খাজা গোলাম ফরিদ (উর্দু: خواجہ غُلام فرید) বা খোয়াজা ফরিদ (১৮৪৫-১৯০১) ঊনিশ শতকের একজন ভারতীয় সুফিবাদী কবি ছিলেন।[১] তিনি একাধারে ভাষাবিদ, পণ্ডিত এবং লেখক ছিলেন। তিনি চিশতি নেজামী সুফি ত্বরিকার অনুসারী ছিলেন। তিনি ছাচরানে জন্মগ্রহণ এবং মৃত্যুবরণ করেন। তাকে মিথানকোটে সমাহিত করা হয়।

খাজা গোলাম ফরিদ
খাজা গোলাম ফরিদের মাজার
জন্মনভেম্বর ১৮৪৫
ছাচারন, পাঞ্জাব, ব্রিটিশ রাজ (বর্তমানে পাকিস্তান)
মৃত্যু২৫ ডিসেম্বর ১৯০১ (৫৫বছর)
ছাচারন, পাঞ্জাব, ব্রিটিশ রাজ (বর্তমানে পাকিস্তান)
শ্রদ্ধাজ্ঞাপনIslam
যার দ্বারা প্রভাবিতবাবা ফরিদ
যাদের প্রভাবিত করেনঅসংখ্যয সুফি কবি
ঐতিহ্য বা ধরন
কাফি

প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা

গোলাম ফরিদ ১৮৪৫ সালে ছাচরনে জন্মগ্রহণ করেন। তার বয়স যখন পাঁচ বছর তখন তার মা মৃত্যুবরণ করেন এবং বার বছর বয়সে তার পিতা খাজা খোদা বক্স মারা গেলে তিনি এতিম হয়ে যান। আট বছর বয়সে তিনি শপথ করেন তিনি সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্থ করবেন। এরপর তার বড় ভাই ফখর জাহান উহদি তার ভরণ পোষণের দায়িত্ব নেন এবং তিনি ধীরে ধীরে পণ্ডিত এবং লেখক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেন।

সাহিত্য রচনা সম্পাদনা

বড় ভাইয়ের সান্নিধ্যে থেকে তিনি সাহিতে্যর বিভিন্ন শাখায় পান্ডিত্য অর্জন করেন। তিনি আরবি ভাষা, ফার্সি ভাষা, পাঞ্জাবী ভাষা, সারাইকি ভাষা, সিন্ধি ভাষাব্রজ ভাষাসহ অনেক ভাষায় পান্ডিত্য অর্জন করেন এবং আরবি ভাষা, ফার্সি ভাষা, পাঞ্জাবী ভাষা, সারাইকি ভাষা, সিন্ধি ভাষাব্রজ ভাষা গুলোতে কাব্য রচনাও করেছেন।

তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো হলো

  • দিওয়ানে ফরিদ (১৮৮২ সালে সারাইকি ভাষায়, ১৮৮৩ সালে পাঞ্জাবী ভাষায় এবং ১৮৮৪ সালে উর্দু ভাষায় প্রকাশিত কবিতার গ্রন্থ)
  • মানাকাবে মমেহবুবাই (ফার্সি ভাষায় রচিত গদ্য গ্রন্থ)

তিনি প্রায় সময় মরুভূমিকে প্রতীকী হিসেবে ব্যবহার করতেন। জীবনের কিছু সময় তিনি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি ভাওয়ালপুরে তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনের বিরোধিতা করেন।

মৃত্যু সম্পাদনা

খাজা ফরিদ ১৯০১ সালে ছাচরানে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে মিথানকোটে সমাহিত করা হয়। বিংশ শতাব্দীতে খাজা গোলাম ফরিদের জীবন, কর্ম, সাধনার উপর সাহিতয রচনা হচ্ছে, যা বর্তমানে ফরিদিয়্যাত নামে খ্যাতি লাভ করেছে। বর্তমানে ভারত ও পাকিস্তানের অনেক এলাকায় গোলাম ফরিদের নাম অনুসারে অনেক ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যেমন: পাকিস্তানের রাহিম্যারে অবস্থিত সরকারি খাজা গোলাম ফরিদ কলেজ

সম্মানন প্ররবর্তন সম্পাদনা

পাকিস্তান সরকার সাহিত্যে তার নাম অনুসারে একটি সম্মাননা যার নাম খাজা গোলাম ফরিদ সম্মাননার প্রবর্তন করে যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য গুণীজনদের প্রদান করা হয়। এই সম্মাননা গ্রহণকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিগণ হলেন ইসমাইল আহমেদানি, নশী গিলানি এবং অন্যান্য। ২০০১ সালে গোলাম ফরিদের জন্ম শত বার্ষিক পালিত হয়। এই উপলক্ষে পাকিস্তান ডাক বিভাগ একটি বিশেষ স্ট্যাম্প প্রকাশ করে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Suvorova, Anna (২২ জুলাই ২০০৪)। "Muslim Saints of South Asia: The Eleventh to Fifteenth Centuries"। Routledge – Google Books-এর মাধ্যমে।