কনজুমার্স ইন্টারন্যাশনাল

কনজুমার্স ইন্টারন্যাশনাল বা সিআই (ইংরেজি: Consumers International) ভোক্তাদের বৈশ্বিক সংগঠন হিসেবে পরিচিত একটি অ-লাভজনক সংস্থা। ভোক্তাদের অধিকার সম্বন্ধে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা সৃষ্টিতে এটি কাজ করে যাচ্ছে। ইংল্যান্ডের লন্ডন থেকে এ সংগঠনটি পরিচালিত হয়। ১ এপ্রিল, ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে কনজুমার্স ইন্টারন্যাশনাল প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ১১৫টি দেশের ২২০টিরও অধিক সংস্থা এর সদস্য। প্রায় দু্ই-তৃতীয়াংশ সদস্যই উন্নয়নশীল দেশের, বাকী এক-তৃতীয়াংশ সদস্য শিল্পোন্নত দেশের। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভোক্তাদের আন্দোলন ও ভোক্তাদের নিরাপত্তা প্রদানে সংস্থাটি সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

কনজুমার্স ইন্টারন্যাশনাল
প্রতিষ্ঠাকাল১৯৬০ (1960)
ধরনচ্যারিটি নং ১১২২১৫৫
আলোকপাতভোক্তাদের রক্ষাকরণ ওয়াচডগ
অবস্থান
  • লন্ডন, যুক্তরাজ্য
উৎপত্তিসাবেক ইন্টারন্যাশনাল অর্গ্যানাইজেশন অব কনজুমার্স ইউনিয়ন্‌স
পদ্ধতিপ্রচারণা
সদস্য
২২০
ওয়েবসাইটwww.consumersinternational.org

ইতিহাস সম্পাদনা

ইন্টারন্যাশনাল অর্গ্যানাইজেশন অব কনজুমার্স ইউনিয়ন্‌স (আইওসিইউ) নামে ১৯৬০ সালে প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরুতে জাতীয় পর্যায়ে ভোক্তা সংঘগুলো কাজ করে। এ সংঘগুলো একত্রিত হয়ে সংস্থাটিকে প্রতিষ্ঠিত করে ও খুব দ্রুত প্রধান মুখপত্র হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে ভোক্তা আন্দোলনে - উৎপাদন এবং খাদ্যের মান, স্বাস্থ্য ও রোগীর অধিকার, পরিবেশ এবং ধ্বংস থেকে রক্ষা এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও সাধারণ জনগণের উপযোগীতা বিষয়ে কাজ করছে।

হল্যান্ডভিত্তিক কনজুম্যান্টেনবন্ড সংস্থার সভাপতি এলিজাবেথ শেডি এবং ইংল্যান্ডের কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন হুইচ? সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ক্যাস্পার ব্রুক - উভয়ের চিন্তাধারার ফসলরূপে ইন্টারন্যাশনাল অর্গ্যানাইজেশন অব কনজুমার্স ইউনিয়ন্‌স (আইওসিইউ) গঠিত হয়।[১] দু'জনে ভোক্তা ও পণ্যের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণের জন্যে বৈশ্বিক সংগঠন গঠনের লক্ষ্যে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রস্তাবনা করেন, যাতে উভয় বিষয়কে কাছাকাছি নিয়ে আসা হবে।[১]মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কনজুমার্স ইউনিয়ন সংস্থার পরিচালক কোলস্টন ওয়ার্ন বৈশ্বিক সংগঠন গঠনের লক্ষ্যে মার্কিন $১০,০০০ ডলার বরাদ্দ দেয়।[১] জানুয়ারি, ১৯৬০ সালে এ তিনটি সংগঠন একত্রিত হয়ে দ্য হেগে প্রথম আন্তর্জাতিক ভোক্তা পরীক্ষণ বিষয়ক সম্মেলন আহ্বান করে।[১] ১৪টি দেশের ১৭টি ভোক্তা সংগঠনের চৌত্রিশ ব্যক্তি এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। তারা পণ্যের মান ও ইন্টারন্যাশনাল অর্গ্যানাইজেশন অব কনজুমার্স ইউনিয়ন্‌স (আইওসিইউ) নামীয় আন্তর্জাতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন।[১] পরবর্তীতে বেলজিয়ামের টেস্ট-আচাটস এবং অস্ট্রেলিয়ার চয়েজ সংগঠন উপরিউক্ত তিন দেশের সাথে মিলিত হয়ে আরো তিনটি সম্মেলন আয়োজনের দায়িত্ব পালন করে।[১]

ভোক্তা অধিকার আইন সম্পাদনা

১৫ মার্চ, ১৯৬২ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ. কেনেডি কংগ্রেসে ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে বক্তৃতা দেন।[২] তিনি ভোক্তাদের চারটি মৌলিক অধিকার সম্পর্কে আলোকপাত করেন যা পরবর্তীতে ভোক্তা অধিকার আইন নামে পরিচিতি পায়। কংগ্রেসে তিনি বলেন,

ভোক্তাদের সংজ্ঞায় আমরা সকলেই অন্তর্ভুক্ত। তাঁরা সবচেয়ে বৃহৎ অর্থনৈতিক জোট হিসেবে প্রভাববিস্তারকারী এবং সকল ধরনের সরকারি ও ব্যক্তিগত অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে প্রভাবান্বিত হয়ে থাকেন। যদিও তাঁরা একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ জোট ... কিন্তু তাদের কথা প্রায়শঃই শোনা হয় না।

কেনেডি'র বর্ণিত চারটি মৌলিক অধিকার হচ্ছে - নিরাপত্তার অধিকার, তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার, পছন্দের অধিকার এবং অভিযোগ প্রদানের অধিকার।

বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস সম্পাদনা

১৯৮৫ সালে জাতিসংঘের মাধ্যমে জাতিসংঘ ভোক্তা অধিকার রক্ষার নীতিমালায় কেনেডি বর্ণিত চারটি মৌলিক অধিকারকে আরো বিস্তৃত করে অতিরিক্ত আরো আটটি মৌলিক অধিকার সংযুক্ত করা হয়। এরপর থেকেই কনজুমার্স ইন্টারন্যাশনাল এ সকল অধিকারকে সনদে অন্তর্ভুক্ত করে।[৩] কেনেডি'র ভাষণের দিনকে স্মরণীয় করে রাখতে ১৫ মার্চকে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস হিসেবে বৈশ্বিকভাবে উদ্‌যাপন করে আসছে।[৪]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Brobeck, Stephen (১৯৯৭)। Encyclopedia of the consumer movement। Santa Barbara, Calif. [u.a.]: ABC-Clio। পৃষ্ঠা 175-179। আইএসবিএন 0874369878 
  2. Kennedy, John F. (মার্চ ১৫, ১৯৬২)। "John F. Kennedy: Special Message to the Congress on Protecting the Consumer Interest."presidency.ucsb.edu। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ মার্চ ২০১৩ 
  3. http://www.consumersinternational.org/who-we-are/consumer-rights
  4. Guest, Jim (১৫ মার্চ ২০১২)। "Jim Guest: Fighting for Consumer Rights, Fifty Years After Kennedy's Call"huffingtonpost.com। সংগ্রহের তারিখ ৮ মার্চ ২০১৩ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

টেমপ্লেট:Consumers International