কমলকুমার বসু (২২ আগস্ট ১৯১৮ - ২১ জানুয়ারি ২০১৩)[১] ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি রাজনীতিক। ১৯৮৫ সাল হতে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা শহরের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন সংস্থা কলকাতা পৌরসংস্থার মেয়র ছিলেন।[২]

জন্ম ও শিক্ষা জীবন সম্পাদনা

কমলকুমার বসুর জন্ম বৃটিশ ভারতের কলকাতায়। পিতা গিরীন্দ্রনাথ বসু। তার ব্যারিস্টার পিতামহ ভূপেন্দ্রনাথ বসু ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি। কমলকুমারের পড়াশোনা শুরু হয় কলকাতার টাউন স্কুলে। এখান থেকে ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে ম্যাট্রিকুলেশন পাশের পর ভর্তি হন স্কটিশ চার্চ কলেজে। ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে অর্থনীতিতে স্নাতক হন। ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ ও পরে আইন নিয়েও পড়াশোনা করেন।[৩][৪] আইন পাশের পর তিনি সলিসিটর ফার্ম বি.এন বসু অ্যান্ড কোম্পানিতে যোগ দেন।

কর্মজীবন (রাজনীতি ও সামাজিক) সম্পাদনা

তিনি বিবিধ রাজনৈতিক ও সামাজিক কাজে জড়িত ছিলেন আমৃত্যু। রাজনীতিতে আসেন অল্প বয়সেই। রাজনৈতিক জীবনে বামপন্থায় বিশ্বাসী তিনি সহপাঠী শ্যামল চক্রবর্তী, সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, স্নেহাশু আচার্য , জ্যোতি বসু প্রমুখেরা সাহচর্যে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি'র সদস্য হন চল্লিশের দশকে এবং স্বাধীনতোত্তর ভারতে১৯৫২ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার পশ্চিমবঙ্গের ডায়মন্ড হারবার থেকে লোকসভার সংসদ সদস্য হন।[২] ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে কমিউনিস্ট পার্টি ভেঙ্গে গেলে, তিনি মাক্সর্বাদী কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন এবং সিপিআই (এম) দলেই চার দশকের বেশি যুক্ত থাকেন।[৩]

পরবর্তী জীবন সম্পাদনা

১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতা পৌরসংস্থার মেয়র হন। তিনি সল্টলেক সেটডিয়াম তৈরির সময় থেকেই সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন তদানীন্তন 'সোসাইটি ফর স্পোর্টস অ্যান্ড স্টেডিয়াম'-এর প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক হিসাবে।[৩] তিনি স্টেডিয়াম তৈরির সময়ে এর পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন।[৪] তিনি মোহনবাগান ক্লাবের পৃষ্ঠপোষকও ছিলেন।[৩]

১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে চীন-ভারত যুদ্ধের সময় ভারত সরকার সন্দেহের কারণে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যদের আটক করলে, তিনি সদস্যদের জন্য আইনি লড়াই চালিয়ে গেছেন।[৪] তিনি ফেডারেশন হল (মিলন মন্দির) পরিচালন সমিতির প্রধান ছিলেন। ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে আমৃত্যু ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন।[১]

মৃত্যু সম্পাদনা

তিনি ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের ২১ শে জানুয়ারি কলকাতার এক বেসরকারি নার্সিংহোমে পরলোক গমন করেন।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Bose, Anjali (২০১৯)। Sansad Bengali Charitabhidhan Vol.II। Sahitya Sansad, Kolkata। পৃষ্ঠা 79। আইএসবিএন 978-81-7955-292-6 
  2. "Former Kolkata mayor Kamal Basu dead"Indo Asian News Service। yahoo.com, 21 January 2013। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-২৬ 
  3. "Former Kolkata mayor Kamal Basu passes away"The Times of India। ২২ জানুয়ারি ২০১৩। ১৬ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-২৬ 
  4. "Saviour of rajbati"The Telegraph। Calcutta, India: telegraphindia.com, 29 August 2010। ২৯ আগস্ট ২০১০। ১৬ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-২৬ 

আরও পড়ুন সম্পাদনা

  • দেবাসিস বোস, কমল কুমার বসুর পরিক্রিক প্রেমপত্র (বাংলা ভাষায়), কলকাতা, ২০১০।