খান বাহাদুর আবদুল গফুর নাসসাখ
খান বাহাদুর আবদুল গফুর নাসসাখ (১৮৩৪-১৮৮৯) ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের একজন সরকারি কর্মকর্তা, লেখক, সাহিত্য সমালোচক, সাহিত্য সংকলক এবং সংগ্রাহক। নাসসাখ ছদ্মনামে তিনি লেখালেখি করতেন।[১]
আবু মুহাম্মাদ আবদুল গফুর | |
---|---|
জন্ম | ১১ ফেব্রুয়ারি, ১৮৩৪ রাজাপুর, ভূষণা (বোয়ালমারী), ফরিদপুর, বাঙলা প্রদেশ, কোম্পানি ভারত |
মৃত্যু | ১৪ জুন, ১৮৮৯ |
ছদ্মনাম | নাস্সাখ |
পেশা | সরকারি কর্মকর্তা |
ভাষা | উর্দু, ফারসি |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত |
ধরন | কবিতা |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | সুখান-এ-শুআরা, দফতর-এ-বেমিসাল, তাজকিরাতুল মুয়াসিরিন |
আত্মীয় | নবাব আব্দুল লতিফ (বড়ভাই) |
পরিবার
সম্পাদনাসাহিত্যিক আব্দুল গফুর নাস্সাখ ফরিদপুর জেলার ভূষণা থানার (বর্তমান বোয়ালমারী উপজেলার) অন্তর্গত রাজাপুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত কাজী—পরিবারে ১২৪৯ হিজরির ১লা শাওয়াল (১৮৩৪ খ্রিষ্টাব্দের ১১ই ফেব্রুয়ারি) জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা কাজী ফকির মুহাম্মাদ ছিলেন কলকাতার দেওয়ানি আদালতের আইনজীবী। শিক্ষাবিদ ও সমাজসংস্কারক নবাব আব্দুল লতিফ ছিলেন তার বড়ভাই।[১]
কর্মজীবন
সম্পাদনাআবদুল গফুর নাসসাখ ব্রিটিশ সরকারের অধীনে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর হিসেবে ঢাকাসহ বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির বিভিন্ন স্থানে দায়িত্বপালন করেছেন। কর্মসূত্রে অবস্থান করা সব স্থানে তিনি কবিতার আসরের আয়োজন করতেন এবং নতুন কবিদের উৎসাহ দিতেন। একারণে তাকে "সর্ব উস্তাদ" বলা হত।[১]
সাহিত্যকর্ম
সম্পাদনাআবদুল গফুর প্রধানত উর্দু ভাষায় কাব্যচর্চা করেছেন। তিনি ফারসিতেও কবিতা লিখেছেন। বাংলা, উর্দু ও ফারসির পাশাপাশি তিনি ইংরেজি ও হিন্দি ভাষা জানতেন।[১]
তার রচিত উর্দু কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে দফতর-এ-বেমিসাল (১৮৬৯), আরমুগান (১৮৭৫), আরমুগানি (১৮৮৪)। দফতর-এ-বেমিসাল গ্রন্থটি কবি মীর্জা গালিব অসাধারণ বলে প্রশংসা করেছিলেন। সুখান-এ-শুআরা (১৮৭৪) এবং তাজকিরাতুল মুয়াসিরিন গ্রন্থে তিনি উর্দু ও ফারসি কবিদের পরিচিতি তুলে ধরেছেন। সুখান-এ-শুআরা উর্দুতে তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান হিসেবে বিবেচিত হয়।[১]
১৮৭৪ সালে তিনি ফারসি কবি শায়েক ফরিদউদ্দিন আত্তারের পান্দনামা কাব্যগ্রন্থ উর্দুতে চশমা-এ-ফায়েজ শিরোনামে অনুবাদ করেন। গাঞ্জ-এ-তাওয়ারিখ (১৮৭৩), কানজ-এ-তাওয়ারিখ (১৮৭৭) এবং আশআর-এ-নাসসাখ (১৮৮৮) তার কাব্যগ্রন্থ। প্রথম দুই গ্রন্থে ইসলামের প্রাথমিক যুগ থেকে তদ্ববধি মহাপুরুষদের জীবনী রচিত হয়েছে। ইনতিখাব-এ-নাকম (১৮৭৯) পুস্তিকায় তিনি লখনৌয়ের কবি মীর আনিদ ও মীর্জা দাবিরের মর্সিয়া কাব্যের সমালোচনা করেছেন। তিনি ফারসি ভাষায় মাজহাব-এ-মুয়াম্মা (১৮৮৮) নামক কবিতার পুস্তিকা লিখেছেন।[১]