গগনচুম্বী অট্টালিকা

খুবই সুউচ্চ বিল্ডিং

গগনচুম্বী অট্টালিকা(ইংরেজি: Skyscraper) বলতে অত্যন্ত উঁচু ভবনকে বুঝায়। সচরাচর যে সকল ভবনের উচ্চতা ১৫২ মিটার বা ৫০০ ফুটের চেয়ে বেশি ঐ সকল ভবন গগনচুম্বী অট্টালিকা (ক্ষেত্রবিশেষে "অভ্রংলিহ অট্টালিকা") নামে সারা বিশ্বে পরিচিত। প্রধানত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রধান প্রধান নগরগুলিতে এ ধরনের অট্টালিকা দেখা যায়। বড় বড় মহানগরগুলিতে দুই বা ততোধিক গগনচুম্বী অট্টালিকার সন্ধান পাওয়া যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহর এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং নামক গগনচুম্বী অট্টালিকার জন্য জনপ্রিয় হয়ে আছে। গত ২০ বছরে লন্ডনের নাগরিকেরা অনেকগুলো অট্টালিকা দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেছে গেছে যা অতীতে ইংল্যান্ডে দেখা যায়নি।

লন্ডনে অবস্থিত ৩০ সেন্ট ম্যারি এক্স আধুনিক পরিবেশবান্ধব গগনচুম্বী অট্টালিকা হিসেবে বিবেচিত

ইতিহাস

সম্পাদনা

এক সময় ইংরেজি ভাষাতে "স্কাইস্ক্রেপার" (গগনচুম্বী অট্টালিকার ইংরেজি পরিভাষা) বলতে পাল তোলা জাহাজের উঁচু পালকে বুঝানো হতো। এরপর শব্দটির অর্থ পরিবর্তিত হয়ে বর্তমানে সুউচ্চ ভবনকে নির্দেশ করছে। ঊনবিংশ শতক পর্যন্ত ছয় তলা ভবনের সন্ধান পাওয়া খুবই কষ্টকর ব্যাপার ছিল। দূর্বল ও নিম্নমানের নির্মাণ উপকরণের কারণে উচ্চ ভবনগুলো ভেঙে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা ছিল। তাছাড়া লোকেরাও অনেক ধাপ সিঁড়ি পেরিয়ে উপরে উঠতে ও বসবাস করতে পছন্দ করত না। নদীর প্রবল ঢেউও সর্বোচ্চ ৫০ ফুট পর্যন্ত আছড়ে পড়ত।

আধুনিক ও উন্নততর প্রযুক্তির সাহায্যে বর্তমানে গগনচুম্বী অট্টালিকা তৈরী হবার সংবাদ খুবই সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শক্তিশালী ভিত ও আধুনিক নির্মাণশৈলীর ব্যবহার হিসেবে স্টীল, খোয়া, লোহা, সিমেন্টের ঢালাই এতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

প্রথম গগনচুম্বী অট্টালিকা দ্য হোম ইনস্যুরেন্স বিল্ডিং ইলিনয়িসের শিকাগো শহরে নির্মিত হয়েছিল। ভবনটি ছিল দশতলা উচ্চতাবিশিষ্ট। ১৮৮৪-৮৫ সালে এটির নির্মাণকার্য সম্পন্ন হয়। কিন্তু, ১৯৩১ সালে নতুন আরেকটি ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে এটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।

সর্বোচ্চ গগনচুম্বী অট্টালিকা

সম্পাদনা

সুউচ্চ ভবন এবং নগর আবাসন সংস্থা (সিটিবিইউএইচ) নামীয় অ-লাভজনক আন্তর্জাতিক সংগঠন ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সংগঠনটি বিশ্বের সর্বোচ্চ গগনচুম্বী অট্টালিকার নাম ঘোষণা করে এবং কোন কোন ভবনগুলো নির্দিষ্ট মানদণ্ডের মাধ্যমে এ মর্যাদা পাবে তার সিদ্ধান্ত দেয়। এটি বিশ্বের নির্মাণ কাজ সম্পন্নকারী শীর্ষ ১০০ সর্বোচ্চ গগনচুম্বী অট্টালিকার নাম নির্দিষ্ট করে থাকে।[]

সংগঠনটি বর্তমানে গগনচুম্বী অট্টালিকা হিসেবে বুর্জ খলিফাকে বিশ্বের সর্বোচ্চ অট্টালিকার মর্যাদা প্রদান করেছে। এর উচ্চতা ৮২৮ মি (২,৭১৭ ফু)।[]

অবস্থান ভবন[] নগর দেশ উচ্চতা (মিটার)[] উচ্চতা (ফুট) তলার সংখ্যা নির্মাণকাল
বুর্জ খলিফা দুবাই   সংযুক্ত আরব আমিরাত ৮২৮ মিটার ২,৭১৭ ফুট ১৬৩ ২০১০
মক্কা রয়েল ক্লক টাওয়ার হোটেল মক্কা   সৌদি আরব ৬০১ মিটার[] ১,৯৭১ ফুট ১২০ ২০১২
তাইপে ১০১ তাইপে   তাইওয়ান ৫০৯ মিটার[] ১,৬৭০ ফুট ১০১ ২০০৪
সাংহাই ওয়ার্ল্ড ফিন্যান্সিয়াল সেন্টার সাংহাই   চীন ৪৯২ মিটার ১,৬১৪ ফুট ১০১ ২০০৮
ইন্টারন্যাশনাল কমার্স সেন্টার হংকং   হং কং ৪৮৪ মিটার ১,৫৮৮ ফুট ১১৮ ২০১০
পেত্রোনাস টাওয়ার ১ কুয়ালালামপুর   মালয়েশিয়া ৪৫২ মিটার ১,৪৮৩ ফুট ৮৮ ১৯৯৮
পেত্রোনাস টাওয়ার ২ কুয়ালালামপুর   মালয়েশিয়া ৪৫২ মিটার ১,৪৮৩ ফুট ৮৮ ১৯৯৮
জাইফেং টাওয়ার নানজিং   চীন ৪৫০ মিটার ১,৪৭৬ ফুট ৮৯ ২০১০
উইলিস টাওয়ার (সাবেক সিয়ার্স টাওয়ার) শিকাগো   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৪৪২ মিটার ১,৪৫০ ফুট ১০৮ ১৯৭৩
১০ কিংকি ১০০ শেনঝেন   চীন ৪৪২ মিটার ১,৪৪৯ ফুট ১০০ ২০১১

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "100 tallest completed buildings in the world"CTBUH। ১৯ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০১২ 
  2. Adapted from Emporis - World's Tallest Skyscrapers ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে
  3. Abraj Al-Bait Towers আর্কাইভইজে আর্কাইভকৃত ২৯ জুন ২০১২ তারিখে at CTBUH
  4. Taipei 101 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ জুলাই ২০১১ তারিখে at CTBUH

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা