এ এম জহিরুদ্দিন খান

বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ

এ এম জহিরুদ্দিন খান (৫ জুলাই ১৯৩৬- ২৯ মার্চ ২০০৫) বাংলাদেশী মুক্তিযোদ্ধা, শিল্পপতি ও রাজনীতিবিদ, সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী ছিলেন। তিনি ১৯৫৮ সালে একে খান অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ১৯৯১ সালে চেয়ারম্যান হন। এছাড়াও তিনি এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি ছিলেন।[১]

এ এম জহিরুদ্দিন খান
পরিকল্পনামন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
১৯৯১ – ১৯৯৩
শিল্প মন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
১৯৯৩ – ১৯৯৪
পূর্বসূরীশামসুল ইসলাম খান
চট্টগ্রাম-৬ আসনের সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৯৭৯ – ১৯৮২
পূর্বসূরীমোহাম্মদ খালেদ
উত্তরসূরীসালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম৫ জুলাই ১৯৩৬
চট্টগ্রাম জেলা
মৃত্যু২৯ মার্চ ২০০৫
বুমরুনগ্রাদ হাসপাতাল, ব্যাংকক, থাইল্যান্ড
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
সম্পর্কআবদুল বারী চৌধুরী (মাতামহ)
মোরশেদ খান (খালাতো ভাই ও শ্যালক)
সন্তানদুই পুত্র ও দুই কন্যা
পিতামাতাআবুল কাসেম খান
শামসুন্নাহার বেগম

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা

জহিরুদ্দিন খান ৫ জুলাই ১৯৩৬ সালে চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আইনশাস্ত্রজ্ঞ, রাজনৈতিক নেতা ও শিল্পপতি (এ কে খান নামে পরিচিত) আবুল কাসেম খান ব্রিটিশ ভারতের আইনসভার সদস্য, পাকিস্তান আইন সভার সদস্য ও পাকিস্তানের মন্ত্রী ছিলেন। মাতা ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল বর্মা স্টিম ন্যাভিগেশন কোম্পানি লিমিটেড কোম্পানির মালিক আবদুল বারী চৌধুরীর প্রথমা কন্যা শামসুন্নাহার বেগম। তিনি ভারতের দার্জিলিংয়ের সেন্ট পলস স্কুলে পড়াশোনা করে পাকিস্তানের লাহোরের আইচিসন কলেজে পড়াশোনা করেন।

রাজনৈতিক ও কর্মজীবন সম্পাদনা

এ এম জহিরুদ্দিন খান ১৯৫৮ সালে একে খান অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ১৯৯১ সালে চেয়ারম্যান হন। তিনি একটেলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং কোটস বাংলাদেশ, বেঙ্গল ফিশারিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিসিসিআই) সভাপতি ছিলেন।

১৯৭৭ সালে তিনি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) সভাপতি নির্বাচিত হন। এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি হিসাবে তিনি ইসলামিক চেম্বারস অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ১৯৭৭ সালে তিনি ইস্তাম্বুল সম্মেলনে ইসলামিক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সংবিধানের খসড়া তৈরির জন্য ওয়ার্কিং কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

১৯৭১ সালে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।

তিনি ১৯৭৫ সালে জেনেভায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসাবেও অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত অল পাকিস্তান টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (পূর্ব অঞ্চল) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও সাধরণ বিমা কর্পোরেশনের পরিচালক ছিলেন। তিনি সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[২][৩][৪]

তিনি ১৯৭৮ সালে রাজনীতিতে যোগ দিয়ে ১৯৭৯ সালের সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৬ আসন থেকে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি জিয়াউর রহমান সরকারের শিল্প প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৯১ সালে তিনি বেগম খালেদা জিয়ার প্রথম মন্ত্রিসভায় ১৯৯১ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত পরিকল্পনামন্ত্রী এবং ১৯৯৩-১৯৯৪ সাল পর্যন্ত শিল্পমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।[২]

মৃত্যু সম্পাদনা

জহিরুদ্দিন খান ২৯ মার্চ ২০০৫ সালে থাইল্যান্ডের ব্যাংককের বুমরুনগ্রাদ হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। চট্টগ্রামের বাটালি পাহাড়ের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।[২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "২য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  2. "Former minister Zahiruddin Khan passes away"bdnews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৫-০৬ 
  3. Baxter, Craig; Rahman, Syedur (২০০৩-০১-০১)। Historical Dictionary of Bangladesh (ইংরেজি ভাষায়)। Scarecrow Press। পৃষ্ঠা 229। আইএসবিএন 9780810848634 
  4. Bhuyan, Ayubur Rahman (১৯৯৬-০১-০১)। Towards an Islamic Common Market: Proceedings of the International Seminar on Islamic Common Market Held During December 18-20, 1993 (ইংরেজি ভাষায়)। Islamic Economic Research Bureau। পৃষ্ঠা 13। 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা