মন্দবাগ ট্রেন সংঘর্ষ

(কসবা রেল দুর্ঘটনা থেকে পুনর্নির্দেশিত)

মন্দবাগ ট্রেন সংঘর্ষ ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর রাত পৌনে ৩টা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগে সংগঠিত হয়। মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় ঢাকাগামী আন্তনগর ট্রেন তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেস ও চট্টগ্রামগামী আন্তনগর উদয়ন এক্সপ্রেসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ১৭ জন নিহত হয় ও ৫৭ জন আহত হয়।[২][৩]

মন্দবাগ ট্রেন সংঘর্ষ
বিস্তারিত
তারিখ১২ নভেম্বর ২০১৯ (2019-11-12)
সময়০৩:০০ বাংলাদেশ মান সময়
অবস্থানমন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশন, কসবা
স্থানাঙ্ক২৩°৪১′১৬″ উত্তর ৯১°০৯′১০″ পূর্ব / ২৩.৬৮৭৯০০° উত্তর ৯১.১৫২৬৬৪° পূর্ব / 23.687900; 91.152664
দেশবাংলাদেশ
পরিচালনাকারীবাংলাদেশ রেলওয়ে
দুর্ঘটনার ধরনমুখোমুখি সংঘর্ষ
কারণসংকেত অমান্য করে পার হওয়া
পরিসংখ্যান
ট্রেন
নিহত১৭[১]
আহত৫৭
ক্ষতিতিন বগি ধ্বংস

দুর্ঘটনা সম্পাদনা

বাংলাদেশের কসবাতে স্থানীয় সময় ৩:০০ টায় (০৯:০০ ইউটিসি) দুটি ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ২৯০০ শ্রেণির লোকোমোটিভ ২৯২৩ দ্বারা চালিত ঢাকাগামী যাত্রীবাহী আন্তনগর তূর্ণা নিশীথা ট্রেনটির সাথে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা যাত্রীবাহী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের মুখোমুখি সংঘাত ঘটে। এতে উদয়ন এক্সপ্রেসের তিনটি বগি দুমড়ে মুচড়ে যায়। হতাহতের বেশিরভাগ লোক এই ট্রেনটিতে ছিল। এই ঘটনায় ১৭ জন মারা যায় এবং ১০০ জন আহত হয়। ৫৭ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয় যে, মন্দবাগ স্টেশনের এক নম্বর লাইনে প্রবেশ করে উদয়ন এক্সপ্রেস, একই লাইনে বিপরীত দিক থেকে তূর্ণা নিশীথা ট্রেনটি আসছিল। ট্রেন দুটির এই স্টেশনে অতিক্রম করার কথা ছিল। এই জন্য উদয়ন এক্সপ্রেসকে এক নম্বর লাইন থেকে ডান পাশের লুপ লাইনে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছিল, যাতে তূর্ণা নিশীথা পাশ কাটিয়ে স্টেশন পার হতে পারে। উদয়ন এক্সপ্রেস স্টেশনে প্রবেশের পর বিপরীত দিকের আউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লালবাতি জ্বলে ওঠে। কিন্তু তূর্ণা ট্রেনটি লালবাতি উপেক্ষা করে স্টেশনের প্রবেশ মুখে চলে আসে। তবে ততক্ষণে উদয়ন এক্সপ্রেসের ১৬টি বগির ৯টি লুপ লাইনে ঢুকে যায় কিন্তু বাকি সাতটি বগি তখনও মূল লাইনে ছিল। সে সময় ১০ নম্বর বগিতে আঘাত করে তুর্ণা নিশীথার লোকোমোটিভ। এত উদয়ন এক্সপ্রেসের ১০ নম্বরসহ ১১ এবং ১২ নম্বর বগি লাইনচ্যুত হয়। ১০ নম্বর বগি দুমড়েমুচড়ে যায়।[৪]

মন্দবাগ রেলস্টেশনের মাস্টার জাকির হোসেন চৌধুরীর ভাষ্যমতে, "আউটার [বাহির] ও হোম [ভিতরের] সিগন্যালে [সংকেতে] লাল বাতি দেয়া ছিল। কিন্তু তুর্ণা নিশীথার চালক সিগন্যাল [সংকেত] অমান্য করে ঢুকে পড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে"।[৫]

তদন্ত সম্পাদনা

তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের চালক, সহকারী এবং গার্ডকে গাফিলতির অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। একইসাথে ৫টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।[৬] তদন্ত শেষে ট্রেন দুর্ঘটনার জন্য তূর্ণা নিশীথার কর্মীরা দায়ী বলে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়।[৭] ঢাকার রেল ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন:

কমিটিগুলোর প্রতিবেদন মোতাবেক দেখা যায়, আন্তনগর ৭৪১ নম্বর তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেস ট্রেনের লোকোমাস্টার, সহকারী লোকোমাস্টার ও গার্ডের সিগন্যালগুলো [সংকেতগুলো] যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ না করে ট্রেন পরিচালনার কারণে এ দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "কসবায় ট্রেন দুর্ঘটনা: তূর্ণা নিশীথার লোকোমাস্টারসহ ৩ জন দায়ী"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১৯ 
  2. "বেপরোয়া ট্রেনচালক, নিহত ১৬"। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১৯ 
  3. "রেল দুর্ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা"। ৫ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১৯ 
  4. আবদুন নূর; নাসির উদ্দিন। "ভুলের মাশুল ১৬ প্রাণ"সমকাল। কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৯ 
  5. "চালকের ভুলেই কসবায় মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনা"যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৯ 
  6. কল্লোল, কাদির (১২ নভেম্বর ২০১৯)। "রেলমন্ত্রী বলছেন গাফিলতি, বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?"বিবিসি। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৯ 
  7. "তদন্ত কমিটি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ট্রেন দুর্ঘটনায় তূর্ণা নিশীথার কর্মীরা দায়ী"ঢাকা ট্রিবিউন। ২০ নভেম্বর ২০১৯। ১৪ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০২০