কলামন্ডলম গিরিজা একজন ভারতীয় কুদিয়াট্টম নৃত্যশিল্পী। তিনি নাট্যকলাসার্বভৌমান গুরু পেনকুলাম রমা চাকিয়ার-এর (যিনি ভারতীয় সংস্কৃত নাটক ও নৃত্যের এই ধারার নবজাগরণে মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন) অধীনে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। [১] গিরিজাকে তাঁর গুরু কুদিয়াট্টম প্রশিক্ষণের জন্য অ-নাম্বিয়ার ছাত্রী রূপে মনোনীত করেছিলেন এবং গিরিজাই প্রথম কুদিয়াট্টম শিল্পী রূপে মন্দির চত্বরের বাইরে নৃত্য পরিবেশন করে ইতিহাসের অংশ হয়েছিলেন। তিনি আইসিসিআর-এর তালিকাভুক্ত একজন কুদিয়াট্টম শিল্পী [২]

কলামন্ডলম গিরিজা
জন্ম১৯৫৮
জাতীয়তাভারতীয়
পেশাকুদিয়াট্টম নৃত্যশিল্পী
গুরু কলামন্ডলম গিরিজা

প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা

কলামণ্ডলম গিরিজা ১৯৫৮ সালে কেরলের ত্রিশুর জেলার কাদাবল্লুরে এমন একটি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যাঁরা জীবিকা নির্বাহের জন্য মন্দিরের উপর নির্ভরশীল ছিলেন। [৩] গিরিজার পিতা পক্ষীল নারায়ণন মুসাদ মন্দিরের একজন পাঠকম বিশারদ ছিলেন এবং তাঁর মা দেবকী মনায়াম্মা তিরুবতীরাক্কালি পরিবেশনায় যুক্ত ছিলেন। গিরিজা ছোট থেকেই রামায়ণ এবং মহাভারতের গল্পগুলির সাথে পরিচিত ছিলেন যা তাঁকে কুদিয়াট্টম শিখতে সহায়তা করেছিল। তিনি ১৯৭১ সালে কেরলে কলামণ্ডলমে যোগ দিয়েছিলেন [৪] এবং ৬ বছরের মধ্যে সাফল্যের সাথে কুদিয়াট্টমে তাঁর ডিপ্লোমা এবং পোস্ট ডিপ্লোমা শেষ করেছিলেন। এরপর ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রকের বৃত্তি নিয়ে তিনি আরও উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন। পেনকুলাম রমা চাকিয়া ছাড়াও তিনি কুঞ্জিপিলাকুট্টি নাম্বিয়ারাম্মা, পি. কে. নারায়ণন নাম্বিয়ার এবং সংস্কৃত পণ্ডিত উন্নীকৃষ্ণান ইলিয়াথের কাছেও প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। কলামন্ডলমে তাঁর পড়াশুনার সময়কালে তিনি ডাঃ কে. এন. পিশারোটি পুরস্কার এবং মার্গি পুরস্কারের মতো পুরস্কার পেয়েছিলেন।

গিরিজা ১৯৮৪ সালে মন্দিরের বাইরে কলামন্ডলমে নাঙ্গিয়ারকুট্টু পরিবেশনকারী প্রথম শিল্পী হিসাবে কুদিয়াট্টমের ইতিহাসে নিজের নাম সুপ্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তার পর থেকে তিনি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে বহু স্থানে কুদিয়াট্টম পরিবেশন করেছেন। ভারতে সংগীত নাটক অকাদেমির মঞ্চ এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশন্স সহ বহু মঞ্চে অনুষ্ঠান করেছেন তিনি। বিশ্বজুড়ে বহু ছাত্রছাত্রীকে তিনি কলামন্ডলমে এসে কুদিয়াট্টম এবং নাঙ্গিয়ারকুট্টু শিখতে প্রভাবিত করেছেন। কুদিয়াট্টমের ইতিহাসে গিরিজাই একমাত্র মহিলা শিল্পী যিনি পুরুষ এবং নারী উভয় ভূমিকাতেই দক্ষ ছিলেন।

২০০১ সালে, কেরল সরকার গিরিজাকে কেরল সংগীত নাটক অকাদেমি পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করে। তিনি ২০০৮ সালে পেনকুলাম রমা চাকিয়ার স্মারক পুরস্কার, ২০০৯ সালে কেরলের কলামন্ডলম পুরস্কার এবং ২০১২ সালে কালাসাগর পুরস্কার পেয়েছিলেন। তিনি কুদিয়াট্টমের মাধ্যমে বেণীসংহারম -২০০৭, বালাচরিতম, ভগবতী প্রবেশম-২০১০, নাগানন্দম -২০১৩,বেণীসংহারম-২০১৫, তপতীসম্বরণম-ওঝূকম নাঙ্গিয়ার-২০১৬ প্রভৃতি নাটক করেছেন। ।

গিরিজা ১৯৮১ সাল থেকে কেরলের কলামন্ডলামে কুদিয়াট্টম এবং নাঙ্গিয়ারকট্টু প্রশিক্ষক হিসাবে কাজ করছেন এবং এখন ২০১৪ সালে বিভাগীয় প্রধান হিসাবে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন। তিনি মৃন্ময় সেন্টার ফর থিয়েট্রিকাল রিসার্চের প্রধান প্রশিক্ষক হিসাবে কাজ করে চলেছেন, কুদিয়াট্টমের প্রচার ও প্রসারের উদ্যোগ নিয়ে এবং বিভিন্ন ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক থিয়েটার বিভাগের অতিথি শিক্ষক হিসাবেও কাজ করছেন।

২০১৬ সালে তাকে কেরলের কলামণ্ডলম ডিমেড আর্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুনরায় আমন্ত্রিত করা হয়েছিল কুদিয়াট্টম বিভাগের অতিথি অনুষদ প্রধান হিসাবে এবং একজন পরিচালক হিসাবে তাঁর দক্ষতা স্নাতকোত্তর এবং গবেষণা শিক্ষার্থীদের বিকাশে ব্যবহার করা হবে।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Simon Williams (৮ জানুয়ারি ২০১৫)। The Cambridge Encyclopedia of Stage Actors and Acting। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 259–। আইএসবিএন 978-1-316-19408-9 
  2. Features, Express (২০১৫-০১-০৬)। "Tribute to a Master"। The New Indian Express। ২০১৬-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৫-২৬ 
  3. "Pioneer performer"। The Hindu। ২০১০-১১-২৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৫-২৬ 
  4. "Girija Devi Kalamandalam Kutiyattam and Nangiarkoothu artist Profile, Programs, Awards, Photos & Videos"। Thiraseela.com। ২০১৯-০১-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৫-২৬ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা