এম এ হামিদ

বাংলাদেশী ক্রীড়া সংগঠক

এম এ হামিদ (১৮ মার্চ ১৯৩২ - ২৫ জুলাই ২০০৮) বাংলাদেশী ক্রীড়া সংগঠক এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ হ্যান্ডবল ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা।[১] আর্মি স্পোর্টস কন্ট্রোল বোর্ডের সভাপতি এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০০৬ সালে সংগঠক ক্যাটাগরিতে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পেয়েছিলেন।[২]

লে. কর্ণেল (অব:)

এম এ হামিদ

পিএসসি
১৯৫৯ সালে এম এ হামিদ
জন্ম নামমোহাম্মাদ আব্দুল হামিদ
জন্ম১৮ মার্চ ১৯৩২
সিলেট জেলা
মৃত্যু২৫ জুলাই ২০০৮(2008-07-25) (বয়স ৭৬)
সিএমএইচ, ঢাকা, বাংলাদেশ
সেবা/শাখা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
পদমর্যাদালেফটেন্যান্ট কর্নেল
দাম্পত্য সঙ্গীরাণী হামিদ
সন্তানকায়সার হামিদ

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা

এম এ হামিদ ১৮ মার্চ ১৯৩২ সালে সিলেট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন । তিনি ১৯৫৩ সালে কাকুলস্থিত পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন।[৩]

কর্মজীবন সম্পাদনা

হামিদ পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ১৯৫৫ সালে ১২তম দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সে কমিশন পেয়ে তৎকালীন ১৪ পাঞ্জাব রেজিমেন্টে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসাবে যোগদান করেন। পরবর্তীকালে ১৯৬৩ সালে তিনি ৩য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দেন। তিনি চাকরি জীবনে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।[৩]

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি পেশোয়ারে পাকিস্তানী ক্যাম্পে অন্তরীণ হন। সেখান থেকে ১৯৭২ সালে তিনি সপরিবারে পলায়ন করে ঐ বছরই সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকা পৌঁছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে মিলিটারি সেক্রেটারি হিসাবে যোগদান করেন । তার পলায়নের উপরে ভিত্তি করে তিনি 'পাকিস্তান থেকে পলায়ন' নামে একখানি গ্রন্থ রচনা করেন তিনি ঢাকার স্টেশন কমান্ডার থাকাকালীন সময়ে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট, ৩রা নভেম্বর ও ৭ই নভেম্বর এই তিনটি ঐতিহাসিক সেনা-অভ্যুত্থান সংঘঠিত হয়। অভ্যুত্থানের পরপরই তিনি ঢাকার লগ এরিয়া কমান্ডার পদে অধিষ্ঠিত হন, কিন্তু মাত্র তিন মাস পর সেনাবাহিনী থেকে পদত্যাগ করে অবসর গ্রহণ করেন।[৩][৪] তিনি তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও কিছু না বলা কথা নামে একটি বই লেখেন।[৪][৫][৬]

তিনি বিভিন্ন জাতীয় ক্রীড়া সংগঠন ও খেলাধুলার সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি ১৯৮৪ সাল থেকে ২৪ বছর বিএইচএফ সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৭৯ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়া তাকে জাতীয় ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান নিযুক্ত করেন। ১৯৮৮ সালে প্রেসিডেন্ট এরশাদ এসে তাকে অব্যাহতি দেন।[৩]

তিনি বাংলাদেশ হ্যান্ডবল ফেডারেশনের সভাপতি, বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য এবং এশিয়ান, হ্যান্ডবল ফেডারেশনের কার্যকরী কমিটির নির্বাচিত সদস্য ছিলেন।[৩]

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

এম এ হামিদের স্ত্রী রাণী হামিদ তিনি বাংলাদেশের প্রথম মহিলা আন্তর্জাতিক দাবা মাস্টার। তাদের জ্যেষ্ঠ পুত্র কায়সার হামিদ বাংলাদেশের একজন কৃতি ফুটবলার। তিনি মোহামেডান স্পোর্টিং-এর হয়ে আশির দশক ও নব্বইয়ের দশকে খেলতেন।[১] দ্বিতীয় ছেলে সোহেল হামিদ জাতীয় স্কোয়াশ চ্যাম্পিয়ন ছিলেন এবং সবচেয়ে ছোট মেয়ে ববি হামিদ ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন।[১]

রচিত গ্রন্থসমূহ সম্পাদনা

মৃত্যু সম্পাদনা

এম এ হামিদ ২৫ জুলাই ২০০৮ লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে সিএমএইচে মৃত্যুবরণ করেন।[৮]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Noted sportsman MA Hamid dies at 76"bdnews24.com। ২০০৮-০৭-২৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৯-১২ 
  2. "Local Snippets"The Daily Star। ২০০৭-০৬-১৩। ২০১৮-০৯-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৯-১২ 
  3. লে. কর্ণেল (অব:) এম এ হামিদ পিএসসি (২৫ মে ১৯৯৩)। তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও কিছু না বলা কথাবাংলাদেশ: মিজান পাবলিশার্স। পৃষ্ঠা ১৯২। আইএসবিএন 9789848685501 
  4. "How Gen Zia took the helm of army"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৪-০৮-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৯-১২ 
  5. "তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও কিছু না বলা কথা"www.goodreads.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-২৯ 
  6. "ইতিহাসের পাতায় জিয়া-মঞ্জুর-এরশাদ ত্রয়ী"NTV Online। ২০১৯-০৬-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-২৯ 
  7. "কর্নেল (অবঃ) এম. এ. হামিদ পিএসসি এর বই সমূহ"rokomari.com 
  8. "Handball pioneer MA Hamid passes away"দ্য ডেইলি স্টার। ২৬ জুলাই ২০০৮। ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩