কালীগ্রাম রথীন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউশন

নওগাঁ জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

কালীগ্রাম রথীন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশর নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়নে অবস্থিত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটি একটি হাইস্কুল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ করেছিলেন। তিনি নোবেল পুরস্কারে পাওয়া অর্থ দিয়ে হাইস্কুলটি নির্মাণ করেছিলেন।[১]

কালীগ্রাম রথীন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউশন
অবস্থান
মানচিত্র

স্থানাঙ্ক২৪°৩৬′৫৬.৭″ উত্তর ৮৯°০৫′১৬.১″ পূর্ব / ২৪.৬১৫৭৫০° উত্তর ৮৯.০৮৭৮০৬° পূর্ব / 24.615750; 89.087806
তথ্য
ধরনহাইস্কুল
প্রতিষ্ঠাকাল১৯৩৭; ৮৭ বছর আগে (1937)
প্রতিষ্ঠাতারবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বিদ্যালয় জেলানওগাঁ জেলা
ভাষাবাংলা
অন্তর্ভুক্তিরাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড

ইতিহাস সম্পাদনা

 
রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বাংলাদেশে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের তিনটি জমিদারি ছিল। সেগুলো হলঃ কুষ্টিয়া জেলার শিলাইদহে, সিরাজগঞ্জ জেলার শাহাজাদপুরে এবং নওগাঁ জেলার কালিগ্রামে। উতরাধিকার সূত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কালিগ্রামের জমিদারের দায়িত্ব পান।[২][৩]

১৮৯১ সালের ১৩ জুন জমিদারি দেখাশোনার জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কালিগ্রামে আসেন।[৪] ১৯৩৭ সালের ২৭ জুলাই শেষবার এইখানে আসেন।[৫] রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জমিদারি কাজ পরিচালনার জন্য অনেকবার আত্রাইয়ে কালিগ্রাম ইউনিয়নের পরিসর গ্রামে আসেন।[১][৬]

১৯৩৭ সালে কালীগ্রাম রথীন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউশন প্রতিষ্ঠিত করা হয়।[৭] রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলে রথীন্দ্রনাথের নামে হাইস্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।[৮] রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরষ্কারের প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে হাইস্কুলটি প্রতিষ্ঠিত করেছেন।[৫]

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুর পর তার পুত্র রথীন্দ্রনাথ উতরাধিকার সূত্রে জমিদারির দায়িত্ব পান। তিনি ১৯৪৫ সালের দিকে দাম্পত্য সঙ্গী প্রতিমা দেবীসহ কালিগ্রামে আসেন। নিজের নামে নির্মিত ইনস্টিটিউশনের প্রতি তার টান ছিল। তিনি সেই সময়ে শিক্ষক-ছাত্রদের সঙ্গে নিয়িমিত যোগাযোগ রাখতেন।[৯]

বিবরণ সম্পাদনা

কালীগ্রাম রথীন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউশন সেই সময়ে মাটি দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল।[৯] রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত এই হাইস্কুল। রবীন্দ্রনাথের দেওয়া আশীর্বাণী, চিঠি, প্রজাদের উদ্দেশ্যে দেওয়া তার শেষ ভাষণ, তার দেওয়া বিভিন্ন বই এই ইনস্টিটিউশন সংগ্রহিত করা আছে। এই প্রতিষ্ঠানে কালীগ্রামের শেষ জমিদার রবীন্দ্রনাথের পুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিঠি, রবীন্দ্রনাথের পুত্রবধূ প্রতিমা দেবীর চিঠিসহ রবীন্দ্রনাথের অনেক স্মৃতিস্মারক সংগ্রহ করা আছে।[৫][৯]

বর্তমান অবস্থা সম্পাদনা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে কালীগ্রাম রথীন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউশনে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।[১০] রবীন্দ্রনাথ স্মৃতিবিজড়িত মাটির ঘরগুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম চলমান আছে।[৫]

তবে কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে রবীন্দ্রনাথ স্মৃতিবিজড়িত একটি মাটির ঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে।[১১] যথাযথ কর্তৃপক্ষের সংরক্ষণের অভাবে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত অনেক নিদর্শন নষ্ট হবার পথে।[৫][৮][৯]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Prothom Alo | Most popular bangla daily newspaper"প্রথম আলো। ২৪ জানুয়ারী ২০১৩। ২০২০-০৬-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৪ 
  2. "পতিসরেই হোক বিশ্ববিদ্যালয়"সমকাল। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৪ 
  3. "নওগাঁর পতিসর কাছারিবাড়ী"বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৪ 
  4. "পতিসর কাচারী বাড়ির বণর্না"জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ২৪ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০২০ 
  5. "অনাদরে অবহেলায় রবীন্দ্রস্মৃতি"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৪ 
  6. "নওগাঁর পতিসরে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৮তম জন্মোৎসব"বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৪ 
  7. "আত্রাই উপজেলা"বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৪ 
  8. "কবিগুরুর স্মৃতির শিক্ষালয়"কালের কণ্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৪ 
  9. এম মতিউর রহমান মামুন (১৯ এপ্রিল ২০১৩)। "পতিসরে রবীন্দ্রচিহ্ন"দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৪ 
  10. "'রবীন্দ্রনাথ ছিলেন প্রজাদরদি'"NTV Online। ২০১৯-০৮-০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৪ 
  11. "কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত মাটির ঘর ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে"bangla.bdnews24.com। ২০২০-০৬-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৪