জন কিং

ইংরেজ ক্রিকেটার

জন হার্বার্ট কিং (ইংরেজি: John King; জন্ম: ১৬ এপ্রিল, ১৮৭১ - মৃত্যু: ১৮ নভেম্বর, ১৯৪৬) লিচেস্টারশায়ারের লাটারওয়ার্থ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও আম্পায়ার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯০৯ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।[১]

জন কিং
আনুমানিক ১৯০৫ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে জন কিং
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামজন হার্বার্ট কিং
জন্ম১৬ এপ্রিল, ১৮৭১
লাটারওয়ার্থ, লিচেস্টারশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১৮ নভেম্বর, ১৯৪৬
ডেনবিহ, ওয়েলস
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনবামহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার, আম্পায়ার
সম্পর্কজেমস কিং (ভ্রাতা), জন কিং (ভ্রাতৃষ্পুত্র)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
একমাত্র টেস্ট
(ক্যাপ ১৬০)
১৪ জুন ১৯০৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৫৫২
রানের সংখ্যা ৬৪ ২৫,১২২
ব্যাটিং গড় ৩২.০০ ২৭.৩৩
১০০/৫০ ০/১ ৩৪/১৩০
সর্বোচ্চ রান ৬০ ২২৭*
বল করেছে ১৬২ ৭০,১৮৭
উইকেট ১,২০৪
বোলিং গড় ৯৯.০০ ২৫.১৭
ইনিংসে ৫ উইকেট ৬৯
ম্যাচে ১০ উইকেট ১১
সেরা বোলিং ১/৯৯ ৮/১৭
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ০/০ ৩৪০/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৬ এপ্রিল ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে লিচেস্টারশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বামহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে কার্যকর ভূমিকা পালনে সচেষ্ট ছিলেন জন কিং

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৮৯৬ সাল থেকে ১৯০৯ সাল পর্যন্ত জন কিংয়ের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। বেশ ভালোমানের ফাস্ট বোলিং করতেন। বয়সের সাথে সাথে উত্তরোত্তর দক্ষতা অর্জন করেন। দুইটি দ্বি-শতরানের ইনিংস খেলেছেন। ১৯১৪ সালে ৪৩ বছর বয়সে ও অপরটি ৫২ বছর বয়সে ১৯২৩ সালে লিচেস্টারে হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে এ সাফল্য পান। এছাড়াও, লেগ স্পিনারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। ধীরগতি থেকে প্রাণবন্ত মিডিয়াম বোলিং করতেন। ১২০০-এর অধিক উইকেট পেয়েছেন।

তিনি তার সময়কালে অন্যতম সেরা বামহাতি খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। ১৮৯৫ সালে লিচেস্টারশায়ারের পক্ষে প্রথম খেলেন। তবে, ১৮৯৯ সালের পূর্ব-পর্যন্ত দলে নিয়মিত খেলোয়াড়ের মর্যাদা পাননি। ব্যাটসম্যান হিসেবে ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে তিনি নিজেকে যথেষ্ট মেলে ধরতে তৎপরতা দেখান। সচরাচর, কাট ও ড্রাইভের দিকেই অধিক মনোনিবেশ ঘটাতেন।

১৯০৪ সালে লর্ডসে প্লেয়ার্সের সদস্যরূপে জেন্টলম্যানের বিপক্ষে সেরা ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শন করেন। আঘাতপ্রাপ্ত জে. টি. টিল্ডসের স্থলাভিষিক্ত হন। লর্ডসের মাঠ কর্মকর্তার ভূমিকা পালন করেন। খেলায় ১০৪ ও অপরাজিত ১০৯ রান তুলেন। এ জাতীয় অর্জন লর্ডসে এ ধরনের খেলায় কেবলমাত্র দুইবার আর. ই. ফস্টারকে. এস. রঞ্জিতসিংজী জেন্টলম্যানের পক্ষে করেছিলেন। দুই বছর পর ওভালে প্লেয়ার্সের সদস্যরূপে অপরাজিত ৮৯ ও ৮৮ রান তোলার পর দুই উইকেট দখল করেন।

মে, ১৯০৬ সালে অপ্রত্যাশিত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন তিনি। ওভালে সারের বিপক্ষে বলে দুইবার আঘাতের কারণে আউট হন। এ পর্যায়ে তিনি স্ট্যাম্পকে বাঁচানোর তাগিদে গড়িয়ে আসা বলকে থামান। এরপর, তিনি একটি রান নেয়ার চেষ্টা চালান। তিনিই সর্বশেষ ইংরেজ ব্যাটসম্যান হিসেবে এ নজির স্থাপন করেন।

স্বর্ণালী সময় সম্পাদনা

১৯১১ সালেইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ৮/১৭ দাঁড় করান। এ পর্যায়ে বিশ বলে কোন রান বাদেই সাত উইকেট পান। দুইবার হ্যাট্রিক করেন তিনি। ১৯০৩ সালে হোভে সাসেক্সের বিপক্ষে ও ১৯২০ সালে ওয়েস্ট-সুপার-মেয়ারে সমারসেটের বিপক্ষে এ কীর্তিগাঁথা স্থাপন করেন।

স্লিপ অঞ্চলে তার ফিল্ডিং যথেষ্ট উচ্চমানের ছিল। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে পঁচিশ হাজারের অধিক রান তুলেন। ১৯১২ সালে ২২.৮৫ গড়ে ১০৭৪ রান ও ১৭.৬৩ গড়ে ১৩০ উইকেট পান। ১৯১৩ সালে লিচেস্টারে নর্দাম্পটনশায়ারের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত খেলায় প্রথম ইনিংসে ১১১ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১০০ রানে অপরাজিত থাকেন। এর এক বছর পর ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে ২২৭ রান তুলেন।

লিচেস্টারশায়ারের পক্ষ দুইবার আর্থিক সুবিধা গ্রহণের খেলার জন্যে মনোনীত হন। ১৯১০ ও ১৯২৩ সালে এ সুবিধা পান।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন জন কিং। ১৪ জুন, ১৯০৯ তারিখে লর্ডসে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এরপর আর তাকে কোন টেস্টে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি।

৩৮ বছর বয়সে ১৯০৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজস্ব একমাত্র টেস্টে তিনি বিস্ময়করভাবে জর্জ হার্স্টের সাথে বোলিং উদ্বোধনে নামেন। ১/৯৯ পেলেও একই ওভারে ভার্নন র‌্যান্সফোর্ডভিক্টর ট্রাম্পারের ক্যাচ হাতছাড়া হয়ে যায়। খেলার প্রথম ইনিংসে ৬০ রান ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ রান তুলেন।

অবসর সম্পাদনা

৩০ বছরের অধিক সময় খেলোয়াড়ী জীবন অতিক্রম করে ৫৪ বছর বয়সে অবসর গ্রহণ করেন। তারপরও নিজেকে আরও এগারো বছর ক্রিকেটের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছিলেন। এ পর্যায়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে আম্পায়ারের ভূমিকায় অবতীর্ণ করেন নিজেকে।

১৮ নভেম্বর, ১৯৪৬ তারিখে ৭৫ বছর বয়সে ওয়েলসের ডেনবিহ এলাকায় জন কিংয়ের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. [১] ESPNcricinfo, ESPN, সংগ্রহের তারিখ: ২ মে ২০২০

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা