কঙ্গো প্রজাতন্ত্র

কঙ্গো প্রজাতন্ত্র (উচ্চারণ ফরাসি: République du Congo, কিতুবা: Repubilika ya Kôngo) হচ্ছে মধ্য আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত একটি দেশ। দেশটি কঙ্গো-ব্রাজাভিল, কঙ্গো রিপাবলিক[৬][৭] বা কেবল কঙ্গো নামেও পরিচিত। দেশটির পশ্চিমে গ্যাবন, উত্তর-পশ্চিমে ক্যামেরুন এবং উত্তর-পূর্বে মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ-পূর্বে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণে অ্যাঙ্গোলার ছিটমহল ক্যাবিন্দা এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর অবস্থিত। দীর্ঘদিন ফ্রান্সের উপনিবেশ থাকায় ফরাসি হল কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের সরকারি ভাষা।

কঙ্গো প্রজাতন্ত্র

কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের জাতীয় পতাকা
পতাকা
কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
নীতিবাক্য: "Unité, Travail, Progrès" (ফরাসি)
(জাপানি: "ঐক্য, কর্ম, অগ্রগতি")
জাতীয় সঙ্গীত: La Congolaise (ফরাসি)
Besi Kôngo (কঙ্গো)
(জাপানি: "লা কঙ্গোলেইস" অর্থাৎ, "কঙ্গোলীয়")
 কঙ্গো প্রজাতন্ত্র-এর অবস্থান (dark blue) – Africa-এ (light blue & dark grey) – the African Union-এ (light blue)
 কঙ্গো প্রজাতন্ত্র-এর অবস্থান (dark blue)

– Africa-এ (light blue & dark grey)
– the African Union-এ (light blue)

রাজধানী
ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি
ব্রাজাভিল
৪°১৬′ দক্ষিণ ১৫°১৭′ পূর্ব / ৪.২৬৭° দক্ষিণ ১৫.২৮৩° পূর্ব / -4.267; 15.283
সরকারি ভাষাফরাসি
স্বীকৃত আঞ্চলিক ভাষা[১]
নৃগোষ্ঠী
জাতীয়তাসূচক বিশেষণকঙ্গোলীয়
সরকারএককেন্দ্রিক আধিপত্যবাদী-দলীয় আধা-রাষ্ট্রপতি শাসিত প্রজাতন্ত্র
ডেনিস সাসও এনগুয়েসো
ইসিডোর এমভুবা
স্বাধীনতা 
• তারিখ
১৫ই আগস্ট ১৯৬০
আয়তন
• মোট
৩,৪২,০০০ কিমি (১,৩২,০০০ মা) (63rd)
• পানি (%)
3.3
জনসংখ্যা
• 2014 আনুমানিক
4,662,446[২] (124th)
• ঘনত্ব
১২.৮/কিমি (৩৩.২/বর্গমাইল) (204th)
জিডিপি (পিপিপি)2016 আনুমানিক
• মোট
$30.607 billion[৩]
• মাথাপিছু
$6,720[৩]
জিডিপি (মনোনীত)2016 আনুমানিক
• মোট
$8.341 billion[৩]
• মাথাপিছু
$1,831[৩]
জিনি (2011)40.2[৪]
মাধ্যম
মানব উন্নয়ন সূচক (2015)বৃদ্ধি 0.592[৫]
মধ্যম · 135th
মুদ্রামধ্য আফ্রিকান সিএফএ ফ্রাঙ্ক (XAF)
সময় অঞ্চলইউটিসি+০১:০০ (ডাব্লিউএটি)
কলিং কোড২৪২
ইন্টারনেট টিএলডি.cg

এই অঞ্চলটি কমপক্ষে ৩,০০০ বছর আগে বান্টু-ভাষী উপজাতিদের দ্বারা প্রভাবিত ছিল। তারা কঙ্গো নদীর অববাহিকার দিকে অগ্রসর হয়ে বাণিজ্য সংযোগ তৈরি করেছিল। কঙ্গো পূর্বে নিরক্ষীয় আফ্রিকার ফরাসি উপনিবেশের অংশ ছিল।[২] কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ১৯৫৮ সালের ২৮ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৬০ সালে ফ্রান্স থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। এটি ১৯৬৯ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত একটি মার্কসবাদী-লেনিনবাদী কমিউনিস্ট রাষ্ট্র ছিল। দেশটি তখন গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো নামে পরিচিত ছিল। ১৯৯২ সাল থেকে সার্বভৌম রাষ্ট্রটিতে বহুদলীয় নির্বাচন হয়েছে। যদিও ১৯৯৭ সালের কঙ্গো গৃহযুদ্ধে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করা হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি ডেনিস সাসও এনগুয়েসো ১৯৭৯ সালে প্রথম ক্ষমতায় আরোহণ করেন। এর পর থেকে তিনি চার দশকেরও বেশি সময় ধরে এখনও দেশটি শাসন করে আসছেন।

কঙ্গো প্রজাতন্ত্র আফ্রিকান ইউনিয়ন, জাতিসংঘ, লা ফ্রাঙ্কোফোনি, মধ্য আফ্রিকান রাজ্যগুলোর অর্থনৈতিক সম্প্রদায় এবং জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের সদস্য। এটি গিনি উপসাগরের চতুর্থ বৃহত্তম তেল উৎপাদক দেশ হয়ে উঠেছে। কিছু এলাকায় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং দেশব্যাপী তেলের রাজস্বের অসম বন্টন সত্ত্বেও এই সুবিধা দেশটিকে কিছুটা সমৃদ্ধি প্রদান করেছে। কঙ্গোর অর্থনীতি তেল খাতের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।[৮] তাই ২০১৫-এর পরে তেলের দাম কমে যাওয়ার পর থেকে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যথেষ্ট মন্থর হয়েছে। এই দেশের জনসংখ্যা প্রায় ৫২ লক্ষ। এর মধ্যে ৮৮.৫% মানুষ খ্রিস্টান ধর্ম পালন করে।

ব্যুৎপত্তি সম্পাদনা

কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের নামকরণ করা হয়েছে কঙ্গো নদীর নামানুসারে। আবার এই নদীর নামকরণ করা হয়েছে কঙ্গো নামেরই একটি বান্টু রাজ্য থেকে। ১৪৮৩[৯] বা১৪৮৪ সালে পর্তুগিজদের আফ্রিকা আবিষ্কারের সময় তারা এই রাজ্য ও নদীর মুখ দখল করেছিল।[১০] ফলে তারা নদীটির এরূপ নামকরণ করে। আবার এই কঙ্গো রাজ্যের নামটি এর জনগণ থেকে উদ্ভূত হয়েছে। সেখানখার অধিবাসীদের নাম বাকঙ্গোর শেষাংশ থেকে এর উৎপত্তি। এর অর্থ হচ্ছ "শিকারী" (কঙ্গো: mukongo, এনকঙ্গো )।[১১]

যে সময়কালে ফ্রান্স কঙ্গোতে উপনিবেশ করে, তখন এটি ফরাসি কঙ্গো বা মধ্য কঙ্গো নামে পরিচিত ছিল। প্রতিবেশী ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো থেকে আলাদা করার জন্য এটিকে কখনও কখনও কঙ্গো (ব্রাজাভিল) বা কঙ্গো-ব্রাজাভিল নামেও উল্লেখ করা হয়। ব্রাজাভিল উপনিবেশের প্রতিষ্ঠাতা পিয়েরে সাভোর্গনান ডি ব্রাজ্জার কাছ থেকে উদ্ভূত একজন ইতালীয় অভিজাত ব্যক্তি, যার শিরোনামটি মোরুজ্জোর কমুনে ব্রাজাস্কো শহরকে উল্লেখ করে। এর নাম ল্যাটিন ব্রাটিউস বা ব্র্যাকসিয়াস থেকে উদ্ভূত হয়েছিল। দুটো শব্দেরই অর্থ "বাহু"।[১২]

ইতিহাস সম্পাদনা

প্রাক-ঔপনিবেশিক সম্পাদনা

বান্টু-ভাষী লোকেরা বান্টু সম্প্রসারণের সময় উপজাতি প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারা মূলত বাস্তুচ্যুত হয়েছিল এবং প্রায় ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এই অঞ্চলের প্রাচীনতম বাসিন্দা পিগমি জনগোষ্ঠীকে শোষণ করেছিল। বাকঙ্গো হচ্ছে একটি বান্টু জাতিগত গোষ্ঠী। তারা বর্তমান অ্যাঙ্গোলা, গ্যাবন এবং গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের কিছু অংশ দখল করেছিল এবং সেই দেশগুলোর মধ্যে জাতিগত ঘনিষ্ঠতা এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতার ভিত্তি গঠন করেছিল। বেশ কয়েকটি বান্টু রাজ্য, বিশেষ করে কঙ্গো, লোয়াঙ্গো এবং টেকের রাজ্যগুলো কঙ্গো নদী অববাহিকার দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাণিজ্য সংযোগ তৈরি করেছিল।[১৩]

পর্তুগিজ অভিযাত্রী ডিয়োগো কাও ১৪৮৪ সালে কঙ্গোর মুখে পৌঁছেছিলেন।[১৪] এর পর সেখানকার অভ্যন্তরীণ বান্টু সাম্রাজ্য এবং ইউরোপীয় বণিকদের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক দ্রুত বৃদ্ধি পায়। তারা বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা করত। তারা উৎপাদিত দ্রব্য তৈরি করত এবং পশ্চিমাঞ্চলে বন্দী ও দাসত্ব করা মানুষদের মধ্যেও এই ব্যবসা চালিয়ে যেত। ট্রান্স-অ্যাটলান্টিক বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে বহু শতাব্দী পরে, কঙ্গো নদীর ব-দ্বীপের সরাসরি ইউরোপীয় উপনিবেশ ১৯ শতকের শেষের দিকে শুরু হয়। পরবর্তীকালে এই অঞ্চলে বান্টু সমাজের শক্তি হ্রাস পায়।[১৫]

ফরাসি ঔপনিবেশিক যুগ সম্পাদনা

 
এন'গাঙ্গু এম'ভোউম্বে নিয়াম্বির আদালত, আফ্রিকার বর্ণনা বই থেকে (১৬৬৮)

কঙ্গো নদীর উত্তরের এলাকাটি ১৮৮০ সালে বাটেকের রাজা মাকোকোর[১৬] সাথে পিয়েরে ডি ব্রাজার চুক্তির ফলে ফরাসি সার্বভৌমত্বের অধীনে আসে।[১৪] মাকোকোর মৃত্যুর পর, তার বিধবা রানী এনগালিফুরউ চুক্তির শর্তাবলী বহাল রাখেন এবং উপনিবেশকারীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হয়ে ওঠেন। এই কঙ্গো উপনিবেশটি প্রথমে ফরাসি কঙ্গো নামে পরিচিত হয়, তারপর ১৯০৩ সালে মধ্য কঙ্গো নামে পরিচিত হয়।

১৯০৮ সালে ফ্রান্স মধ্য কঙ্গো, গ্যাবন, শাদ এবং ওবাঙ্গুই-চারি (আধুনিক মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র ) নিয়ে গঠিত ফ্রেঞ্চ নিরক্ষীয় আফ্রিকা (এইএফ) সংগঠিত করে। ফরাসিরা এই উপনিবেশের ফেডারেল রাজধানী হিসেবে ব্রাজাভিলকে মনোনীত করে। কঙ্গোতে ঔপনিবেশিক শাসনের প্রথম ৫০ বছরের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হয়। তবে এসব অবকাঠামোগত উন্নয়নের পদ্ধতিগুলো প্রায়ই নৃশংস ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে কঙ্গো মহাসাগর রেলওয়ে নির্মাণে কমপক্ষে ১৪,০০০ প্রাণ হারিয়েছে বলে অনুমান করা হয়েছে।[১৪]

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফ্রান্সের নাৎসি দখলের সময়, ব্রাজাভিল ১৯৪০ থেকে ১৯৪৩ সালের মধ্যে মুক্ত ফ্রান্সের প্রতীকী রাজধানী হিসেবে কাজ করেছিল।[১৭] ১৯৪৪ সালের ব্রাজাভিল সম্মেলন ফরাসি ঔপনিবেশিক নীতিতে বড় সংস্কারের সময়কালের সূচনা করে। কঙ্গো এইএফ এবং ফেডারেল রাজধানী ব্রাজাভিলের মধ্যে কেন্দ্রীয় ভৌগোলিক অবস্থানের ফলে ঔপনিবেশিক প্রশাসনিক এবং অবকাঠামো ব্যয়ের যুদ্ধোত্তর সম্প্রসারণ থেকে উপকৃত হয়েছে।[১৩] ১৯৪৬ সালের সংবিধান গৃহীত হওয়ার পরে এটির একটি স্থানীয় আইনসভাও ছিল যা চতুর্থ প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল।

১৯৫৮ সালে পঞ্চম প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠাকারী ফরাসি সংবিধানের সংশোধনের পর, ফ্রেঞ্চ নিরক্ষীয় আফ্রিকা বা এইএফ এর অংশগুলোতে বিভক্ত হয়ে বিলুপ্ত হয়ে যায়। এর ফলে ফ্রেঞ্চ নিরক্ষীয় আফ্রিকার প্রতিটি অংশ ফরাসি সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি স্বায়ত্তশাসিত উপনিবেশে পরিণত হয়। এই সংস্কারের সময় মধ্য কঙ্গো ১৯৫৮ সালে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র হিসাবে পরিচিত হয়[১৭][১৮] ১৯৫৯ সালে দেশটি এর প্রথম সংবিধান প্রকাশ করে। এমবোচিস (তিনি জ্যাক ওপানগল্টের পক্ষে ছিলেন) এবং লরিস এবং কঙ্গোস (তারা ফরাসি নিরক্ষীয় আফ্রিকায় নির্বাচিত প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মেয়র ফুলবার্ট ইউলুকে সমর্থন করেছিলেন) মধ্যে বৈরিতার ফলে ১৯৫৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্রাজাভিলে ধারাবাহিক দাঙ্গা হয়। এটি ফরাসি সেনাবাহিনী পরাজিত করে।[১৯]

১৯৫৯ সালের এপ্রিলে দেশটিতে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৬০ সালের আগস্টে কঙ্গো স্বাধীন হওয়ার সময়, ইউলুর প্রাক্তন প্রতিপক্ষ ওপাংল্ট তার অধীনে কাজ করতে সম্মত হন। এর ফলে ইউলু কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি হন।[২০] তখন পোয়াঁত-নোয়ারের রাজনৈতিক উত্তেজনা নেক বেশি হওয়ায় তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইউলু দেশটির রাজধানী ব্রাজাভিলে স্থানান্তরিত করেছিলেন।

স্বাধীনতা-উত্তর যুগ সম্পাদনা

 
আলফোনস ম্যাসাম্বা-ডেবাটের একদলীয় শাসন (১৯৬৩-১৯৬৮) " বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র " এর একটি রাজনৈতিক অর্থনৈতিক কৌশল বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিল।

কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ১৯৬০ সালের ১৫ ই আগস্ট তারিখে ফ্রান্স থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন হয়। ইউলু দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসাবে শাসন করেছিলেন। পরবর্তীতে শ্রমিক উপাদান এবং প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলো তিন দিনের অভ্যুত্থানকে উস্কে দেয় যা তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে। তখন কঙ্গোর সামরিক বাহিনী সংক্ষেপে দেশটি দখল করে নেয় এবং আলফোন্স মাসাম্বা-ডেবাতের নেতৃত্বে একটি বেসামরিক অস্থায়ী সরকার প্রতিষ্ঠা করে।

১৯৬৩ সালের সংবিধান অনুযায়ী, মাসাম্বা-ডেবাত পাঁচ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।[১৩] মাসাম্বা-ডেবাতের ক্ষমতায় থাকার সময়, সরকার "বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র" কে দেশের সাংবিধানিক মতাদর্শ হিসাবে গ্রহণ করেছিল।[২১] ১৯৬৫ সালে কঙ্গো সোভিয়েত ইউনিয়ন, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন, উত্তর কোরিয়া এবং উত্তর ভিয়েতনামের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে।[২১] ১৯৬৫ সালের ১৪ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের তিনজন বিশিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাকে অপহরণ করা হয়। তারা ছিলেন: কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের প্রসিকিউটর লাজারে মাতসোকোটা, সুপ্রিম কোর্টের প্রেসিডেন্ট জোসেফ পুয়াবো এবং কঙ্গোর তথ্য সংস্থার পরিচালক আনসেলমে মাসুমেমে। এর মধ্যে দু'জনের লাশ পরে কঙ্গো নদীর তীরে বিকৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।[২২][২৩] মাসাম্বা-ডেবাতের সরকার তার দলের মিলিশিয়া ইউনিটকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য কয়েকশত কিউবান সেনাকে দেশটিতে আমন্ত্রণ জানায়। এই সৈন্যরা তার সরকারকে ১৯৬৬ সালে একটি অভ্যুত্থান থেকে বাঁচতে সাহায্য করেছিল। এই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে ভবিষ্যতের রাষ্ট্রপতি মারিয়ান নগুয়াবির অনুগত প্যারাট্রুপাররা। তা সত্ত্বেও, মাসাম্বা-ডেবাত দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক, উপজাতীয় এবং মতাদর্শগত দলগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে অক্ষম ছিলেন।[২১] এর ফলে ১৯৬৮ সালের সেপ্টেম্বরে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তার শাসনের আকস্মিক সমাপ্তি ঘটে।

 
মারিয়েন এনগোয়াবি আফ্রিকার প্রথম মার্কসবাদী-লেনিনবাদী রাষ্ট্র ঘোষণা করে দেশটির নাম পরিবর্তন করে গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো রাখেন। ১৯৭৭ সালে তাকে হত্যা করা হয়।

অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী মারিয়েন এনগুয়াবি ১৯৬৮ সালের ৩১ ডিসেম্বরে দেশটির রাষ্ট্রপতির পদ গ্রহণ করেন। এক বছর পরে এনগুয়াবি কঙ্গো আফ্রিকার প্রথম "গণ প্রজাতন্ত্র" হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো ঘোষণা করেন এবং কঙ্গো লেবার পার্টি (পিসিটি) নাম পরিবর্তন করে জাতীয় বিপ্লবী আন্দোলনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। তিনি ১৯৭২ সালে একটি অভ্যুত্থানের চেষ্টায় বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু ১৯৭৭ সালের ১৬ মার্চ তাকে হত্যা করা হয়েছিল। পার্টির ১১ সদস্যের সামরিক কমিটি (সিএমপি) তখন একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসাবে মনোনীত হয়েছিল। তখন জোয়াকিম ইয়োম্বি-ওপাঙ্গো রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। দুই বছর পরে ইয়োম্বি-ওপাঙ্গোকে ক্ষমতা থেকে বাধ্য করা হয় এবং এরপর ডেনিস সাসও এনগুয়েসো নগুয়েসো নতুন রাষ্ট্রপতি হন।[১৩]

ডেনিস সাসও এনগুয়েসো নগুয়েসো দেশটিকে পূর্ব ব্লকের সাথে সংযুক্ত করেছিলেন এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে বিশ বছরের বন্ধুত্ব-চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। বছরের পর বছর ধরে, ডেনিস সাসও এনগুয়েসোকে তার একনায়কত্ব বজায় রাখার জন্য রাজনৈতিক নিপীড়নের উপর বেশি এবং পৃষ্ঠপোষকতার উপর কম নির্ভর করতে হয়েছিল।[২৪] ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের ফলে সোভিয়েত সহায়তা শেষ হয়ে যায় এবং এটি ক্ষমতা ত্যাগ করে।

বহুদলীয় গণতন্ত্রের সময়কালে কঙ্গোর প্রথম নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি (১৯৯২-১৯৯৭) হয়ে ওঠা পাস্কাল লিসুবা অর্থনীতিকে উদারীকরণের জন্য আইএমএফের সহায়তায় অর্থনৈতিক সংস্কার বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন। ১৯৯৬ সালের জুনে আইএমএফ তিন বছরের এসডিআর ৬৯.৫ মিলিয়ন (মার্কিন $ ১০০ মিলিয়ন) বর্ধিত কাঠামোগত সমন্বয় সুবিধা (ইএসএএফ) অনুমোদন করে। ১৯৯৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে কঙ্গোতে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে এটি একটি নতুন বার্ষিক চুক্তি ঘোষণার দ্বারপ্রান্তে ছিল।[২৫]

কঙ্গোর গণতান্ত্রিক অগ্রগতি ১৯৯৭ সালে লাইনচ্যুত হয়। তখন লিসুবা এবং ডেনিস সাসও এনগুয়েসো গৃহযুদ্ধে ক্ষমতার জন্য লড়াই শুরু করে। ১৯৯৭ সালের জুলাই মাসে নির্ধারিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এগিয়ে আসার সাথে সাথে লিসুবা এবং ডেনিস সাসও এনগুয়েসোউ শিবিরের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। ৫ ই জুনে রাষ্ট্রপতি লিসুবার সরকারি বাহিনী ব্রাজাভিলে ডেনিস সাসও এনগুয়েসোর কম্পাউন্ডটি ঘিরে ফেলে এবং ডেনিস সাসও এনগুয়েসো তার ব্যক্তিগত মিলিশিয়ার ("কোবরাস" নামে পরিচিত) সদস্যদের প্রতিরোধ করার আদেশ দেয়। এইভাবে চার মাসের একটি সংঘাত শুরু হয়েছিল যা ব্রাজাভিলের বেশিরভাগ অংশ ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্থ করেছিল। এর ফলে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়। অক্টোবরের প্রথম দিকে অ্যাঙ্গোলা সরকার ডেনিস সাসও এনগুয়েসোকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য কঙ্গো আক্রমণ শুরু করে। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে লিসুবা সরকারের পতন ঘটে। এর পরপরই ডেনিস সাসও এনগুয়েসো নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন।[১৩]

 
২০১৫ সালের অক্টোবরে ব্রাজাভিলে একটি সাংবিধানিক সংস্কার সমাবেশ। সংবিধানের বিতর্কিত সংস্কারগুলো পরবর্তীতে একটি বিতর্কিত নির্বাচনে অনুমোদিত হয়েছিল যা বিক্ষোভ এবং সহিংসতা দেখেছিল।

২০০২ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে ডেনিস সাসও এনগুয়েসো প্রায় ৯০% ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। তার দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী লিসোবা এবং বার্নার্ড কোলেলাসকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে বিরত রাখা হয়েছিল। একমাত্র অবশিষ্ট বিশ্বাসযোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী, আন্দ্রে মিলনগো তার সমর্থকদের নির্বাচন বয়কট করার পরামর্শ দেন এবং তারপরে নির্বাচন থেকে সরে আসেন।[২৬] ২০০২ সালের জানুয়ারিতে গণভোটের মাধ্যমে সম্মত হওয়া একটি নতুন সংবিধান রাষ্ট্রপতিকে নতুন ক্ষমতা প্রদান করে। এছাড়াও সংশোধিত নতুন সংবিধানের মাধ্যমে তার মেয়াদ সাত বছর পর্যন্ত বাড়িয়ে নিয়ে এবং একটি নতুন দ্বি-কক্ষীয় সংসদ ব্যবস্থা চালু করা হয়। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এবং সাংবিধানিক গণভোটের আয়োজন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। উভয়ই তাদের একদলীয় রাষ্ট্রের কঙ্গোর যুগের সংগঠনের কথা মনে করিয়ে দেয়।[২৭] রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পর, পুল অঞ্চলে সরকারি বাহিনী এবং যাজক নটুমির নেতৃত্বে বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াই পুনরায় শুরু হয়। ২০০৩ সালের এপ্রিলে এই সংঘাতের অবসান ঘটাতে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।[২৮]

ডেনিস সাসও এনগুয়েসোও ২০০৯ সালের জুলাই মাসে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়লাভ করেন।[২৯] কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের একটি মানবাধিকার বিষয়ক বেসরকারি সংস্থা কঙ্গোলিজ অবজারভেটরি অফ হিউম্যান রাইটসের মতে, নির্বাচনে "খুব কম" ভোটারের উপস্থিতি এবং নির্বাচনজুড়ে "জালিয়াতি ও অনিয়ম" চিহ্নিত করা হয়েছিল।[৩০] ২০০৯ সালের জুলাই মাসে ডেনিস সাসও এনগুয়েসো পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও জয়ী হন। একটি বেসরকারি সংস্থা কঙ্গোজ অবজারভেটরি অব হিউম্যান রাইটসের মতে, এই নির্বাচনে "খুব কম" ভোট এবং "জালিয়াতি ও অনিয়ম" দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছিল। মার্চ ২০১৫ সালে, ডেনিস সাসও এনগুয়েসো ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি আরও একটি মেয়াদে ক্ষমতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান এবং অক্টোবরে একটি সাংবিধানিক গণভোটের ফলে একটি পরিবর্তিত সংবিধান তৈরি হয়। সংবিধানের এই নতুন সংশোধিত রূপ তাকে ২০১৬ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দেয়। তিনি সেই নির্বাচনেও জয়ী হয়েছিলেন। তাই অনেকে মনে করেন এটি প্রতারণামূলক নির্বাচন ছিলে। নির্বাচনের পর রাজধানীতে সহিংস বিক্ষোভের পর, ডেনিস সাসও এনগুয়েসো পুল অঞ্চলে আক্রমণ করে। সেখানে গৃহযুদ্ধের নিনজা বিদ্রোহীরা ঘাঁটি ছিল। তবে এটিকে একটি বিভ্রান্তি বলে মনে করা হত। এর ফলে নিনজা বিদ্রোহীদের পুনরুজ্জীবন ঘটে। তারা ২০১৬ সালের এপ্রিলে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করে। এর ফলে ৮০,০০০ লোক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।[৩১]

সরকার সম্পাদনা

 
ডেনিস সাসও এনগুয়েসো ১৯৭৯ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং ১৯৯৭ সালের গৃহযুদ্ধের সময় তার বিদ্রোহী বাহিনী রাষ্ট্রপতি প্যাসকেল লিসোবাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন।

প্রজাতন্ত্রের সরকার হল একটি আধা-প্রেসিডেন্সিয়াল ব্যবস্থা। এখানে একজন নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মন্ত্রী পরিষদ বা মন্ত্রিসভা নিয়োগ করেন। সংসদে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্য থেকে প্রধানমন্ত্রীসহ কাউন্সিল নির্বাচিত হয়। ১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে দেশটিতে বহুদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা রয়েছে; যদিও এই ব্যবস্থাটি রাষ্ট্রপতি ডেনিস সাসও এনগুয়েসোর দ্বারা প্রবলভাবে আধিপত্যে রয়েছে। তার শাসনামলে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে গুরুতর প্রতিযোগিতার অভাব রয়েছে। ডেনিস সাসও এনগুয়েসো তার নিজস্ব কঙ্গোলিজ লেবার পার্টির ( ফরাসি: Parti Congolais du Travail) পাশাপাশি ছোট দলগুলোর একটি পরিসর দ্বারা সমর্থিত।

দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা সত্ত্বেও ডেনিস সাসও এনগুয়েসোর শাসনামল অনেক দুর্নীতির প্রকাশ দেখা গিয়েছে। একটি ফরাসি তদন্ত ফ্রান্সে ১১০ টিরও বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং কয়েক ডজন বিলাসবহুল সম্পত্তি খুঁজে পেয়েছে।[৩২] ডেনিস সাসও এনগুয়েসো এই আত্মসাতের তদন্তকে "বর্ণবাদী" এবং "ঔপনিবেশিক" বলে নিন্দা করেছেন।[৩৩][৩৪][৩৫] ডেনিস ক্রিস্টেল সাসও এনগুয়েসো-এনগুয়েসো ও ডেনিস সাসও এনগুয়েসোর ছেলের নাম পানামা পেপার্সের সহযোগিতায় তালিকায় অন্তর্ভূক্ত ছিল।[৩৬]

২০১৫ সালের ২৭ মার্চ তারিখে ডেনিস সাসও এনগুয়েসো ঘোষণা করেন, তার সরকার তাকে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য দেশের ২০০২ সালের সংবিধান পরিবর্তন করার জন্য একটি গণভোট করবে।[৩৭] ২৫ অক্টোবরে সরকার ডেনিস সাসও এনগুয়েসোকে পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাওয়ার জন্য একটি গণভোট আয়োজন করে। সরকার দাবি করেছে যে প্রস্তাবটি ৯২% ভোটার দ্বারা অনুমোদিত হয়েছিল। উক্ত গণভোটে ৭২% যোগ্য ভোটার অংশগ্রহণ করেছিলেন। গণভোট বর্জনকারী বিরোধীরা বলেছে যে সরকারের পরিসংখ্যান মিথ্যা এবং বিপুল পরিমাণে জাল ভোট দেওয়া হয়েছে।[৩৮]

এর ফলে দেশে ও দেশের বাইরে এই নির্বাচন প্রশ্ন বিদ্ধ হয়। এছাড়াও এর ফলে কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে বেসামরিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। অস্থিরতা কমাতে বিক্ষোভকারীদের উপর পুলিশ গুলি বর্ষণ করে।[৩৯] অক্টোবরে অনুষ্ঠিত গণভোটের আগে বিরোধী দলের সমাবেশে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হন।

প্রশাসনিক বিভাগ সম্পাদনা

 
কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের মানচিত্র তার বারোটি বিভাগ প্রদর্শন করছে

কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ১২টি ডিপার্টমেন্টে (বিভাগ) বিভক্ত। বিভাগগুলো কমিউন এবং জেলায় বিভক্ত।[৪০] এগুলো হলো:

  1. বুয়েঞ্জা
  2. ব্রাজাভিল
  3. কুভেট
  4. কুভেট-ওয়েস্ট
  5. কৌইলো
  6. লেকাউমাউ
  7. লিকুয়ালা
  8. নিয়ারি
  9. প্লাটেউক্স
  10. পয়েন্টে-নোয়ার
  11. পুল
  12. সাংঘা

সামরিক সম্পাদনা

কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের সশস্ত্র বাহিনী ( ফরাসি: Forces armées de la République du Congo ), এছাড়াও কম আনুষ্ঠানিকভাবে Forces armées congolaises বা এর সংক্ষিপ্ত নাম FAC হিসাবে চিহ্নিত। এটি কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের সামরিক বাহিনী। তারা কঙ্গোলিজ আর্মি, কঙ্গোলিজ এয়ার ফোর্স, কঙ্গোলিজ মেরিন (নৌবাহিনী) এবং কঙ্গোলিজ ন্যাশনাল জেন্ডারমেরি নিয়ে গঠিত।

মানবাধিকার সম্পাদনা

অনেক পিগমি জন্ম থেকেই বান্টুদের সাথে সম্পর্কযুক্ত। অনেকে এই বিষয়টি দাসত্ব হিসাবে উল্লেখ করে থাকে।[৪১][৪২] কঙ্গোলিজ হিউম্যান রাইটস অবজারভেটরি বলে যে, পিগমিদের পোষা প্রাণীর মতোই সম্পত্তি হিসাবে বিবেচনা করা হয়।[৪১] ২০১০ সালের ৩০ ডিসেম্বরে কঙ্গোলিজ সংসদ আদিবাসীদের অধিকারের প্রচার ও সুরক্ষার জন্য একটি আইন গ্রহণ করে।[স্পষ্টকরণ প্রয়োজন] এই আইনটি আফ্রিকায় এই ধরনের প্রথম আইন এবং এটি গ্রহণ করা মহাদেশের আদিবাসীদের জন্য একটি ঐতিহাসিক উন্নয়ন।[৪৩] [তারিখের তথ্য]

মিডিয়া সম্পাদনা

২০০৮ সালে প্রাথমিক গণমাধ্যম সরকারের মালিকানাধীন ছিল। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে পরিচালিত গণমাধ্যম ধরন তৈরি করা হচ্ছে। এখানে একটি সরকারি মালিকানাধীন টেলিভিশন স্টেশন এবং প্রায় ১০টি ছোট ছোট বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে।

ভূগোল সম্পাদনা

কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দৃশ্য রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে উত্তর নিয়ারির বন্যাকবলিত বনের সাভানা সমভূমি থেকে শুরু করে বিশাল কঙ্গো নদী, মায়াম্বের দুর্গম পর্বতমালা ও বন এবং আটলান্টিক উপকূল বরাবর ১৭০ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকত।[৪৪]

 
ব্রাজাভিলের জন্য জলবায়ু চিত্র

কঙ্গো সাব-সাহারান আফ্রিকার মধ্য-পশ্চিম অংশে নিরক্ষরেখা বরাবর, ৪° উত্তর এবং ৫°দক্ষিণ অক্ষাংশ এবং ১১° এবং ১৯°পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। এর দক্ষিণে এবং পূর্বে রয়েছে কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র। এছাড়াও এর পশ্চিমে গ্যাবন, উত্তরে ক্যামেরুন এবং মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে অ্যাঙ্গোলার কাবিন্দা অবস্থিত। আটলান্টিক মহাসাগরে এর একটি ছোট উপকূল রয়েছে।

এই দেশের রাজধানী ব্রাজাভিল দেশের দক্ষিণে কঙ্গো নদীর তীরে অবস্থিত। নদীর ঠিক অপর পাড়েই গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের রাজধানী কিনশাসা অবস্থিত।

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম হচ্ছে একটি উপকূলীয় সমভূমি। এর জন্য প্রাথমিক নিষ্কাশন পথ হল কৌইলো-নিয়ারি নদী। এটি দেশের অভ্যন্তর দক্ষিণ এবং উত্তরে দুটি অববাহিকার মধ্যে একটি কেন্দ্রীয় মালভূমি নিয়ে গঠিত। এখানকার বনগুলো ক্রমবর্ধমান শোষণের চাপের মধ্যে রয়েছে।[৪৫] কঙ্গোর একটি ২০১৮ ফরেস্ট ল্যান্ডস্কেপ ইন্টিগ্রিটি ইনডেক্স মানে ৮.৮৯/১০ স্কোর ছিল। এটি ১৭২টি দেশের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ১২তম স্থানে রয়েছে।[৪৬]

কঙ্গো চারটি ইকো রিজিয়নের মধ্যে রয়েছে। সেগুলো হলো: আটলান্টিক নিরক্ষীয় উপকূলীয় বন, উত্তর-পশ্চিম কঙ্গোলিয়ান নিম্নভূমি বন, পশ্চিম কঙ্গোলিয়ান সোয়াম্প ফরেস্ট এবং পশ্চিম কঙ্গোলিয়ান বন-সাভানা মোজাইক।[৪৭] যেহেতু দেশটি নিরক্ষরেখায় অবস্থিত, তাই সারা বছর জলবায়ু সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে। এই দেশের দিনের গড় তাপমাত্রা আর্দ্র ২৪ °সে (৭৫ °ফা) এবং রাত সাধারণত ১৬ °সে (৬১ °ফা) -এর মধ্যে এবং ২১ °সে (৭০ °ফা)। কঙ্গোর গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত ১,১০০ মিলিমিটার (৪৩ ইঞ্চি) দক্ষিণে নিয়ারি উপত্যকায় ২,০০০ মিলিমিটার (৭৯ ইঞ্চি) দেশের কেন্দ্রীয় অংশে। কঙ্গোর শুষ্ক ঋতু জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিস্তৃত। অন্যদিকে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে আর্দ্র ঋতুতে দুটি সময়ে বৃষ্টিপাতের সর্বোচ্চ পরিমাণ থাকে। এর মধ্যে একটি সময় হচ্ছে মার্চ-মে মাসে এবং আরেকটি হচ্ছে সেপ্টেম্বর-নভেম্বরে।[৪৮]

২০০৬-০৭ সালে, ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির গবেষকরা সাংঘা অঞ্চলের ওয়েসো জেলাকে কেন্দ্র করে ভারী বনাঞ্চলে গরিলাদের নিয়ে গবেষণা করেছেন। তারা ১২৫,০০০ পশ্চিমের নিম্নভূমি গরিলাদের ক্রম অনুসারে একটি সংখ্যার পরামর্শ দেয়, যাদের মানুষের থেকে বিচ্ছিন্নতা মূলত আতিথ্যযোগ্য জলাভূমি দ্বারা সংরক্ষণ করা হয়েছে।[৪৯]

অর্থনীতি সম্পাদনা

 
কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে মাথাপিছু জিডিপি উন্নয়ন, ১৯৫০ থেকে ২০১৮
 
কঙ্গো রপ্তানি প্রজাতন্ত্রের একটি আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব, ২০১৯
 
কাসাভা কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য শস্য।

কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের অর্থনীতি হল গ্রামীণ কৃষি এবং হস্তশিল্প, প্রধানত পেট্রোলিয়ামের উপর ভিত্তি করে একটি শিল্প খাত,[৮][৫০] সহায়তা পরিষেবা, এবং বাজেট সমস্যা এবং অতিরিক্ত স্টাফিং দ্বারা চিহ্নিত সরকারের মিশ্রণ। পেট্রোলিয়াম উত্তোলন অর্থনীতির মূল ভিত্তি হিসাবে বনায়নকে প্রতিস্থাপন করেছে। ২০০৮ সালে, তেল খাত জিডিপির ৬৫%, সরকারের রাজস্বের ৮৫% এবং রপ্তানির ৯২% পরিমাণ অবদান রেখেছে।[৫১] দেশটিতে প্রচুর অব্যবহৃত খনিজ সম্পদও রয়েছে।[৮]

১৯৮০ এর দশকের গোড়ার দিকে, দ্রুত ক্রমবর্ধমান তেলের রাজস্ব সরকারকে বড় আকারের উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন করতে সক্ষম করে। দেশটির স্থূল অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) বার্ষিক গড়ে ৫% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আফ্রিকার সর্বোচ্চ হারগুলোর মধ্যে একটি। সরকার তার পেট্রোলিয়াম আয়ের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বন্ধক রেখেছে। এই পদক্ষেপ রাজস্বের ঘাটতিতে অবদান রেখেছে। ১২ জানুযারি ১৯৯৪-এ, ফ্রাঙ্ক অঞ্চলের মুদ্রার ৫০% অবমূল্যায়নের ফলে ১৯৯৪ সালে ৪৬% মূল্যস্ফীতি হয়েছিল, কিন্তু তারপর থেকে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে।[৫২]

 
সেলাই শেখা তরুণ মহিলা, Brazzaville

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশেষ করে বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সহায়তায় দেশটির অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল। কিন্তু ১৯৯৭ সালের জুন মাসে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে সংস্কার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৯৭ সালের অক্টোবরে যুদ্ধের শেষে যখন ডেনিস সাসও এনগুয়েসো ক্ষমতায় ফিরে আসেন, তখন তিনি প্রকাশ্যে অর্থনৈতিক সংস্কার ও বেসরকারিকরণে এগিয়ে যাওয়ার এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সহযোগিতা পুনর্নবীকরণে আগ্রহ প্রকাশ করেন। যাইহোক, তেলের দাম কমে যাওয়া এবং ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বরে সশস্ত্র সংঘাত পুনরায় শুরু হওয়ার ফলে অর্থনৈতিক অগ্রগতি খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এই সমস্যা প্রজাতন্ত্রের বাজেট ঘাটতিকে আরও খারাপ করেছিল।

বর্তমান প্রশাসন একটি অস্বস্তিকর অভ্যন্তরীণ শান্তির সভাপতিত্ব করে এবং ২০০৩ সাল থেকে রেকর্ড-উচ্চ তেলের দাম থাকা সত্ত্বেও পুনরুদ্ধারকে উদ্দীপিত করা এবং দারিদ্র্য হ্রাস করার কঠিন অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হয়। প্রাকৃতিক গ্যাস এবং হীরাও সাম্প্রতিক প্রধান কঙ্গো রপ্তানি। যদিও কঙ্গোকে ২০০৪ সালে কিম্বারলে প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল যে তার বেশিরভাগ হীরা রপ্তানি বাস্তবে প্রতিবেশী গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো থেকে পাচার করা হয়েছিল; এটি ২০০৭ সালে পুনরায় দলে ভর্তি হয়।[৫৩][৫৪]

কঙ্গো প্রজাতন্ত্রেও বড় অব্যবহৃত বেস মেটাল, সোনা, লোহা এবং ফসফেটের মজুদ রয়েছে।[৫৫] দেশটি অর্গানাইজেশন ফর দ্য হারমোনাইজেশন অফ বিজনেস ল ইন আফ্রিকা (ওহাডা) এর সদস্য।[৫৬] কঙ্গো সরকার আমদানির উপর নির্ভরতা কমাতে দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষকদের ২০০,০০০ হেক্টর জমি ইজারা দেওয়ার জন্য ২০০৯ সালে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে।[৫৭][৫৮]

কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের জিডিপি ২০১৪ সালে ৬% বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ২০১৫ সালে ৭.৫% বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।[৫৯][৬০]

২০১৮ সালে, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংস্থায় যোগ দেয়।[৬১]

পরিবহন সম্পাদনা

 
ব্রাজাভিলের মায়া-মায়া বিমানবন্দর

কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের পরিবহনের মধ্যে রয়েছে স্থল, বিমান এবং জল পরিবহন। দেশের রেল ব্যবস্থা ১৯৩০-এর দশকে বাধ্যতামূলক শ্রমিকদের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চালু রয়েছে। এছাড়াও ১০০০ এর উপরে আছে কিমি পাকা রাস্তা, এবং দুটি প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ( মায়া-মায়া বিমানবন্দর এবং পয়েন্টে-নয়ার বিমানবন্দর ) যেখানে ইউরোপ, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের গন্তব্যে ফ্লাইট রয়েছে। দেশটির আটলান্টিক মহাসাগরে পয়েন্টে-নোয়ারে এবং কঙ্গো নদীর তীরে ব্রাজাভিল এবং ইম্পফন্ডোতে একটি বড় বন্দর রয়েছে।

জনসংখ্যা সম্পাদনা

অ্যাসোসিয়েশন অফ রিলিজিয়ন ডেটা আর্কাইভস দ্বারা কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে ধর্ম (২০১৫)[৬২]

  প্রোটেস্ট্যান্ট এবং অজানা খ্রিস্টান (৪.৭%)
  অন্যান্য ধর্ম (২.৩%)
  ধর্মহীন (৩.০%)
  অজানা (১.৪%)
জনসংখ্যা[৬৩][৬৪]
বছর লক্ষ্য
১৯৫০ ০৮
২০০০ ৩২
২০১৮ ৫০

কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের বিরল জনসংখ্যা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে কেন্দ্রীভূত, উত্তরে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জঙ্গলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলগুলো কার্যত জনবসতিহীন। এইভাবে, কঙ্গো আফ্রিকার সবচেয়ে নগরায়িত দেশগুলোর মধ্যে একটি, এর মোট জনসংখ্যার ৭০% কিছু শহুরে অঞ্চলে বাস করে, যথা ব্রাজাভিল, পয়েন্টে-নয়ারে, বা ৫৩৪-কিলোমিটার (৩৩২ মা) এর আস্তরণে থাকা ছোট শহর বা গ্রামগুলোর মধ্যে একটি।, রেলপথ যা দুটি শহরকে সংযুক্ত করে। গ্রামীণ অঞ্চলে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিল্প ও বাণিজ্যিক কার্যকলাপ দ্রুত হ্রাস পেয়েছে, গ্রামীণ অর্থনীতিগুলোকে সহায়তা এবং জীবিকা নির্বাহের জন্য সরকারের উপর নির্ভরশীল করে রেখেছে।[৬৫]

জাতিগত এবং ভাষাগতভাবে, কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের জনসংখ্যা বেশ বৈচিত্র্যময়। এথনোলগ দেশে ৬২টি কথ্য ভাষাকে স্বীকৃতি দেয়।[৬৬] কিন্তু এই ভাষাগুলোকে তিনটি বিভাগে বিভক্ত করা যেতে পারে। কঙ্গো হল এই দেশের বৃহত্তম জাতিগোষ্ঠী এবং তাদের সংখ্যা জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। কঙ্গোর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উপগোষ্ঠী হল লারি, ব্রাজাভিল এবং পুল অঞ্চলে এবং ভিলি, পয়েন্টে-নয়ারের আশেপাশে এবং আটলান্টিক উপকূল বরাবর। দ্বিতীয় বৃহত্তম গোষ্ঠী হল টেকে, যারা ব্রাজাভিলের উত্তরে বাস করে, জনসংখ্যার ১৬.৯%। এমবোচি উত্তর, পূর্ব এবং ব্রাজাভিলে বাস করে এবং জনসংখ্যার ১৩.১% গঠন করে।[৬৭][৬৮] কঙ্গোর জনসংখ্যার ২% পিগমি[৬৯]

১৯৯৭ সালের যুদ্ধের আগে, প্রায় ৯,০০০ ইউরোপীয় এবং অন্যান্য অ-আফ্রিকানরা কঙ্গোতে বাস করত। তাদের অধিকাংশই ছিল ফরাসি। এই সংখ্যার মাত্র একটি অল্প অংশ অবশিষ্ট আছে।[৬৫] প্রায় ৩০০ মার্কিন প্রবাসী কঙ্গোতে বসবাস করে।[৬৫]

সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক অনুসারে, কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের লোকেরা মূলত ক্যাথলিক (৩৩.১%), জাগ্রত লুথারান (২২.৩%) এবং অন্যান্য প্রোটেস্ট্যান্ট (১৯.৯%) এর মিশ্রণ। কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে ইসলাম ধর্মের অনুসারী ১.৬%/ মূলত শহুরে কেন্দ্রগুলোতে বিদেশী শ্রমিকদের আগমনের কারণে মুসলিমদের এই সংখ্যা দেখা যায়।[২]

 
কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের বৃহত্তম শহরসমূহ বা নগরসমূহ
ক্রম ডিপার্টমেন্ট জনসংখ্যা
 
ব্রাজাভিল
 
পোয়াঁত-নোয়ার
ব্রাজাভিল ব্রাজাভিল ১,৩৭৩,৩৮২
পোয়াঁত-নোয়ার পোয়াঁত-নোয়ার ৭১৫,৩৩৪
ডলিসি নিয়ারি ৮৩,৭৯৮
এনকায়ি বুউয়েঞ্জা ৭১,৬২০
ইম্ফোন্ডো লিকোউয়ালা ৩৩,৯১১
ওউয়েসো সাঙ্ঘা ২৮,১৭৯
মাদিঙ্গু বৌয়েঞ্জা ২৫,৭১৩
ওয়ান্ডো কুভেট্টি ২৪,৭৩৬
সিভিটি লেকোউমু ২২,৯৫১
১০ লোউটেটি বোউতেঞ্জা ১৯,২১২

স্বাস্থ্য সম্পাদনা

২০০৪ সালে সরকারি ব্যয় স্বাস্থ্য জিডিপির ৮.৯% ছিল, যেখানে ব্যক্তিগত ব্যয় ছিল ১.৩%।[৭০] ২০১২-এর হিসাব অনুযায়ী , ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সীদের মধ্যে এইচআইভি বা এইডস এর প্রকোপ ছিল ২.৮%।[২] ২০০৪ সালে স্বাস্থ্য ব্যয় ছিল মাথাপিছু ৩০ মার্কিন ডলার।[৭০] জনসংখ্যার একটি বড় অংশ অপুষ্টির শিকার।[৭০] তাই কঙ্গো-ব্রাজাভিলে অপুষ্টি একটি বড়ো সমস্যা।[৭১] ২০০০-এর দশকের গোড়ার দিকে এই দেশে প্রতি ১০০,০০০ জনে মাত্র ২০ জন চিকিৎসক ছিলেন।[৭০]

২০১০-এর হিসাব অনুযায়ী, ২০১০ সালের হিসাবে, প্রতি ১০০,০০০ টি জীবিত জন্মে মাতৃ মৃত্যুর হার ছিল ৫৬০ টি এবং শিশু মৃত্যুর হার ছিল প্রতি ১০০,০০০ টি জীবিত জন্মে ৫৯.৩৪ টি।[২] নারীদের যৌনাঙ্গ বিকৃতকরণ (নারী খৎনা) দেশে বিরল। এটি শুধু এই দেশের দেশের সীমিত ভৌগোলিক অঞ্চলে সীমাবদ্ধ।[৭২]

সংস্কৃতি সম্পাদনা

অসংখ্য জাতিগোষ্ঠী, শিল্পের রূপ এবং রাজনৈতিক কাঠামো এই দেশের একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য প্রকাশ করে।

কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের সবচেয়ে পরিচিত সাংস্কৃতিক নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে, ভিলি পেরেক ফেটিশ, বেমবে মূর্তি যা অভিব্যক্তিতে পূর্ণ; পুনু এবং কুয়েলের মুখোশ, কোটা রেলিকুয়ারি, টেকে ফেটিশ, এবং স্মৃতিস্তম্ভ সমাধি সহ কবরস্থানগুলো এই বৈচিত্র্যের উদাহরণ। লারি জনগোষ্ঠীরও রয়েছে অনন্য নিদর্শন।

কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের যথেষ্ট উপনিবেশিক স্থাপত্য ঐতিহ্য রয়েছে। দেশটি এসব নিদর্শন সংরক্ষণ করছে। ব্রাজাভিলে বিভিন্ন পুরোনো স্থাপত্য কর্মের পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে। উদাহরণস্বরূপ, সেন্ট-অ্যান ডু কঙ্গোর ব্যাসিলিকার নাম উল্লেখ করা যেতে পারে। এটি ২০১১ সালে সম্পন্ন হয়েছিল।[৭৩]

যোগাযোগ নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে দেশটি ঐতিহ্যগত পর্যটন গড়ে তুলতে প্রস্তুত নয়। এটি পয়েন্ট নোয়ার এবং ব্রাজাভিলে তার হোটেল এবং সম্পর্কিত পর্যটন সুবিধাগুলো সমর্থন করে এমন নেটওয়ার্ককে উন্নত করার জন্য কাজ করছে। অনেক সাইট ওভারল্যান্ড ভিজিটে পৌঁছানো কঠিন। দক্ষিণের সবচেয়ে জনবহুল এবং উন্নত অবস্থানগুলোর মধ্যে কয়েকটি প্রায়ই সবচেয়ে কম অ্যাক্সেসযোগ্য। উদাহরণস্বরূপ, বিশাল ছাইলু পর্বতমালা পরিদর্শন করা প্রায় অসম্ভব।

কলা সম্পাদনা

ফ্রাঙ্কো-কঙ্গোর র‍্যাপার পাসি এখানে বেশ কয়েকটি হিট অ্যালবাম প্রকাশ করেছেন। যেমন: টেম্পটেশনস, বিখ্যাত গান "আই জাপ অ্যান্ড আই মেট"। তার কাজ আন্তর্জাতিক ভাবে সম্প্রচারিত হয়। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য সঙ্গীতশিল্পীদের মধ্যে রয়েছে এম'পাসি, প্রাক্তন গ্রুপের গায়ক মেলগ্রুভ, আর্সেনিকের র‍্যাপার ক্যালবো, নেগের মারনসের বেন-জে, মিস্টিক, আরসিএফএ, গ্রুপ বিসো না বিসো এবং ক্যাসিমির জাও।

কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের বেশ কয়েক জন লেখক আফ্রিকা এবং ফরাসি-ভাষী বিশ্বের অন্য কোথাও স্বীকৃত হয়েছেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন অ্যালাইন মাব্যানকৌ, জিন-ব্যাপটিস্ট তাতি লুটার্ড, জ্যানেট বালো টিচিচেল, হেনরি লোপেস, ল্যাসি এমবাউইটি, এবং চিকায়া উ তামসি।

এই দেশের শিল্পীরা একটি চলচ্চিত্র শিল্প গড়ে তোলার জন্য সংগ্রাম করেছেন। ১৯৭০-এর দশকে একটি আশাব্যঞ্জক সূচনার পরে, অশান্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি সিনেমা হলগুলো বন্ধ করে দেয় এবং চলচ্চিত্র নির্মাণকে কঠিন করে তোলে। প্রেক্ষাগৃহে বিতরণের জন্য ফিচার ফিল্ম তৈরির পরিবর্তে, দেশটির চলচ্চিত্র নির্মাতারা সাধারণত সরাসরি ইন্টারনেটে তাদের ভিডিও প্রযোজনাগুলো স্ট্রিম করে।

অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং যুদ্ধের কারণে কঙ্গোলিজ সংস্কৃতি, শিল্প এবং মিডিয়া বিনিয়োগের অভাবের শিকার হয়েছে।

শিক্ষা সম্পাদনা

 
শ্রেণীকক্ষে স্কুল শিশু, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র

১৯৯১ সালের তুলনায় ২০০২-০৫ সালে স্থূল অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) সরকারি ব্যয় কম ছিল।[৭০] পাবলিক শিক্ষা তাত্ত্বিকভাবে বিনামূল্যে এবং অনূর্ধ্ব-১৬ বছর বয়সীদের জন্য বাধ্যতামূলক,[৭৪] কিন্তু বাস্তবে, খরচ বিদ্যমান।[৭৪] ২০০৫ সালে সাকুল্যে প্রাথমিক তালিকাভুক্তির হার ছিল ৪৪%, যা ১৯৯১ সালে ৭৯% থেকে একটি উল্লেখযোগ্য হ্রাস।[৭০] নয় থেকে ষোল বছর বয়সের মধ্যে শিক্ষা বাধ্যতামূলক। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছয় বছর এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাত বছর পূর্ণ করা শিক্ষার্থীরা স্নাতক পায়।

দেশে এমন বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যেখানে শিক্ষার্থীরা তিন বছরে স্নাতক ডিগ্রি এবং পাঁচ বছরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করতে পারে। মারিয়েন এনগুয়াবি বিশ্ববিদ্যালয় মেডিসিন, আইন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে কোর্স অফার করে। এটি দেশের একমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়।

সমস্ত স্তরে নির্দেশনা ফরাসি ভাষায় এবং শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ফরাসি সিস্টেমের মডেল।

সাহিত্য সম্পাদনা

কঙ্গোলিজ লেখক অ্যালেন মাবাঙ্কো ২০০৬ সালে "মেমোয়ার্স অফ আ পোর্কুপাইন" নামে একটি বিখ্যাত উপন্যাস প্রকাশ করেছিলেন। এর ঘটনা কঙ্গোর একটি গ্রামে সংঘটিত হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

আরও দেখুন সম্পাদনা

  • কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের রূপরেখা
  • কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের সূচক-সম্পর্কিত নিবন্ধ

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Constitution de 2015"Digithèque matériaux juridiques et politiques, Jean-Pierre Maury, Université de Perpignan (ফরাসি ভাষায়)। ১৩ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০২১ 
  2. "Congo, Republic of the"। CIA – The World Factbook। ৩১ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "CIA" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  3. "Republic of the Congo"। International Monetary Fund। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১৭ 
  4. "GINI index"। World Bank। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৫ 
  5. "2016 Human Development Report" (পিডিএফ)। United Nations Development Programme। ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০১৭ 
  6. SEWELL CHAN, MADELEINE KRUHLY; HANNAH OLIVENNES (১২ মে ২০১৬)। "Congo Republic"। ৭ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০১৪ 
  7. "Le congo" 
  8. Nzaou-Kongo, Aubin (২০১৮)। Exploitation des hydrocarbures et protection de l'environnement en République du Congo : essai sur la complexité de leurs rapports à la lumière du droit international.। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২১ 
  9. Gates, Louis & Appiah, Anthony.
  10. Olson, James S. & Shadle, Robert.
  11. Bentley, Wm. Holman.
  12. Frau, Giovanni Dizionario Toponomastico Friuli-Venezia Giulia.
  13. "Background Note: Republic of the Congo"। Department of State। মার্চ ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১৭ 
  14. Olson, James S. & Shadle, Robert.
  15. Boxer, C. R. The Portuguese Seaborne Empire, 1415–1825, A. A. Knopf, 1969, আইএসবিএন ০০৯০৯৭৯৪০০
  16. "BBC NEWS – Africa – The man who would be Congo's king"। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৩। ২৯ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০১৬ 
  17. United States State Department.
  18. Robbers, Gerhard (2007).
  19. CONGO REPUBLIC: BRAZZAVILLE RIOTS AFTERMATH ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ মে ২০১৪ তারিখে.
  20. "Fulbert Youlou facts, information, pictures – Encyclopedia.com articles about Fulbert Youlou"। ২৮ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৬ 
  21. Shillington, Kevin (২০০৫)। Encyclopedia of African history। CRC Press। পৃষ্ঠা 301। আইএসবিএন 978-1579582456 
  22. Bazenguissa-Ganga, Rémy.
  23. Africa Research Bulletin.
  24. Shillington, Kevin (২০০৫)। Encyclopedia of African history। CRC Press। পৃষ্ঠা 302। আইএসবিএন 978-1579582456 
  25. Country Report Congo-Brazzaville। The Economist Intelligence Unit। ২০০৩। পৃষ্ঠা 24। ১৩ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০১৩ 
  26. "Congo, Republic of"Freedom House। ২০০৬। ১৫ অক্টোবর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০০৯ 
  27. "Congo approves new constitution"। BBC। ২৪ জানুয়ারি ২০০২। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০০৯ 
  28. "Congo peace deal signed"। BBC। ১৮ মার্চ ২০০৩। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুন ২০০৯ 
  29. "17 candidates in Congo presidential race: commission"। AFP। ১৩ জুন ২০০৯। ১২ মার্চ ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুন ২০০৯ 
  30. Vote results expected as opposition alleges fraud ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ জুলাই ২০০৯ তারিখে.
  31. "Congo-Brazzaville's hidden war"। New Humanitarian। ১৮ জুন ২০১৮। ৮ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০১৯ 
  32. "FACTBOX-African leaders' French assets under scrutiny"। Reuters। ২৯ এপ্রিল ২০০৯। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জুলাই ২০১৭ 
  33. "Congo leader son fails in gag bid"। BBC। ১৫ আগস্ট ২০০৭। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০০৯ 
  34. "Propping Up Africa's Dictators"। Foreign Policy In Focus। ২২ জুন ২০০৯। ১২ অক্টোবর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  35. "FACTBOX-African leaders' French assets under scrutiny"Reuters। ২৯ এপ্রিল ২০০৯। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  36. Joan Tilouine; ICIJ (৪ এপ্রিল ২০১৬)। "Les Africains du Panama (1) : les circuits offshore des " fils de ""Le Monde (ফরাসি ভাষায়)। ১২ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  37. Ross, Aaron (27 March 2015) Congo Republic president says expects referendum over the third term ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে.
  38. "Congo opposition holds ceremony for killed protesters=Reuters"Reuters। ৩০ অক্টোবর ২০১৫। ২৮ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জুলাই ২০১৭ 
  39. lefigaro.fr (৪ এপ্রিল ২০১৬)। "Violences au Congo : le government accuse les opposants à Sassou-Nguesso"Le Figaro (ফরাসি ভাষায়)। ১৪ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জুন ২০১৬ 
  40. With inconsistent figures:
  41. "Pygmies in the Congo treated like "pets": report"। globalpost.com। ১৩ জুলাই ২০১৪। ১৪ নভেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১১ 
  42. Thomas, Katie (৪ মার্চ ২০০৭)। "Slaves of the Congo"। International Reporting Project। ১৪ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুলাই ২০১৪ 
  43. "UN expert praises Congo's draft law on indigenous rights"। ২৪ নভেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০১১ 
  44. Moen, John। "Congo Geography"www.worldatlas.com। World Atlas। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০২০ 
  45. Map: Situation de l'exploitation forestière en République du Congo ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে.
  46. Grantham, H. S.; Duncan, A. (২০২০)। "Anthropogenic modification of forests means only 40% of remaining forests have high ecosystem integrity - Supplementary Material": 5978। আইএসএসএন 2041-1723ডিওআই:10.1038/s41467-020-19493-3পিএমআইডি 33293507 |pmid= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)পিএমসি 7723057  |pmc= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য) 
  47. Dinerstein, Eric; Olson, David (২০১৭)। "An Ecoregion-Based Approach to Protecting Half the Terrestrial Realm": 534–545। আইএসএসএন 0006-3568ডিওআই:10.1093/biosci/bix014পিএমআইডি 28608869পিএমসি 5451287  
  48. Samba G.; Nganga D. (২০০৮)। "Rainfall and temperature variations over Congo-Brazzaville between 1950 and 1998": 85–97। ডিওআই:10.1007/s00704-007-0298-0 
  49. "'Mother Lode' Of Gorillas Found In Congo Forests : NPR"NPR.org। ২৮ আগস্ট ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০০৮ 
  50. "Congo-Brazzaville"। Energy Information Administration, U.S. Government। ২৩ মার্চ ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০০৯ 
  51. Republic of the Congo ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ মে ২০০৯ তারিখে World Bank
  52. "Congo, Republic of"। EconStats। ২৮ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০০৯ 
  53. "Kimberley Process Removes the Republic of Congo from the List of Participants"Kimberley Process। ৯ জুলাই ২০০৪। ১০ মে ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০০৮ 
  54. "2007 Kimberley Process Communiqué"Kimberley Process। ৮ নভেম্বর ২০০৭। ৪ মার্চ ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০০৮ 
  55. "Mining in Congo"। MBendi। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুন ২০০৯ 
  56. "OHADA.com: The business law portal in Africa"। ২৬ মার্চ ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০০৯ 
  57. Goodspeed, Peter (21 October 2009) "South Africa's white farmers prepare to trek to the Congo"। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  58. Congo hands land to South African farmers ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ মে ২০১৮ তারিখে.
  59. "Republic of the Congo GDP Annual Growth Rate"। Trading Economics 
  60. "Republic of the Congo GDP and Economic Data"Global Finance। ২৪ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০১৬ 
  61. "OPEC Member Countries"। Organization of Petroleum Exporting Countries। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০১৯ 
  62. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; ARDA নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  63. ""World Population prospects – Population division""population.un.orgUnited Nations Department of Economic and Social Affairs, Population Division। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ৯, ২০১৯ 
  64. ""Overall total population" – World Population Prospects: The 2019 Revision" (xslx)population.un.org (custom data acquired via website)। United Nations Department of Economic and Social Affairs, Population Division। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ৯, ২০১৯ 
  65. Background Note: কঙ্গো প্রজাতন্ত্র United States Department of State.
  66. "Languages of Congo"। SIL International। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুন ২০০৯ 
  67. Levinson, David (১৯৯৮)। Ethnic groups worldwide। Greenwood Publishing Group। পৃষ্ঠা 120–121। আইএসবিএন 978-1-57356-019-1 
  68. "Congo Overview"। Minority Rights Group International। ১৪ জুন ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুন ২০০৯ 
  69. "Les pygmées du Congo en "danger d'extinction""Le Monde। ৫ আগস্ট ২০১১। ৭ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০১৭ 
  70. "Human Development Report 2009"। Archived from the original on ১৭ জানুয়ারি ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১৪ 
  71. "IRIN Africa – CONGO: Grappling with malnutrition and post-conflict woes – Congo – Food Security – Health & Nutrition"IRINnews। ৮ আগস্ট ২০০৭। ২৯ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৫ 
  72. "CONGO (BRAZZAVILLE): UNFPA Leads Fight Against FGM " UNFPA in the News"। ২৯ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৫ 
  73. "Inauguration de la basilique Sainte-Anne du Congo à Brazzaville"Latitude France (ফরাসি ভাষায়)। Brazzaville। ৩১ মার্চ ২০১১। ১৩ এপ্রিল ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০২০ 
  74. Refworld | 2008 Findings on the Worst Forms of Child Labor – Congo, Republic of the ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১০ মে ২০১১ তারিখে.

আরও পড়ুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

সরকার

সাধারণ

পর্যটন