কোনেরু হাম্পি

ভারতীয় দাবা খেলোয়াড়

কোনেরু হাম্পি (জন্ম ৩১শে মার্চ ১৯৮৭, গুড়িবরা, অন্ধ্রপ্রদেশ)[১] একজন ভারতীয় দাবা গ্র্যান্ডমাস্টার। ২০০৭ সালের অক্টোবরে, তিনি ইয়েহুডিট পোলগারের পর দ্বিতীয় মহিলা খেলোয়াড়, যিনি এলো রেটিংএ ২৬০০ নম্বর ছাড়িয়ে, এখন ২৬০৬এ আছেন।[২][৩]

কোনেরু হাম্পি
২০১২ সালে কোনেরু হাম্পি
পূর্ণ নামকোনেরু হাম্পি
দেশভারত
জন্ম (1987-03-31) ৩১ মার্চ ১৯৮৭ (বয়স ৩৭)
বিজয়ওয়াড়া, অন্ধ্র প্রদেশ, ভারত
খেতাবগ্র্যান্ডমাস্টার (২০০২)
ফিদে রেটিং2607 (এপ্রিল ২০২৪)
সর্বোচ্চ রেটিং২৬২৩ (জুলাই ২০০৯)
কোনেরু হাম্পি
পদক রেকর্ড
 ভারত-এর প্রতিনিধিত্বকারী
এশিয়ান গেমস
স্বর্ণ পদক - প্রথম স্থান ২০০৬ দোহা মহিলা একক দাবা
স্বর্ণ পদক - প্রথম স্থান ২০০৬ দোহা মিশ্র দলগত দাবা

২০০২ সালে, মাত্র ১৫ বছর, ১ মাস, ২৭ দিন বয়সে, কোনেরু সর্ব কনিষ্ঠ মহিলা হিসাবে গ্র্যান্ডমাস্টার (শুধুমাত্র মহিলা গ্র্যান্ডমাস্টার নন) খেতাবের অধিকারী হন। তিনি ইয়েহুডিট পোলগারের পূর্ববর্তী রেকর্ড তিন মাসের জন্য ভেঙে দেন।[৪] হাম্পির এই রেকর্ডটি ভাঙেন হু ইফান ২০০৮ সালে।

খেলোয়াড় জীবন সম্পাদনা

কোনেরু হাম্পি বিশ্ব যুবা দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে তিনটি স্বর্ণপদক জেতেন : ১৯৯৭ সালে (১০ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিভাগে), ১৯৯৮ সালে (১২ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিভাগে) এবং ২০০০ সালে (১৪ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিভাগে)। ১৯৯৯ সালে, আহমেদাবাদের এশিয়ান যুবা দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে, ১২ বছরের কম বয়সী বিভাগে, ছেলেদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি জেতেন।[৫] ২০০১ সালে কোনেরু বিশ্ব জুনিয়র বালিকা চ্যাম্পিয়নশিপে জেতেন। পরের বছরে , তিনি ঝাও যু এর সাথে যুগ্ম ভাবে প্রথম হন, কিন্তু টাইব্রেকারে দ্বিতীয় হয়ে যান।[৬] ২০০৪ সালের বিশ্ব জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে কোনেরু ছেলেদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, পেন্টালা হরিকৃষ্ণ এটি জেতেন, হাম্পি ৮.৫/১৩ পয়েন্ট পেয়ে কাউন্টব্যাক পদ্ধতিতে দশম হয়ে শেষ করেন।[৭]

কোনেরু ২০০০ এবং ২০০২ সালে ব্রিটিশ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ জেতেন। ২০০৩ সালে, তিনি ১০ম এশিয়ান মহিলা ব্যক্তিগত চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ভারতীয় মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ জেতেন।[৮][৯] ২০০৫ সালে, রাশিয়ার ক্রাসনাতুরিয়েন্সকএ, সেই সময়কার বিশ্বের শক্তিশালী মহিলা খেলোয়াড়দের মধ্যে দশজনের সঙ্গে খেলে, রাউন্ড-রবিন প্রতিযোগিতায় হওয়া নর্থ উরাল কাপ জেতেন।[১০]

তিনি ২০০৪ মহিলা বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম বারের জন্য যোগদান করেন এবং তারপর থেকে, প্রতি বছর এই প্রতিযোগিতার নকআউট ফর্ম্যাটে অংশগ্রহণ করেছেন। কোনেরু ২০০৪, ২০০৮ এবং ২০১০ সালে সেমিফাইনালে পৌছেছিলেন।

২০০৯ সালে, মুম্বই মেয়র কাপে তিনি আলেক্সান্ডার আর্শচেনকো, মগেশ পঞ্চনাথন এবং ইভগেনি মিরশনিচেনকোর সঙ্গে একই স্থানে এসে যান।[১১]

২০০৯ সালে, তুরিনে অনুষ্ঠিতব্য ৩৭তম দাবা অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করা থেকে তাকে বিরত করার জন্য, কোনেরু সারা ভারত দাবা ফেডারেশন কে অভিযুক্ত করেন।[১২][১৩] তার বাবা কোনেরু অশোক, যিনি তার প্রশিক্ষক, টুর্নামেন্টে তার সঙ্গে যাবার অনুমতি পাননি। এই নিয়ে বিতর্ক এখনো চলছে।

কোনেরু ফিডে মহিলা গ্রাঁ প্রি ২০০৯-২০১১তে অংশগ্রহণ করেন এবং সামগ্রিকভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে থেকে শেষ করেন, এবং মহিলা বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ ২০১১তে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে যোগ্যতা অর্জন।[১৪][১৫] তিনটি গেম জিতে এবং পাঁচটি গেম ড্র করে হাউ ইফান প্রতিদ্বন্দিতা জেতেন। ফিডে মহিলাদের গ্রাঁ প্রি সিরিজের ২০১১–১২, ২০১৩–১৪ এবং ২০১৫–১৬ সালে কোনেরু দ্বিতীয় হয়ে শেষ করেন।

তিনি ২০১৫ সালে চিনের ছাংতুতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব টিম দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে একক ক্ষেত্রে ব্রোঞ্জ জেতেন। দলগত প্রতিযোগিতায় চিনের থেকে এক পয়েন্ট পেছনে থেকে ভারত চতুর্থ স্থানে শেষ করে, চিন ব্রোঞ্জ পদক জেতে।[১৬]

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

তার বাবা মা (কোনেরু অশোক এবং শ্রীমতি লতা অশোক) প্রথমে তার নাম দিয়েছিলেন হ্যাম্পি, "বিজয়ী (চ্যাম্পিয়ন)" শব্দ থেকে তারা এই নামটি দিয়েছিলেন। তার বাবা পরে তার নামের বানান হ্যাম্পি পরিবর্তন করে হাম্পি রাখেন, আরো ঘনিষ্ঠভাবে একটি রাশিয়ান নামের মত শোনানোর জন্য।[১৭][১৮]

২০১৪ সালের আগস্ট মাসে তিনি দাসারি অনবেশকে বিবাহ করেন।[১৯] বর্তমানে তিনি ও এন জি সি লিমিটেডএ কর্মরত।[২০]

 
২৩শে মার্চ, ২০০৭ তারিখে নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে একটি অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি, ড. এ.পি.জে. আব্দুল কালাম কুমারী কোনেরু হাম্পিকে (দাবা) পদ্মশ্রী তে ভূষিত করছেন

পুরস্কার এবং সাফল্য সম্পাদনা

 
২০০৬ সালে, উইক আন জি তে
  • ১৯৯৯: এশিয়ার সর্বকনিষ্ঠ মহিলা আন্তর্জাতিক মাস্টার (ডব্লিউআইএম)
  • ২০০১: ভারতের সবচেয়ে কম বয়সী নারী গ্র্যান্ডমাস্টার (ডব্লিউজিএম)
  • ২০০৩: অর্জুন পুরস্কার
  • ২০০৭: পদ্মশ্রী[২১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. https://chess24.com/en/read/players/humpy-koneru
  2. "Anand crosses 2800 and leads the October 2007 FIDE ratings"Chess News। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  3. FIDE: Koneru's rating progress chart FIDE
  4. "Humpy beats Judit Polgar by three months"Chess News। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  5. "Humpy on high!"Rediff.com। ৩০ আগস্ট ২০০১। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জানুয়ারি ২০১৬ 
  6. Goa 2002 – 20° Campeonato Mundial Juvenil Feminino BrasilBase
  7. Cochin 2004 – 43° Campeonato Mundial Juvenil BrasilBase
  8. 10th Asian Women's Individual Chess Championship FIDE
  9. Crowther, Mark (১৭ নভেম্বর ২০০৩)। "TWIC 471: Indian Women's National A Championships"। The Week in Chess। সংগ্রহের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  10. "North Urals Cup: Humpy wins, Xu Yuhua second"। ChessBase। ১৫ জুলাই ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০১৬ 
  11. Zaveri, Praful (১৫ মে ২০০৯)। "Areshchenko triumphs in Mayor's Cup – Jai Ho Mumbai!!"। ChessBase। সংগ্রহের তারিখ ১০ মে ২০১০ 
  12. "Koneru Humpy accuses AICF secretary of harassment"। IBN Sports। ২৪ অক্টোবর ২০০৯। ৯ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ অক্টোবর ২০১০ 
  13. "Humpy replies to Sundar – issues open challenge"। ChessBase। ২৫ অক্টোবর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০ অক্টোবর ২০১০ 
  14. "Women GP – Nalchik – Women GP – Nalchik"। Nalchik2010.fide.com। ৭ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  15. "Humpy pulls it off – wins Doha GM and qualifies | Chess News"। Chessbase.com। সংগ্রহের তারিখ ১ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  16. "World Women Chess: Harika wins silver, bronze for Humpy"The Hindu। PTI। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৫ 
  17. "Humpy beats Judit Polgar by three months"। ৩১ মে ২০০২। 
  18. "Humpy's moves"The Tribune। Chandigarh, India। ৮ এপ্রিল ২০০৬। 
  19. J. R. Shridharan। "Humpy enters wedlock with Anvesh"The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  20. "Humpy joins ONGC"The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৬ 
  21. "Padma Awards" (পিডিএফ)। Ministry of Home Affairs, Government of India। ২০১৫। ১৫ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৫ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা