গ্যালিলিও (উপগ্রহ ন্যাভিগেশন)

গ্যালিলিও (উপগ্রহ ন্যাভিগেশন) হলো সার্বিক দিকনির্নয় সম্পর্কীত একটি কৃতিম উপগ্রহ পদ্ধতি (জিএনএসএস) যা বাস্তবায়ন হয় ২০১৬ সালে, এটি জিএনএসএস এজেন্সি (জিএসএ) এর মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এর দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল, এটি ভূমি হতে নিয়ন্ত্রণ এর জন্যে দুটি কেন্দ্র জার্মানির মিউনিখের কাছে ওবারপ্যাফেনহোফেন এবং ইতালির ফুচিনো হতে চালনা করা হয় যার সদর দপ্তর চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী শহর প্রাগে আবস্তিত। 10 বিলিয়ন ইউরোর এই প্রকল্প [১] এর নামকরণ হয়েছে ইতালিয়ান জ্যোতির্বিদ গ্যালিলিও গ্যালিলির নামে।গ্যালিলিওর অন্যতম লক্ষ্য হলো একটি স্বাধীন উচ্চ-নির্ভুল অবস্থানের ব্যবস্থা প্রদান করা যাতে ইউরোপীয় দেশগুলিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জিপিএস অথবা রাশিয়ান গ্লোনাস ব্যাবস্থার উপর নির্ভর করতে না হয়, সেগুলি যে কোনও সময় তাদের পরিচালনাকারি কর্মী দ্বারা অক্ষম বা অবনমিত হতে পারে।[২] মৌলিক(নিম্ন-নির্ভূলতা) গ্যালিলিও পরিসেবাগুলি বিনামূল্যে এবং সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।উচ্চতর-নির্ভুলতা ক্ষমতা সম্পন্ন পরিসেবাগুলি বাণিজ্যিক ব্যবহারকারীদের প্রদানের জন্য উপলব্ধ হবে।গ্যালিলিওর উদ্দেশ্য ১-মিটার সিমার মধ্যে আনুভূমিক এবং উল্লম্ব এর নির্ভুল অবস্থানের পরিমাপ এবং অন্যান্য অবস্থান নির্দেশক ব্যাবস্থার চেয়ে উচ্চতর অক্ষাংশে আরও ভাল অবস্থান নির্নয়ের পরিসেবা প্রদান করা ।গ্যালিলিও আরও প্রদান করবে বিশ্ব্জুড়ে একটি অনুসন্ধান এবং উদ্ধার এর সমন্বিত ব্যাবস্থার এমইওএসআর এর আংশ হিসেবে।

গ্যালিলিও (উপগ্রহ ন্যাভিগেশন)

প্রথম গ্যালিলিও পরীক্ষামুলক উপগ্রহটি, জিইওভ-এ, প্রেরিত হয় ২৮ ডিসেম্বর ২০০৫ সালে, কার্যকারী ব্যাবস্থার অংশ হিসাবে প্রথম উপগ্রহটি ২১ অক্টোবর ২০১১ সালে চালু হয়েছিল।পরিকল্পিত ৩০টি সক্রিয় উপগ্রহের মধ্যে ২৬টি কক্ষপথে রয়েছে,জুলাই ২০১৮ পর্যন্ত।[৩] গ্যালিলিও ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬সাল থেকে প্রাথমিক প্রয়োগগত সামর্থ্য সরবরাহ (ইওসি) শুরু করে,দুর্বল সংকেত দিয়ে প্রাথমিক পরিসেবা সরবারাহ করা,এবং ২০১৯সালের মধ্যে সম্পূর্ণ প্রয়োগগত সক্ষমতায়(এফওসি) পৌঁছানোর আশা করা হচ্ছে।[৪] ২০২০সালের [৪] মধ্যে সম্পূর্ণ ৩০টি স্যাটেলাইট গ্যালিলিও সিস্টেমে(২৪টি কারর্যগত এবং ৬টি সক্রিয়ভাবে জমিয়ে রাখা) আশা করা হচ্ছে।এটি প্রত্যাশিত যে পরবর্তী প্রজন্মের কৃতিম উপগ্রহগুলি পুরানো সরঞ্জাম প্রতিস্থাপনের জন্য ২০২৫ সালের মধ্যে চালু হতে শুরু করবে।পুরানো ব্যাবস্থ্যাগুলি তখন স্ংকট মোকাবেলার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় ২২টি কৃতিম উপগ্রহ রয়েছে (কৃতিম উপগ্রহটি কার্যকর এবং পরিষেবা ব্যাবস্থ্যায় অবদান রাখছে), ২টি উপগ্রহ "পরীক্ষায়" রয়েছে এবং আরও ২টি উপলভ্য নয় হিসাবে চিহ্নিত রয়েছে।[১][৫]


ইতিহাস সম্পাদনা

মুল উদ্দেশ্য সম্পাদনা

১৯৯৯সালে, গ্যালিলিওর জন্য ইএসএ (জার্মানি, ফ্রান্স এবং ইতালি) এর তিনটি প্রধান অবদানকারীদের বিভিন্ন ধারণার তুলনা করা হয়েছিল এবং তিনটি দেশের ইঞ্জিনিয়ারদের একটি যৌথ দল তুলনায় একটিতে পরিণত হয়েছিল।[৬] গ্যালিলিও প্রোগ্রামের প্রথম পর্যায়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থ্যা ২৬ মে ২০০৩ সালেতে সরকারীভাবে আনুমতি দিয়েছিল।ব্যাবস্থ্যাটি মূলত বেসামরিক ব্যবহারের জন্য,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (জিপিএস), রাশিয়া (গ্লোনাস), এবং চীন (বেইডু -১/২) এর আরও সামরিক-ভিত্তিক ব্যাবস্থ্যাগুলির বিপরীতে।ইউরোপীয় ব্যাবস্থ্যাটি শুধুমাত্র চরম পরিস্থিতির সাপেক্ষে সামরিক উদ্দেশ্যে (সশস্ত্র সংঘাতের মতো) কাজ বন্ধ করার জন্য ।[৭] এটি সাধারণ এবং মিলিটারি উভয় ব্যবহারকারীদের কাছে সম্পূর্ণ যথাযথতাভাবে পাওয়া যাবে।গ্যালিলিও প্রকল্পে যে দেশগুলির সর্বাধিক অবদান রয়েছে তারা হলেন জার্মানি এবং ইতালি।[১]

তহবিল সম্পাদনা

ইউরোপীয় কমিশনকে প্রকল্পের পরবর্তী পর্যায়ে অর্থায়ন করতে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল,২০০১ সালের নভেম্বরে প্রকল্পটির "বার্ষিক" বিক্রয় প্রক্ষেপণ লেখচিত্র প্রকাশিত হওয়ার পরে "সংগ্রহযোগ্য" অনুমান হিসাবে প্রকাশিত হয়েছিল যা প্রতিবছরের জন্য প্রত্যাশিত বিক্রির আগের সমস্ত বছর অন্তর্ভুক্ত ছিল।বিক্রয় পূর্বাভাসে এই মিলিয়ন বিলিয়ন ইউরোর ক্রমবর্ধমান ত্রুটির দিকে যে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল তাতে কমিশন এবং অন্য কোথাও সাধারণ সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছিল যে এই প্রকল্পটি বিনিয়োগকারীদের এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের আগে প্রস্তাবিত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা ছিল না।১৭ই জানুয়ারী ২০০২ সালে, এই প্রকল্পের এক মুখপাত্র বলেছিলেন যে মার্কিন চাপে এবং অর্থনৈতিক সমস্যার ফলে "গ্যালিলিও প্রায় মারা গেছে"।[১]

কয়েক মাস পরে অবশ্য পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে পাল্টে গেল। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে স্যাটেলাইট ভিত্তিক অবস্থান এবং সময় কাঠামোগত স্থাপন জরুরি যা রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের সময়ে মার্কিনি সহজেই বন্ধ করতে পারে না।[১] ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইউরোপীয় মহাকাশ স্ংস্থ্যা ২০০২ সালের মার্চ মাসে এই প্রকল্পের অর্থায়নে সম্মত হয়েছিল,২০০৩ সালে একটি পর্যালোচনা মুলতুবি হয়েছিল (যা ২৬শে মে ২০০৩ এ সমাপ্ত হয়েছিল)।২০০৫-এ সমাপ্ত সময়কালের জন্য প্রারম্ভিক ব্যয় ধরা হয় €১.১ বিলিয়ন ইউরো। প্রয়োজনীয় উপগ্রহগুলি (পরিকল্পিত সংখ্যা ৩০টি) চালু করা হয়েছিল ২০১১ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে, ব্যাবস্থাটি চালু হয়ে চলছে এবং ২০১৯ সাল আবধি নাগরিক নিয়ন্ত্রণে থাকবে।চূড়ান্ত ব্যয় ধরা হয়েছে €৩ বিলিয়ন ইউরো,পৃথিবীর অবকাঠামো সহ,যা২০০৬এবং ২০০৭ সালে নির্মিত।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Galileo (satellite navigation)"Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৮-২৭। 
  2. esa। "Why Europe needs Galileo"European Space Agency (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-২৯ 
  3. esa। "New satellite launch extends Galileo's global reach"European Space Agency (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-২৯ 
  4. Anonymous (২০১৬-০৭-০৫)। "Galileo's contribution to the MEOSAR system"। Internal Market, Industry, Entrepreneurship and SMEs - European Commission (ইংরেজি ভাষায়)। 
  5. "Latest batch of Galileo satellites enters service"www.gsa.europa.eu (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০২-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-৩০ 
  6. Modola, Pino (২০০৭-১১-২৩)। "Italy and Germany make step towards Galileo satellite navigation programme financing resolution"Flightglobal.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-৩০ 
  7. "U.S., EU to Sign Landmark GPS-Galileo Agreement | Embassy of the United States Dublin, Ireland"web.archive.org। ২০১২-০১-২১। Archived from the original on ২০১২-০১-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-৩১