কল্পবিজ্ঞানে মহাকাশ ভ্রমণ

মহাকাশ ভ্রমণ (ইংরেজি: Space travel[১]:৬৯[২]:২০৯–২১০[৩]:৫১১–৫১২) বা মহাকাশযাত্রা (ইংরেজি: space flight [২]:২০০–২০১[৪]) হল কল্পবিজ্ঞানের একটি প্রধান ধ্রুপদি বিষয়। অল্প কয়েকটি ক্ষেত্রে এই বিষয়টিকে নক্ষত্রযাত্রা (ইংরেজি: starfaring বা star voyaging[২]:২১৭, ২২০) নামেও অভিহিত করা হয়। সাধারণভাবে কল্পবিজ্ঞান আখ্যানবস্তুর বৈশিষ্ট্যসূচক ছবির সঙ্গে যুক্ত মহাকাশযাত্রার বিষয়টিই সচরাচর ক্ষেত্রে পাঠকের মনোযোগ সর্বাধিক আকর্ষণ করে থাকে।[৪] কল্পবিজ্ঞান গল্প, উপন্যাস, চলচ্চিত্র প্রভৃতিতে আন্তঃগ্রহআন্তঃনাক্ষত্রিক উভয় প্রকার মহাকাশযাত্রাই সাধারণভাবে সম্পন্ন হতে দেখা যায় মহাকাশযানের মাধ্যমে। তবে এক-একটি রচনায় মহাকাশযান প্রচালনের পদ্ধতিটি এক এক রকমের; তার মধ্যে বৈজ্ঞানিকভাবে আপাতগ্রাহ্য পদ্ধতি থেকে সম্পূর্ণ কাল্পনিক নানা রকম পদ্ধতির উল্লেখ পাওয়া যায়।[১]:৮, ৬৯–৭৭ কোনও কোনও লেখক মহাকাশযাত্রার বাস্তব, বিজ্ঞানসম্মত ও শিক্ষাগত দিকগুলির প্রতি মনোযোগ আরোপ করেন; কেউ আবার এই ধারণাটিকে স্বাধীনতার রূপক হিসেবে দেখেন, যার অন্যতম একটি দিল হল “সৌরজগৎের কারাগার থেকে মানবজাতির মুক্তি”।[৪] বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রতীক হিসেবে বর্ণিত রকেটের ধারণাটিও জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল কল্পবিজ্ঞানের মাধ্যমেই।[৫]:৭৪৪ তবে দি এনসাইক্লোপিডিয়া অফ সায়েন্স ফিকশন-এর মতে, “কল্পবিজ্ঞানে যে সব উপায়ে মহাকাশযাত্রা সম্ভব হয়েছে – [অর্থাৎ] এটির অসংখ্য ও বিভিন্ন রকমের মহাকাশযান – বিষয়বস্তুর কল্পিত প্রভাবের উপর এগুলির গুরুত্ব সর্বদাই গৌণ”।[৪]

আদার ওয়ার্ল্ডস কল্পবিজ্ঞান পত্রিকার প্রচ্ছদে একটি রকেটের ছবি, সেপ্টেম্বর ১৯৫১

মহাকাশযাত্রার ধারণাটি সাধারণভাবে কল্পবিজ্ঞান-সম্পর্কিত হলেও ফ্যান্টাসিতেও কখনও কখনও জাদুবিদ্যা বা দেবদূত-জাতীয় অলৌকিক শক্তির মাধ্যমে মহাকাশ ভ্রমণের বিষয়টি উপস্থাপিত হয়ে থাকে।[ক][৫]:৭৪২–৭৪৩

সংশ্লিষ্ট রুচনাগুলিতে মহাকাশ ভ্রমণের সঙ্গে প্রায়শই সময়ের প্রসারণ, মহাকাশ স্টেশন বা মহাকাশে উপনিবেশ স্থাপনের মতো বিভিন্ন বিষয় উল্লিখিত হয়েছে এবং সেগুলি জনপ্রিয়তাও লাভ করেছে।[১]:৬৯–৮০[৫]:৭৪৩

ইতিহাস সম্পাদনা

 
সায়েন্স অ্যান্ড মেকানিকস পত্রিকার নভেম্বর ১৯৩১ সংখ্যার প্রচ্ছদে একটি প্রস্তাবিত উপ-কাক্ষিক মহাকাশযানের ছবি; এটি বার্লিন থেকে নিউ ইয়র্কের পথ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭০০ মাইল উচ্চতায় মাত্র এক ঘণ্টায় অতিক্রম করতে সক্ষম বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
 
লস্ট ইন স্পেস (১৯৬৫) অনুষ্ঠানের প্রিমিয়ারের একটি আলোকচিত্র; এটিতে সাসপেন্ডেড অ্যানিমেশনে মহাকাশযাত্রীদের দেখানো হয়েছে।

মহাশূন্যে (কোনও মহাকাশযানে অথবা অন্য কোনও গ্রহের প্রেক্ষাপটে) সংঘটিত ঘটনাগুলি কল্পবিজ্ঞানের অন্যতম ধ্রুপদি ও সংজ্ঞাসূচক লক্ষণ।[৩]:৫১১–৫১২[৪] সপ্তদশ শতাব্দীর লেখক ফ্র্যান্সিস গডউইনসিরানো ডে বারজারেকজ্যোতির্বিজ্ঞানী জোহানেস কেপলারের উপন্যাস সহ কল্পবিজ্ঞানের যে আদি রচনাগুলি "প্রত্ন-কল্পবিজ্ঞান" নামে পরিচিত, তার অন্যতম চাঁদের প্রেক্ষাপটে রচিত "চান্দ্র রোম্যান্স" সাহিত্য।[খ][৪] কল্পবিজ্ঞান সমালোচক জর্জ স্লাসার এই ক্ষেত্রে ক্রিস্টোফার মার্লোর ডক্টর ফস্টাস (১৬০৪) নাটকটির কথাও উল্লেখ করেছেন, যেখানে নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রটিকে সমগ্র পৃথিবীকে অনেক উপর থেকে দেখতে সক্ষম হয়েছিলেন। এছাড়া স্লাসার প্রাচীনকালে প্লেটোসক্রেটিসের যুগ থেকে সাহিত্যে প্রচলিত মানুষের উড্ডীয়ন ক্ষমতা ও আকাশপথে ভ্রমণের স্বপ্নটিকেও যুক্ত করেছেন প্রত্ন-কল্পবিজ্ঞানের ধারাটির সঙ্গে।[৫]:৭৪২ এই বৃহত্তর দৃষ্টিকোণ থেকে মহাকাশযাত্রা ও নানা ধরনের ‘স্টার ড্রাইভ’ সহ বিভিন্ন আবিষ্কারকে স্বাধীনতার রূপক হিসেবে দেখা যায়, যার অন্যতম দিকটি হল “মানবজাতিকে সৌরজগৎের কারাগার থেকে মুক্তিদান”।[৪]

পরবর্তী শতাব্দীগুলিতে কল্পবিজ্ঞানে মহাকাশযাত্রা সহ ভবিষ্যৎবিদ্যার নানান দিক নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করা হয়। তবে এসবের মধ্যে মহাকাশযাত্রার বিষয়টিই কল্পবিজ্ঞানের লেখক ও পাঠক সহ সাধারণ মানুষের বিস্ময় উদ্রেক করে সর্বাধিক প্রভাব বিস্তারে সক্ষম বলে প্রমাণিত হয়েছে।[১]:৬৯[৪] এই জাতীয় অধিকাংশ রচনারই প্রধান উদ্দেশ্য ছিল পাঠকদের বিনোদন। কিন্তু জ্যোতির্বিজ্ঞানের ধ্যানধারণা সহ মহাকাশ-বিষয়ক বিজ্ঞানের নানা দিক সম্পর্কে পাঠককে অবহিত করে তুলতেও আগ্রহী হয়েছিলেন অল্প কয়েকজন মননশীল লেখক। অন্যান্যদের সঙ্গে প্রভাবশালী মার্কিন সম্পাদক হিউগো গার্নসব্যাকের মধ্যেও এই আকাঙ্ক্ষা জেগে উঠেছিল। তিনি এই প্রবণতাটির নাম দিয়েছিলেন ‘শর্করা-প্রলেপিত বিজ্ঞান’ (ইংরেজি: sugar-coated science) ও ‘সায়েন্টিফিকেশন’ (ইংরেজি: scientification)।[১]:৭০ গার্নসব্যাকের সায়েন্স ওয়ান্ডার স্টোরিজ সহ কল্পবিজ্ঞান পত্রিকাগুলিও বিশুদ্ধ কথাসাহিত্যের পাশাপাশি মহাকাশযাত্রা-সংক্রান্ত প্রথম দিকের গবেষণা ও এই ধরনের ভ্রমণের সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা জনপ্রিয় করে তোলে। অনেক কল্পবিজ্ঞান লেখক মহাকাশযাত্রার উপর প্রবন্ধও রচনা করেন। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য উইলি লে-র নিবন্ধগুলি এবং ডেভিড ল্যাসারের দ্য কনকোয়েস্ট অফ স্পেস (১৯৩১) বইটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য[১]:৭১[৫]:৭৪৩

 
স্টার ট্রেক থেকে স্টারশিপ এন্টারপ্রাইজ-এর একটি মডেল

ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগ ও বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগ থেকে সাধারণ এবং অধিকতর ‘বাস্তব’ ও বিজ্ঞানসম্মত কথাসাহিত্যের (যা পরবর্তীকালে বিবর্তিত হয় উচ্চাঙ্গ কল্পবিজ্ঞানের রূপ নেয়[৮]) মধ্যে একটি দৃশ্যমান পার্থক্য চোখে পড়তে থাকে। বৈজ্ঞানিক কথাসাহিত্যের লেখকেরা মনোযোগ দেন চাঁদ বা মঙ্গল গ্রহে আন্তঃগ্রহ ভ্রমণের অধিকতর আপাতগ্রাহ্য ধারণাটির প্রতি। কন্স্তান্তিন ৎসিওলকোভ্স্কিম্যাক্স ভেইলারের মতো বিজ্ঞানী লেখকদের নাম এই ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। অন্যদিকে বৃহত্তর আকারে পরিকল্পিত অথচ কম বাস্তবসম্মত গল্পগুলির বিষয়বস্তু ছিল “পৃথিবী থেকে পালিয়ে বহু জগতে পরিপূর্ণ এক মহাবিশ্বে গমন”। এই দ্বিতীয় শ্রেণির ধারাটিই স্পেস অপেরা নামক বর্গটির জন্ম দেয়, যে ধারার প্রথম লেখক ছিলেন ই. ই. স্মিথ[গ] ১৯৬৬ সালে প্রথম সম্প্রচারিত টেলিভিশন ধারাবাহিক স্টার ট্রেক স্পেস অপেরার ধারাটিকে জনপ্রিয় করে তোলে।[৪][৫]:৭৪৩[৯] এই প্রবণতা এখনও বজায় আছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে “মহাকাশযাত্রার কল্পকথা”-র উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়,[ঘ] আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে লেখকের দৃষ্টি কেন্দ্রীভূত থাকে “মহাকাশযাত্রা নিয়ে বাস্তবসম্মত পরীক্ষানিরীক্ষা”-র প্রতি;[ঙ] দুই ক্ষেত্রের পার্থক্যকে "যন্ত্রাংশ নয়, বরং কাল্পনিক দিগন্ত”-এর বিষয়ে লেখকের চিন্তাভাবনার মধ্যে পার্থক্য বলেও বর্ণনা করা হয়।[৪] অ্যাপোলো ১১-এর চাঁদে অবতরণ সহ বিংশ শতাব্দীর মহাকাশ কর্মসূচিগুলির সাফল্যগুলিকে প্রায়শই “কল্পবিজ্ঞান সত্যি হওয়া” বলে বর্ণনা করা হত। তাছাড়াও এই সব সাফল্য সৌরজগৎের মধ্যে মহাকাশ ভ্রমণের ধারণাটির “রহস্যোদ্ঘাটন”-এর কাজ করে। এর পর থেকে লেখকেরা “মহাকাশ ভ্রমণের কল্পকথা”-র উপর মনোনিবেশ করার সময় উত্তরোত্তর আন্তঃনাক্ষত্রিক ভ্রমণের ধারণাটির উপর বেশি গুরুত্ব দিতে থাকেন।[৪] মহাকাশযাত্রার বিষয়টিকে সাধারণভাবে একটি অত্যন্ত আশাবাদী ধারণা মনে করা হলেও[৩]:৫১১–৫১২ কোনও কোনও পুনর্মূল্যায়নকারী গল্পে এটি এসেছে অধিকতর নৈরাশ্যবাদী ও মোহমুক্ত ধারণা হিসেবে। সেক্ষেত্রে পূর্বোক্ত প্রবণতার পরিবর্তে মহাকাশ ভ্রমণ নিয়ে ভাববিলাসী কল্পকথার বিপরীতে এই বিষয়টি উপস্থাপিত হয়েছে জাগতিক বাস্তবতার প্রেক্ষিতে।[চ][৪] জর্জ স্লাসার মনে করেন যে, “দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে কল্পবিজ্ঞান ভ্রমণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ কর্মসূচিরই প্রতিচ্ছবি: ১৯৫০-এর দশকে ও ১৯৬০-এর দশকের গোড়ার দিকে উৎকণ্ঠা, ১৯৭০-এর দশকে উচ্ছ্বাস, ১৯৮০-এর দশক থেকে সন্ধিগ্ধচিত্ততা ও ক্রমে ক্রমে প্রত্যাহার।”[৫]:৭৪৩

চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে জর্জ মেলিয়েস নির্মিত ও ১৯০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত আ ট্রিপ টু দ্য মুন ছবিটিকে প্রথম কল্পবিজ্ঞান চলচ্চিত্র হিসেবে বর্ণনা করা হয়। এই ছবিতে মহাকাশযাত্রার দৃশ্যায়নে স্পেশাল এফেক্টস ব্যবহৃত হয়েছিল।[৫]:৭৪৪[১০] ওম্যান ইন দ্য মুন (১৯২৯), থিং টু কাম (১৯৩৬) প্রভৃতি প্রথম দিকের অন্যান্য ছবিগুলি সহ চলচ্চিত্র মাধ্যমটি মহাকাশ কর্মসূচি পূর্ণ উদ্যমে শুরু হওয়ার বহু দশক পূর্বেই মহাকাশ ভ্রমণের প্রধান ও বৈশিষ্ট্যসূচক উপায় হিসেবে রকেটের ধারণাটিকে প্রতিষ্ঠাদানের ক্ষেত্রে সহায়ক হয়।[৫]:৭৪৪ পরবর্তীকালের গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ধারাবাহিকগুলির অন্যতম স্টার ট্রেক ধারাবাহিক ও চলচ্চিত্র, এবং স্ট্যানলি কুব্রিক নির্মিত ২০০১: আ স্পেস ওডিসি। এই ছবিগুলি মহাকাশ ভ্রমণের ধারণাটিকে দৃশ্যগতভাবে এগিয়ে নিয়ে যায়, যার ফলে মহাকাশ ভ্রমণের মাধ্যম হিসেবে সাদামাটা রকেট থেকে জটিলতর মহাকাশযানগুলির চিত্রায়ন শুরু হয়।[৫]:৭৪৪

ভ্রমণের পদ্ধতি সম্পাদনা

কল্পবিজ্ঞানে মহাকাশযান প্রচালনায় সহায়ক ইঞ্জিনগুলির শ্রেণিগত পরিভাষাগুলির মধ্যে রয়েছে স্পেস ড্রাইভ ও স্টার ড্রাইভের শ্রেণিগত পরিভাষাগুলিও।[ছ][২]:১৯৮, ২১৬ ১৯৭৭ সালে প্রকাশিত দ্য ভিস্যুয়াল এনসাইক্লোপিডিয়া অফ সায়েন্স ফিকশন মহাকাশ ভ্রমণের নিম্নলিখিত প্রণালীগুলির কথা তালিকাবদ্ধ করে: মাধ্যাকর্ষণ-বিরোধী,[জ] পারমাণবিক, ব্লোটার,[ঝ] ক্যানন ওয়ান-শট,[ঞ] ডিন,[ট] আলোক-অপেক্ষা-দ্রুতগামী (ফাস্টার-দ্যান-লাইট বা এফটিএল), হাইপারস্পেস,[ঠ] জাড্যবিহীন,[ড][১]:৭৫ আয়ন,[ঢ] ফোটন, প্লাজমা, র‍্যাম-জেট,[ণ] আর. ফোর্স,[ত] সোলার সেইল, [থ] স্পন্ডিজি[দ] ও টর্চশিপ।[ধ][১]:৮, ৬৯–৭৭

২০০৭ সালে প্রকাশিত ব্রেভ নিউ ওয়ার্ডস: দি অক্সফোর্ড ডিকশনারি অফ সায়েন্স ফিকশন বইটিতে স্পেস ড্রাইভের ধারণা-সংক্রান্ত নিম্নলিখিত শব্দভাণ্ডারটি তালিকাভুক্ত হয়: গ্র্যাভিটি ড্রাইভ,[ন] হাইপারড্রাইভ,[প] আয়ন ড্রাইভ, জাম্প ড্রাইভ,[ফ] ওভারড্রাইভ, র‍্যামস্কুপ (র‍্যাম-জেটের সমার্থক শব্দ), রিঅ্যাকশন ড্রাইভ,[ব] স্টারগেট,[ভ] আলট্রাড্রাইভ, র‍্যাপ ড্রাইভ[ম] ও টর্চড্রাইভ।[২]:৯৪, ১৪১, ১৪২, ২৫৩ এই পরিভাষাগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক অথবা রবার বিজ্ঞানের ভিত্তিতে, অন্যগুলি বাস্তব বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের ভিত্তিতে প্রচলিত।[১]:৮, ৬৯–৭৭[২]:১৪২ আলোর চেয়ে দ্রুত ভ্রমণের প্রণালী সহ মহাকাশযাত্রার অনেক কাল্পনিক প্রণালী পদার্থবিজ্ঞানের (বিশেষত আপেক্ষিকতার তত্ত্বের) অনুসারী নয়।[১৪]:৬৮–৬৯ কয়েকটি রচনায় বহুসংখ্যক বিকল্প স্টার ড্রাইভের উল্লেখ পাওয়া যায়; উদাহরণস্বরূপ স্টার ট্রেক মহাবিশ্বে এটির বৈশিষ্ট্যসূচক র‍্যাপ ড্রাইভ ছাড়াও ট্রান্সর‍্যাপ, স্লিপস্ট্রিম ও স্পোর ড্রাইভ সহ বিভিন্ন ধারণা উপস্থাপিত হয়েছে।[১৫]

প্রত্ন-কল্পবিজ্ঞানের যুগে মহাকাশ সম্পর্কে মানুষের জ্ঞানের পরিধি ছিল সীমিত। এরপর প্রথম যুগের কল্পবিজ্ঞান লেখকেরা এবং পরবর্তীকালেও অনেক লেখকই মহাকাশযাত্রার প্রণালীটি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেননি। বাস্তবিকপক্ষে প্রথম দিকের অনেক লেখক শূন্যস্থানের ধারণাটিকে পর্যন্ত বিবেচনা করেননি, বরং অনির্দিষ্ট পরিসরে বিস্তৃত এক ধরনের বায়ুমণ্ডলের (বায়ু বা ইথার দ্বারা গঠিত) কথা কল্পনা করে নিয়েছিলেন।[য][৪] কল্পবিজ্ঞানের "বিজ্ঞান" অংশটিকে জনপ্রিয় করে তোলার ব্যাপারে অত্যন্ত প্রভাবশালী হয়ে উঠেছিলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর ফরাসি লেখক জুল ভার্ন। ১৮৬৫ সালে প্রকাশিত উপন্যাস ফ্রম দি আর্থ টু দ্য মুন ও তার সিক্যোয়েল অ্যারাউন্ড দ্য মুন-এ তিনি মহাকাশ ভ্রমণের প্রণালীটি গাণিতিকভাবে ব্যাখ্যা করেন এবং এই ভ্রমণের বাহন বন্দুক দ্বারা উৎক্ষিপ্ত মহাকাশ ক্যাপসুলটিকে বর্ণনা করা হয় কথাসাহিত্যে "বৈজ্ঞানিকভাবে ধারণাকৃত" এই ধরনের প্রথম যান হিসেবে।[র][৪][১]:৬৯[৫]:৭৪৩ পার্সি গ্রেগের অ্যাক্রস দ্য জোডিয়াক (১৮৮০) উপন্যাসে ছোটো বাগান সহ এক মহাকাশযানের উল্লেখ আছে, এটি হাইড্রোপনিকের একটি আদি ভাবীকথন।[১]:৬৯ অপর যে লেখক কল্পবিজ্ঞান গদ্যের সঙ্গে বাস্তবসম্মত বৈজ্ঞানিক ধারণাগুলি অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি হলেন নতুন শতাব্দীর প্রথম দিকের রাশিয়ান লেখক ও বিজ্ঞানী কন্স্তান্তিন ৎসিওলকোভ্স্কি। তিনি রকেট ক্ষেপণাস্ত্রবিদ্যার ধারণাটিকে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য সমধিক পরিচিত।[৪][১৬][ল] জর্জ মানের মতে, রবার্ট এ. হাইনলাইনের রকেট শিপ গ্যালিলিও (১৯৪৭) ও আর্থার সি. ক্লার্কের প্রিলিউড টু স্পেস-এর মতো উপন্যাসগুলি হল প্রথম যুগের কয়েকটি প্রভাবশালী আধুনিক রচনা, যেগুলি মহাকাশ ভ্রমণের বৈজ্ঞানিক ও প্রকৌশলগত দিকগুলির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছিল।[৩]:৫১১–৫১২ ১৯৬০-এর দশক থেকে জনসাধারণের মধ্যে আধুনিক প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার ফলে কল্পবিজ্ঞানে অত্যাধুনিক অথচ আপাতগ্রাহ্যভাবে বাস্তব আধুনিক প্রযুক্তির ভিত্তিতে নির্মিত আন্তঃনাক্ষত্রিক মহাকাশযানের মাধ্যমে মহাকাশযাত্রার বর্ণনা দেওয়ার প্রবণতা বাড়তে থাকে।[শ][৩]:৫১১–৫১২

আন্তঃনাক্ষত্রিক ভ্রমণ সম্পাদনা

আলোক অপেক্ষা মন্থর সম্পাদনা

আন্তঃনাক্ষত্রিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে আলোক-অপেক্ষা-দ্রুতগামী গতিগুলিকে প্রায়শই অবাস্তব জ্ঞান করা হয়। এই বিষয়টির অধিকতর বাস্তবসম্মত বর্ণনাগুলি প্রায়শই "প্রজন্মযান"-এর ধারণাটিকে কেন্দ্র করে দেওয়া হয়ে থাকে। এই প্রজন্মযানগুলি আলোক অপেক্ষা মন্থর গতিতে যায় এবং তার ফলে গন্তব্যে পৌঁছাতে যাত্রীদের অনেক প্রজন্ম লেগে যায়।[ষ] আন্তঃনাক্ষত্রিক ভ্রমণের অন্যান্য বৈজ্ঞানিকভাবে আপাতগ্রাহ্য ধারণাগুলির মধ্যে রয়েছে সাসপেন্ডেড অ্যানিমেশন[স] এবং অল্প ক্ষেত্রে আয়ন ড্রাইভ, সোলার সেইল, বাসার্ড র‍্যামজেট ও সময় প্রসারণ[হ][১]:৭৪

আলোক অপেক্ষা দ্রুততর সম্পাদনা

কোনও কোনও রচনায় আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব এবং এই তত্ত্ব কোয়ান্টাম বলবিদ্যার যে বাধার সম্মুখীন হয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই সব লেখায় কীটগহ্বরকৃষ্ণগহ্বরের মধ্যে দিয়ে মহাকাশ ভ্রমণের ধারণাটিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।[ড়][৩]:৫১১–৫১২ কীটগহ্বর ছাড়াও র‍্যাপ বুদবুদ হল কল্পবিজ্ঞানে মহাকাশযাত্রার জন্য ব্যবহৃত আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বের ক্ষেত্র সমীকরণের আরেকটি সম্ভাব্য সমাধান।[১৭] অনেক লেখক যদিও এই সব সমস্যা আড়াল করে হাইপারড্রাইভ, জাম্প ড্রাইভ, র‍্যাপ ড্রাইভ ও স্পেস ফোল্ডিং-এর মতো আবিষ্কারগুলিকে ব্যবহার করে হাইপারস্পেস (তাছাড়া সাবস্পেস, নালস্পেস, ওভারস্পেস, জাম্পস্পেস ও স্লিপস্ট্রিম) ভ্রমণের মতো সম্পূর্ণ কাল্পনিক ধারণাগুলিকে তুলে ধরেছেন।[ঢ়][১]:৭৫[৩]:৫১১–৫১২[১৩][১৯][১২][১৮]:২১৪ সম্পূর্ণ কাল্পনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে মহাকাশ ভ্রমণের বিবরণ প্রদান একটি বহু পুরনো প্রথা – বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগেই ভার্ন এইচ. জি. ওয়েলসের দ্য ফার্স্ট মেন ইন দ্য মুন (১৯০১) উপন্যাসটির সমালোচনা করেন বাস্তবসম্মত বিজ্ঞানকে পরিত্যাগ করার জন্য (ওয়েলস বর্ণিত মহাকাশযানটি ‘ক্যাভোরাইট’ নামে এক মাধ্যাকর্ষণ-বিরোধী পদার্থের উপর নির্ভরশীল ছিল)।[১]:৬৯[৫]:৭৪৩ কাল্পনিক যন্ত্রগুলির মধ্যে ১৯৭০-এর দশকে মধ্যভাগ থেকে হাইপারস্পেসের মাধ্যমে ভ্রমণের ধারণাটিকে সর্বাধিক জনপ্রিয়তা অর্জনকারী ধারণা হিসেবে বর্ণনা করা হত। এর জনপ্রিয়তা হাইপারড্রাইভের রূপে আরও বৃদ্ধি পায় স্টার ওয়ারস ফ্র্যাঞ্চাইজের মাধ্যমে।[১]:৭৫[১৯] কাল্পনিক যন্ত্রগুলি বর্তমানে পদার্থবিজ্ঞানের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সমস্যার ‘সমাধান’ করলেও (যেমন আলোর চেয়ে দ্রুতগতিতে ভ্রমণের অসুবিধা) কোনও কোনও লেখক নতুন সমস্যার উদ্ভাবন করেন। যেমন, এই ধরনের যন্ত্রগুলি ব্যবহারের একটি সাধারণ সমস্যা হল অন্যান্য বস্তুগুলির নৈকট্য, কোনও কোনও ক্ষেত্রে এগুলির ব্যবহার শুধুমাত্র সৌরজগৎের বাইরেই সম্ভব।[য়][১]:৭৫–৭৬

সাধারণভাবে মহাকাশে ভ্রমণের প্রণালীটি শুধুই কাঙ্ক্ষিত ফললাভের একটি উপায় মাত্র হলেও, কোনও কোনও রচনার ক্ষেত্রে (বিশেষ করে ছোটোগল্পের ক্ষেত্রে) এটি কাহিনিকাঠামোর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এই ধরনের রচনায় হাইপারস্পেসের রহস্য বা ভুল বা যান্ত্রিক গোলযোগের ফলে হারিয়ে যাওয়ার পরিণামের বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়।[১]:৭৪–৭৫[ৎ]

আরও দেখুন সম্পাদনা

পাদটীকা সম্পাদনা

  1. উদাহরণস্বরূপ, সি. এস. লিউইসের পেরেলান্ড্রা (১৯৪২), অঁতোয়ান দ্য স্যাঁত-এগজ্যুপেরির ল্য প্যতি প্র্যাঁস্ (১৯৪৩) এবং সাম্প্রতিকতর কিছু কাজ, যেমন দি অ্যাডভেঞ্চারস অফ ব্যারন মানচসেন চলচ্চিত্র (১৯৮৮) বা ডায়ানা ওয়েনে জোনসের উপন্যাস ইয়ার অফ দ্য গ্রিফিন (২০০০)।[৫]:৭৪২
  2. সোমনিয়াম (১৬৩৪), দ্য ম্যান ইন দ্য মুন (১৬৩৮), কমিক্যাল হিস্ট্রি অফ দ্য স্টেটস অ্যান্ড এম্পায়ারস অফ দ্য মুন (১৬৫৭)।[৬][৭][১]:৬৯ আরও দেখুন: আ ট্রু স্টোরি (আনুমানিক দ্বিতীয় শতাব্দী)।
  3. স্মিথের স্কাইলার্ক ধারাবাহিকটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯২৮ সালে।[৪]
  4. সোপ অপেরা-সংক্রান্ত রচনা ছাড়াও এই বর্গের অন্তর্ভুক্ত লেখাগুলির অন্যতম রবার্ট এ. হাইনলাইনের দ্য ম্যান হু সোল্ড দ্য মুন (১৯৫০) বা জেমস ব্লিশের "সারফেস টেনসন" (১৯৫২)।[৪]
  5. বাস্তবসম্মত কল্পবিজ্ঞানের উদাহরণগুলির অন্যতম স্টিফেন ব্যাক্সটারের ভয়েজ (১৯৯৬) ও অ্যান্ডি উইয়ারের দ্য মার্শিয়ান (২০১১)।[৪]
  6. উদাহরণস্বরূপ, নাইজেল বালচিনের কিংস অফ ইনফিনিট স্পেস (১৯৬৭), ব্যারি এন. ম্যালজবার্গের দ্য ফলিং অ্যাস্ট্রোনাটস (১৯৭১) ও ড্যান সাইমনসের ফেজেস অফ গ্র্যাভিটি (১৯৮৯)
  7. ‘স্পেস ড্রাইভ’ শব্দটি অন্তত ১৯৩২ সাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে (জন ডব্লিউ. ক্যাম্পবেল, ইনভেডরস ফ্রম ইনফিনিট); অন্যদিকে ‘স্টার ড্রাইভ’ শব্দটির ব্যবহার ১৯৪৮ সাল থেকে চলে আসছে (পল আন্ডারসন, জিনিয়াস)। স্পেস ড্রাইভ অধিকতর শ্রেণিগত, বরং স্টার ড্রাইভ নামটি আন্তঃনাক্ষত্রিক ভ্রমণের সামর্থ্যের ইঙ্গিতবাহী।[২]:১৯৮, ২১৬
  8. একটি আদি ধারণা, দ্য কনসলিডেটর (১৭০৫) উপন্যাসে ড্যানিয়েল ডিফো কর্তৃক প্রথম উপস্থাপনা করেন, এছাড়া দ্য ফার্স্ট মেন ইন দ্য মুন (১৯০১) উপন্যাসে এইচ. জি. ওয়েলস কর্তৃকও ব্যবহৃত হয়। কোনও কোনও লেখক ও আবিষ্কারক নিজেদের মাধ্যাকর্ষণ-বিরোধী ড্রাইভগুলির স্বতন্ত্র নামও দিয়েছেন – উদাহরণস্বরূপ, ডিন ড্রাইভ বা জেমস ব্লিশের স্পিন্ডিজি[১]:৬৯, ৭৬
  9. বিল, দ্য গ্যালাক্টিক হিরো (১৯৬৫) উপন্যাসে হ্যারি হ্যারিসন এই পরিভাষাটি আবিষ্কার করেন।[১]:১০৮
  10. ঊনবিংশ শতাব্দীতে ফ্রম দি আর্থ টু দ্য মুন (১৮৬৫) উপন্যাসের মাধ্যমে জুল ভার্ন এই ধ্রুপদি ধারণাটি জনপ্রিয় করে তোলেন।[১]:৬৯
  11. ডিন ড্রাইভ একটি বাস্তব, পেটেন্ট-কৃত আবিষ্কার, যা মাধ্যাকর্ষণ-বিরোধী শক্তি উৎপাদন করার প্রতিশ্রুতি দেয়। বিস্মৃতির আড়ালে চলে যাওয়ার আগে মার্কিন কল্পবিজ্ঞান পত্রিকা সম্পাদক জন ডব্লিউ. ক্যাম্পবেল কর্তৃক একটি সম্পাদকীয়তে সাময়িকভাবে প্রচারের আলো পেয়েছিল।[১]:৭৬[১১]:১৮১–১৮২
  12. কল্পবিজ্ঞানের একটি জনপ্রিয় ধারণা। জন ডব্লিউ. ক্যাম্পবেলের আইল্যান্ডস অফ স্পেস (১৯৫৭) উপন্যাসে প্রথম ব্যবহৃত। এই গ্রন্থেই “স্পেস র‍্যাপ” পরিভাষাটি প্রথম উপস্থাপিত হয়।[১]:৭৭[১২][১৩]
  13. জাড্যবিহীন ড্রাইভ হল কাল্পনিক স্পেস ড্রাইভগুলির একটি আদি পরিভাষা, ১৯৩৪ সালে প্রথম প্রবর্তিত হয় ই. ই. স্মিথের ট্রাই-প্ল্যানেটারি লেন্সম্যান ধারাবাহিকে।[১]:৭৫
  14. ত্বরান্বিত আয়নের স্রোতের মাধ্যমে সুষম ধাক্কা দেওয়ার যন্ত্র, ১৯৯০-এর দশকে নাসা কর্তৃক সফলভাবে পরীক্ষিত হয়।[২]:১৪২
  15. দৈত্যাকার স্কুপের বৈজ্ঞানিকভাবে আপাতগ্রাহ্য একটি ধারণা। এই স্কুপগুলি যাত্রার সময় জ্বালানির জন্য আন্তঃনাক্ষত্রিক হাইড্রোজেন সংগ্রহ করে। বিভিন্ন লেখক এই ধারণা করেছিলেন। উল্লেখযোগ্য ল্যারি নিভেনের নোন স্পেস ধারাবাহিক, উদাহরণ: ওয়ার্ল্ড অফ ট্যাভস (১৯৬৫)।[১]:৭৬
  16. জর্জ গ্রিফিথ কর্তৃক আ হানিমুন ইন স্পেস (১৯০১) উপন্যাসে আবিষ্কৃত পরিভাষা[১]:৬৯, ১০৮
  17. এই ধারণার একটি আদি উল্লেখ পাওয়া যায় কর্ডওয়েনার স্মিথের দ্য লেডি হু সেইলড দ্য সোল (১৯৬০) উপন্যাসে।[১]:৭৪ অন্যান্য বেশ কয়েকজন লেখকের রচনায় এই ধারণাটির পুনরুল্লেখ পাওয়া যায়। যেমন, আর্থার সি. ক্লার্কের দ্য উইন্ড ফ্রম দ্য সান (১৯৭২) ও রবার্ট এল. ফরওয়ার্ডের ফিউচার ম্যাজিক (১৯৮৮)।[৫]:৭৪৩
  18. জেমস ব্লিশের ১৯৫০ সাল থেকে প্রকাশিত হতে থাকা সিটিজ ইন ফ্লাইট ধারাবাহিকে ব্যবহৃত একটি মাধ্যাকর্ষণ-বিরোধী ইঞ্জিন।[১]:৭৬–৭৭
  19. টর্চশিপ হল টর্চড্রাইভ দ্বারা চালিত একটি যান। টর্চড্রাইভ এক ধরনের পারমাণবিক বা ফিউশন ড্রাইভ। ব্রেভ নিউ ওয়ার্ডস-এর মতে টর্চশিপ শব্দটির প্রথম প্রয়োগ দেখা যায় রবার্ট হেইনলেইনের স্কাই লিফট (১৯৫৩) এবং টর্চড্রাইভ কথাটি প্রথম ব্যবহৃত হয় ল্যারি নিভেনের ওয়ার্ডস ইন এসএফ (১৯৭৬) প্রবন্ধে।[২]:১৪২, ২৪৬
  20. যান চালনার জন্য মাধ্যাকর্ষণ-নিয়ন্ত্রণকারী যন্ত্র – সাধারণভাবে যা মাধ্যাকর্ষণ-বিরোধীও। পল আন্ডারসনের স্টার শিপ (১৯৫০) উপন্যাসে শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হয়।[২]:৮১–৮২, ১৪২
  21. ব্রেভ নিউ ওয়ার্ডস বইতে হাইপারড্রাই, ওভারড্রাইভ ও আলট্রাড্রাইভ শব্দগুলির সংজ্ঞায় বলা হয়েছে যে, এগুলি সেই সব স্পেস ড্রাইভ যা মহাকাশযানকে আলোর চেয়ে দ্রুত গতিতে চালনা করে; ওভারড্রাইভ ও আলট্রাড্রাইভের আলাদা বৈশিষ্ট্য কিছু না থাকলেও, হাইপারড্রাইভ মহাকাশযানকে “হাইপারস্পেসে প্রবেশ করিয়ে” আলোর চেয়ে দ্রুত চালনা করে বলে বর্ণনা করা হয়। হাইপারড্রাইভের প্রসঙ্গে ব্রেভ নিউ ওয়ার্ডস বইটিতে বলা হয়েছে যে, শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হয়েছিল স্টার্টলিং স্টোরিজ পত্রিকার জানুয়ারি ১৯৪৯ সংখ্যার কোনও এক গল্পে। ওভারড্রাইভ প্রথম ব্যবহৃত হয় মারে লেইনস্টারের ফার্স্ট কনট্যাক্ট (১৯৪৫) উপন্যাসে এবং আলট্রাড্রাইভ প্রথম ব্যবহৃত হয় পল আন্ডারসনের টাইগার বাই টেইল (১৯৫৮) উপন্যাসে।[২]:৯৪, ১৪১, ১৪২, ২৫৩
  22. যে ড্রাইভের মাধ্যমে টেলিপোর্ট যানগুলি মুহুর্তের মধ্যে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় স্থানান্তরিত হয়।[২]:১৪২ নক্ষত্রের মধ্যে “লাফালাফি”-র ধারণাটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ১৯৪২ সাল থেকে প্রকাশিত হতে থাকা আইজ্যাক অ্যাসিমোভের ফাউন্ডেশন ধারাবাহিক কর্তৃক।[১]:৭৫ [২]:১৪২ হ্যারি হ্যারিসন এথিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (১৯৬৩) গ্রন্থে প্রথম ‘জাম্প ড্রাইভ’ শব্দটি ব্যবহার করেন।[২]:১০৪
  23. ধ্রুপদি ও প্রমাণিত ড্রাইভ-অপেক্ষা-মন্থর ড্রাইভ। এই ড্রাইভ যাত্রাপথের বিপরীত দিকে বস্তু নির্গত করে ধাক্কা দেয় – অন্য কথায়, রকেট। ১৯৪৯ সালে থিওডোর স্টারজিয়ন মাইনরিটি রিপোর্ট উপন্যাসে শব্দটি ব্যবহার করেন।[২]:১৪২, ১৬২
  24. মহাকাশযানের সঙ্গে নিবদ্ধ এক টেলিপোর্টার। ‘জাম্প গেট’ নামেও পরিচিত। ‘স্টার গেট’ শব্দটি ব্যবহার করেন আর্থার সি. ক্লার্ক ২০০১: আ স্পেস ওডিসি (১৯৬৮) উপন্যাসে; ‘স্টারগেট’ ব্যবহার করেন রবার্ট হোল্ডস্টকম্যাকলম এডওয়ার্ডস ট্যুর অফ দ্য ইউনিভার্স (১৯৮০) উপন্যাসে ও ‘জাম্প গেট’ ব্যবহৃত হয় ১৯৯৩ সাল থেকে সম্প্রচারিত ব্যাবিলন ৫ টেলিভিশন ধারাবাহিকে।[২]:১০৫–১০৬, ১৪২, ২১৭
  25. এই যন্ত্রটি স্পেস-টাইম কন্টিনুয়ামের আকৃতিকে খর্ব করে।[২]:১৪২ ধারণাটি জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল স্টার ট্রেক টেলিভিশন ধারাবাহিকের মাধ্যমে। তবে পূর্ববর্তী রচনাতেও ধারণাটির পরিচয় পাওয়া যায়, সেখানে প্রায়শই ‘স্পেস র‍্যাপ’ শব্দটি পাওয়া যায়। উদাহরণ: জন ডব্লিউ. ক্যাম্পবেলের আইল্যান্ডস অফ স্পেস (১৯৫৭)।[১]:৭৭[১২] ১৯৫৩ সালেই রবার্ট এ. হেইনলেইনের স্টারম্যান জোনস উপন্যাসে মহাশূন্যে ‘ভাঁজ’-এর ধারণাগুলিকে বিবেচনা করা হয়েছিল।[৫]:৭৪৩ ব্রেভ নিউ ওয়ার্ডস-এর মতে, ‘স্পেস-র‍্যাপ ড্রাইভ’ শব্দটির প্রথম উদাহরণ পাওয়া যায় ফ্রেডরিক ব্রাউনের গেটঅ্যাওয়ে টু ডার্কনেস (১৯৪৯) উপন্যাসে। সেই সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে যে কসমিক স্টোরিজ পত্রিকার মে ১৯৪১ সংখ্যায় একটি গল্পে মহাকাশ ভ্রমণের প্রেক্ষিতে ‘র‍্যাপ’ (wrap) শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছিল। যদিও যাত্রার সুবিধার্থে মহাশূন্যে “বাঁক বা বক্রতা” অর্থে শব্দটির ব্যবহার ১৯৩০-এর দশকেই বিভিন্ন রচনায় পাওয়া যায়। উদাহরণ: জ্যাক উইলিয়ামসনের দ্য কমেটিয়ারস (১৯৩৬)।[২]:২১২, ২৬৮
  26. এই বিষয়টি মাঝে মাঝে আধুনিক রচনাতেও এসে পড়ে। উদাহরণস্বরূপ, বব শ-এর ল্যান্ড অ্যান্ড ওভারল্যান্ড উপন্যাস-ত্রয়ীর নাম করা যায়, যার প্রথম উপন্যাস দ্য র‍্যাগড অ্যাস্ট্রোনাট (১৯৮৬)। এই উপন্যাস-ত্রয়ীর প্রেক্ষাপট ল্যান্ড ও ওভারল্যান্ড নামে এক জোড়া গ্রহ, যেগুলি মাধ্যাকর্ষণের একটি সাধারণ কেন্দ্রকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে এবং গ্রহ দু’টি পরস্পরের এতটাই কাছে অবস্থিত যে দু’টি গ্রহ একই বায়ুমণ্ডল নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছে।[৪]
  27. প্রচালনের উপায় হিসেবে কামান দাগার যে ধারণাটি ভার্ন ব্যবহার করেছিলেন তার প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হয়নি এবং প্রস্তাবিত হাইড্রলিক শক অ্যাবসর্বার ও প্যাডেড ওয়ালগুলি উড়ানের সময় ক্যাপসুলের যাত্রীদের মৃতুর হাত থেকেও রক্ষা করতে পারেনি।[১]:৬৯
  28. উদাহরণস্বরূপ, ৎসিওলকোভ্স্কির বিয়ন্ড দ্য প্ল্যানেট আর্থ (১৯২০ সালে প্রকাশিত, যদিও রচনার শুরু ১৮৯৬ সালে) হল রকেট মহাকাশযানে চড়ে চাঁদ ও গ্রহাণু বেষ্টনী ভ্রমণের একটি গল্প।[১]:৬৯
  29. যেমন দেখা গিয়েছে স্ট্যানলি কুব্রিকের ২০০১: আ স্পেস ওডিসি (১৯৬৮) চলচ্চিত্রে।[৩]:৫১১–৫১২
  30. ১৯৩৪ সালেই লরেন্স ম্যানিং-এর দ্য লিভিং গ্যালাক্সি এবং তার কিছুকাল পরেই ডন উইলকক্সের দ্য ভয়েজ দ্যাট লাস্টেড ৬০০ ইয়ার্স (১৯৪০) এই ধারণাটির প্রয়োগ দেখা যায়। রবার্ট এ. হাইনলাইনের উইনিভার্স-এ ধারণাটি জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং পরবর্তীকালে অরফ্যানস অফ দ্য স্কাই (১৯৬৪) ধারণাটি প্রসার লাভ করে। এই ধারণাটিকে কেন্দ্র করে রচিত অন্যান্য ধ্রুপদি গ্রন্থগুলি হল ব্রায়ান অলডিসের নন-স্টপ (১৯৫৮) এবং জিন উলফের বুক অফ দ্য লং সান ধারাবাহিক (১৯৩৩ সাল থেকে প্রকাশিত)।[১]:৭৩[৩]:৪৮৫–৪৮৬, ৫১১–৫১২[৫]:৭৪৩
  31. এই ধারণাটির অন্যতম উদাহরণ পাওয়া যায় এ. ই. ভ্যান ভটের ফার সেন্টরাস (১৯৪৪) বইটিতে।[১]:৭৪
  32. বাসার্ড র‍্যামজেট ও সময় প্রসারণের ধারণাটি বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে পল আন্ডারসনের তাউ জিরো (১৯৭০) বইটিতে।[৩]:৫১১–৫১২[১]:৭৬[৫]:৭৪৩ সময় প্রসারণের ধারণাটি একাধিক বইতে কাহিনির একটি সূত্র। উদাহরণস্বরূপ এল. রন হাবার্ডের টু দ্য স্টারস উপন্যাসটির নাম করা যায়; এই উপন্যাসে প্রত্যাবর্তনকারী মহাকাশচারীদের বহু শতাব্দী পরবর্তীকালের এক সমাজের মুখোমুখি হতে হয়।
  33. কীটগহ্বর ভ্রমণের একটি উদাহরণ হল জো হল্ডম্যানের ফরেভার ওয়ার ধারাবাহিক, যা ১৯৭২ সাল থেকে প্রকাশিত হতে থাকে।[১]:৭৭
  34. ফ্র্যাংক হারবার্ট ডিউন-এ (১৯৬৫) ও অন্যান্য কয়েকজন লেখক স্পেস ফোল্ডিং পরিভাষাটি ব্যবহার করেন।[১৮]:২১৪
  35. এই ধরনের ধারণা পাওয়া যায় টমাস এন. স্কর্টিয়ার সি চেঞ্জ (১৯৬৫) কাহিনিতে।[১]:৭৬
  36. উদাহরণস্বরূপ, এটি ফ্রেডেরিক পোলের দ্য ম্যাপমেকারস-এর (১৯৫৫) প্রধান বিষয়।[১]:৭৫ এছাড়াও যথাযথভাবে নামকরণকৃত লস্ট ইন স্পেস-এর কথাও ধরা যায়।[২০]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. ড় ঢ় য় কক কখ অ্যাশ, ব্রায়ান (১৯৭৭)। দ্য ভিস্যুয়াল এনসাইক্লোপিডিয়া অফ সায়েন্স ফিকশন (ইংরেজি ভাষায়)। হারমোনি বুকস। আইএসবিএন 978-0-517-53174-7 
  2. প্রুচার, জেফ (২০০৭-০৫-০৭)। ব্রেভ নিউ ওয়ার্ডস: দি অক্সফোর্ড ডিকশনারি অফ সায়েন্স ফিকশন (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 978-0-19-988552-7 
  3. মান, জর্জ (২০১২-০৩-০১)। দ্য ম্যামথ এনসাইক্লোপিডিয়া অফ সায়েন্স ফিকশন (ইংরেজি ভাষায়)। লিটল, ব্রাউন বুক গ্রুপ। আইএসবিএন 978-1-78033-704-3 
  4. "থিমস: স্পেস ফ্লাইট: এসএফই: সায়েন্স ফিকশন এনসাইক্লোপিডিয়া"ডব্লিউডব্লিউডব্লিউ.এসএফ-এনসাইক্লোপিডিয়া.কম। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০১ 
  5. স্লাসার, জর্জ (২০০৫)। "স্পেস ট্রাভেল"। ওয়েস্টফাল, গ্যারি। দ্য গ্রিনউড এনসাইক্লোপিডিয়া অফ সায়েন্স ফিকশন অ্যান্ড ফ্যান্টাসি: থিমস, ওয়ার্কস, অ্যান্ড ওয়ান্ডারস (ইংরেজি ভাষায়)। গ্রিনউড পাবলিশিং গ্রুপ। আইএসবিএন 978-0-313-32952-4 
  6. "অথরস: গডউইন, ফ্রান্সিস: এসএফই: সায়েন্স ফিকশন এনসাইক্লোপিডিয়া"ডব্লিউডব্লিউডব্লিউ.এসএফ-এনসাইক্লোপিডিয়া.কম। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৩ 
  7. "অথরস: সিরানো ডে বারজেরাক: এসএফই: সায়েন্স ফিকশন এনসাইক্লোপিডিয়া"ডব্লিউডব্লিউডব্লিউ.এসএফ-এনসাইক্লোপিডিয়া.কম। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৩ 
  8. "টেমস: হার্ড এসএফ: এসএফই: সায়েন্স ফিকশন এনসাইক্লোপিডিয়া"ডব্লিউডব্লিউডব্লিউ.এসএফ-এনসাইক্লোপিডিয়া.কম। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৩ 
  9. "মিডিয়া: স্টার ট্রেক: এসএফই: সায়েন্স ফিকশন এনসাইক্লোপিডিয়া"ডব্লিউডব্লিউডব্লিউ.এসএফ-এনসাইক্লোপিডিয়া.কম। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৩ 
  10. ক্রিড, বারবারা (২০০৯), ডারউইন’স স্ক্রিনস: ইভোলিউশনারি এসথেটিকস, টাইম অ্যান্ড সেক্সুয়াল ডিসপ্লে ইন দ্য সিনেমা, অ্যাকাডেমিক মনোগ্রাফস, পৃষ্ঠা ৫৮, আইএসবিএন 978-0-522-85258-5 
  11. জর্জ আর্ফকেন (১ জানুয়ারি ১৯৮৪)। ইউনিভার্সিটি ফিজিক্সঅ্যাকাডেমিক প্রেসআইএসবিএন 978-0-323-14202-1। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০১৩ 
  12. "থিমস: স্পেস র‍্যাপ: এসএফই: সায়েন্স ফিকশন এনসাইক্লোপিডিয়া"ডব্লিউডব্লিউডব্লিউ.এসএফ-এনসাইক্লোপিডিয়া.কম। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৪ 
  13. "থিমস: হাইপারস্পেস: এসএফই: সায়েন্স ফিকশন এনসাইক্লোপিডিয়া"ডব্লিউডব্লিউডব্লিউ.এসএফ-এনসাইক্লোপিডিয়া.কম। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৩ 
  14. নিকোলস, পিটার; ল্যাংফোর্ড, ডেভিড; স্ট্যাবলফোর্ড, ব্রায়ান এম., সম্পাদকগণ (১৯৮৩)। "ফাস্টার দ্যান লাইট অ্যান্ড রিলেটিভিটি"। দ্য সায়েন্স ইন সায়েন্স ফিকশন (ইংরেজি ভাষায়)। নফ। আইএসবিএন 978-0-394-53010-9 
  15. ড্উইলসন, স্টিফেনি ড্যুব (২০১৭-১০-০৯)। "'স্টার ট্রেক: ডিসকভারি' নিউ স্পোর ড্রাইভ ভার্সেস আদার ফাস্টার-দ্যান-র‍্যাপ টেক"হেভি.কম (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৯ 
  16. "অথরস: ৎসিওলকোভ্স্কি, কন্স্তান্তিন: এসএফই: সায়েন্স ফিকশন এনসাইক্লোপিডিয়া"ডব্লিউডব্লিউডব্লিউ.এসএফ-এনসাইক্লোপিডিয়া.কম। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৩ 
  17. [১]
  18. গ্রেজিয়ার, কেভিন আর. (২০০৭-১২-১১)। দ্য সায়েন্স অফ ডিউন: অ্যান আনঅথরাইজড এক্সপ্লোরেশন ইনটু দ্য রিয়েল সায়েন্স বিহাইন্ড ফ্র্যাংক হারবার্ট’স ফিকশনাল ইউনিভার্স (ইংরেজি ভাষায়)। বেনবেলা বুকস, আইএনসি.। আইএসবিএন 978-1-935251-40-8 
  19. "৫ ফাস্টার-দ্যান-লাইট ট্রাভেল মেথডস অ্যান্ড দেয়ার প্লজিবিলিটি"দি এসকেপিস্ট (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৪-০৬-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৩ 
  20. "মিডিয়া: লস্ট ইন স্পেস: এসএফই: সায়েন্স ফিকশন এনসাইক্লোপিডিয়া"ডব্লিউডব্লিউডব্লিউ.এসএফ-এনসাইক্লোপিডিয়া.কম। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০৮