গোলাম আরিফ টিপু
গোলাম আরিফ টিপু ( ২৮ আগস্ট ১৯৩১ - ১৫ মার্চ ২০২৪)[১] একজন বাংলাদেশি আইনজীবী, মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষা আন্দোলন কর্মী ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের উদ্দেশ্যে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।[২][৩][৪]
গোলাম আরিফ টিপু | |
---|---|
প্রধান কৌঁসুলী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ২৫ মার্চ ২০১০ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত। (বর্তমান বাংলাদেশ) | ২৮ আগস্ট ১৯৩১
মৃত্যু | ১৫ মার্চ ২০২৪ ঢাকা, বাংলাদেশ | (বয়স ৯২)
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | রাজশাহী কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | আইনজীবী |
পুরস্কার | একুশে পদক (২০১৯) |
১৯৫২ সালে রাজশাহীতে বাংলা ভাষা আন্দোলন মূলত তার নেতৃত্বে সংগঠিত হয়।[৫] তিনি রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের রাজশাহী অঞ্চলের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[৫] ভাষা আন্দোলনে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০১৯ সালে একুশে পদক প্রদান করে।[৬]
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাটিপু ১৯৩১ সালের ২৮ আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জের (তৎকালীন মালদহ জেলা, ব্রিটিশ ভারত) শিবগঞ্জ উপজেলার কমলাকান্তপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[৭] তার পিতা আফতাব উদ্দিন আহমদ ছিলেন জেলা রেজিস্ট্রার। ৯ ভাই-বোনের মধ্যে টিপু দ্বিতীয়।[৮] তিনি কালিয়াচর বিদ্যালয় থেকে ১৯৪৮ সালে মাধ্যমিক ও রাজশাহী কলেজ থেকে ১৯৫০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন।[৯] একই কলেজ থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক সম্পন্নের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৪ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।[৭][১০]
কর্মজীবন
সম্পাদনাটিপু ১৯৫৮ সালে একজন আইনজীবী হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি একাধিকবার রাজশাহী আইনজীবী সমিতির সভাপতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য এবং বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন।[১১] বাংলাদেশের অন্যতম আলোচিত নীহারবানু হত্যা মামলায় তিনি বিবাদী পক্ষের আইনজীবী হিসেবে সারাদেশে পরিচিতি লাভ করেন।[১১]
১৯৫২ সালে রাজশাহী কলেজে বাংলাদেশের প্রথম শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণে তিনি নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা পালন করেন।[১১] ১৯৯০-এর দশকের পূর্বে কিছুকাল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাথে রাজনীতিতেও যুক্ত ছিলেন।[১১]
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাটিপু ব্যক্তিগত জীবনে জাহান আরা চৌধুরীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির তিন কন্যা ও এক ছেলে রয়েছে।[১১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু আর নেই, যুগান্তর, ১৫ মার্চ ২০২৪
- ↑ "International Crimes Tribunal-1, Bangladesh"। www.ict-bd.org। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ "Justice done: Chief prosecutor"। The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ১৭ জুলাই ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ "অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু একাধারে বিজ্ঞ আইনজীবী, ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক"। Maasranga TV। ১৮ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ ক খ "'ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক রক্তের ঋণ'"। Eisamay। ২ মার্চ ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ "২১ গুণীজনকে প্রধানমন্ত্রীর একুশে পদক প্রদান"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ ক খ "ভাষা সংগ্রামের অজানা অধ্যায়"। Jugantor। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ "স্মৃতির ক্যাম্পাসে একুশে পদকে ভূষিত ভাষা সৈনিক টিপু"। Bangladesh Pratidin (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ "ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপু পেলেন একুশে পদক"। dailysonardesh.com। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৯।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপু : আপাদমস্তক সংগ্রামী"। RTV Online (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "একুশে পদক পাওয়ার কথা ছিল আরও আগে : গোলাম আরিফ টিপু"। jagonews24.com। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৯।