কলিন ক্রফট

ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার

কলিন এভারটন হান্ট ক্রফট (ইংরেজি: Colin Croft; জন্ম: ১৫ মার্চ, ১৯৫৩) ব্রিটিশ গায়ানার ডেমেরারা এলাকার ল্যাঙ্কাস্টার ভিলেজে জন্মগ্রহণকারী সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন কলিন ক্রফট। দীর্ঘদেহী ক্রফট মূলতঃ বোলার ছিলেন।

কলিন ক্রফট
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
কলিন এভারটন হান্ট ক্রফট
জন্ম (1953-03-15) ১৫ মার্চ ১৯৫৩ (বয়স ৭১)
ল্যাঙ্কাস্টার ভিলেজ, ডেমেরারা, ব্রিটিশ গায়ানা
উচ্চতা৬ ফুট ৫ ইঞ্চি (১.৯৬ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৫৯)
১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৭ বনাম পাকিস্তান
শেষ টেস্ট৩০ জানুয়ারি ১৯৮২ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ২০)
১৬ মার্চ ১৯৭৭ বনাম পাকিস্তান
শেষ ওডিআই২৪ নভেম্বর ১৯৮১ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৭২-১৯৮২গায়ানা
১৯৭৫-১৯৮২ডেমেরারা
১৯৭৭-১৯৮২ল্যাঙ্কাশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ২৭ ১৯ ১২১ ৮১
রানের সংখ্যা ১৫৮ ১৮ ৮৫৫ ২৩১
ব্যাটিং গড় ১০.৫৩ ৯.০০ ১০.৪২ ১৫.৪০
১০০/৫০ ০/০ ০/০ –/– ০/০
সর্বোচ্চ রান ৩৩ ৪৬* ৩৩
বল করেছে ৬১৬৫ ১০৭০ ২১১০১ ৪০৮৩
উইকেট ১২৫ ৩০ ৪২৮ ১০২
বোলিং গড় ২৩.৩০ ২০.৬৬ ২৪.৫৯ ২৪.১৬
ইনিংসে ৫ উইকেট ১৭
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং ৮/২৯ ৬/১৫ ৮/২৯ ৬/১০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৮/– ১/– ২৫/– ১৭/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১ আগস্ট ২০১৫

ডানহাতে ফাস্ট বোলিং করার পাশাপাশি ডানহাতে ব্যাটিংয়ে অভ্যস্ত ছিলেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে গায়ানাসহ ডেমেরারা ও ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি।

খেলোয়াড়ী জীবন

সম্পাদনা

১৯৭০-এর দশকের শেষার্ধ্ব থেকে ১৯৮০-এর দশকের শুরুর দিকে অ্যান্ডি রবার্টস, মাইকেল হোল্ডিংজোয়েল গার্নারের সাথে দলের অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন তিনি। এ চাররত্নের বোলিং আক্রমণে টেস্টএকদিনের আন্তর্জাতিক স্তরের ক্রিকেটে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের উপর ত্রাসের রাজত্ব কায়েমসহ বৈশ্বিক ক্রিকেটে একাধিপত্য বিস্তার করেছেন। ৬ ফুট ৫ ইঞ্চির আদর্শ উচ্চতার অধিকারী হওয়ায় তিনি বলকে বাউন্সার সহযোগে আক্রমণাত্মক ভঙ্গীমায় বোলিংয়ে সক্ষমতা দেখিয়েছেন। বিশেষ করে ডানহাতি ব্যাটসম্যানদের দিকে বলকে বেশ বাঁক খাওয়াতেন।

১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৭ তারিখে পাকিস্তানের বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজস্ব সেরা ৮/২৯ লাভ করেন যা অদ্যাবধি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফাস্ট বোলারদের মধ্যে সেরা। একই দলের বিপক্ষে ১৬ মার্চ, ১৯৭৭ তারিখে একদিনের আন্তর্জাতিকে প্রথম খেলেন ক্রফট। ১৯৭৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা বিজয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।

নিষিদ্ধতা

সম্পাদনা

১৯৮২ সালে আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে বর্ণবৈষম্যবাদজনিত নিষেধাজ্ঞায় কবলিত দক্ষিণ আফ্রিকায় বিদ্রোহী দলের সফরে অংশ নেন। দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার কর্তৃক বিদ্রোহী দলের খেলোয়াড়গণ ‘সম্মানিত শ্বেতাঙ্গ’ মর্যাদার অধিকার পায় ও শ্বেতাঙ্গ ক্রিকেট এলাকাভূক্ত স্থানে খেলার অনুমতিপ্রাপ্ত হন।[] ফলে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করায় তাকেসহ অংশগ্রহণকারী সকলকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটাঙ্গন থেকে আজীবন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এরফলে কার্যত তার খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে ও নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন না করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসিত হন।[] অবশ্য ঐ নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি ১৯৮৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডজাতিসংঘ কর্তৃক প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।

২০০৭-০৮ মৌসুমে যুক্তরাজ্যের বার্কশায়ারের উইঙ্কফিল্ড রো এলাকায় অবস্থিত ল্যাম্বরুক স্কুলে গণিত বিষয়ে অধ্যাপনা কর্মের সাথে জড়িত হন। সেখানে তিনি দেড় বছর অবস্থান করেন। সেখানে তিনি বিদ্যালয় দলকে কোচিং না করালেও নিয়মিতভাবে অভিভাবকদেরকে অটোগ্রাফ দিতেন।

১৯৯৪ সাল থেকে ধারাভাষ্যকার/বিশ্লেষক হিসেবে খণ্ডকালীন কাজের সাথে সম্পৃক্ত হন তিনি। এছাড়াও তিনি ক্রিকইনফোর অন্যতম লেখক ছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সফরের সাথে অবস্থান নিয়ে ক্রীড়া সাংবাদিকতার দিকে ঝুঁকে পড়েন। ১৯৯৫ সালে সর্বপ্রথম যুক্তরাজ্যে ক্রিকেট সফরকে ঘিরে লেখেন। ২০০৭ সালের আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপে রেডিওতে বিবিসি’র টেস্ট ম্যাচ স্পেশালে গায়ানাভিত্তিক খেলাগুলোর সবকটিতে বিশ্লেষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। একই বছরে ইংল্যান্ডে দলের সফরেও এ ভূমিকায় ছিলেন।

১৯৭৩ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত ক্রিকেটের পাশাপাশি এয়ার ট্রাফিক কন্ট্র্রোলার হিসেবে চাকরি করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কমার্শিয়াল এয়ারলাইন পাইলট হিসেবেও তিনি নিবন্ধিত হন। এরফলে যুক্তরাজ্যসহ ক্যারিবিয় দেশগুলোয়ও বাণিজ্যিকভাবে পাইলট হিসেবে বিমান পরিচালনা করেছেন। এছাড়াও তিনি স্কাই স্পোর্টসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলা চলাকালীন স্টুডিওতে অতিথি হিসেবে নিয়মিতভাবে অংশ নিচ্ছেন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা