গুরুদাস তালুকদার (১৮৯৬–২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮০) একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী ও কৃষক নেতা। তার জন্ম হয় বাংলাদেশের রংপুরের পীরগাছাতে।

গুরুদাস তালুকদার
জন্ম১৮৯৬
মৃত্যু২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮০
আন্দোলনঅসহযোগ আন্দোলন

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

গুরুদাস তালুকদার সম্পন্ন পরিবারের সন্তান ছিলেন। রংপুর থেকে ম্যাট্রিক পাশ করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। পড়া সম্পন্ন না করে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় তার পিতা তাকে সম্পত্তি হতে বঞ্চিত করেন।[১]

স্বাধীনতা সংগ্রামে সম্পাদনা

১৯২১ সালে দিনাজপুর এলাকায় সক্রিয় কংগ্রেস কর্মী হিসেবে কাজ করতে থাকেন। ১৯২২ থেকে আত্মগোপন অবস্থায় ছিলেন। তার জীবনের মোট ৩৭ বছর কাটে আত্মগোপন অবস্থায় বা জেলবন্দী হয়ে। ত্রিশের দশকের শেষে কমিউনিস্ট মতাদর্শে আগ্রহী হয়ে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন।[১]

তেভাগা আন্দোলন সম্পাদনা

১৯৪৬-৪৭ সালে রংপুর, দিনাজপুর, রাজসাহী, ঠাকুরগাঁও এলাকায় তেভাগা আন্দোলন তীব্র হলে গুরুদাস তালুকদার ছিলেন সামনের সারিতে।[২] কৃষক জনতার সাথে তার গভীর যোগাযোগ ও হৃদ্যতা ছিল। তাকে সাধারণ কৃষকেরা 'রাজাবাবু' ও সাওঁতালরা 'রাজা মারাং' বলে সম্বোধন করতো। নিজে উচ্চ সামন্তবংশীয় পরিবার থেকে এলেও তেভাগার সংগ্রাম তাকে জননেতার আসন দেয়। মণি সিংহ, কৃষ্ণবিনোদ রায়, সুনীল সেন, ভবানী সেন প্রমুখেরা ছিলেন তার সহকর্মী।[৩]

ভাষা, মুক্তিযুদ্ধ ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন সম্পাদনা

১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধকাল প্রতিটি গণ আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন এই বর্ষীয়ান বিপ্লবী। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে নিজেকে যুক্ত রাখেন। শতবর্ষ অতিক্রান্ত দিনাজপুর নাট্য সমিতির সাথে যুক্ত ছিলেন। নাটক ও অভিনয় করেছেন ১৯১৩ - ১৯২০ পর্যন্ত।

মৃত্যু সম্পাদনা

২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮০ সালে তার মৃত্যু ঘটে।[১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. দ্বিতীয় খন্ড, অঞ্জলি বসু সম্পাদিত (২০০৪)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ৯৪। আইএসবিএন 81-86806-99-7 
  2. দাশ, সুস্নাত (জানুয়ারি ২০০২)। "সংযোজন ২"। অবিভক্ত বাঙলার কৃষক সংগ্রাম: তেভাগা আন্দলোলনের আর্থ-রাজনৈতিক প্রেক্ষিত-পর্যালোচনা-পুনর্বিচার (প্রথম প্রকাশ সংস্করণ)। কলকাতা: নক্ষত্র প্রকাশন। পৃষ্ঠা ২৮৫। 
  3. Bipan Chandra (২০০০)। India's Struggle for Independence। Penguin books Ltd.। পৃষ্ঠা 376।