কর্ষণ ঘাবরী
কর্ষণ দেবজীভাই ঘাবরী (গুজরাটি: કરસન ઘાવરી; জন্ম: ২৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫১) গুজরাতের রাজকূট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭৪ থেকে ১৯৮১ সময়কালে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
;ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | কর্ষণ দেবজীভাই ঘাবরী | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | ২৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫১ রাজকূট, গুজরাত, ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | বামহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | বামহাতি মিডিয়াম | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | অল-রাউন্ডার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১৩৬) | ২৭ ডিসেম্বর ১৯৭৪ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ৬ মার্চ ১৯৮১ বনাম নিউজিল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ১৬) | ৭ জুন ১৯৭৫ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৮১ বনাম নিউজিল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৭ মার্চ ২০২০ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে মুম্বই ও সৌরাষ্ট্র দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বামহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন কর্ষণ ঘাবরী।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
সম্পাদনা১৯৬৯-৭০ মৌসুম থেকে ১৯৮৪-৮৫ মৌসুম পর্যন্ত কর্ষণ ঘাবরী’র প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। দেশের অন্যতম সেরা কার্যকরী ক্রিকেটার হিসেবে কর্ষণ ঘাবরী’র সুনাম রয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেটে তিনি অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন। বলে পেস আনয়ণে তুলনামূলকভাবে দীর্ঘ দূরত্ব নিয়ে বোলিং করতেন। বামহাতি বোলার হিসেবে মিডিয়াম পেস কিংবা স্লো বলে পারদর্শী ছিলেন। নিয়মিতভাবে ব্যাটসম্যানদের বিভ্রান্তিতে ফেলতেন। আকস্মিকভাবে বাউন্স করতেন। নিচেরসারির ব্যাটসম্যান হলেও উইকেটের এক প্রান্ত ধরে রাখতেন কিংবা স্ট্রোকের ফুলঝুড়ি ছোটাতেন। নিজস্ব প্রথম টেস্ট সিরিজেই অল-রাউন্ডার হিসেবে মেলে ধরতে সচেষ্ট হন। দূর্ভাগ্যজনকভাবে পরবর্তী মৌসুমে নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমনার্থে তাকে দলে রাখা হয়নি।
১৯৬৮-৬৯ মৌসুমে ভারতের বিদ্যালয় দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া গমন করে নিজস্ব প্রতিশ্রুতিশীলতার স্বাক্ষর রাখেন। বামহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম পেস বোলার ছিলেন কর্ষণ ঘাবরী। দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করে বেশ উঁচুতে লাফিয়ে বোলিং ভঙ্গীমায় অগ্রসর হতেন। এছাড়াও, বেশ দ্রুতলয়ে নিখুঁততার সাথে বামহাতে স্পিন বোলিংয়ে দক্ষ ছিলেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সম্পাদনাসমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ঊনচল্লিশটি টেস্ট ও ঊনিশটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন কর্ষণ ঘাবরী। ২৭ ডিসেম্বর, ১৯৭৫ তারিখে কলকাতায় সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৬ মার্চ, ১৯৮১ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।
সর্বমোট ১০৯টি টেস্ট উইকেট লাভ করেছেন। তন্মধ্যে, চারবার পাঁচ-উইকেটের সন্ধান পেয়েছেন তিনি। সচরাচর তাকে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতে দেখা যেতো। তাসত্ত্বেও, দুইবার টেস্টে অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেছেন। বোম্বেতে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা ৮৬ রান করেছেন। এ পর্যায়ে সৈয়দ কিরমানী’র সাথে অষ্টম উইকেটে ১২৭ রান তুলে রেকর্ড গড়েন। ৯৯ বলের ঐ ইনিংসে ১২টি চার ও ৩টি বিশাল ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন কর্ষণ ঘাবরী। তবে, নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে খেলতে নামা সৈয়দ কিরমানী ১০১ রানে অপরাজিত ছিলেন। ঐ টেস্টে ভারত দল জয় পায়। পাশাপাশি, কিম হিউজের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে সিরিজ জয়ে সক্ষম হয়।
১৯৭৫ সালে অভিষেক পর্ব সমাপন করলেও ১৯৭৬-৭৭ মৌসুম পর্যন্ত দলে নিজের স্থান পাকাপোক্ত করতে পারেননি। ঐ মৌসুমে নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ খেলার পর থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত নিয়মিতভাবে খেলতেন তিনি। ১৯৭৬-৭৭ মৌসুমে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলায় ফিরে আসেন ও ১৯৮১ সাল পর্যন্ত দলের নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা পান। তন্মধ্যে, ১৯৭৭-৭৮ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তিন টেস্টের সিরিজে নিজের সেরা সময় অতিবাহিত করেন। সিডনিতে দলের একমাত্র ইনিংসে ৬৪ রান তুলেন। অ্যাডিলেডে সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে সাত উইকেট পেয়েছিলেন।
১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সফলতম সিরিজ খেলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ২৭ উইকেট পান। পরের মৌসুমে টেস্টে তিনি তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৮৬ রান তুলেন। পরবর্তী সিরিজে পাকিস্তানের মুখোমুখি হন। কানপুর টেস্টে দলের সংগ্রহ ৬৯/৮ থাকা অবস্থায় মাঠে নেমে দলকে ১৬২ রানে নিয়ে যান। এ পর্যায়ে তিনি অপরাজিত ৪৫ রান তুলেছিলেন। কলকাতায় সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে আবারও ত্রাণকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। অপরাজিত ৩৭ রান তুলে দলকে সমূহ পরাজয়বরণ করা থেকে রক্ষা করেন।
অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি
সম্পাদনা১৯৮১ সালে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। নিজস্ব সর্বশেষ টেস্ট সফরে বেশ ভালো করেন। সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ার একমাত্র ইনিংসে ৫/১০৭ লাভ করেন। সিরিজের তৃতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে স্মরণীয় খেলা উপহার দেন। খেলার চতুর্থ দিনে অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান জন ডাইসন ও দলীয় অধিনায়ক গ্রেগ চ্যাপেলকে উপর্যুপরী দুই বলে বিদেয় করলে ভারতের জয়কে চূড়ান্ত দিনে নিয়ে যান।[১] পরবর্তীতে কপিল দেব নিজেকে মেলে ধরলে ভারত দল চূড়ান্ত দিনে ৫৯ রানে জয় তুলে নেয়। ১৯৭৮ সালে ফয়সালাবাদে পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেক ঘটা কপিল দেব তার বোলিং জুটি ছিলেন।
১৯৮২ সালে ভারত দল ইংল্যান্ড গমন করে। এ সফরে মদন লালকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ১৯৭৫ ও ১৯৭৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারত দলে খেলেছেন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "India vs Australia, 3rd Test, 1981"। CricInfo।
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে কর্ষণ ঘাবরী (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে কর্ষণ ঘাবরী (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)