ক্যান্টারবেরি দুর্গ (পোর্টল্যান্ড, অরেগন)

ক্যান্টারবারি দুর্গ হচ্ছে ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ হিস্টোরিকাল প্লেসেস এর তালিকাভুক্ত এবং পোর্টল্যান্ড,অরিগন এর দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে অবস্থিত একটি বেসরকারি বাসস্থান যা আর্লিংটন দুর্গ নামেও পরিচিত।[২] এর নির্মাণ সময়কাল ১৯২৯-১৯৩১ এবং নকশা জেটার হে দ্বারা করা হয়। ফ্রায়ি ১৯২০-এর দশকে ইংল্যান্ডের ক্যান্টারবারি দুর্গের অনুরুপে বর্হিভাগ এবং হলিউডের আর্ট ডিকো এর দ্বারা অনুপ্রানিত হয়ে এর অর্ন্তভাগের ধরন প্রদান করেন। এর দুর্গপরিখা, টানাসেতু এবং চূড়ার মতো বৈশিষ্ট্য খুব দ্রুতই পর্যটককে আকর্ষণ করে।

Canterbury Castle
২০০৯ সালে ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ার আগে
ক্যান্টারবেরি দুর্গ (পোর্টল্যান্ড, অরেগন) পোর্টল্যান্ড, অরেগন-এ অবস্থিত
ক্যান্টারবেরি দুর্গ (পোর্টল্যান্ড, অরেগন)
অবস্থান২৯১০ দক্ষিণ-পশ্চিম ক্যান্টারবেরি লেন
পোর্টল্যান্ড, অরেগন
আয়তনকমপক্ষে এক একর
নির্মিত১৯২৯-১৯৩১
স্থপতিজেহের ও ফ্রেই
স্থাপত্য শৈলীকেসেলটেড স্টাইল
ধ্বংস২০০৯
এনআরএইচপি সূত্র #87001509[১]
গুরুত্বপূর্ণ তারিখ
এনআরএইচপি-তে যোগসেপ্টেম্বর ৮, ১৯৮৭
এনআরএইচপি থেকে অপসারিতঅক্টোবর ১৩, ২০১০

১৯৩০-এর দশকে পোর্টল্যান্ডের ক্যান্টারবারি দুর্গ অবয়ব ১৯৮৭ সালে ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ হিস্টোরিকাল প্লেসেস এ তালিকাভুক্ত হয়। এটি পোর্টল্যান্ড হিস্টোরিকাল ল্যান্ডমার্ক নামেও পরিচিত। ২০০০-এর দশকে গুরুত্বপূর্ণ পুনঃসংস্কার কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া হয় কিন্তু সেটি অসম্পূর্ণ রয়ে যায় এবং ২০০৯ সালে পৌর নিরাপত্তা কোড (মিউনিসিপাল সেফটি কোড)-এর সময়কাল পূরণ হয়ে গেলে এটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ক্যান্টারবারি দুর্গ ধ্বংস হয়ে গেলে, পিগট্‘স কাসল হয় শহরের একমাত্র অবশিষ্ট দুর্গ। অতঃপর ক্যান্টারবারি দুর্গ ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ হিস্টোরিকাল প্লেসেস এর তালিকা হতে বাদ পড়ে।

বর্ণনা সম্পাদনা

ক্যান্টারবারি দুর্গ ওয়াশিংটন পার্কের কাছে আর্লিংটন হাইটস এ অবস্থিত একটি বেসরকারি ৬০০০ বর্গফুটের (৫৬০মি২), তিন তলা বাড়ি যা পোর্টল্যান্ড শহরের কেন্দ্রস্থলের নৈবেদ্য দৃশ্য প্রদান করে। রকি বুট্টের[৩][৪] খনি থেকে আগত ব্যাসল্ট পাথর দ্বারা নির্মিত যা দুর্গপরিখা, টানাসেতু এবং তামা নির্মিত শীর্ষচূড়ার[৩][৫] মতো বৈশিষ্ট্যযুক্ত। সাত ফুট চওড়া তিন ফুটের চেয়েও গভীর দুর্গপরিখা কাঠের টানাসেতু দ্বারা আচ্ছাদিত। বাড়ী নির্মাণ করার সময়েই পাহাড়ের গায়ে অন্তর্ভুক্ত একটি একক গাড়ির গ্যারেজ নির্মাণ করা হয়েছিল। কংক্রিটের ভিত্তি একটি আয়তক্ষেত্রাকার ভূমি পরিকল্পনা দ্বারা গৃহীত ছিল ক্যান্টারবারি ‘‘ঠেকানো অবলম্বনহীন দেয়াল, সিলিন্ডার আকৃতির কোণে উপসাগরীয় অঞ্চল ও অখণ্ডিত পাথরের একটি খাঁজকাটা প্রাচীর’’[২] হলো এর বৈশিষ্ট্য। গোলাকার, খিলানযুক্ত এবং সোজা-শীর্ষস্থানে ফ্রেমহীন জানালাগুলো প্রায়শই মসৃণ ইস্পাতের সাথে ফিট করা হয়। প্রবেশপথগুলিও ছিল ফ্রেমহীন ,সংকীর্ণ এবং বৃত্তাকার অথবা পরাবৃত্তীয় । দরজাগুলো ছিল শক্তিশালী। টাওয়ার এর শীর্ষ পর্যায়ে সিঁড়ির জানালাগুলো ছিল সীসার কাচ দ্বারা নির্মিত মাকড়সাজালের নকশা করা যা দুর্গ ডিজাইনার জেটার হের স্বাক্ষরযুক্ত যা ফ্রায়ির কাজ।[২] বাঁশজাতীয় বায়ুকল এর বাহ্যরূপকে সুন্দর করেছে।[৫]

১৯২০-এর দশকে হলিউডের আর্ট ডিকো এর দ্বারা অনুপ্রানিত হয়ে মেহগনি কাঠের কাজ, টালি মেঝে ও ঝাড়বাতি দ্বারা এটির অর্ন্তভাগের কাজ করা হয়। এর অভ্যন্তরে আরও রয়েছে স্প্যানিশস্টাইলের সাদা পলেস্তারা সর্পিল সিঁড়ি এবং লোহার তৈরী বড় দরজা, জানালার হার্ডওয়্যার ও আলোর ঝাড়বাতি।[২][৫] এর আরও রয়েছে একটি বেসমেন্ট পুল (যা ইতিমধ্যে পানি লিকের জন্য স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হযেছে), ১০ফুট চওড়া (৩.০ মি )একটি পাথরের অগ্নিকুণ্ড ছোট এবং বর্গাকার জানালা।[৩] এছাড়াও বেজমেন্টে অগ্নিকুণ্ড,একটি স্টোরেজ রুম, এবং খালি জায়গা ছিল লন্ড্রি ও বিলিয়ার্ডের জন্য। নিচ তলায় আছে গ্যারেজ, একটি রান্নাঘর ও ব্রেকফাস্ট বে, লিবিং ও ডাইনিং রুম এবং একটি মিউজিক রুম। বাড়ির ডেক সংলগ্ন ডাইনিং এবং মিউজিক রুমের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে রয়েছে মাস্টার বেডরুম। অগ্নিকুণ্ড এবং হলওয়ের মেঝে বাদামি সিরামিক টালি, মাস্টার বাথরুমে কালো গ্লেজ দেয়া সিরামিক আর ব্রেকফাস্ট বে-এ ব্যবহার করা হয়েছিল কালো, লাল ও হলুদ টাইলস।[২] দুর্গ এর একটি বাথরুম চার্লি চ্যাপলিনের কথা স্মরণ করে তৈরি করা হয়েছিল। অভ্যন্তরে একটি কেন্দ্রীয় সিঁড়ি তামার তৈরি মোচাকার ছাদে গিয়ে পৌছেছে। বাড়ির দক্ষিণ কক্ষের কেন্দ্রে অবস্থিত ফার্নেসটি এমনভাবে ভেণ্টেড করা যেন অগ্নিকুণ্ড থেকে গোলাপের সুবাস আসে।[২]

ইতিহাস সম্পাদনা

 

এর নকশা জেটার হে দ্বারা করা হয়। ১৯২৯ এবং ১৯৩১ সালের মধ্যে এটি নির্মিত।[৩][৫] অবিলম্বে নির্মাণের জন্য ফ্রায়ি ঘর বিক্রি করতে পারেনি এবং ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় তিনি পুনরায় ক্যারিয়ার শুরু করতে পোর্টল্যান্ড ছেড়ে ক্যালিফোর্নিয়া যান।[২][৩] পর্যটকগণ অবিলম্বে বাড়িতে ভ্রমণ করার আগ্রহ দেখিয়েছে। দুর্গটি দ্রুতই আকৃষ্ট পর্যটক এবং স্কুল দলকে আকৃষ্ট করতে থাকে। ক্যান্টারবারি দুর্গ পরিচিত হয়ে ওঠে আর সামনের স্ট্রিটের নামও হয় এর নামে।[২] ১৯৫০ সালে জমির একটি অংশ বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল তাই এর বাগানটি নষ্ট হয়ে যায়। জমিটি পুনরায় যোগ করা হয়েছিল ১৯৮৭ সালে যখন ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ হিস্টোরিকাল নিবন্ধন করে। তখন তৎকালীন মালিক ডেল এবং কারেন জমিটি এক বছরের আগেই একটি আবেদন পেশ করে হস্তান্তর করে।[২][৩]

এক বছরের বেশি সময় ধরে বেকার পড়ে থাকার পর সিডনি লিন এবং জন হেফ্ফারিন ২০০৪ সালে $ ৪৬৯.৯০০ দিয়ে এটিকে খরিদ করে। ততদিনে,কাঠামোগত উন্নত হওয়ার সাথে সাথে দেয়াল এবং ছাদের ফাটলও দেখতে পাওয়া যায়। ২০০৬ সালে একটি গাছ বাড়ির প্রধান গ্যাস লাইনের উপর পরে তাকে অকেজো করে ফেলে।[৩][৫] তৎকালীন মালিকদ্বয় চার বছর ধরে $ ২০০,০০০ দিয়ে দেয়াল শক্তিশালী করেন। এছাড়াও ডেল এবং কারেন বাইরের সিঁড়ি এবং আন্ডারগ্রাউন্ড প্রাচীর নির্মাণ করেন। কিন্তু,সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয় নি কেননা তারা টাকা দিতে পারেনি আর তারা $ ২০,০০০ ঋণী ছিল। ব্যয়বহুল দুর্গ,উচ্চ সম্পত্তি কর, ক্রমবর্ধমান বিল পরিশোধে তারা তখনও লড়াই করতে থাকে।[৫] ২০০৮ সালের গ্রীষ্মে বিক্রয়ের জন্য ক্যান্টারবারি দুর্গের $ ২ মিলিয়ন নিরূপণ করা হয়। কিন্তু চেষ্টা বিফলে গেলে লিন অভ্যন্তরীণ সংস্কার প্রক্রিয়ার জন্য স্থানীয় নকশাকার ছাত্র এবং ঠিকাদারদের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান। মালিকদ্বয় জানুয়ারী ২০০৯ সালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়, এবং মালিকানা জেপি মর্গান চেজ উপর আসে।[৩][৫] লিন পোর্টল্যান্ড শহরের কমিশনার রান্ডি লিওনার্ড এবং হোম ইমপ্রুভমেন্ট বিশেষজ্ঞ এবং এই ওল্ড হাউস হোস্ট বব ভিলা থেকে সহায়তা চাওয়ার জন্য "ওয়ান ওমেন ক্রুসেড" চালু করেন। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে শহরের ব্যুরো একে ঝুঁকিপূর্ণ বলেন।রাস্তার কয়েক ফুট নিচে পাথরের অনুপস্থিত অধিবাসীদের বিপদ উপস্থাপন করে। ২০০৯ সালের মার্চ মাসে এর ধ্বংস গুজব ছড়িয়ে পড়ে।[৫]

২০০৯ সালে পৌর নিরাপত্তা কোড (মিউনিসিপাল সেফটি কোড) এর সময়কাল পূরণ হয়ে গেলে এটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ক্যান্টারবারি দুর্গের ধ্বংস হয়ে গেলে পিগট্‘স কাসল হয় শহরের একমাত্র অবশিষ্ট দুর্গ। অতঃপর ক্যান্টারবারি দুর্গ ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ হিস্টোরিকাল প্লেসেস এর তালিকা হতে বাদ পড়ে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. কর্মী (২০০৯-০৩-১৩)। "জাতীয় নিবন্ধন তথ্য পদ্ধতি"ঐতিহাসিক স্থানসমূহের জাতীয় নিবন্ধনজাতীয় পার্ক পরিষেবা 
  2. "National Register of Historic Places Inventory – Nomination Form" (পিডিএফ)। United States Department of the Interior। ১৯৮৭। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১২ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. Lednicer, Lisa Grace (মে ২৮, ২০০৯)। "Portland's Canterbury (Lane) Castle is coming down"The Oregonian। Portland, Oregon: Advance Publicationsআইএসএসএন 8750-1317। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ২২, ২০১০ 
  4. "Images: Canterbury Castle" (PDF)National Park Service। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১২ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] Note: Photographs taken by Dale Bernards in 1987.
  5. Bartels, Eric (মার্চ ১২, ২০০৯)। "City is wary of the Castle on the Hill"Portland Tribune। Portland, Oregon: Pamplin Media Group। পৃষ্ঠা 1–2। ৯ জুন ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১২ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা