লোপেন কারমা ফুনশো একজন ভুটানি পণ্ডিত যিনি বৌদ্ধধর্ম, তিব্বত ও হিমালয়ান স্টাডিজ এবং ভুটান বিষয়ক বিশেষজ্ঞ। এই পর্যন্ত তার আটটি বই, অনুবাদগ্রন্থ, বইয়ের পর্যালোচনা এবং বৌদ্ধধর্ম, ভুটান এবং তিব্বত স্টাডিজ সম্পর্কিত নিবন্ধ সহ বেশ কয়েকটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে। তার টি হিস্ট্রি অফ ভুটান বইটিকে "ইংরেজিতে ভুটানের ব্যাপক ইতিহাস প্রদানকারী প্রথম বই" বলা হয়েছে এবং ২০১৫ সালে চয়েস আউটস্ট্যান্ডিং একাডেমিক টাইটেল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে।

কারমা ফুনশো
জন্ম
উরা, বুমথাং, ভুটান
জাতীয়তাভুটানি
পরিচিতির কারণবৌদ্ধ পণ্ডিত, ইতিহাসবিদ, সমাজকর্মী এবং লোডেন ফাউন্ডেশন এবং শেজুন এর প্রতিষ্ঠাতা

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

তিনি মধ্য ভুটানের বুমথাং জেলার উরা নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার মায়ের তৃতীয় সন্তান হিসাবে মায়ের বাড়ি তোথচুকপো হাউসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার মা গাডেন লাম পরিবারের একজন বংশোদ্ভুত যা ফাজো ড্রুকগোম ঝিগপো নামক একজন পুরোহিতের দ্বারা উৎপত্তি হয়। এই পুরোহিত পশ্চিম ভুটানে তিব্বতি বৌদ্ধধর্মে দ্রুকপা কাগ্যু ঐতিহ্য নিয়ে আসেন। কারমা তার পিতার কাছ থেকে প্রাথমিক চোকি বর্ণমালা এবং প্রার্থনা শিখেছিলেন। তারা পিতা একজন পরিগ্রহকারী পুরোহিত এবং সাকালিং চোজে পরিবারের কৃষক ছিলেন। তিনি তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত উরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। যেহেতু ঐ স্কুলে চতুর্থ শ্রেণী ছিল না এবং তিনি দূরের স্কুলে যাতায়াতের জন্য যথেষ্ট বড় ছিলেন না, তাই তার বাবা-মা তাকে উরাতে রাখার জন্য এবং তার জন্য তৃতীয় শ্রেণি পুনরাবৃত্তি করার জন্য প্রধান শিক্ষকের কাছে অনুরোধ করেছিলেন। পরের বছর, তিনি কয়েকজন বন্ধুর সাথে জাকার স্কুলে ভর্তি হন। নতুন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ভুল করে কারমাকে আবার তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি করান। কারমা মাঝে মাঝে মজা করে বলেন যে তিনিই সম্ভবত একমাত্র ব্যক্তি যিনি তিন বছর তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করেছেন এবং তিনবারই প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন। কারমা তার স্কুলের শীতকালীন ছুটির বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছেন পার্শ্ববর্তী জেলা লুন্টসেতে পরিবারের গরু পালনকারীদের সাহায্য করার জন্য। ১৯৮৬ সালে, তিনি থিম্পুতে এসেছিলেন এবং ইয়াংচেনফুগ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একটি সংক্ষিপ্ত কোর্স করেন এবং স্কুল ছাড়ার আগে সন্ন্যাসী হয়েছিলেন এবং চাগরি মঠে বৌদ্ধধর্ম অধ্যয়ন করেছিলেন। পরে তিনি সেরা মঠে এক বছর পড়াশোনা করার জন্য দক্ষিণ ভারতে যান তারপর এনগাগিউ এর নাইংমা ইনস্টিটিউটে দশ বছর কাটান। ১৯৯৪ সাল থেকে তিনি বৌদ্ধধর্ম এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি বিভিন্ন স্থানে শিখিয়ে যাচ্ছেন এবং বাইলাকুপ্পের এনগাগিউ নাইংমা ইনস্টিটিউটে একজন প্রভাষক এবং হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালার শুগসেব নানারিতে দুই বছর ধরে একজন মঠাধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করেছেন[১][২]

শিক্ষা সম্পাদনা

১৯৯৭ সালে তিনি অনুধাবন করেন যে ইংরেজিতে শিক্ষিত তরুণ ভুটানিরা সন্ন্যাসীদের কিছুটা অবজ্ঞা করে যদিও সন্ন্যাসীরা স্বশিক্ষিত[৩]। ফলে তিনি ব্যালিওল কলেজ অক্সফোর্ডে যোগ দেন এবং রিচার্ড গমব্রিচ, সেফোর্ট রুয়েগ এবং মাইকেল অ্যারিসের অধীনে সংস্কৃত এবং ধ্রুপদী ভারতীয় ধর্মে এম.এস.টি ডিগ্রী অর্জন করেন। ২০০৩ সালে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বৌদ্ধধর্ম অধ্যয়নে ডি.ফিল ডিগ্রী লাভ করেন[৪]। তিনি সিএনআরএস, প্যারিস-এ একজন পোস্ট-ডক্টরাল গবেষক হিসেবে এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক নৃতত্ত্ব বিভাগে গবেষণা সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন। এছাড়াও তিনি ক্লেয়ার হলের তুলনামূলক ধর্মের স্পাল্ডিং ফেলো ছিলেন এবং ভুটান প্রকল্পে প্যাড গ্লিং ঐতিহ্যের ঐতিহাসিক অধ্যয়ন করেন এবং ডকুমেন্টেশন পরিচালনা করেছিলেন এবং পরবর্তীকালে তিনি বিরল ভুটানি পাণ্ডুলিপিগুলির একটি ডিজিটাল সংরক্ষণাগার তৈরি করতে কয়েক বছর অনেক পরিশ্রম করেন। ডঃ ফুনশো হলেন প্রথম ভুটানি যিনি অক্সফোর্ড থেকে ডি.ফিল ডিগ্রী পেয়েছেন এবং তিনি প্রথম ভুটানি অক্সব্রিজ ফেলো। ভুটানে তিনি লোডেন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছেন, যা ভুটানে শিক্ষা এবং উদ্যোক্তাদের প্রচারের জন্য একটি দাতব্য সংস্থা হিসেবে কাজ করে এছাড়াও ভুটানের সাংস্কৃতিক ডকুমেন্টেশন এবং গবেষণার জন্য তার প্রতিষ্ঠিত ড়ড়সেজুন এজেন্সি]] নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Karma Phuntsho"Rangjung Yeshe Wiki। Tsadra Foundation। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-১১-১৭ 
  2. "Karma Phuntsho: Curriculum Vitae" (পিডিএফ)academia.edu। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-১১-১৮ 
  3. "A Buddhist practitioner who set up The Loden Foundation, Karma Phuntsho believes that Bhutanese society must now be more ethically driven (Interview)"The Raven। ২০১৩-০৩-০৮। ২০১৪-১১-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২৩ 
  4. "About Dr. Karma Phuntsho"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-১১-১৭