গিরিশ চন্দ্র রায়
রাজা গিরীশ চন্দ্র রায় (ব্রজগোবিন্দ নন্দী চৌধুরী)[১] (১৮৪৪ - ১৯০৭) সিলেটের প্রথম রায়বাহাদুর ও একমাত্র রাজা উপাধি প্রাপ্ত ব্যক্তি। শিক্ষার প্রসারে গিরীশচন্দ্রের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ব্রিটিশ সরকার ১৮৯৫ সালে তাঁকে রায়বাহাদুর ও ১৮৯৯ সালে রাজা উপাধিতে ভূষিত করেন।
রাজা, রায়বাহাদুর গিরীশচন্দ্র রায় | |
---|---|
জন্ম | ব্রজগোবিন্দ নন্দী চৌধুরী ২৭ মার্চ, ১৮৪৪ |
মৃত্যু | ১৫ এপ্রিল, ১৯০৭ সিলেট |
নাগরিকত্ব | ![]() |
রাজা গিরীশচন্দ্র ১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দের ২৭ই মার্চ বুধবারে সিলেটের বোয়ালজুর পরগণার (বর্তমানে বালাগঞ্জ উপজেলা) চরভূতা গ্রামে এক কায়স্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মদাতা পিতার নাম দীপচন্দ্র নন্দী চৌধুরী এবং পিতৃপ্রদত্ত নাম ব্রজগোবিন্দ নন্দী চৌধুরী। সিলেট নগরীর রায়নগরের বিখ্যাত জমিদার দেওয়ান মানিকচাঁদের পুত্র বাবু মুরারিচাঁদের সন্তানহীনা কন্যা ব্রজসুন্দরী দেবী তাঁকে দত্তক নেন। তখন তাঁর বয়স পাঁচ বৎসর ছিল। এভাবে তিনি রায়নগরের জমিদারীর বিশাল সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হন। শিক্ষার প্রসার, দুর্ভিক্ষ নিবারণ, দরিদ্র-বিপদগ্রস্তের পরিত্রাণ প্রভৃতি দানকার্যে তিনি তাঁর সমস্ত বিত্ত-সম্পদ ব্যয় করেন। তিনি সিলেটের তথা আসামের প্রথম কলেজ মুরারিচাঁদ কলেজ ১৮৮১ সালে প্রতিষ্ঠা করেন। যা এমসি কলেজ নামে বহুল পরিচিত। এছাড়াও তিনি মুরারি চাঁদ এন্ট্রাস স্কুল ও সংস্কৃত-চতুষ্পাঠী এবং ১৮৭৬ সালে রাজা গিরীশচন্দ্র হাইস্কুল (গিরীশ বঙ্গ বিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর সময়ে এসব স্কুল-কলেজের প্রায় অর্ধেক ছাত্রই বিনা বেতনে ও অল্পবেতনে পড়াশোনা করত, অসহায় ছাত্রদের জন্য মাসিক কয়েকটি বৃত্তি নির্দিষ্ট ছিল। রাজা নারীশিক্ষারও পরম সহায় ছিলেন এবং নানাভাব এর প্রসারে সাহায্য করে গেছেন। তাছাড়া তৎকালীন আসাম প্রদেশে বাঙালীর মধ্যে রাজা গিরীশচন্দ্রই সর্বপ্রথম চা বাগান প্রস্তুত করেন এবং এই ব্যবসায়ে অন্যদের প্রবৃত্তির পথ উন্মুক্ত করেন।[২]
রাজা গিরীশচন্দ্র ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই এপ্রিল (২রা বৈশাখ, ১৩১৪ বঙ্গাব্দ) রবিবারে পরলোকগমন করেন।
- ↑ চৌধুরী তত্ত্বনিধি, অচ্যুতচরণ। শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ)।
- ↑ চৌধুরী তত্ত্বনিধি, অচ্যুতচরণ। শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ)।