কপিলেশ্বর শিবমন্দির

ভারতের একটি হিন্দু মন্দির

কপিলেশ্বর শিবমন্দির ভারতের ওড়িশা রাজ্যের পুরান শহরের কপিলেশ্বর গ্রামের দক্ষিণ পশ্চিমাংশে অবস্থিত একটি শিবমন্দিরলিঙ্গরাজ মন্দির থেকে কপিলেশ্বর গ্রামে যাওয়া কপিলেশ্বর রাস্তার শেষ মাথায় মন্দিরটি অবস্থিত। মন্দিরের অধিষ্ঠাতা দেবতা হচ্ছে চক্রাকার যোনিপিঠের উপর শিবলিঙ্গ। মন্দিরটি পূর্বমুখী এবং এর দেখাশোনার দায়িত্বে আছে কপিলেশ্বর মন্দির ট্রাস্ট বোর্ড। মণিকর্ণিকা দীঘির উত্তর পাড়ে মন্দিরটি অবস্থিত।

কপিলেশ্বর শিবমন্দির
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
ঈশ্বরশিব
অবস্থান
অবস্থানভুবনেশ্বর
রাজ্যওড়িশা
দেশভারত
কপিলেশ্বর শিবমন্দির ওড়িশা-এ অবস্থিত
কপিলেশ্বর শিবমন্দির
ওড়িষাতে অবস্থান
স্থানাঙ্ক২০°১৩′৪৫″ উত্তর ৮৫°৪৯′৩৯″ পূর্ব / ২০.২২৯০৯° উত্তর ৮৫.৮২৭৪৩৮° পূর্ব / 20.22909; 85.827438
স্থাপত্য
ধরনকলিঙ্গ স্থাপত্যশৈলী
সম্পূর্ণ হয়১৪ শতক
উচ্চতা১৪ মি (৪৬ ফু)

জনশ্রুতি সম্পাদনা

স্থানীয় জনশ্রুতি অনুযায়ী এটা সাংখ্যদর্শনের জনক কপিলার জন্মভূমি। তাকে ব্রহ্মার ব্রেন চাইল্ড, বিষ্ণুর রূপ এবং স্বয়ং শিব ভাবা হয়। মন্দিরটির অধিষ্ঠাতা দেবতা কপিলেশ্বর শিব।

বর্ণনা সম্পাদনা

মন্দিরটি ৬০ ফুট উঁচু এবং এর পাশে একটা পাথরে বাঁধানো সিড়িযুক্ত পুকুর আছে। ভুবনেশ্বরের লিঙ্গরাজ মন্দিরের উপকেন্দ্র হচ্ছে কপিলেশ্বর শিব মন্দির। ভারতের অন্যান্য মন্দিরের মত এই মন্দির দুটিও সামাজিক, রাজনৈতিক এবং শিক্ষা সম্পর্কিত কাজকর্মের কেন্দ্রবিন্দু। ২০ শতক পর্যন্ত মন্দিরটি এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং আচারানুষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করে [১] । সূর্য্যবংশীয় রাজা কপিলেন্দ্র দেবের রাজত্বকালে ১৪ শতকে মন্দিরটি নির্মিত হয়। তবে কপিলেন্দ্রদেবের শিলালিপি এবং অন্যান্য প্রত্নতত্ত্বীয় ধ্বংসাবশেষ থেকে প্রতিয়মান হয় যে মন্দিরটি ১১ শতকের পূর্বে নির্মিত।

স্থাপত্যশৈলী সম্পাদনা

মন্দিরটি প্রথম ব্যবহৃত একই উপাদানে পরবর্তীতে সংস্কার করা হয়। মন্দিরটিতে বিমান, জগমোহন, নাটমন্দির এবং ভোগমন্ডপ আছে। বিমান রেখাক্রমে অবস্থিত। বিমানটির পরিমাপ ১১.৪০ মি. যাতে বড়, গান্দি ও মস্তক অংশ আছে।

পার্শ্বদেবতাদের কুলুঙ্গি উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণের দেয়ালে অবস্থিত যেখানে পর্যায়ক্রমে পার্বতী, কার্তিক এবং গণেশ। কুলুঙ্গির নিচের তালাগর্ভিকা অংশে নাগনাগীর ছবি খোদাই করা। কুলুঙ্গির উপরের অংশে মুকুটাকারে উর্ধ্বগর্ভিকা আছে। পশ্চিমের কুলুঙ্গি তে চার হাত যুক্ত কার্তিক ত্রিভঙ্গ দশায় পদ্মপাতার উপরে দাঁড়িয়ে আছে যার উপরের হাতে ডমরু ও ডান হাতে ত্রিশুল এবং নিচের বাম হাতে তীর ও ডান হাতে বারদামুদ্রা ধরা আছে। তার মাথায় জটামুকুট এবং কোনায় উড়ন্ত বিদ্যাধারা ও বেদির গোড়ার কাছে পুরুষ পুজারী আনত হয়ে আছে। উত্তরের কুলুঙ্গিতে চার হাত যুক্ত পার্বতী পদ্মের উপর অবস্থান করছে। মূর্তিটি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিচের বাম হাতে পদ্ম ও ডান হাতে বারদা মুদ্রা এবং উপরের বাম হাতে নাগপাশ ধরা ও ডান হাত ভাঙা। পার্বতীর মাথায় জটামুকুট এবং দুজন নারীমূর্তি শক্তি ধরে আছে। দক্ষিণের কুলুঙ্গিতে চার হাত যুক্ত গণেশ আছে। তার নিচের বাম হাতে পরশু ও ডান হাতে অক্ষমালা ধরা এবং উপরের বাম হাতে মোদক পাত্র ধরা। তার মাথায়ও জটামুকুট আছে।

ললাটবিম্বতে গজলক্ষী ললিতাসনে বসে আছে পদ্মের উপর। তার উভয় হাতে পদ্ম ধরা যার উপর দুটো হাতি দেবীর মাথায় জল ছিটাচ্ছে।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Untouchable: an Indian life history P.38.James M. Freeman

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা