ওএফসি নেশন্স কাপ
ওএফসি নেশন্স কাপ (ইংরেজি: OFC Nations Cup) আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতাবিশেষ যা ওশেনিয়া ফুটবল কনফেডারেশনের সদস্যভূক্ত দেশসমূহের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় থাকে। এ প্রতিযোগিতাটি ১৯৯৬ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্রতি দুই বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হতো। ১৯৯৬ সালের পূর্বে আরো দুটি প্রতিযোগিতা ওশেনিয়া নেশন্স কাপ নামে অনিয়মিতভাবে হয়েছিল। ২০০৬ সালে কোন প্রতিযোগিতা হয়নি। ২০০৮ সালের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যোগ্যতা নির্ধারণী প্রতিযোগিতারূপে ওএফসি অঞ্চল থেকে ২০০৯ সালের ফিফা কনফেডারেশন্স কাপে প্রতিনিধিত্ব করার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এছাড়াও, ২০১০ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতায় নিউজিল্যান্ড প্লে-অফ খেলায় বিজয়ী হয়ে সবাইকে আশ্চর্যান্বিত করেছিল। বিজয়ী দলটি ওশেনিয়া চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল এবং ২০১৬ সাল পর্যন্ত ফিফা কনফেডারেশন্স কাপে জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছিল।[২]
প্রতিষ্ঠিত | ১৯৭৩ |
---|---|
অঞ্চল | ওশেনিয়া (ওএফসি) |
দলের সংখ্যা | ৮ (মূল পর্ব) |
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন | নিউজিল্যান্ড (৬ষ্ঠ শিরোপা) |
সবচেয়ে সফল দল | নিউজিল্যান্ড (৬টি শিরোপা) |
টেলিভিশন সম্প্রচারক | ফিফা+[১] |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট |
২০২৪ ওএফসি নেশন্স কাপ |
ঐতিহাসিকভাবে, একটি খুব বড় উপসাগর অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডকে ছোট দ্বীপ প্রতিযোগীদের থেকে পৃথক করেছিল এবং বাকি ফুটবল বিশ্ব এই টুর্নামেন্টের প্রতি খুব কম মনোযোগ দিয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে, প্রথম আটটি আসরের পরে, ট্রফিটি কেবল অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড জিতেছিল। ২০১২ ওএফসি নেশন্স কাপে তাহিতি জাতীয় ফুটবল দল দল অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বাইরে প্রথম দল হিসেবে কাপ জয় করেছিল।
ইতিহাস
সম্পাদনাঐতিহাসিকভাবেই অনেক বড় উপসাগর অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড থেকে পার্শ্ববর্তী টোঙ্গা, ফিজি এবং অন্যান্য প্রশান্ত মহাসাগরীয় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপপুঞ্জকে পৃথক করে রেখেছে। ওশেনিয়া অঞ্চলের ফুটবল খেলার মানোন্নয়ন, ফিফা বিশ্বকাপের যোগ্যতা নির্ধারণী খেলাগুলো পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে বৈশ্বিক প্রধান ছয়টি কনফেডারেশনের একটি ও সবচেয়ে ছোট সংস্থা ওএফসি। এ অঞ্চলে ফুটবল খেলার তেমন জনপ্রিয়তা নেই বললেই চলে ও ১৪টি দ্বীপরাষ্ট্র মূলতঃ এর সদস্য। বৈশ্বিক পর্যায়ের ফুটবলের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় এ অঞ্চল থেকে দলগুলো তেমন প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি কিংবা উচ্চ পর্যায়ের ক্লাব দলগুলোতেও ফুটবলারদের তেমন অংশগ্রহণ নেই।
১ জানুয়ারি, ২০০৬ সালের সংস্থার বৃহৎ ও সর্বাপেক্ষা সফলতম দল অস্ট্রেলিয়া ওএফসি থেকে সদস্যপদ প্রত্যাহার করে নেয় ও এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনে স্থানান্তরিত হয়। ২০০৮ সালে সহযোগী সদস্য নর্দার্ন ম্যারিয়ানা আইল্যান্ডও সদস্যপদ প্রত্যাহার করে ও ২০০৯ সালে এএফসিতে কোয়াসি-মেম্বার হিসেবে যোগ দেয়। ২০০৯ সালের শেষার্ধ্বে পালাউও একই মর্যাদা নিয়ে এএফসিতে আবেদন করেছিল।[৩] এরফলে নিউজিল্যান্ড সংস্থার বৃহৎ সদস্যরূপে আসীন হয়েছে।
ওএফসি নেশন্স কাপের প্রথম আটটি আসরের শিরোপা অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। কিন্তু, ২০১২ সালের ওএফসি নেশন্স কাপে তাহিতি বিস্ময়করভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়।
ফলাফল
সম্পাদনারেকর্ড ও পরিসংখ্যান
সম্পাদনাপদক তালিকা
সম্পাদনাঅব | জাতি | স্বর্ণ | রৌপ্য | ব্রোঞ্জ | মোট |
---|---|---|---|---|---|
১ | নিউজিল্যান্ড | ৬ | ১ | ২ | ৯ |
২ | অস্ট্রেলিয়া | ৪ | ২ | ০ | ৬ |
৩ | তাহিতি | ১ | ৩ | ২ | ৬ |
৪ | নতুন ক্যালিডোনিয়া | ০ | ২ | ২ | ৪ |
৫ | সলোমন দ্বীপপুঞ্জ | ০ | ১ | ১ | ২ |
৬ | পাপুয়া নিউগিনি | ০ | ১ | ০ | ১ |
ভানুয়াতু | ০ | ১ | ০ | ১ | |
৮ | ফিজি | ০ | ০ | ২ | ২ |
মোট (৮টি জাতি) | ১১ | ১১ | ৯ | ৩১ |
দলসমূহের পারফরম্যান্স
সম্পাদনা- সংকেত
- ১ম – চ্যাম্পিয়ন
- ২য় – রানার্স-আপ
- ৩য় – তৃতীয় স্থান
- ৪র্থ – চতুর্থ স্থান
- সেমি – সেমি-ফাইনালিস্ট (ঐ বছরগুলিতে তৃতীয় স্থান নির্ধারক খেলা হয়নি)
- ৫ম — পঞ্চম স্থান
- ৬ষ্ঠ — ষষ্ঠ স্থান
- গ্রুপ – গ্রুপ পর্ব
- Q — উত্তীর্ণ
- •• — উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও প্রত্যাহার
- • — অনুত্তীর্ণ
- × — অংশ নেয়নি / প্রত্যাহার / নিষিদ্ধ
- — আয়োজক
দল | ১৯৭৩ (৫) |
১৯৮০ (৮) |
১৯৯৬ (৪) |
১৯৯৮ (৬) |
২০০০ (৬) |
২০০২ (৮) |
২০০৪ (৬) |
২০০৮ (৪) |
২০১২ (৮) |
২০১৬ (৮) |
২০২৪ (৮) |
বছর |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
নিউজিল্যান্ড | ১ম | গ্রুপ | সেমি | ১ম | ২য় | ১ম | ৩য় | ১ম | ৩য় | ১ম | ১ম | ১১ |
তাহিতি | ২য় | ২য় | ২য় | ৪র্থ | গ্রুপ | ৩য় | ৫ম | • | ১ম | গ্রুপ | ৩য় | ১০ |
ভানুয়াতু[ক] | ৪র্থ | গ্রুপ | • | গ্রুপ | ৪র্থ | ৪র্থ | ৬ষ্ঠ | ৪র্থ | গ্রুপ | গ্রুপ | ২য় | ১০ |
ফিজি | ৫ম | ৪র্থ | • | ৩য় | •• | গ্রুপ | ৪র্থ | ৩য় | গ্রুপ | গ্রুপ | ৪র্থ | ৯ |
সলোমন দ্বীপপুঞ্জ | × | গ্রুপ | সেমি | • | ৩য় | গ্রুপ | ২য় | • | ৪র্থ | সেমি | গ্রুপ | ৮ |
অস্ট্রেলিয়া | × | ১ম | ১ম | ২য় | ১ম | ২য় | ১ম | এএফসির সদস্য | ৬ | |||
নতুন ক্যালিডোনিয়া | ৩য় | ৩য় | • | • | • | গ্রুপ | • | ২য় | ২য় | সেমি | •• | ৬ |
পাপুয়া নিউগিনি | × | গ্রুপ | • | • | • | গ্রুপ | • | × | গ্রুপ | ২য় | গ্রুপ | ৫ |
কুক দ্বীপপুঞ্জ | × | × | × | গ্রুপ | গ্রুপ | × | • | • | • | • | × | ২ |
সামোয়া[খ] | × | × | • | • | • | • | • | • | গ্রুপ | গ্রুপ | গ্রুপ | ৩ |
মার্কিন সামোয়া | × | × | • | • | • | • | • | • | • | • | × | ০ |
টোঙ্গা | × | × | • | • | • | • | • | • | • | • | × | ০ |
টুভালু | ওএফসি সদস্য নয় | • | × | × | × | ০ | ||||||
কিরিবাস | ওএফসি সদস্য নয় | × | × | × | × | ০ | ||||||
নিউয়ে | ওএফসি সদস্য নয় | × | × | × | × | × | ০ |
পুরস্কার
সম্পাদনাবর্তমানে প্রতিযোগিতা শেষে ৫টি পুরস্কার দেওয়া হয়:
- আসরের সেরা খেলোয়াড়
- আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা খেলোয়াড়
- আসরের সেরা যুব খেলোয়াড়
- আসরের সেরা গোলরক্ষক
- ফেয়ার প্লে পুরস্কার
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "OFC SIGNS EXCLUSIVE PARTNERSHIP WITH FIFA+"। Oceania Football Confederation। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪। ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ মার্চ ২০২৪।
- ↑ "Match schedules for FIFA Confederations Cup 2017 and 2018 FIFA World Cup unveiled"। FIFA.com। ২৪ জুলাই ২০১৫। ২৪ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০১৩।
- ↑ "OFC Nations Cup 2020 cancelled"। Oceania Football Confederation। ২১ এপ্রিল ২০২০। ২ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ এপ্রিল ২০২০।