চাটমোহর শাহী মসজিদ
চাটমোহর শাহী মসজিদ বাংলাদেশের একটি প্রাচীন মসজিদ। চাটমোহর উপজেলা হতে আনুমানিক ২০০ গজ দূরে অবস্থিত।[২] এটি বাংলাদের একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। এক সময়ে মসজিদটি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছিল। ১৯৮০’র দশকে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এটিকে সম্পূর্ণরূপে নির্মাণ করে। বর্তমানে এটি একটি সংরক্ষিত ইমারত। মসজিদটিতে তুঘরা লিপিতে উৎকীর্ণ একটি ফারসি শিলালিপি ছিলো। বর্তমানে শিলালিপিটি রাজশাহী বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।[৩]
চাটমোহর শাহী মসজিদ | |
---|---|
![]() | |
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | সুন্নি ইসলাম |
জেলা | পাবনা |
নেতৃত্ব | ইমাম |
অবস্থান | |
অবস্থান | চাটমোহর, পাবনা |
স্থাপত্য | |
ধরন | জামে মসজিদ |
স্থাপত্য শৈলী | মুঘল |
প্রতিষ্ঠাতা | খান মুহাম্মদ বিন তুকি খান কাকশাল |
অর্থায়নে | আবুল ফতেহ মোহাম্মদ মাসুম খাঁ |
সম্পূর্ণ হয় | ১৫৮১[১] |
বিনির্দেশ | |
দৈর্ঘ্য | ৪৫ ফুট |
প্রস্থ | ২২ ফুট ৬ ইঞ্চি |
উচ্চতা (সর্বোচ্চ) | ৪৫ ফুট |
গম্বুজসমূহ | ৩টি |
অবস্থানসম্পাদনা
পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার বাজারের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত।
ইতিহাসসম্পাদনা
পাবনার অন্যতম প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র চাটমোহর একদা ছিলো মোঘল-পাঠানদের অবাধ বিচরণভূমি। আর সে সময়ে ১৫৮১ খ্রিষ্টাব্দে আবুল ফতেহ মোহাম্মদ মাসুম খাঁ (যিনি মাসুম খাঁ কাবলি নামে পরিচিত) নামের সম্রাট আকবরের পাঁচহাজারী এক সেনাপতির অর্থায়নে তার ভাই খাঁন মোহাম্মদ কাকশাল একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। এটিই আজকের চাটমোহর শাহী মসজিদ, যা মাসুম খাঁ কাবলির শাহী মসজিদ নামেও পরিচিত।[২][৪][৫]
বিবরণসম্পাদনা
মসজিদটির ভেতরে দৈর্ঘ্য ৩৪ হাত, প্রস্থ ১৫ হাত, উচ্চতা প্রায় ৩০ হাত বা প্রায় ৪৫ ফুট। ক্ষুদ্র পাতলা নকশা খচিত লাল জাফরী ইটে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। মসজিদের দেয়ালটি সাড়ে চার হাত প্রশস্থ। তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটির সামনে ইদারার গায়ে কালেমা তাইয়েবা লিখিত একখন্ড কালো পাথর এখনো প্রোথিত।
সম্রাট আকবরের এক সেনাধ্যক্ষ মাসুম খাঁ কাবুলী এই মসজিদটি তৈরী করেন। মসজিদটির উচ্চতা প্রায় ৪৫ ফুট। এর উপরি ভাগে তিনটি গম্বুজ এবং সম্মুখ ভাগে তিনটি খিলান আকৃতির গেট রয়েছে ও পশ্চিম পাশে এ রকম খিলান আকৃতির আরো দুইটি গেট আছে। মসজিদের অভ্যন্তরে মেহরাবের চারদিকে ইটের কারুকার্য লক্ষণীয়। এ মসজিদের অভ্যন্তরে ছোটো ছোটো চারটি কুলুঙ্গী রয়েছে। মসজিদের বাইরে এবং ভেতরে দেয়ালগাত্রে জাফরী ইটের সুন্দর কারুকার্য দেখা যায়। অনেকের মতে, এই খিলান পরিকল্পনার মূলে আছে প্রাচীন পারস্যের সাসানীয় স্থাপত্যের প্রভাব। সাসানীয় আমলে (২১২ – ৬৫১ খ্রি.) ইরানে এ রকম খিলান তৈরীর কৌশল উদ্ভব হয়েছিল। মাসুম খাঁ কাবুলী নির্মিত মসজিদটির ভেতরে একটি কালো বর্ণের ফলক ছিল (এটি রাজশাহী বরেন্দ্র মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে)। ফলকে খোদাইকৃত ফার্সি অক্ষরে মসজিদ নির্মাণের ইতিহাস লিপিবদ্ধ আছে। মসজিদের সামনে ইদারার মধ্যে কালেমা তাইয়েবার শিলালিপি দেখা যায়।
চিত্রশালাসম্পাদনা
আরও দেখুনসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ "ঐতিহাসিক চাটমোহর শাহী মসজিদ"। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ ক খ "চাটমোহর শাহী মসজিদ"। চাটমোহর উপজেলা। ৯ জুলাই ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০২১।
- ↑ "স্থাপত্য শিল্পের অনুপম নিদর্শন চাটমোহর শাহী মসজিদ"। দৈনিক সংগ্রাম। ৬ অক্টোবর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০২১।
- ↑ "তিন গম্বুজের সূচনা হয়েছিল যে মসজিদ থেকে"। বাংলা ট্রিবিউন। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০২১।
- ↑ টিপু সুলতান (ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২১)। "চাটমোহরে ৪৩৯ বছরের ঐতিহ্য তিন গম্বুজবিশিষ্ট 'শাহী মসজিদ'"। বাংলানিউজ২৪.কম। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০২১।