চতুর্ভুজ স্থান (নিষিদ্ধ পল্লি)

ভারতের প্রাচীনতম নিষিদ্ধ পল্লি
(চতুর্ভুজ স্থান নিষিদ্ধ পল্লি থেকে পুনর্নির্দেশিত)

চতুর্ভুজ স্থান, হল ভারতের বিহার রাজ্যের মুজফফরপুরে অবস্থিত একটি নিষিদ্ধ জেলা যা ভারতের প্রাচীনতম নিষিদ্ধ পল্লিগুলির মধ্যে একটি। [১]এটি ভারতের অন্যতম ও উত্তর বিহারের সবচেয়ে বড় নিষিদ্ধ পল্লি। [২]

খদ্দেরদের অপেক্ষায় যৌনকর্মীরা

ইতিহাস সম্পাদনা

এই এলাকাটির জন্ম মুঘল আমলে । এখানে ৩,৫০০০০ এরও বেশি যৌনকর্মীর বাস। [৩] এর নামকরণ এখানে অবস্থিত চতুর্ভুজ স্থান মন্দির থেকে হয়েছে। এলাকাটি গত শতাব্দীর বেশিরভাগ ধরে বিখ্যাত । এই পতিতালয়ের সবাই মুজরো জানে। মুজফফরপুর পৌর কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিসাবে ২০০২ সালে এখান থেকে প্রাক্তন গণিকা রানী বেগমকে নির্বাচিত করার জন্য প্রস্তুত করা হয়। [২]রানী বেগম বেশ কয়েকটি মিছিলের আয়োজন করে এবং মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করতে বিভিন্ন অনশনে অংশ নেয়। সে এলাকায় ছয়টি দোকান স্থাপন করে যা প্রধান খাদ্যশস্য বিতরণ করে। এর পাশাপাশি তার "উঠান আশ্রয়" এই মহিলাদের এবং বেকার যুবকদের মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে। রানী বেগম তার কাজে অর্থ সাহায্য পায় এবং মুজাফফরপুরে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে মুজফফরপুর পৌর কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়। রানী বেগম বিহারি সমাজে বিভিন্ন উপায়ে প্রভাব বিস্তার করে ।[৪]

অবস্থা সম্পাদনা

১৯৯৪ সাল সম্পাদনা

এখানে বসবাসকারী পরিবারগুলো শহরের অপরাধের প্রধান কারণ । এই কারণে ১৯৯৪ এই এলাকায় এইডস সচেতনতা অভিযানের অধীনে কনডম বিতরণ করা হয়। ১৯৯৭ সালে এখানে দশটি অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্র খোলা হয়। নারী ও মেয়েদের অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা প্রদানের জন্য দশটি কেন্দ্রও খোলা হয়। কিশোরী চেতনা কেন্দ্র গঠিত হয় এবং এর অধীনে এলাকার শত শত মেয়েকে লেখাপড়া করতে উৎসাহ দেয়া হয় । কিন্তু ২০০০ সালে এই সমস্ত কাজ বন্ধ হয়ে যায়।[৫]

বর্তমান অবস্থা সম্পাদনা

এলাকাটি প্রায় এক কিলোমিটার লেন ভিত্তিক। এখানে মহিলা যৌনকর্মীরা সম্ভাব্য খদ্দেরদের জন্য মুজরা নৃত্য পরিবেশন করে। [৬] এখানকার যৌনকর্মীরা গর্ভনিরোধক ব্যবহার করে না।[৭] এখানে উত্তরাধিকার সূত্রে যৌনকর্মীরা জীবিকা বজায় রেখেছে । এছাড়া বাইরে থেকে এসে বাড়ি ভাড়া নিয়ে অনেকে জীবিকা চালায়। যাদের পরিবারের সদস্যরা রিকশা চালায় অথবা তারা গৃহকর্মী। যৌন পাচারের ফলে ও অনেক মেয়ে এই জীবিকায় জড়িয়ে পরে। [৮] এখানকার সব বাড়িই একইরকম দেখতে। বাড়ির সামনে তাদের অনেকের 'নর্তকী ও গায়িকা' লেখা আছে। অল্পবয়স থেকেই এখানে মেয়েদের মুজরো দিয়ে শুরু করে জীবিকার জন্য তৈরি করা হয়।[৯]

জনপ্রিয় সংস্কৃতি সম্পাদনা

আরটি টিভি মুজফফরপুরের নিষিদ্ধ পল্লির যৌনকর্মীদের দুরাবস্থার কথা নিয়ে তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছে। যার শিরোনাম ছিল "ড্যান্স সেক্স ড্যান্স - দ্য স্টোরি অফ ইন্ডিয়ান স্ট্রিট"।[১০]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Moizee, Shadab (২০১৯-০৫-০৩)। "In Muzaffarpur's Red-Light Area, Infamy Keeps Development Away"TheQuint (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-২২ 
  2. "Rani Begum, ex-courtesan, now helps heal the lives of her sisters"OutlookIndia.com। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১৬ 
  3. "Even sex workers did not lag behind in human chain formation - Times of India"IndiaTimes.com। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  4. defwp-user (২০১৪-০২-২০)। "Rani Begum"Digital Empowerment Foundation, DEF (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-২২ 
  5. "Muzaffarpur: कभी तहजीब का मंदिर हुआ करती थीं ये गलियां, आज गुजरने में आती है शर्म"आज तक (হিন্দি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-২২ 
  6. "Bihar Diary: Dying art, forgotten voters - Muzaffarpur's Mujra Girls"India Today। ৩১ অক্টোবর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  7. "'আমার মতো মেয়েকে কে বিয়ে করবে?'"People's Archive of Rural India (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৬-২৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-২২ 
  8. Nair, P. M.; Sen, Sankar (২০০৫)। Trafficking in Women and Children in India (ইংরেজি ভাষায়)। Orient Blackswan। পৃষ্ঠা 366–367। আইএসবিএন 9788125028451 
  9. "'আমার মতো মেয়েকে কে বিয়ে করবে?'"People's Archive of Rural India (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৬-২৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-২২ 
  10. MuzzafarpurOctober 31, india today digital; November 3, 2015UPDATED:; Ist, 2015 18:52। "Bihar Diary: Dying art, forgotten voters - Muzaffarpur's Mujra Girls"India Today (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-২২