কাঙ্গালিনী সুফিয়া
কাঙ্গালিনী সুফিয়া (প্রকৃত নামঃ টুনি হালদার; জন্মঃ ১৯৬১) বাংলাদেশের একজন প্রসিদ্ধ লোকসঙ্গীত শিল্পী।[১][২] কোনবা পথে নিতাইগঞ্জে যাই, পরাণের বান্ধব রে, বুড়ি হইলাম তোর কারণে, নারীর কাছে কেউ যায় না, আমার ভাঁটি গাঙের নাইয়া প্রভৃতি গানের জন্য তিনি বিখ্যাত।[৩][৪]
কাঙ্গালিনী সুফিয়া | |
---|---|
প্রাথমিক তথ্য | |
জন্মনাম | টুনি হালদার |
জন্ম | ১৯৬১ (বয়স ৬২–৬৩) রামদিয়া, বালিয়াকান্দি উপজেলা, রাজবাড়ী জেলা |
ধরন | লালন গীতি, লোকসঙ্গীত, বাউল |
পেশা | সঙ্গীত শিল্পী |
বাদ্যযন্ত্র | একতারা |
কার্যকাল | ১৯৭৫-বর্তমান |
জন্ম ও শৈশবকাল
সম্পাদনাকাঙ্গালিনী সুফিয়া ১৯৬১ সালে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার রামদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[১] তার প্রকৃত নাম ছিল টুনি হালদার। বাবার নাম খোকন হালদার ও মা টুলু হালদার।
সঙ্গীত জীবন
সম্পাদনাগ্রাম্য একটি গানের অনুষ্ঠানে ১৪ বছর বয়সে তিনি তার সঙ্গীত জীবন শুরু করেন। মাত্র ১৫ বছর বয়সে সুধির হালদার নামের একজন বাউলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়, যদিও সে বিয়ে বেশিদিন টেকেনি।[১] ওস্তাদ হালিম বয়াতির শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন ১৯৭৮ সালে। সে সময় তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে সুফিয়া খাতুন নাম ধারণ করেন।[১][৫] তার গুরু দেবেন থাপা, গৌর মোহন্ত। তার প্রিয় শিল্পী লালন ফকির, আব্দুল আলীম।
সুফিয়ার মোট রচিত গানের সংখ্যা প্রায় ৫০০। তিনি রাজ সিংহাসন চলচ্চিত্রে প্রথম কণ্ঠ দেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, চীন, ভারতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
কাঙ্গালিনী উপাধি
সম্পাদনাবাংলাদেশ বেতারের সাবেক পরিচালক ফজল-এ-খোদা একদিন হাইকোর্টের মাজারে কাঙালিনী সুফিয়াকে গাইতে দেখেন। তিনি কাঙালিনী সুফিয়াকে বেতারে আসার আমন্ত্রণ জানান। তিনি ছিলেন সেময় পথগায়ক। কাঙালিনী সুফিয়া নিজে বলেছেন যে, প্রথম সুধী সমাজে তাঁকে পরিচিত করান কবি ফজল-এ-খোদা।[৬] বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সাবেক ডিজি মুস্তাফা মনোয়ার তাকে কাঙ্গালিনী উপাধি প্রদান করেন। তারপর থেকে তিনি সুফিয়া খাতুন থেকে দেশব্যাপী কাঙ্গালিনী সুফিয়া নামে পরিচিত হন।
অভিনয়
সম্পাদনাকাঙ্গালিনী সুফিয়া দেয়াল, নোনাজলের গল্প প্রভৃতি নাটকে অভিনয় করেন। উল্লেখ্য নোনাজলের গল্প বুড়ি হইলাম তোর কারণে গানটি অবলম্বনে নির্মিত হয় যেখানে সুফিয়া প্রধান চরিত্রে একজন বাউলের ভূমিকায় অভিনয় করেন।[১] এছাড়াও তিনি ১৯৯৭ সালে বুকের ভেতর আগুন নামে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।[৭]
পুরস্কার
সম্পাদনাসংগীতে তিনি প্রায় ৩০টি জাতীয় ও ১০টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করে।[১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ হাবিব, সোহেল (২০১৩-১০-০৩)। "সংবর্ধিত হলেন বাউল শিল্পী কাঙ্গালিনী সুফিয়া"। দৈনিক ইত্তেফাক। ঢাকা। ১০ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৩-১০।
- ↑ শাহনাওয়াজ, এ কে এম (২০১৪-০৩-২৭)। "স্বাধীনতা এবং একজন কাঙ্গালিনী সুফিয়া"। দৈনিক কালের কণ্ঠ। ঢাকা। ২০১৫-০৩-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৩-১০।
- ↑ বাসার, শেখ। "কাঙ্গালিনী সুফিয়ার চলাচলের পথ বন্ধ করলো প্রভাবশালীরা"। ২০১৫-০৩-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৩-১০।
- ↑ "ঢাকায় আসলে কাঙ্গালিনী সুফিয়াকে দেখতে যাবেন প্রসেনজিৎ"। mediamail24। ২০১৩-০৮-২৪। ২৭ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৩-১০।
- ↑ "অন্তঃসত্ত্বা কাঙ্গালিনী সুফিয়াকে বস্তাবন্দী করে ফেলা হয়েছিল নদীতে"।
- ↑ "অন্তঃসত্ত্বা কাঙ্গালিনী সুফিয়াকে বস্তাবন্দী করে ফেলা হয়েছিল নদীতে"। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-০৭।
- ↑ "বুকের ভেতর আগুন প্রধান অভিনেতা - অভিনেত্রী"। বাংলা মুভি ডেটাবেজ। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৫।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- বিএমডিবিতে প্রোফাইল।
- আমি একের মধ্যেই আছি : কাঙ্গালিনী সুফিয়া, ৩১ জানুয়ারি ২০১৪-এ দৈনিক আজাদীতে প্রকাশিত সাক্ষাৎকার।