কস্তুরবা গান্ধী

ব্রিটিশ যুগের একজন ভারতীয় নেতা মহাত্মা গান্ধীর স্ত্রী

কস্তুরবাঈ "কস্তুরবা" মোহনদাস গান্ধী ( শুনতে জন্ম: কস্তুরবাই মখনজি কাপাডিয়া (১১ এপ্রিল ১৮৬৯ – ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৪) ছিলেন একজন ভারতীয় রাজনৈতিক কর্মী এবং মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর স্ত্রী। তিনি তার স্বামী এবং সন্তানের সঙ্গে ব্রিটিশ শাসিত ভারতে স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। তিনি তার স্বামী মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী অথবা মহাত্মা গান্ধী দ্বারা অত্যন্ত প্রভাবিত হয়েছিলেন।

কস্তুরবাঈ মোহনদাস গান্ধী
Kasturbai Mohandas Gandhi
কস্তুরবা গান্ধী
জন্ম
কস্তুরবাঈ মখনজি কাপাডিয়া

(১৮৬৯-০৪-১১)১১ এপ্রিল ১৮৬৯
মৃত্যু২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৪(1944-02-22) (বয়স ৭৪)
আগা খান প্যালেস, পুনা, বোম্বে অধিরাজ্য, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান-সময় পুনে, মহারাষ্ট্র, ভারত)
অন্যান্য নামকস্তুরবা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী
কস্তুরবা মখনজি কাপাডিয়া
পেশাকর্মী
দাম্পত্য সঙ্গীমহাত্মা গান্ধী (বি. ১৮৮৩; তার মৃত্যু ১৯৪৪)
সন্তান
মহাত্মা গান্ধী ও কস্তুরবাঈ গান্ধী, ইটারনাল গান্ধী মাল্টিমিডিয়া মিউজিয়ামে, গান্ধী স্মৃতি (বিড়লা হাউজ), ৩০ জানুয়ারি মর্গ নয়াদিল্লী, ভারত.

প্রাথমিক জীবন এবং পটভূমি

সম্পাদনা

কস্তুরবা গোকুলদাস কাপাডিয়া এবং ভিরাজকুনয়েরবা কাপাডিয়া পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পরিবারটি গুজরাতি ব্যবসায়ীর মোধু বনিয়া প্রজাতির অন্তর্গত ছিল এবং উপকূলীয় শহর পোরবন্দরে অবস্থান করছিল।[] কস্তুরবা প্রথম জীবনে সামান্য পরিচিত ছিলেন। ১৮৮৩ সালের মে মাসে, ১৪ বছর বয়সী কস্তুরবা, ১৩ বছর বয়সী মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীকে বিয়ে করেন, অভিভাবকগণ বিয়ের ব্যবস্থা করেন, এবং তাদের সনাতন হিন্দু পদ্ধতিতে বিয়ে হয়।[] মৃত্যুর আগপর্যন্ত তারা একসাথে মোট বাষট্টি বছর সংসার করেন।[] তাদের বিয়ের দিন স্মরণ করে তার স্বামী একবার বলেছিলেন, "আমরা বিয়ে সম্পর্কে কিছু জানতাম না, আমাদের জন্য এটা ছিল শুধুমাত্র নতুন জামা পড়া, মিষ্টি খাওয়া এবং আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে খেলা করা।" যাইহোক, প্রচলিত ঐতিহ্য হিসাবে, কিশোরী নববধূ বিয়ের প্রথম কয়েক বছর (তার স্বামীর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়ার আগপর্যন্ত) তার পিতামাতার বাড়িতে এবং তার স্বামীর কাছ থেকে দূরে কাটানোর নিয়ম ছিল।[][যাচাইকরণ ব্যর্থ হয়েছে] অনেক বছর পরে লেখা, মোহনদাস তার নববধূর জন্য যে অনুভূতি প্রকাশ করেছিলেন, সে সম্পর্কে দুঃখের সাথে বর্ণনা করেছিলেন, "এমনকি বিদ্যালয়ে আমি তার কথা ভাবতাম, এবং রাতের বেলাও চিন্তা করতাম এবং আমাদের পরবর্তী সাক্ষাতগুলোতে সে আমাকে কখনোই হতাশ করেনি।"[] তাদের বিয়ের শুরুর দিকে গান্ধী কর্তৃত্বপরায়ণ ছিলেন; তিনি আদর্শ স্ত্রী চেয়েছিলেন, যিনি তার আদেশ অনুসরণ করবেন।

কস্তুরবা এবং গান্ধীর পাঁচ সন্তানের জন্ম হয়েছিল। অল্প বয়সে তাদের সবচেয়ে বড় সন্তানের মৃত্যু হয়। যদিও চার পুত্র প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বেঁচে গিয়েছিলেন, তবে কস্তুরবা তার প্রথম সন্তানের মৃত্যুশোক পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেননি।[] গান্ধী প্রথম বিদেশ যাওয়ার আগে প্রথম দুই সন্তানের জন্ম দেন । পরবর্তীতে ১৯০৬ সালে, গান্ধী ব্রহ্মচর্যের অঙ্গীকার গ্রহণ করেন । কিছু রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কস্তুরবা মনে করেছিলেন যে এটি একজন ঐতিহ্যবাহী হিন্দু স্ত্রী হিসাবে তার ভূমিকা পালনকে ব্যাহত করেছে। যাইহোক, কস্তুরবা গান্ধীর সাথে তার বিবাহের সপক্ষে মতামত দেন, যখন একজন বন্ধু তাকে অসুখী বলে আখ্যা দেন । কস্তুরবার আত্মীয়রাও তার স্বামী মহাত্মার সঙ্গে বসবাস এবং তার প্রতি বাধ্যগত থাকাকে সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত হিসেবে মত দেন । ১৮৮৮ সালে মহাত্মা লন্ডনে পড়াশোনা করার সময় তিনি তার নবজাতক হরিলালকে বড় জন্য ভারতে থাকেন। এই দম্পতির পরে আরো তিনটি সন্তান হয়ঃ মনিলাল, রামদাস, দেবদাস। রামচন্দ্র গুহের জীবনী নির্ভর বই গান্ধী বিফোর ইন্ডিয়া থেকে নিম্নলিখিত উপসংহারের মাধ্যমে মহাত্মার সাথে কস্তুরবার সম্পর্ককে বর্ণনা করা যেতে পারে- "তারা মানসিক কিংবা কামগতভাবে একে অপরের সাথে সত্যের বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন ।" সম্ভবত বহুদিন আলাদা থাকার কারণে, কস্তুরবা তার স্বামীর সাথে কাটানো সময়কে গভীরভাবে লালন করতেন ।"[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Gandhi, Arun and Sunanda (১৯৯৮)। The Forgotten Woman। Zark Mountain Publishers। পৃষ্ঠা 314আইএসবিএন 1-886940-02-9 
  2. Mohanty, Rekha (২০১১)। "From Satya to Sadbhavna" (পিডিএফ): 45–49। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২ 
  3. Tarlo, Emma। "Married to the Mahatma: The Predicament of Kasturba Gandhi"। Women: A Cultural Review8: 264–277। 
  4. Gandhi (1940). Chapter "Playing the Husband" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ জুলাই ২০১২ তারিখে.
  5. Gandhi before India। Vintage Books। ৪ এপ্রিল ২০১৫। পৃষ্ঠা 28–29। আইএসবিএন 978-0-385-53230-3 
  6. Gandhi, Arun (১৪ অক্টোবর ২০০০)। Kasturba: A Life। Penguin UK। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০১৬ 
  7. Guha, Ramachandra (১৫ অক্টোবর ২০১৪)। Gandhi Before India। Penguin UK। সংগ্রহের তারিখ ২ নভেম্বর ২০১৬ 

আরও পড়ুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা