এ কে এম রফিক উল্লাহ চৌধুরী

বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ

এ কে এম রফিক উল্লাহ চৌধুরী (অক্টোবর ১৯২৩–২২ সেপ্টেম্বর ২০১১) বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার রাজনীতিবিদ ও ভাষা সৈনিক যিনি চট্টগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।[১]

এ কে এম রফিক উল্লাহ চৌধুরী
চট্টগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৯৭৯ – ১৯৮২
পূর্বসূরীএম ওবায়দুল হক
উত্তরসূরীএ কে এম শামসুল হুদা
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মঅক্টোবর ১৯২৩
চট্টগ্রাম জেলা
মৃত্যু২২ সেপ্টেম্বর ২০১১
সার্জিস্কোপ হাসপাতাল, চট্রগ্রাম
রাজনৈতিক দলগণফ্রন্ট
খেলাফতে রাব্বানী পাটি
দাম্পত্য সঙ্গীখাতুন চামেলী চৌধুরী (বি. ১৯৫৯)
পিতামাতাহালিম উল্লাহ চৌধুরী, নাজমুন নেসা চৌধুরী
প্রাক্তন শিক্ষার্থীআলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়
কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ
পুরস্কারস্বাধীনতা স্মারক সম্মাননা পদক

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা

এ কে এম রফিক উল্লাহ চৌধুরী অক্টোবর ১৯২৩ সালে চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা হালিম উল্লাহ চৌধুরী ও মাতা নাজমুন নেসা চৌধুরী। তার মাতামহ কালাপানিয়ার প্রখ্যাত জমিদার খুরশিদ আলম চৌধুরী। তার পিতার আদিনিবাস ফেনী জেলার শর্শাদি।[২]

মোক্তব ভিত্তিক ধর্মীয় শিক্ষা অর্জনের পর ১৯৩২ সালে কাটগড় গোলাম নবী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেনিতে ভর্তি হন। ১৯৪১ সালে কাটগড় গোলাম নবী হাই স্কুল হয়ে চট্টগ্রামের মুসলিম হাই স্কুল থেকে মেট্টিকুলেশন পাস করেন। তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে ১৯৪৩ সালে ইন্টারমিডিয়েট (আইকম) পাস করে কলকাতা সিটি কলেজ থেকে ১৯৪৬ সালে ব্যাচেলর ডিগ্রী (বি কম) পাস করেন। আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৮ সালে তিনি মাষ্টার্স পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করার কথা থাকলেও পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ায় তিনি পুর্বপাকিস্তানে চলে আসেন।[২]

১৬ অক্টোবর ১৯৫৯ সালে তিনি বেগম জোলেখা খাতুন চামেলী চৌধুরীকে বিয়ে করেন।[২]

রাজনৈতিক ও কর্মজীবন সম্পাদনা

এ কে এম রফিক উল্লাহ চৌধুরী ১৯৩৭ সালে সরকারি মুসলিম হাই স্কুলে পড়াকালীন সময়ে মুসলিম ছাত্রলীগে যোগদান করেন। ১৯৪০ সালে পাকিস্তান আন্দোলনে যোগ দিয়ে তিনি মুসলিম লীগের সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করেন। ১৯৪৬ সালে 'ক্যাপ্টেন রশিদ আলী দিবসে' কলকাতা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেন। ১৯৪৮ সালে প্রিন্সিপাল আবুল কাসেমের নেতৃত্বাধীন 'তমুদ্দুন মজলিসের' সাথে জড়িত হন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভাবে আন্দোলন অংশগ্রহণ করেন। ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত খিলাফতে রাব্বানী পার্টির চট্রগ্রাম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও ১৯৫৮ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসোবে দায়িত্ব পালন করেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের তত্বাবধানে স্থাপিত জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ তারই অবদান। ১৯৭৬ সালে গঠিত ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগের তিনি ছিলেন কেন্দ্রীয় সহসভাপতি।[১]

তিনি ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের পরাজিত করে তৎকালীন চট্টগ্রাম-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[১] ২০১১ সালে তাকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের স্বাধীনতা স্মারক সম্মাননা পদক প্রদান করা হয়।[৩]

১৯৮৫ সালে দেশের প্রথম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি সন্দ্বীপের উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৮৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৯৭ সালে জাতীয় ভাবে ইসলামী ঐক্যজোট গঠনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ২০০৮ সালে তার নেতৃত্বে গণফ্রন্ট নামে একটি রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত হয়, যার নিবন্ধন নম্বর-২৫।[২]

১৯৬২, ১৯৬৫ ও ১৯৭০ সালে অনু্ষ্ঠিত পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে তিনি অংশ নিয়ে তিনি পরাজিত হয়েছিলেন।[২]

মৃত্যু সম্পাদনা

এ কে এম রফিক উল্লাহ চৌধুরী ২২ সেপ্টেম্বর ২০১১ চট্রগ্রামের সার্জিস্কোপ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।[২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "২য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  2. মুকতাদের আজাদ খান (২০ জুন ২০১৬)। "এ কে এম রফিক উল্লাহ চৌধুরী জীবন ও কর্ম"। সাপ্তাহিক আলোকিত সন্দ্বীপ 
  3. স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (২৫ মার্চ ২০১১)। "চসিকের স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন সাত বরেণ্য ব্যক্তি"বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ১৭ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০২০