গেভিন ইউইং

জিম্বাবুয়ীয় ক্রিকেটার

গেভিন মেকি ইউইং (ইংরেজি: Gavin Ewing; জন্ম: ২১ জানুয়ারি, ১৯৮১) হারারে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক জিম্বাবুয়ীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।[১][২][৩] জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ২০০০-এর দশকের শুরুরদিকে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে জিম্বাবুয়ের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

গেভিন ইউইং
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামগেভিন মেকি ইউইং
জন্ম (1981-01-21) ২১ জানুয়ারি ১৯৮১ (বয়স ৪৩)
হারারে, জিম্বাবুয়ে
ডাকনামমেকি
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৫৮)
১৭ অক্টোবর ২০০৩ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৫ বনাম ভারত
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৮৫)
১ ডিসেম্বর ২০০৪ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ ওডিআই৪ সেপ্টেম্বর ২০০৫ বনাম ভারত
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০২ -২০০৫মাতাবেলেল্যান্ড
২০০৯ - ২০১৩মাতাবেলেল্যান্ড তুস্কার্স
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৫৬ ৬২
রানের সংখ্যা ১০৮ ৯৭ ৩,২৮৮ ১,২৮১
ব্যাটিং গড় ১৮.০০ ১৩.৮৫ ৪০.০৯ ২৭.২৫
১০০/৫০ ০/১ ০/০ ৭/১৯ ১/৬
সর্বোচ্চ রান ৭১ ৪৬ ২১২ ১০৬
বল করেছে ৪২৬ ৩১২ ৭,১২৩ ২,১৬০
উইকেট ৯৮ ৪৩
বোলিং গড় ১৩০.০০ ৪৭.২০ ৩৪.২৫ ৩৫.১৬
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/২৭ ৩/৩১ ৭/৬৪ ৩/৮
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/– ৩/– ২৬/– ২২/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৩ জুলাই ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর জিম্বাবুয়ীয় ক্রিকেটে মাতাবেলেল্যান্ড, মাতাবেলেল্যান্ড তুস্কার্স ও জিম্বাবুয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিং করতেন ‘মেকি’ ডাকনামে পরিচিত গেভিন ইউইং

শৈশবকাল সম্পাদনা

ক্রিকেটপ্রিয় পরিবারের সন্তান তিনি। তার পিতা ইস্টার্ন প্রভিন্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ও গেভিন ইউইংয়ের খেলোয়াড়ী জীবনে বেশ প্রভাববিস্তার করেন। অফ স্পিন অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলেন। নিখুঁতভাবে বজায় রাখলেও বোলার হিসেবে অবশ্য তিনি বলে তেমন স্পিন আনতে পারতেন না। আক্রমণধর্মী মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান গেভিন ইউইং পিছনের পায়ে ভর রেখে খেলতেই অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। পুল ও হুক শটে সবিশেষ পারদর্শিতা দেখান।

১৯৯৯ সালে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে খেলেন ও শীর্ষ দশ উইকেট লাভকারীদের তালিকায় তিনি শেষ স্থানটি দখল করেছিলেন।

এছাড়াও, দুই মৌসুম ইংরেজ ক্রিকেটে ক্লাব পর্যায়ে খেলেছেন। জাতীয় একাডেমির সকল শর্তাদি প্রতিপালন করেন। ২০০১ সালে দুই সপ্তাহ অবস্থানের ডেভ হটনের কাছ থেকে অনুপযুক্ত ও অতিরিক্ত ওজনের কারণে চলে আসতে বাধ্য হন। পরের মৌসুমে নিজেকে গুছিয়ে আনলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

জিম্বাবুয়ে ও মাতাবেলেল্যান্ড দলের পক্ষে খেলেছেন গেভিন ইউইং। ২০০১-০২ মৌসুম থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত গেভিন ইউইংয়ের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। জিম্বাবুয়ের ঘরোয়া ক্রিকেটে দলের বিপর্যয় রোধে বেশ ভূমিকা রেখেছেন। লোগান কাপে নিজস্ব প্রথম খেলায় বেশ কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন।

ফেব্রুয়ারি, ২০০২ সালে মাতাবেলেল্যান্ডের সদস্যরূপে ম্যাশোনাল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে শতরান করেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে সুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০৩-০৪ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া গমনার্থে তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এছাড়াও, প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেকের মাত্র নয় মাস পর ২০০২-০৩ মৌসুমে সফররত পাকিস্তান দলের বিপক্ষে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে, তিনি কোন খেলায় অংশ নেননি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তিনটিমাত্র টেস্ট ও সাতটিমাত্র একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন গেভিন ইউইং। ১৭ অক্টোবর, ২০০৩ তারিখে সিডনিতে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৫ তারিখে বুলাওয়েতে সফরকারী ভারত দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

২০০৩-০৪ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্যে আমন্ত্রিত হন। আত্মবিশ্বাসী ও আক্রমণধর্মী মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। নিজস্ব দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭১ রান তুলেন। এ সংগ্রহটি পরবর্তীকালে তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ হিসেবে রয়ে যায়। ১৮ গড়ে টেস্টে রান তুলেছেন তিনি।

বিতর্কিত ভূমিকা সম্পাদনা

২০০৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের সাথে ১৫জন বিদ্রোহী খেলোয়াড়ের অন্যতম ছিলেন। পরে অবশ্য বোর্ডের সাথে মতবিরোধ দূর হয় ও ঐ বছরের নভেম্বরে ইংল্যান্ড সফরে জাতীয় দলের সদস্যরূপে খেলেন। ২০০৫ সালে নিউজিল্যান্ড ও ভারত সফর করেন।

আবারও জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটে অস্থিতিশীলতার পরিবেশ সৃষ্টি হয় ও ২০০৬ সালে যুক্তরাজ্যে চলে যান। ডেভন ক্রিকেট লীগ প্রিমিয়ার ডিভিশনে পেইনটনের পক্ষে এক মৌসুম খেলেন। নিউজিল্যান্ডে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ক্লাব পর্যায়ে চুক্তিবদ্ধ হন ও ২০০৮ সালের গ্রীষ্মে স্কটল্যান্ডের পোলকের পক্ষে খেলেন। ঐ বছরের সেপ্টেম্বরে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের বিরুদ্ধ দীর্ঘদিন ধরে চলমান মামলায় জয়লাভ করেন ও ২০০৫ সাল থেকে ম্যাচ ফি’র অর্থ লাভ করেন।

২০০৯ সালে ডেভনে পেইনটন সিসি’র পক্ষে এক মৌসুম খেলেন। গড়পড়তা খেলা উপহার দিয়ে জিম্বাবুয়ে প্রত্যাবর্তন করেন গেভিন ইউইং। এপ্রিল, ২০০৯ সালে আইসিসি প্রতিবেদন প্রকাশের এক সপ্তাহ পর মাতাবেলেল্যান্ড তুস্কার্সের পক্ষে খেলেন। দলের সকল স্তরের ক্রিকেটে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০-১১ মৌসুমে লোগান কাপে বেশ ভূমিকা রাখেন। কিন্তু, আঘাতের কারণে নাটকীয়ভাবে বিজয়ী খেলায় তিনি অংশ নিতে পারেননি।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Players / Zimbabwe / ODI caps"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই ২০২০ 
  2. "Zimbabwe ODI Batting Averages"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই ২০২০ 
  3. "Zimbabwe ODI Bowling Averages"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই ২০২০ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা