কোকড়াঝাড় গণহত্যাকাণ্ড ২০১২

২০১২ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম রাজ্যে স্থানীয় বোরো জনগোষ্ঠীবাঙালি মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে দাঙ্গা বাঁধে৷[][][][][][][][] ২০শে জুলাই ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম দাঙ্গা বাধার খবর পাওয়া যায়৷[১০] ৮ই আগস্ট ২০১২ অবধি ৭৭ জনের মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হয়[১১] এবং প্রায় ৪০০ টি পার্শ্ববর্তী গ্রাম থেকে মোট ৪ লক্ষ আতঙ্কিত মানুষ ২৭০ টি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়৷[১২][১৩][১৩] সংবাদ সূত্র অনুযায়ী এগারো জন ব্যক্তি নিখোঁজ হয়ে যান৷[১৪][১৫]

২০১২ কোকড়াঝাড় হত্যাকাণ্ড
স্থানআসাম, ভারত
তারিখ৪ঠা শ্রাবণ থেকে ২৯শে ভাদ্র ১৪১৯ (২০শে জুলাই থেকে ১৫ই সেপ্টেম্বর ২০১২ খ্রিস্টাব্দে)
হামলার ধরনবোরোবাঙালি মুসলমান অন্তর্বিদ্বেষ-জাতিবিদ্বেষ
নিহত৭৭ (বাং ২৩শে শ্রাবণ ১৪১৯ তথা ৮ই আগস্ট ২০১২ অনুযায়ী)[]

২৭শে জুলাই ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ দাঙ্গাপ্রভাবিত অঞ্চলগুলিতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে বিলম্বের কারণে সংযুক্ত প্রগতিশীল জোট-এর ওপর দোষারোপ করেন৷[১৬] পরবর্তী দিন তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং কোকড়াঝাড়ের শিবিরগুলি পরিদর্শন করেন ও এই ঘটনাটিকে ভারতের ইতিহাসের কলঙ্ক বলে দাবী করেন৷ ভারতের গৃৃহমন্ত্রী পালানিয়াপ্পন চিদম্বরম ৩০শে জুলাই সোমবার আক্রান্ত এলাকা পরাদর্শনে যান ও নিরাপত্তা, গৃহসংস্থান সহ পুণর্বাসনের সিদ্ধান্ত নেন৷[১৭]

বোরোল্যান্ড লোকসভা আসনের সদস্য সামসুমা কুঙ্গুর বৈসোমূতিয়ারী আসামের বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকে এই হামলার মুল কারণ বলে উল্লেখ করেন৷[১৮]

উত্তর পূর্ব ভারতে আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাস ধারাবাহিকভাবে আসামের বিভিন্ন জায়গা থেকে জাতিবিদ্বেষ, গণহত্যা ও বহু মানুষের গৃৃৃহহারা হওয়ার খবর আরো চাঞ্চল্য ছড়ায়৷ ১৫ই সেপ্টেম্বর আলোচনাসভার বক্তব্য অনুযায়ী বিক্ষোভকারী জাতিদে দাবী অযাচিত বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা ও আসাম থেকে বিতাড়ন৷

কোকড়াঝাড়ের দাঙ্গা

সম্পাদনা

২০শে জুলাই ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে কোকড়াঝাড়ের জয়পুরে জাতিগত বিদ্বেষের ফলে ৪জন বোরোর মৃৃত্যু বোবো জনগোষ্ঠীবাঙালি মুসলমানদের মধ্যে দাঙ্গা আরো চরম পর্যায়ে পৌঁছায়৷[১৯] প্রতিশোধ হিসাবে ২১শে জুলাই স্থানীয় বাঙালি মুসলিমদের ওপর আক্রমণ হয় ও দু'জনের মৃত্যুসহ বহুলোক আহত হন৷[১৯] পরের দিনের হামলাতে ৮০ জন মতো মারা যায় যার মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন বাঙালি মুসলমান এবং ৪ লক্ষ জন গৃৃহহারা হন৷[২০] কর্তব্যরত ভারতীয় সেনা জওয়ানদের সন্দেহভাজন দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়৷[২১]

৭ই আগস্ট ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে ভারত সরকার সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে তদন্তের ভার দেওয়া হয়৷[২২] ১৯শে সেপ্টেম্বর সি.বি.আই.পাঁচ সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করে৷ প্রদীপ ব্রহ্ম, মহম্মদ হাসেম আলি, মহম্মদ আদম আলি শেখ, মহম্মদ হাসিম আলি রহমান, মহম্মদ কুরবান আলি শেখ, মহম্মদ ইমরান হুসেন এঁরা উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণসহ গ্রেপ্তার হন৷[২৩] পরে আবারও তদন্তের পর ২০১২ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম চক্রী কনস্টেবল মহিবুর ইসলাম ইলিয়াস রাতুল গ্রেপ্তার হন, যদিও তিনি পরে রেহাই পান৷[২৪]

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Assam: 5 killed in fresh violence; toll rises to 61"। Zeenews.india.com। ২০১২-০৮-০৫। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১২ 
  2. "Assam violence due to Bodo-Muslim feud". The Indian Express. 17 August 2012. Retrieved 2 July 2013
  3. "Media fueling the myth of Muslim infiltrators" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে. The Shillong Times. 13 August 2012. Retrieved 2 July 2013
  4. "How to share Assam"। Indian Express। ২৮ জুলাই ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১২ 
  5. "As Tensions in India Turn Deadly, Some Say Officials Ignored Warning Signs. Asia Pacific. 28 July 2012. Retrieved 2 July 2013
  6. Key facts about Assam violence ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ জুলাই ২০১২ তারিখে. hindustantimes.com. 26 July 2012. Retrieved 2 July 2013
  7. 'External elements' behind Assam violence: Govt. Zeenews.com, 6 August 2012. Retrieved 2 July 2013
  8. Demographic change and Assam violence ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে. The Pioneer.
  9. "Assam violence: Home Minister [Sushil kumar Shinde] to visit state on Monday – Top 10 developments"। NDTV। ২৮ জুলাই ২০১২। ২৮ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুলাই ২০১২ 
  10. "9 killed, curfew clamped in Kokrajhar"The Assam Tribune। ২১ জুলাই ২০১২। ৩ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১২ 
  11. "Assam violence: Four more bodies found, toll rises to 77"IBN। ৮ আগস্ট ২০১২। ২৬ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১২ 
  12. Sandeep Joshi; K. Balchand; Sushanta Talukdar (২৫ জুলাই ২০১২)। "Crack down on ring leaders, Centre tells Assam"The Hindu। Chennai, India। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১২ 
  13. "India's PM promises help to riot victims"। Al Jazeera। ২৮ জুলাই ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুলাই ২০১২ 
  14. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; out12 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  15. "Assam violence continues for fifth day, toll now 44"First Post। ২৭ জুলাই ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুলাই ২০১২ 
  16. "Under fire, Assam CM blames central govt"Hindustan Times। ২৭ জুলাই ২০১২। ২৮ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুলাই ২০১২ 
  17. "Assam violence: Home Minister Chidambaram to visit state on Monday – Top 10 developments"। NDTV.com। ২৯ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১২ 
  18. "Live: Advani loses vote on adjournment motion over Assam violence"। firstpost.com। ৮ আগস্ট ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১২ 
  19. "9 killed, curfew clamped in Kokrajhar"Assam Tribune। ২১ জুলাই ২০১২। ৩ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০১৩ 
  20. Bhaumik, Subir। "Assam violence reverberates across India"www.aljazeera.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-১৯ 
  21. Bhaumik, Subir (২০১২-০৭-২৬)। "What lies behind Assam violence? - BBC News"BBC News (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-১৯ 
  22. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; hindustantimes.com নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  23. "CBI Makes First Arrests in Assam Violence Case"The Outlook India। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১২। ২০ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১২ 
  24. "Assam cop triggered Bodoland riots: CBI - Times of India"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৯-২৪