো টাউনশিপ সেমেট্রি, টরন্টো, কানসাস
আনুগত্য যুক্তরাষ্ট্র
সেবা/শাখা মার্কিন সেনাবাহিনী
কার্যকাল১৯৪৩–১৯৫০
পদমর্যাদামাস্টার সার্জেন্ট
ইউনিট
  • ৩৭তম ইঞ্জিনিয়ার কমব্যাট ব্যাটেলিয়ন
  • ৭ম ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেড
যুদ্ধ/সংগ্রামদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ

উডস কানসাসের উইচিটায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯২৯ সালের ৩ ডিসেম্বর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীতে যোগ দেন। কয়েকমাস পর তিনি ছুটি না নিয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। কোর্ট মার্শালে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন এবং ১৯৩০ সালের ২৩ এপ্রিল একটি সাইকিয়াট্রিক বোর্ড তাকে পরীক্ষা করে। এরপর তিনি চাকরিচ্যুত হন।[১] ১৯৪৩ সালের আগস্টে সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার পূর্বে তিনি নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছেন। এছাড়াও ১৯৪০ সালে সিলেক্টিভ সার্ভিসে কাজ করার সময় কানসাসের ইউরেকায় একটি দোকানে খন্ডকালীন চাকরি করেছেন। তিনি হেজেল উডস নামক এক নার্সকে বিয়ে করেছিলেন। তবে তাদের কোনো সন্তান ছিল না।

ডি-ডে'র পূর্বে ইউরোপীয় রণাঙ্গনে ফাঁসির মাধ্যমে মার্কিন সামরিক মৃত্যুদন্ডগুলি শুধু ইংল্যান্ডে কার্যকর হত এবং বেসামরিক জল্লাদ থমাস পিয়েরপয়েন্ট, তার সহকারী আলবার্ট পিয়েরপয়েন্ট ও অন্যান্য ব্রিটিশ ব্যক্তিরা এগুলি কার্যকর করতেন। ১৯৪৪ সালের হেমন্তে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড ফ্রান্সে স্থানান্তর করা হয়। এসমন সেনাবাহিনী জল্লাদের দায়িত্বের জন্য স্বেচ্ছাসেবক অনুসন্ধান করে। এসময় উডস এতে যোগ দেন। তিনি টেক্সাসে দুইটি ও ওকলাহোমায় দুইটি ফাঁসির অভিজ্ঞতা আছে বলে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন। সেনাবাহিনী তার দাবি যাচাইয়ের চেষ্টা করেছিল এমন কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায় না। তাছাড়া যুদ্ধের পূর্বে জল্লাদ হিসেবে তার কাজের কোনো প্রমাণ তার ছিল না। এইসময় উডস ছিলেন একজন প্রাইভেট এবং ৩৭তম ইঞ্জিনিয়ার কমব্যাট ব্যাটেলিয়নের সদস্য। তিনি মাস্টার সার্জেন্ট হিসেবে পদোন্নতি পান এবং প্যারিস ডিসিপ্লিনারি ট্রেনিং সেন্টারে বদলি হন।[২] ১৯৪৪-১৯৪৫ সালের মধ্যে ফ্রান্সের বিভিন্ন স্থানে তিনি ৩৪ জন মার্কিন সৈনিককে ফাঁসিতে ঝোলানোর সময় প্রধান জল্লাদ হিসেবে কাজ করেছেন। এছাড়াও তিনি কমপক্ষে তিনটি ভিন্ন ফাঁসিতে সহযোগী জল্লাদ ছিলেন।

এর পাশাপাশি উডস রেইনবাক, ব্রুকসাল, ল্যান্ডসবার্গ‌ ও নুরেমবার্গ‌সহ বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৪৫জন যুদ্ধাপরাধীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছেন।

নুরেমবার্গ‌ের মৃত্যুদণ্ডের পর উডস বলেছেন:

"আমি ঐ দশজন নাৎসিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছি... এবং আমি এজন্য গর্বিত... আমি নার্ভাস ছিলাম না.... একজন সহকর্মী এই কাজে নার্ভাস থাকতে পারে না.... যারা আমাকে সাহায্য করেছে সেসব জি.আই.দের জন্য আমি ভালো কিছু বলতে চাই... তারা সবাই খুব ভালো করেছে.... আমি তাদের পদোন্নতির চেষ্টা করছি.... আমি ফাঁসি দেয়ার কাজকে এভাবে দেখি, কাউকে এটা করতেই হত। অনেক বছর আগে আমি দুর্ঘটনাবশত এতে জড়িয়ে পড়ি...."[৩][৪][৫]

১৯৫০ সালের ২১ জুলাই মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে ৭ম ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেডের সদস্য থাকাবস্থায় ইঞ্জিনিয়ার লাইটিং সেট মেরামতের চেষ্টা করার সময় উডস দুর্ঘটনাবশত বিদ্যুতপৃষ্ট হয়ে মারা যান।[৬] কানসাসের টরন্টোতে অবস্থিত টরন্টো টাউনশিপ সেমেট্রিতে তাকে দাফন করা হয়।[৭]

সামরিক সম্মাননা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. French MacLean, The Fifth Field, Atglen 2013, p. 79.
  2. French MacLean, The Fifth Field, Atglen 2013, p. 77.
  3. TIME Magazine, October 28, 1946, p. 34
  4. Joseph Kingsbury-Smith: The Execution of Nazi War Criminals ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে. Eyewitness Report.
  5. Turley, Mark. From Nuremberg to Nineveh
  6. The Fifth field: John C. Woods
  7. Toronto Explorations. John C. Woods ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১০ মার্চ ২০১৬ তারিখে

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা