কাতলাসেন কাদেরিয়া কামিল মাদ্রাসা

কাতলাসেন কাদেরিয়া কামিল (এম.এ) মাদ্রাসা (ইংরেজি: Katlasen Kaderia Kamil Madrasah) ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ জেলার সদর উপজেলায় অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী আলিয়া মাদ্রাসা। এটি বাংলাদেশের সকল আলিয়া মাদ্রাসাসমূহের মধ্যে অন্যতম প্রাচীন বিদ্যাপিঠ, এটি ১৮৯০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। এটি বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড অনুমোধিত ময়মনসিংহ জেলার অন্যতম প্রাচীন মাদ্রাসা।

কাতলাসেন কাদেরিয়া কামিল মাদরাসা
স্থাপিত১৭৮০ খ্রিস্টাব্দ
অধিভুক্তিবাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ (২০০৬- ২০১৬)
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৬- বর্তমান)
অধ্যক্ষমো. দেলোয়ার হোসেন
মাদ্রাসা কোড১১৮৯৮
ঠিকানা
ভাষাআরবী, বাংলা, ইংরেজি
EIIN111891
সংক্ষিপ্ত নামকাতলাসেন মাদ্রাসা

অবস্থান

সম্পাদনা

কাতলাসেন মাদ্রাসাটি ময়মনসিংহ ও ফুলবাড়িয়া সড়কের পার্শ্বে কাতলাসেন বাজারে অবস্থিত। বর্তমানে শিশু শ্রেণি থেকে কামিল পর্যন্ত এই মাদ্রাসায় পাঠদান করানো হয়। সারা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা শিক্ষার্থীরা এখানে শিক্ষা লাভ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন বিষয়ে অবদান রাখছে।

ইতিহাস

সম্পাদনা

কাতলাসেন কাদেরিয়া কামিল মাদরাসাটি ময়মনসিংহ জেলার সদর, থানার ১০নং দাপুনিয়া ইউনিয়নের কাতলাসেন গ্রামে কোলাহল মুক্ত এক মনোরম পরিবেশে মরহুম আব্দুল কাদের বক্স সরকার ১৮৯০ খ্রিঃ প্রতিষ্ঠা করেন। মাদরাসার নামই তাঁর স্মৃতি বহন করছে। ময়মনসিংহ থেকে ফুলবাড়ীয়া রাস্তটি নির্মিত হবার সাথে সাথেই এখানে একটি বাজার বাসনো হয় । বাজারটি কাদেরগঞ্জ হাট নামে পরিচিত ছিল। এখানে প্রথমে একটি মডেল স্কুল স্থাপিত হয়। স্কুলটি পার্শ্বের খেরুয়াজানী গ্রামে স্থানান্তরিত হওয়ার পর দানবীর আব্দুল কাদের বক্স সরকার এলাকার কতিপয় সম্ভ্রান্ত ধর্মপরায়ণ ও মহৎ ব্যাক্তির সহযোগীতায় প্রথমে পরিত্যাক্ত স্কুল গৃহে মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন । কুমিল্লা নিবাসী মরহুম মাওঃ আশরাফ আলী সাহেব মাদরাসার প্রধান শিক্ষক নিযুক্ত হন। প্রায় তিন যুগ ধরে মাদরাসাটি কওমী মাদরাসা হিসেবে চলছিল। এ সময়ে প্রতিষ্ঠাতা ও মাদরাসা কামিটির সেক্রেটারী মরহুম আবদুল কাদের বক্স সরকার ধর্মীয় শিক্ষার সাথে ইংরেজী ও গণিত শিক্ষার একান্ত প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে আলিয়া নেছাব খোলার করেন। এতে মতবিরোধ দেখা দেয় । পরে মাওঃ আব্দুল হাকিম কে মাদরাসা প্রধান নিযুক্ত করা হয় এবং আলিয়া নেছাব চালু করা হয়। কিছু দিন পরে মাওঃ আলীম উদ্দিন কে মাদরাসা প্রধান নিযুক্ত হন এবং তিনি নিষ্ঠার সাথে প্রায় ৩০(ত্রিশ) বছর মাদরাসা পরিচালনা করে। এ সময়ে তার অনেক সুযোগ্য সহকর্মী আবির্ভাব ঘটে। এদের মধ্যে স্থানীয় মৌলবী আব্দুল ওয়াহিদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও নিরলস প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠানটি উন্নতি লাভ করতে থাকে। ফলে প্রতিষ্ঠানটি মোমেনশাহী জেলার অন্যতম মাদরাসা হিসেবে খ্যাতি লাভ করতে থাকে এবং ১৯২৭ খ্রিঃ আলিম শ্রেণী পযর্ন্ত স্বীকৃতি লাভ করে। প্রতি বছরের বোর্ড পরীক্ষার ফলাফল অত্যন্ত ভাল হতে থাকায় ১৯৩৭ সালে প্রতিষ্ঠানটি ফাযিল শ্রেণীর মুঞ্জুরী লাভ করে। মরহুম আলিমুদ্দিন সাহেবের বিদায়ের পর ঢাকা নিবাসী মাওঃ হাবিবুল্লাহ খান রাহমানী প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। মাওঃ হাবিবুল্লাহ খান রাহমানী বিদায় নিলে স্থানীয় আলেম মাওঃ আব্দুস সামাদ সাহেব প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনি সে সময়ে ছিলেন দেশের উচ্চ মানের আলেমদের একজন। তিনি অত্যন্ত দূরদর্শিতার সাথে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে থাকেন। তাঁর সময়েই প্রতিষ্ঠানটি প্রভূত উন্নতি লাভ করে। প্রতিষ্ঠানের ততকালীন সেক্রেটারী মোবারক আলী সরকার সাহেবের সুযোগ্য পুত্র মোয়াজ্জম হোসাইন সহকারী শিক্ষক কাম হিসাব রক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। তখন প্রিন্সিপাল আব্দুস সামাদ সাহেব ও মোয়াজ্জম হোসেনের উপর প্রতিষ্ঠানটির পুনঃ নির্মাণের দায়িত্ব অর্পিত হয়। ১৯৫৭ সনে শ্রেণী কক্ষের জন্য একটি বৃহৎ দালান নির্মাণ করেন এবং সে বছরই প্রতিষ্ঠানটি কামিল ( হাদিস) ডিগ্রীতে উন্নীত হয়। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৭৬ সনে আলিম শ্রেণীতে বিজ্ঞান বিভাগ খোলার অনুমতি লাভ করে। সুনাম ও দক্ষতার সাথে চলতে চলতে ১৯৯০ সনে প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা বিভাগের শ্রেষ্ঠ মাদরাসা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। আজও রেখে যাচ্ছে শিক্ষা ক্ষেত্রে অতুলনীয় অবদান ।

https://111891.ebmeb.gov.bd/99500/mad-result.html

শিক্ষা কার্যক্রম

সম্পাদনা

কাতলাসেন মাদ্রাসার দাখিল ও আলিম শ্রেণীর জন্য বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের অন্তর্ভুক্ত। এবং উচ্চ শিক্ষা ফাজিল ও কামিলের জন্য ২০১৬ সাল থেকে বর্তমানে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত, তবে এই মাদ্রাসাটি ২০০৬ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত ছিলো।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা