কালিহাতী উপজেলা
কালিহাতী উপজেলা বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। টাঙ্গাইল জেলা সদরের নিকটবর্তী এই উপজেলাটি পোড়াবাড়ীর চমচম ও তাঁতের শাড়ির জন্য বিখ্যাত।
কালিহাতী | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে কালিহাতী উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°২২′৫২″ উত্তর ৯০°০′৩১″ পূর্ব / ২৪.৩৮১১১° উত্তর ৯০.০০৮৬১° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | ঢাকা বিভাগ |
জেলা | টাঙ্গাইল জেলা |
সংসদীয় আসন | টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) |
সরকার | |
• সংসদ সদস্য | আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ / স্বতন্ত্র) |
আয়তন | |
• মোট | ৩০১.২২ বর্গকিমি (১১৬.৩০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০০১)[১] | |
• মোট | ৩,৭৬,৪০৭ |
• জনঘনত্ব | ১,২০০/বর্গকিমি (৩,২০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৫৮% [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ১৯৭০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৩০ ৯৩ ৪৭ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান ও আয়তন
সম্পাদনাকালিহাতী উপজেলার স্থানাঙ্ক ২৪°২৩′০০″ উত্তর ৯০°০০′৩০″ পূর্ব / ২৪.৩৮৩৩° উত্তর ৯০.০০৮৩° পূর্ব। কালিহাতি উপজেলার উত্তরে ভূঞাপুর উপজেলা ও ঘাটাইল উপজেলা, দক্ষিণে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা ও বাসাইল উপজেলা, পূর্বে সখিপুর উপজেলা, পশ্চিমে যমুনা নদী, সিরাজগঞ্জ জেলার সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা ও বেলকুচি উপজেলা।
ইতিহাস
সম্পাদনাকালিহাতী থানা গঠিত হয় ১৯২৮ সালে এবং থানাটিকে ১৯৮৩ সালে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়।[২] কালিহাতী উপজেলার কৃতি সন্তান সাহিত্যিক ডঃ আশরাফ সিদ্দিকীর লিখিত অভিমত অনুসারে কীল্লা-ই-হাতী এ শব্দটির অপভ্রংশ কালিহাতী। কালিহাতীসহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলসমূহ পাঠান শাসন আমলে থাকাকালে ঝিনাই নদী প্রকাশ ফটিকজানী নদীর তীরে অবস্থিত পুরাতন থানার স্থানে একটি সেনা ছাউনী বসানো হয়। সৈন্যদের ব্যবহারের জন্য ছিল অশ্ব এবং হাতী। তাই হাতীর কীল্লা বা কীল্লা-ই-হাতী নামে এ সেনা ছাউনী পরিচিতি লাভ করে। এ শব্দই কালক্রমে এ স্থানটির নামরূপে কালিহাতীতে পরিণত হয়। কালিহাতী সদরবাসীদের নামকরণের ব্যপারে অভিমত হল কালিহাতী সদরে অবস্থিত বর্তমান বৃহৎ কালী মন্দিরটি পার্শ্ববর্তী নদীর তীরে অবস্থিত ছিল। সংলগ্ন বর্তমান সাপ্তাহিক বৃহৎ হামিদপুর হাটটি শতাধিক বর্ষপূর্বে কালীর হাট নামে পরিচিত ছিল। ঐ সূত্রে স্থানটির নাম লোকমুখে হয় কালিহাটী। অবশেষে কালিহাটী রূপান্তরিত হয় কালিহাতীতে।[১]
ঐতিহ্য
সম্পাদনাকালিহাতী উপজেলায় প্রায় ৫০০০০টি তাঁত রয়েছে। অঞ্চলটি বল্লা তাঁতের শাড়ী বিখ্যাত। এছাড়া এখানে বাঁশশিল্প, বেতের কাজ, লৌহশিল্প, কাঠের কাজ, সেলাই কাজ, স্বর্ণশিল্প, বিড়ি তৈরি শিল্প প্রভৃতি রয়েছে। এই উপজেলায় বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পালকি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।[২]
শিল্প
সম্পাদনাকালিহাতী উপজেলায় রাইস মিল, ফ্লাওয়ার মিল, টিন ফ্যাক্টরি,বরফকল রয়েছে।[২]
উপজেলা প্রশাসন
সম্পাদনাবর্তমান কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বেগম রুমানা তানজিন অন্তরা। উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ আনছার আলী, ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আখতারুজ্জামান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিনা পারভীন।
প্রশাসনিক এলাকা
সম্পাদনাপৌরসভা ২টি-
কালিহাতী উপজেলায় মোট ১৩টি ইউনিয়ন রয়েছে। এগুলো হল-
জনসংখ্যার উপাত্ত
সম্পাদনাকালিহাতীর মোট জনসংখ্যা ৩৭৬৪০৭ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ১৯৩৯৬৭ জন এবং মহিলা ১৮২৪৪০ জন।
ধর্ম
সম্পাদনামোট জনসংখ্যার মধ্যে ৩৪৫৫৮৭ জন মুসলিম, ৩০৭৬৪ জন হিন্দু, ২৪ জন বৌদ্ধ এবং ৩২ জন অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।[২]
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
সম্পাদনাকালিহাতীর শিক্ষার হার ৩৭.৬%। শিক্ষিতদের মধ্যে পুরুষ ৪২.৩%, মহিলা ৩২.৭%। উপজেলায় ৮টি কলেজ, ৫২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩টি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ১৭০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১৯টি মাদ্রাসা রয়েছে। বঙ্গবন্ধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
কলেজসমূহ
সম্পাদনা- সরকারি শামসুল হক কলেজ
- বঙ্গবন্ধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
- কালিহাতী কলেজ
- লায়ন ফেরদৌস আলম ফিরোজ কলেজ
- আলাউদ্দিন সিদ্দিকী কলেজ
- লুৎফর রহমান মতিন মহিলা কলেজ
- নারান্দিয়া টি.আর.কে.এন স্কুল এন্ড কলেজ
- শহীদ শাহেদ হাজারী কলেজ
- যমুনা কলেজ, হাতিয়া
- আফাজ উদ্দিন কৃষি প্রশিক্ষণায়তন ও কলেজ
- হাজী আবু হাসেম টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ
- বল্লা করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ
মাধ্যমিক বিদ্যালয়
সম্পাদনা- মগড়া পালস্ ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়
- এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়
- (খিলদা উচ্চ বিদ্যালয়)
- (শহীদ জামাল উচ্চ বিদ্যালয়)
- করিমুননেছা সিদ্দিকী উচ্চ বিদ্যালয়
- কালিহাতী আর. এস. সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়
- কালিহাতি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- রাজাফৈর উচ্চ বিদ্যালয়
- চারান উচ্চ বিদ্যালয়
- বল্লা করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয়
- ফেরদৌস আলম ফিরোজ উচ্চ বিদ্যালয়
- ভোকেশনাল টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট
- ইছাপুর শের-ই বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়
- বেড়ীপটল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়
- কোকডহরা উচ্চ বিদ্যালয়
- মহেলা রাবেয়া সিরাজ উচ্চ বিদ্যালয়।
- গোপাল দিঘী কে.পি.ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়।
- ভরসরাই উচ্চ বিদ্যালয়।
- ফুলতলা উচ্চ বিদ্যালয়।
- পটল উচ্চ বিদ্যালয়।
প্রাথমিক বিদ্যালয়
সম্পাদনা৫৮ নং ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
ফুলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
রানী হাঁটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
জয়নাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
খরুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
বানিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
হাসড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
৮১নং বলধী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- ৫৪ নং বেতডোবা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- ২২ নং চিনামড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- ১ নং কদিমহামজানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- সহদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- বিয়ারা মারুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- চাটি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- ৫৬নং দ্বিমুখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- ঘুণি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- সাতুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- ১০ নং বেড়ীপটল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- ১১৪ নং হাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- কোকডহরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- ২৪ নং ফটিকজানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯৩৭)
- ৬৬ নং বানকিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- ৬৭ নং গোপাল দিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৫ জানুয়ারি ১৯১৭)
- কালোহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
- ৯০ নং ভন্ডেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
- ৮৬নং আটাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
অর্থনীতি
সম্পাদনাজনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি। কালিহাতী উপজেলার অর্থনীতি নিম্নোক্ত খাতের উপর নির্ভর করে-
- কৃষি (৪৬.৭৫%)
- অকৃষি শ্রমিক (৩.৭৩%)
- শিল্প (২.২১%)
- ব্যবসা (১৫.৫৩%)
- পরিবহন ও যোগাযোগ (৩.৫৩%)
- চাকরি (৬.২০%)
- নির্মাণ (১.২৪%)
- ধর্মীয় সেবা (০.২০%)
- রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স (২.৯০%)
- অন্যান্য (১৭.৭১%)
পণ্য
সম্পাদনাপ্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, সরিষা, আলু, বেগুন, পিঁয়াজ, আদা, রসুন, ডাল, শাকসবজি। উপজেলার প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, জাম, লিচু, কলা, পেঁপে, তরমুজ। তাছাড়াও এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগির খামার ও হ্যাচারি রয়েছে। উপজেলাটির প্রধান রপ্তানিদ্রব্য কলা, পিঁয়াজ, রসুন, আলু, পেঁপে, আদা, কাঁঠাল।
কৃষিভূমির মালিকানা
সম্পাদনাকৃষি শ্রমিকদের মধ্যে ভূমিমালিক ৫৬.৬৯%, ভূমিহীন ৪৩.৩১%। শহরে ৪৫.১১% এবং গ্রামে ৫৭.৮০% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।[২]
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
সম্পাদনা- মির্জা মাজহারুল ইসলাম - ভাষা সৈনিক
- কানাইলাল নিয়োগী - বাংলা ভাষা আন্দোলনের (বরাক উপত্যকা) শহীদ
- বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী
- আব্দুল কাদের সিদ্দিকী
- আবদুল হামিদ চৌধুরী - পূর্ব পাকিস্তান গণ পরিষদের স্পিকার
- আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী - সাবেক এমপি ও মন্ত্রী
- শাজাহান সিরাজ - সাবেক এমপি ও মন্ত্রী, স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠক
- আশরাফ সিদ্দিকী - লেখক, কবি ও ঔপন্যাসিক
- আবুল হাসান চৌধুরী - সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
- মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম
- নরেশচন্দ্র সেনগুপ্ত - বাঙালি আইনজীবী, অধ্যাপক এবং প্রগতিশীল সাহিত্যিক ছিলেন।
- দেবেশ ভট্টাচার্য - একজন বাংলাদেশী মানবাধিকার কর্মী, আইনজীবী ও বিচারপতি।
- চিত্রা ভট্টাচার্য- ১৯৯৬-২০০১ সময়কালে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ছিলেন।
- দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য- বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গণনীতি বিশ্লেষক।
- সৈয়দ মোহাম্মদ আসলাম তালুকদার (মঞ্চনাম মান্না হিসাবেই অধিক পরিচিত) - বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা ও প্রযোজক।
মুক্তিযুদ্ধে অবদান
সম্পাদনা১৯৭১ সালে ১৯ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের লড়াইয়ে ১ জন মেজরসহ প্রায় ৩৫০ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং ১১ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১০ ডিসেম্বর ভারতীয় ছত্রী সেনাদের আক্রমণে ৩৭০ জন পাকসেনা নিহত, শতাধিক আহত ও প্রায় ৬০০ জন বন্দি হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে ছাত্ররা যদি অগ্রদূতের ভূমিকা পালন করে থাকে তবে তাদের নেতৃত্বের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু ছিল স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ বই পরিষদের চার নেতা আ. স. ম. আবদুর রব, আবদুল কুদ্দুস মাখন, নুরে আলম সিদ্দিকী ও শাহাজাহান সিরাজ। ১৯৯৭ সালের ৩ মার্চ পল্টনের জনসভায় উপস্থিত হয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের ঘোষণা ও কর্মসূচি উপস্থাপন করেন। ঘোষণাটি পাঠ করেন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে শাজাহান সিরাজ যিনিও একজন কালিহাতীর সন্তান। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে যাদের অবদান ছিল অতুলনীয়। তারা হলেন আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী ও নাম না জানা আরও অনেকে। তাঁরা সবাই ছিলেন কালিহাতীর সন্তান।
দর্শনীয় স্থান
সম্পাদনা- যমুনা বহুমুখী সেতু
- বঙ্গবন্ধু সেতু রিসার্চ
- এলেংগা রিসোর্ট
- বঙ্গবন্ধু সেনানিবাস
- পুরনো জমিদার বাড়ি
- কালিহাতি পার্ক
- এলেংগা জমিদার বাড়ি
- বঙ্গবন্ধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (ছয় দফা চত্বর, বিজয় একাত্তর, চরকা)
সরকারী পরিষেবা
সম্পাদনাবিদ্যুৎ ব্যবহার
সম্পাদনাএ উপজেলার সবকটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে মাত্র ৪০.৪২% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয় জল
সম্পাদনাপানীয়জলের উৎস হিসাবে নলকূপ ৯৩.৫৪%, পুকুর ০.১৬%, ট্যাপ ০.৬১% এবং অন্যান্য ৫.৬৯% ব্যবহার করা হয়।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা
সম্পাদনাএ উপজেলার ৩৭.৯৪% (গ্রামে ৩৬.৪৬% ও শহরে ৫৩.৩৬%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৯.৮১% (গ্রামে ৫১.৫৮% ও শহরে ৩১.৩২%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ১২.২৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
প্রত্নতত্ত্বিক নিদর্শন
সম্পাদনা- আশরাফিয়া জামে মসজিদ (ফুলতলা)
- কদিমহামজানি জামে মসজিদ (সাল্লা)
- পাছ চারান জামে মসজিদ (পাছ চারান)
- এলেঙ্গা জমিদার বাড়ি (এলেঙ্গা)
ভাষা ও সংস্কৃতি
সম্পাদনাইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ জনপদ কালিহাতী উপজেলা আবহমান বাংলার স্বরূপ তুলে ধরে। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয় জীবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে কালিহাতী দৃশ্যমান। কালিহাতী উপজেলার ভূ-প্রকৃতি ও ভৌগোলিক অবস্থান এই উপজেলার মানুষের ভাষা ও সংস্কৃতিগঠনে ভূমিকা রেখেছে।[১]
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান
সম্পাদনাকালিহাতী উপজেলায় ৪টি লাইব্রেরি, ১৮৯টি ক্লাব, ৫টি থিয়েটার গ্রুপ, ১০টি সিনেমা হল, ২২টি মহিলা সমিতি, ৩৪টি খেলার মাঠ, ৩টি সংগীত একাডেমি, ৬টি সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে।[২]
নদ-নদী
সম্পাদনাধলেশ্বরী নদী গোহালিয়াবাড়ী ও দুর্গাপুর ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। প্রতিবছর অনেক ঘরবাড়ী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ফলে এই দুই ইউনিয়নের জনসাধরন ব্যপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। কালিহাতী উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত উল্লেখযোগ্য নদীসমূহ হল-
যোগাযোগ মাধ্যম
সম্পাদনাটাঙ্গাইল থেকে কালিহাতীর দুরত্ব মাত্র ২০ কি.মি.। অতি সহজে টাঙ্গাইল নতুন বাসস্টান্ড থেকে জামালপুর, গোপালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ রোডে যাতায়াত করে সে সকল বাসে কালিহাতী আসা যায়। এছাড়া সিএনজি যোগেও কালিহাতি আসা যায়।
সড়ক ব্যবস্থা
সম্পাদনাউপজেলায় ১৩০.৮১ কিমি পাকারাস্তা এবং ১১৩.২৯ কিমি কাঁচারাস্তা রয়েছে।
সড়ক | পাকা | কিমি | কাঁচা | কিমি |
---|---|---|---|---|
মহা সড়ক | পাকা | ১৯.০০ | ||
উপজেলা সড়ক | পাকা | ৮১.৪৭ | কাঁচা | ৩১.১৪ |
ইউনিয়ন সড়ক | পাকা | ৩০.৩৪ | কাঁচা | ৮২.১৫ |
গ্রামের রাস্তা- এ ক্লাস | পাকা | ২৫.৮৯ | কাঁচা | ২৯৯.৫৩ |
গ্রামের রাস্তা- বি ক্লাস | পাকা | ২.৫০ | কাঁচা | ১২৪.৮৭ |
খেলাধুলা ও বিনোদন
সম্পাদনাপ্রাচীনকাল থেকেই কালিহাতী উপজেলার জনেগাষ্ঠী ক্রীড়ামোদী। এখানে প্রতিবছরই বিভিন্ন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। এখানকার জনপ্রিয় খেলার মধ্যে বর্তমানে ক্রিকেট ও ফুটবলের আধিপত্য দেখা গেলেও অন্যান্য খেলাও পিছিয়ে নেই। কালিহাতীতে বেশ কয়েকটি খেলার মাঠ রয়েছে। এর মধ্যে কালিহাতী আরএস পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়,কালিহাতী এবং শামছুল হক কলেজ, এলেঙ্গা-শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। প্রতি বছর এ খেলার মাঠে ক্রিকেট ও ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।[২]
হোটেল ও আবাসন
সম্পাদনাবেসরকারী
সম্পাদনা- বঙ্গবন্ধু সেতু রিসোর্ট লিমিটেড
- বঙ্গবন্ধু সেতু রিসোর্ট প্রতিষ্ঠানটি টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী থানাধীন গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়নের যমুনা সেতু পূর্বপাড়ে অবস্থিত। এখানে যাতায়াত ব্যবস্থা ভাল বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব রেলস্টেশন বিদ্যমান বাস, মাইক্রো, অটো, সিএনজি এবং মোটর সাইকেলসহ সকল ধরনের যান চলাচল ব্যবস্থা আছে।
- এলেঙ্গা রিসোর্ট লিমিটেড (বিরতি) প্রতিষ্ঠানটি কালিহাতী থানাধীন এলেঙ্গা পৌরসভার এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত রিসোর্টের পাশেই রয়েছে ঢাকা-টাঙ্গাইল চার লোনের রাস্তা।
সরকারি
সম্পাদনা- কালিহাতী ডাকবাংলো, জেলা পরিষদ, টাঙ্গাইল।
- কালিহাতী রেস্ট হাউজ, বনবিভাগ, কালিহাতী, টাঙ্গাইল।
প্রাকৃতিক দূর্যোগ
সম্পাদনা১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলার বহু লোক প্রাণ হারায়। ১৯৯৬ সালে টর্নোডোতে এ উপজেলার ৫২৩ জন প্রাণ হারায়, ৩০ হাজার লোক আহত হয় এবং ৬৭ টি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে যায়।
গণমাধ্যম
সম্পাদনাস্বাস্থ্যসেবা
সম্পাদনাউপজেলায় একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ১১টি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র, ২টি বেসরকারি স্বাস্থ্য ও দাতব্য চিকিৎসালয়, ১০টি মাতৃমঙ্গল ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র এবং ৫২টি ক্লিনিক রয়েছে।
সামাজিক সেবাপ্রতিষ্ঠান
সম্পাদনাকালীহাতি উপজেলায় নিম্নোক্ত এনজিও কাজ করে থাকে-
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে কালিহাতী"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৪ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৫।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ শ্যামল চন্দ্র নাথ, সম্পাদক (১২ আগস্ট ২০১৪)। "কালিহাতি উপজেলা"। বাংলাপিডিয়া। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯।