কুলি (চলচ্চিত্র)
কুলি ১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশী বাংলা ভাষার প্রণয়ধর্মী হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র। ছায়াছবিটি পরিচালনা করেছেন মনতাজুর রহমান আকবর। হিন্দি ছায়াছবি কুলি নাম্বার ওয়ান অবলম্বনে ছায়াছবিটির কাহিনী লিখেছেন আবদুল্লাহ জহির বাবু এবং চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন পরিচালক মনতাজুর রহমান আকবর। একে সিদ্দিকের প্রযোজনায় ছায়াছবিটি পরিবেশিত হয় ফ্লেমিঙ্গো মুভিজের ব্যানারে। এতে নাম চরিত্রে অভিনয় করেছেন ওমর সানী।[৩] এছাড়া অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন সাদিকা পারভিন পপি, আমিন খান, সঙ্গীতা ও হুমায়ুন ফরীদি।[৪] এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় চিত্রনায়িকা পপির।[৫] ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা বাজেটের ছবিটি ৭ কোটি টাকা আয় করে।[২]
কুলি | |
---|---|
পরিচালক | মনতাজুর রহমান আকবর |
প্রযোজক | একে সিদ্দিক |
চিত্রনাট্যকার | মনতাজুর রহমান আকবর |
কাহিনিকার | আবদুল্লাহ জহির বাবু |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | আলম খান |
চিত্রগ্রাহক | লাল মোহাম্মদ |
সম্পাদক | আমজাদ হোসেন |
পরিবেশক | ফ্লেমিঙ্গো মুভিজ |
মুক্তি | ১৬ মে, ১৯৯৭ |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা ভাষা |
নির্মাণব্যয় | ৳ ১.২ কোটি |
আয় | ৳ ৭ কোটি[১][২] |
কাহিনী সংক্ষেপ
সম্পাদনাএকজন ধনী ও অহংকারী ব্যক্তি কেরামত আলী ব্যাপারী তার মেয়ের বিয়ের জন্য পাত্রের খোঁজ করছেন। ঘটক পাত্রের সন্ধান নিয়ে এলেও কারো বয়স বেশি, কারো নাম অনেক বড়, কারো আয় কম ইত্যাদি কারণে তার কোনটাই পছন্দ হয়। ঘটক রেগে বলে যান এত বাছবিছার করলে শেষ পর্যন্ত তার মেয়ের বিয়ে কোনো কুলির সাথে হবে এবং হয়ও তাই। ঘটক কুলি রাজুর মাকে পাত্রী দেখাতে গেলে রাজুর হাতে পরে কেরামতের মেয়ে পপির ছবি। ছবি দেখে পপিকে পছন্দ করে রাজু। রাজুর মা আর ঘটক কেরামতের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায়। কেরামত তাদের অনেক ধনী মনে করে খাতির যত্ন করে। কিন্তু সে যখন জানতে পারে পাত্র কুলি তখন সে অপমান করে ও ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাদের বের করে দেয়। সব শোনার পর রাজুর মধ্যে জেদ চাপে যেভাবেই হোক সে পপিকে বিয়ে করবে। রাজু এ ব্যাপারে তার বন্ধু বাবুর সাথে কথা বলে। বাবু তাকে পরামর্শ দেয় দেশের শীর্ষ ধনী জেড ইসলামের ছেলে বিজু ইসলামের ছদ্মবেশে কেরামতকে পটিয়ে তার মেয়েকে বিয়ে করার। পরদিন রাজু বিজু চৌধুরী এবং বাবু তার সহকারী হিসেবে কেরামত আলীর বাড়িতে গিয়ে আশয় নেয়। রাজু পপিকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এবার কেরামত তার প্রস্তাব মেনে নেয়। ধুমধাম করে তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু গোলমাল সাধে পপির মামা আসগর। সে তাদের সাথে শহরে আসতে চায়। বাধ্য হয়ে তাকে নিয়ে শহরে আসে। রাজু পপিকে জানায় তাকে বিয়ে করার জন্য তার বাবা তাকে ত্যাজ্য করেছে। তাই তারা জেড চৌধুরীর বিশাল অট্টালিকায় থাকতে পারবে না। তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসে ড্রাইভার বাবু। সে তার এক খালার বাসায় তাদের থাকার বন্দোবস্ত করে দেয়। রাজুকে থাকতে হয় বিজু চৌধুরীর ছদ্মবেশে। এবার বাঁধ সাধে কেরামত নিজেই শহরে এসে রাজুকে রেল স্টেশনে কুলিগিরি করা অবস্থায় পায়। সে রাজুকে একথা বলার পর আবার মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয় রাজুকে। সে জানায় স্টেশনে দেখা লোকটি তার জমজ ভাই। এভাবেই এক পর্যায়ে সব গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যায় কেরামত আলীর কাছে।[৬]
অভিনয়শিল্পী
সম্পাদনা- ওমর সানী - রাজু কুলি
- সাদিকা পারভিন পপি - পপি, রাজুর স্ত্রী
- আমিন খান - বাবু ড্রাইভার, রাজুর বন্ধু
- সঙ্গীতা - রূপা, পপির বোন
- হুমায়ুন ফরীদি - কেরামত আলী ব্যাপারী, পপির বাবা
- ডলি জহুর - রাজুর মা
- দিলদার - আসগর কেরামতের শ্যালক
- মর্জিনা - আসগরের স্ত্রী
- মিজু আহমেদ - বদরু, রেল স্টেশনের মাস্তান
- আনিসুর রহমান - ঘটক
- আলী আমজাদ - জনাব চৌধুরী
- সৈয়দ আক্তার আলী - বৃদ্ধ কুলি
- জাহানারা - পপির ফুফু
- ফরহাদ
মুক্তি
সম্পাদনাকুলি ছায়াছবিটি ১৯৯৭ সালে ১৬ মে ঈদুল ফিতরে মুক্তি পায় এবং ব্যবসাসফল হয়।[৭] ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা বাজেটের ছবিটি ৭ কোটি টাকা আয় করে।[২]
সঙ্গীত
সম্পাদনাছায়াছবিটির সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন আলম খান। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এন্ড্রু কিশোর, রুনা লায়লা, রিজিয়া পারভিন, ডলি সায়ন্তনী ও হুমায়ুন ফরীদি।
গানের তালিকা
সম্পাদনানং. | শিরোনাম | সুরকার | কণ্ঠশিল্পী | দৈর্ঘ্য |
---|---|---|---|---|
১. | "কুলি আমরা কুলি" | আলম খান | এন্ড্রু কিশোর | |
২. | "যারে ভালো লাগে যারে ভালোবাসি" | আলম খান | ডলি সায়ন্তনী ও এন্ড্রু কিশোর | ৫:০৩ |
৩. | "আকাশেতে লক্ষ তারা" | আলম খান | রিজিয়া পারভিন ও এন্ড্রু কিশোর | ৪:৫৫ |
৪. | "তোমার মনের রেল লাইনে" | আলম খান | এন্ড্রু কিশোর, রুনা লায়লা ও হুমায়ুন ফরীদি |
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "সিনেমার আয়-ব্যয় ও ফাঁকা বুলি"। kalerkantho.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৭-২৩।
- ↑ ক খ গ Sun, The Daily। "বাংলাদেশী সিনেমার ইতিহাসে সেরা আট ব্যবসাসফল ছবি | ডেইলি সান"। ডেইলি সান (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৬-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৭-০৪।
- ↑ কামরুজ্জামান মিলু (১৯ আগস্ট ২০১৬)। "ওমর সানীর চাওয়া"। দৈনিক মানবজমিন। ঢাকা, বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬।
- ↑ "পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা চলচ্চিত্র " কুলি ""। টিভি গাইড বাংলাদেশ। ঢাকা, বাংলাদেশ। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ রহমান মতি (মে ২৯, ২০১৬)। "পপি : একজন উজ্জ্বল ব্যতিক্রম"। বাংলা মুভি ডেটাবেজ। ঢাকা, বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬।
- ↑ "পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র: কুলি" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-১৮।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "উৎসবে আমার প্রথম সিনেমা"। দৈনিক সমকাল। ৩০ জুন ২০১৬। ১৩ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে কুলি (ইংরেজি)
- বাংলা মুভি ডেটাবেজে কুলি