য়োন-তান-র্গ্যা-ম্ত্শো (চতুর্থ দলাই লামা)
য়োন-তান-র্গ্যা-ম্ত্শো (তিব্বতি: ཡོན་ཏན་རྒྱ་མཚོ་, ওয়াইলি: yon tan rgya mtsho), (১৫৮৯-১৬১৬) তিব্বতী বৌদ্ধধর্মের অন্যতম প্রধান ধর্মসম্প্রদায় দ্গে-লুগ্স ধর্মসম্প্রদায়ের চতুর্থ দলাই লামা ছিলেন। তিনি তিব্বতের ইতিহাসে একমাত্র দলাই লামা যিনি ছিলেন জাতিতে মঙ্গোলীয়।[১][২][৩][৪]
দলাই লামা হিসেবে চিহ্নিতকরণ
সম্পাদনা১৫৮৮ খ্রিষ্টাব্দে মঙ্গোলিয়ায় তৃতীয় দলাই লামা ব্সোদ-নাম্স-র্গ্যা-ম্ত্শো মৃত্যুবরণ করলে তার পৃষ্ঠপোষক তুমেত মঙ্গোল নেতারা তাদের জাতি থেকে পরবর্তী দলাই লামা নির্বাচনে সচেষ্ট হন। ১৫৮৯ খ্রিষ্টাব্দে তুমেত মঙ্গোল নেতা আলতান খানের উত্তরাধিকারী সেংগে দুরুরেং খানের পুত্র সুম্বুর সেচেন চুগুকুরের পুত্র জন্মগ্রহণ করেন।[১]:৮৭[২]:১৬৭[৩] দ্গা'-ল্দান বৌদ্ধবিহারের পঞ্চবিংশ দ্গা'-ল্দান-খ্রি-পা দ্পাল-'ব্যোর-র্গ্যা-ম্ত্শো তার নামকরণ করেন য়োন-তান-র্গ্যা-ম্ত্শো।[৫] দ্রেপুং বৌদ্ধবিহার থেকে এক প্রতিনিধিদল মঙ্গোলিয়ার কোকেকিওটো নামক স্থানে যাত্রা করে পরবর্তী দলাই লামা হিসেবে তাকে চিহ্নিত করেন।[৬]
তিব্বত যাত্রা ও শিক্ষা
সম্পাদনাদশ বছর বয়স পর্যন্ত দলাই লামা কোকেকিওটো নগরে আলতান খান নির্মিত এরদেনিজু মন্দিরে প্রধান হিসেবে অধিষ্ঠিত থাকেন।[৪] ১৫৯৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি তার পিতা, এক হাজার মঙ্গোল অশ্বারোহী ও তিব্বতী আধিকারিকদের সঙ্গে তিব্বতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন এবং বিভিন্ন বৌদ্ধবিহার দর্শন করে ১৬০৩ খ্রিষ্টাব্দে লাসা পৌঁছন।[২]:১৭২,১৭৩ লাসা শহরে দ্গা'-ল্দান বৌদ্ধবিহারের সপ্তবিংশ দ্গা'-ল্দান-খ্রি-পা সাংস-র্গ্যাস-রিন-ছেন তাকে চতুর্থ দলাই লামা হিসেবে অভিষিক্ত করেন।[১]:৮৯ তিনি দ্রেপুং বৌদ্ধবিহারে শিক্ষাগ্রহণ শুরু করেন এবং সেখানে চতুর্থ পাঞ্চেন লামা ব্লো-ব্জাং-ছোস-ক্যি-র্গ্যাল-ম্ত্শান তাকে দীক্ষা দেন।[২]:১৮১ পরবর্তীকালে তিনি দ্রেপুং ও সেরা বৌদ্ধবিহারের প্রধান লামা হিসেবে মনোনীত হন।[১]:৯০
মৃত্যু
সম্পাদনাচতুর্থ দলাই লামা তিব্বত পৌঁছনোর কিছু সময় পর থেকে দ্গে-লুগ্স বৌদ্ধধর্মসম্প্রদায়ের সঙ্গে কার্মা-ব্কা'-ব্র্গ্যুদ ধর্মসম্প্রদায়ের বিরোধ শুরু হয়। কার্মা-ব্কা'-ব্র্গ্যুদ ধর্মসম্প্রদায়ের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে গ্ত্সাং-পা রাজবংশের চতুর্থ রাজা ব্স্তান-স্রুং-দ্বাং-পো ও পঞ্চম রাজা ফুন-ত্শোগ্স-র্নাম-র্গ্যাল বারেবারে লাসা আক্রমণ করেন এবং ১৬১৪ খ্রিষ্টাব্দে য়োন-তান-র্গ্যা-ম্ত্শো দ্রেপুং বৌদ্ধবিহার থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। ১৬১৬ খ্রিষ্টাব্দের শেষে চতুর্থ দলাই লামার অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটে।[২]:১৮২[৭] মাত্র ২৭ বছর বয়সে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ Thubten Samphel and Tendar (2004). The Dalai Lamas of Tibet. Roli & Janssen, New Delhi. আইএসবিএন ৮১-৭৪৩৬-০৮৫-৯.
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Mullin, Glenn H. (2001). The Fourteen Dalai Lamas: A Sacred Legacy of Reincarnation, Clear Light Publishers. Santa Fe, New Mexico. আইএসবিএন ১-৫৭৪১৬-০৯২-৩.
- ↑ ক খ Yonten Gyatso ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৩ ডিসেম্বর ২০০৫ তারিখে, Dalai Lama website.
- ↑ ক খ Adams, Miranda (2008-09)। "The Fourth Dalai Lama, Yonten Gyatso"। The Treasury of Lives: Biographies of Himalayan Religious Masters। সংগ্রহের তারিখ 2014-04-04। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ Chhosphel, Samten (সেপ্টেম্বর ২০১০)। "The Twenty-Fifth Ganden Tripa, Peljor Gyatso"। The Treasury of Lives: Biographies of Himalayan Religious Masters। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৪-০৩।
- ↑ Stein, R. A. (1972). Tibetan Civilization, p. 82. Stanford University Press. আইএসবিএন ০-৮০৪৭-০৮০৬-১ (cloth); আইএসবিএন ০-৮০৪৭-০৯০১-৭ (paper).
- ↑ Laird, Thomas (2006). The Story of Tibet: Conversations with the Dalai Lama, pp. 148-149. Grove Press, N.Y. আইএসবিএন ৯৭৮-০-৮০২১-১৮২৭-১
আরো পড়ুন
সম্পাদনা- Rockhill, William Woodville. 1910. "The Dalai Lamas of Lhasa and their relations with the Manchu emperors of China, 1644-1908." T'oung Pao 11, pp. 1–104.
- Tucci, Giuseppe. 1949. Tibetan Painted Scrolls. Rome: La Libreria dello Stato , vol. 1, pp. 50 ff.
- Kollmar-Paulenz, Karenina. 2005. "The Third Dalai Lama Sonam Gyatso and The Fourth Dalai Lama Yonten Gyatso."In Brauen, Martin, ed. The Dalai Lamas: A Visual History. London: Serindia, pp. 60–61.
পূর্বসূরী ব্সোদ-নাম্স-র্গ্যা-ম্ত্শো |
য়োন-তান-র্গ্যা-ম্ত্শো চতুর্থ দলাই লামা |
উত্তরসূরী ঙ্গাগ-দ্বাং-ব্লো-ব্জাং-র্গ্যা-ম্ত্শো |