গাই ওভারটন

নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটার

গাই উইলিয়াম ফিটজরয় ওভারটন (ইংরেজি: Guy Overton; জন্ম: ৮ জুন, ১৯১৯ - মৃত্যু: ৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৩) ডুনেডিন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী নিউজিল্যান্ডীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও আম্পায়ার ছিলেন। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫০-এর দশকের শুরুরদিকে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

গাই ওভারটন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামগাই উইলিয়াম ফিটজরয় ওভারটন
জন্ম(১৯১৯-০৬-০৮)৮ জুন ১৯১৯
ডুনেডিন, নিউজিল্যান্ড
মৃত্যু৭ সেপ্টেম্বর ১৯৯৩(1993-09-07) (বয়স ৭৪)
উইনটন, সাউথল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট
ভূমিকাবোলার, আম্পায়ার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৬৪)
১১ ডিসেম্বর ১৯৫৩ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট২৯ জানুয়ারি ১৯৫৪ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৫১
রানের সংখ্যা ১৩৭
ব্যাটিং গড় ১.৬০ ৪.১৫
১০০/৫০ ০/০ ০/০
সর্বোচ্চ রান ৩* ১৭*
বল করেছে ৭২৯ ১১০৫৪
উইকেট ১৬৯
বোলিং গড় ২৮.৬৬ ২৫.১৪
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/৬৫ ৭/৫২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/- ২১/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৫ আগস্ট ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ওতাগো দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, বামহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন গাই ওভারটন

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

সাউথল্যান্ডের ভেড়া উৎপাদনকারী ছিলেন গাই ওভারটন।[১] ১৯৪৫-৪৬ মৌসুম থেকে ১৯৫৫-৫৬ মৌসুম পর্যন্ত গাই ওভারটনের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। পুরোটা সময়ই ওতাগো দলের পক্ষে খেলেছেন তিনি। সাধারণতঃ তিনি বেশ উত্তম চরিত্রের অধিকারী ছিলেন ও পরিশ্রমী খেলোয়াড় হিসেবে তার যথেষ্ট সুনাম ছিল।

১৯৪০-এর দশকে সাউথল্যান্ডের পক্ষে বেশ কয়েকটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এ পর্যায়ে তিনি ডানহাতি উদ্বোধনী বোলার হিসেবে বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন। এরপর, ওতাগোর পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৯৪৫-৪৬ মৌসুমে সাউথল্যান্ডের সদস্যরূপে ওতাগোর বিপক্ষে ৪/২৮ ও ৬/১৩ লাভ করেন। [২] এরপর, নর্থ ওতাগোর বিপক্ষে ৪/১২ ও ২/১৩ পান। ওতাগোর সদস্যরূপে সফররত অস্ট্রেলীয় একাদশের বিপক্ষে খেলেন। প্রথম ইনিংসে ৩/৮৬ লাভ করেন। তন্মধ্যে, লিন্ডসে হ্যাসেট প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তার প্রথম শিকারে পরিণত হয়েছিলেন।[৩]

১৯৪৬-৪৭ মৌসুমে ওতাগো দলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে তোলেন। প্লাঙ্কেট শীল্ডে নিজস্ব প্রথম খেলায় ক্যান্টারবারির বিপক্ষে হ্যাট্রিক লাভ করেন।[১] ১৯৪৯-৫০ মৌসুমের প্লাঙ্কেট শীল্ডের তিন খেলার প্রত্যেকটির প্রথম ইনিংসে পাঁচ কিংবা ছয় উইকেট লাভ করেন। এরফলে, ১৯.০০ গড়ে ১৭ উইকেট নিয়ে প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীতে পরিণত হন।[৪] ১৯৫২-৫৩ মৌসুমের প্লাঙ্কেট শীল্ডে ১৮.৫২ গড়ে ১৯ উইকেট পান ও পরের মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা গমনার্থে তাকে নিউজিল্যান্ড দলের সদস্যরূপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে খেলেন। সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টসের বিপক্ষে ৭/৮৮ লাভ করেন। ১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে দুই খেলায় অংশ নেয়ার পর অবসর গ্রহণ করেন তিনি।

সবমিলিয়ে সমগ্র প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ১৬৯টি উইকেট লাভ করলেও ব্যাট হাতে মাত্র ১৩৭ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তিনটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন গাই ওভারটন। সবগুলো টেস্টই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেছিলেন তিনি। ১১ ডিসেম্বর, ১৯৫৩ তারিখে ডারবানে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২৯ জানুয়ারি, ১৯৫৪ তারিখে জোহেন্সবার্গে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৫৩-৫৪ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকায় তিন টেস্টে অংশ নেন। প্রতিপক্ষীয় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম, দ্বিতীয় ও চতুর্থ টেস্টে অংশ নিয়ে নয় উইকেট দখল করেন। তন্মধ্যে, চতুর্থ টেস্টের প্রথম ইনিংসে এক পর্যায়ে উভয় দিকে বলকে সুইং করে তেরো বলে এক রান দিয়ে তিন উইকেট পেয়েছিলেন।[৫] এরফলে, দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ১২৫/৫ হয়।

নিউজিল্যান্ড দল দেশে ফেরার পথে অস্ট্রেলিয়ায় পদার্পণ করে তিন খেলায় অংশ নেয়। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৭/৫২ পান তিনি। তন্মধ্যে, প্রথম তিন উইকেট নয় বলের ব্যবধানে লাভ করেন।[৬] এটিই তার খেলোয়াড়ী জীবনের স্বর্ণালী মুহূর্ত ছিল।

অর্জনসমূহ সম্পাদনা

সংগৃহীত রানের তুলনায় উইকেটের সংখ্যা ছিল বেশি। তবে, দুইবার দীর্ঘক্ষণ ব্যাটিং করে ওতাগোকে এক উইকেটের ব্যবধানে নাটকীয়ভাবে জয় এনে দিতে বেশি ভূমিকা রাখেন। ১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে ওয়েলিংটনের বিপক্ষে শেষ উইকেট জুটিতে নোয়েল ম্যাকগ্রিগরের সাথে ৩৭ রান তুলেন। তিনি ৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।[৭] ১৯৫২-৫৩ মৌসুমে ওয়েলিংটনের বিপক্ষে অ্যালেন গিলবার্টসনের সাথে ২৫ রানের জুটি গড়েন। তিনি ৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।[৮] ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ অপরাজিত ১৭ রান করেন। ওয়েলিংটনের বিপক্ষে ঐ খেলায় দলের সংগ্রহ ১৩৯/৯ থাকা অবস্থায় মাঠে নামেন ও লেস ওয়াটের সাথে জুটি গড়ে ২০৫ রানে নিয়ে যান।[৯]

ডিক ব্রিটেনডেন মন্তব্য করেন যে, নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটে ওভারটনের ন্যায় অন্য কেউ মর্যাদাপ্রাপ্ত হননি: তার বিরুদ্ধে কোন খেলোয়াড়কেই বিরূপ মন্তব্য করতে দেখা যায়নি।[১]

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর আম্পায়ারিত্বের দিকে ঝুঁকে পড়েন তিনি।[১] ৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৩ তারিখে ৭৪ বছর বয়সে সাউথল্যান্ডের উইনটন এলাকায় গাই ওভারটনের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা