এশীয় তালবাতাসি
এশীয় তালবাতাসি (বৈজ্ঞানিক নাম: Cyphiurus Balasiensis) বাতাসি প্রজাতির পাখি। তালগাছের জীবনের কারণে, প্রচলিত নাম ‘তালবাতাসি’। ‘আদম পাখি’ বা ‘আদম সুরত’ নামেও অনেক জায়গায় পরিচিত। এরা শহরের কেন্দ্রস্থলে তালজাতীয় গাছের পাতার ভেতরে থাকে ও বাসা করে। মাটিতে নামতে পারে না ও বসতে পারে না, তাই বাসার উপকরণ সংগ্রহ করে উড়ে উড়ে।[২]
তালবাতাসি Cyphiurus Balasiensis | |
---|---|
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | প্রাণীজগৎ |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | পক্ষী |
বর্গ: | Apodiformes |
পরিবার: | Apodidae |
গণ: | Cypsiurus |
প্রজাতি: | C. balasiensis |
দ্বিপদী নাম | |
Cypsiurus balasiensis জন অ্যাডওয়ার্ড গ্রে, ১৮২৯ |
বাসা সম্পাদনা
বাতাসিদের জীবন মূলত তালগাছকেন্দ্রিক। তালগাছের ঝুলন্ত পাতার ভেতরে বাসা করে। বাসাটা দেখতে হয় অনেকটা কোন্ আইসক্রিমের আকৃতির বা অতি সরু লম্বাটে চায়ের কাপের মত যার তলার দিকটা চাপা। বাসার বাইরের দিকে এরা নিজেদের শরীরের পালক বা কুড়িয়ে আনা অন্য কোনো পাখি বা মুরগির ফুলপালক নিজেদের মুখের আঠালো লালা দিয়েসেঁটে দেয়। বাসা লম্বায় নয় সেন্টিমিটার, ওজন চার থেকে সাত গ্রাম। গভীরতা চার-পাঁচ সেন্টিমিটার। গড় বেড় ১২ সেন্টিমিটার।[২]
স্বভাব সম্পাদনা
এরা দিনের প্রায় পুরো সময়টাই উড়ে উড়ে আনন্দ করে এবং খেলায় মাতে। খুবই আমুদে পাখি এরা। সব সময়ই গান গেয়ে চলে। আকাশে এরা দলবদ্ধভাবে নানা রকম খেলায় মাতে।[২]
আকার সম্পাদনা
মেয়ে ও পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। এক নজরে ঘোলাটে বাদামি পাখি। ঠিক ডানার উপরিভাগ ঘন বাদামি। গলা-বুক-পেট ও ডানার তলা চকচকে বাদামি। চ্যাপ্টা ধরনের ছোট মাথা। ঠোঁট ও পা কালো। পায়ের নখ কাঁটার মতো ধারালো। শরীরের মাপ ১৩ সেন্টিমিটার। নলাকার লম্বাটে শরীর এদের। দুই পাখা মেললে ধনুকের মতো মনে হয়। উড়ার সময় সুন্দর ভাবে লেজ দোলায়। এরা দ্রুত উড়তে পারে ও হঠাৎ দিক বদল করতে পারে।[২]
প্রজনন সম্পাদনা
স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে বাসা করে। ডিম হয় দু-তিনটি। ডিম টিকটিকির ডিমের সমান, তবে লম্বাটে। দুটি ডিমের ওজন দুই থেকে চার গ্রাম। রং সাদা। দুজনে মিলে পালা করে তা দেয়। ডিম ফোটে ১৬-১৯ দিনে। তালগাছ কম হলে অসুবিধা হয় এদের।[২]
গ্যালারি সম্পাদনা
-
এশীয় তালবাতাসি ভারতের পুদুচেরির একটি রিসর্টে সমুদ্র সৈকতের উপরে উড়ছে
-
এশীয় তালবাতাসি উপরের দিকে
তথ্যসূত্র সম্পাদনা
- ↑ BirdLife International (২০১২)। "Cypsiurus balasiensis"। বিপদগ্রস্ত প্রজাতির আইইউসিএন লাল তালিকা। সংস্করণ 2012.1। প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১২।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ ছোট পাখি বাতাসি ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে,শরীফ খান, দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ২৪-০৪-২০১৩ খ্রিস্টাব্দ।