এম. হোসেন আলী
এম. হোসেন আলী (১ ফেব্রুয়ারি ১৯২৩ - ১৯৮১) হলেন বাংলাদেশের একজন সরকারি কর্মকর্তা ও কূটনীতিক। সমাজসেবায় অনন্য সাধারণ অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে তাকে “জনসেবায় স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয়।[১]
এম. হোসেন আলী | |
---|---|
জন্ম | ১ ফেব্রু ১৯২৩ |
মৃত্যু | ২ জানু ১৯৮১ কানাডা |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী! |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ |
পেশা | সরকারি চাকরি |
কর্মজীবন | ৫৮ বছর |
আদি নিবাস | ভাঙ্গুড়া |
পিতা-মাতা | তাহের মাহমুদ |
পুরস্কার | স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৮৭) |
পরিচিতি
সম্পাদনাবিদেশের মাটিতে প্রথম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনকারী ভাঙ্গুড়ার এম হোসেন আলী।
জন্ম
সম্পাদনাএম হোসেন আলী ১৯২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পাবনা জেলার ভাঙ্গুড়া উপজেলার পারভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের পাথরঘাটা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
শিক্ষা জীবন
সম্পাদনাহোসেন আলী ১৯৪৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৪৮ সালে করাচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন।
কর্মজীবনের শুরু
সম্পাদনাহোসেন আলী ১৯৪৯ সালে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পাকিস্তান ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন।
চাকরি জীবন
সম্পাদনাতিনি ১৯৭০ সালে কলকাতাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশনে ডেপুটি হাইকমিশনার হিসেবে নিযুক্ত হন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পাকিস্তান সরকার তাকে পশ্চিম পাকিস্তানে বদলি করে। কিন্তু হোসেন আলী পাকিস্তানে না গিয়ে দূতাবাসের পঁয়ষট্টি জন সহকর্মী নিয়ে ১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন। তিনি বিদেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে বাংলাদেশ মিশনের যাত্রা শুরু করেন। কলকাতার হাইকমিশন অফিসের নামকরণ হয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ মিশন এবং স্বাধীন বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক যোগাযোগের কেন্দ্রে পরিণত হয় এ মিশন। স্বাধীনতার পরে ১৯৭২ সালে হোসেন আলী তথ্য ও বেতার মন্ত্রণালয়ের সচিব নিযুক্ত হন। ১৯৭২ সালের মার্চে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার নিযুক্ত হন। এর বাইরে ফিজি এবং নিউজিল্যান্ড মিশনের অতিরিক্ত দায়িত্ব তিনি পালন করেন। ১৯৭৩ সালের জানুয়ারি মাসে হোসেন আলী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত তিনি পশ্চিম জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি কানাডায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হন।
শিক্ষাজীবন
সম্পাদনাচাকরির শুরুতে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত ফরেন সার্ভিস ইনস্টিটিউটে আন্তর্জাতিক আইন ও কূটনীতিশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। তিনি ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতরেও কূটনীতি বিষয়ে কোর্স সম্পন্ন করেন। এছাড়া তিনি ফ্রান্সে প্যারিসের ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশন্যাল রিলেশন্স থেকে কূটনীতি বিষয়ে ডিপ্লোমা অর্জন করেন। তিনি ভারত, তুরস্ক, বেলজিয়াম, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ড, বার্মা এবং অস্ট্রেলিয়ায় পাকিস্তানি দূতাবাসে বিভিন্ন কূটনৈতিক পদে দায়িত্ব পালন করেন।
মৃত্যু
সম্পাদনা১৯৮১ সালের ২ জানুয়ারি চাকুরিরত অবস্থায় কানাডায় হোসেন আলীর মৃত্যু হয়। তার স্মরণে ভাঙ্গুড়া উপজেলায় একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে হোসেন আলী সড়ক।
পুরস্কার ও সম্মাননা
সম্পাদনাসমাজসেবা ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে দেশের “সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার”[২][৩][৪] হিসাবে পরিচিত “স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয় তাকে।[১]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের তালিকা"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ০৯ অক্টোবর ২০১৭। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ সানজিদা খান (জানুয়ারি ২০০৩)। "জাতীয় পুরস্কার: স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার"। সিরাজুল ইসলাম। [[বাংলাপিডিয়া]]। ঢাকা: এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশ। আইএসবিএন 984-32-0576-6। সংগ্রহের তারিখ ০৯ অক্টোবর ২০১৭।
স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার।
এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য); ইউআরএল–উইকিসংযোগ দ্বন্দ্ব (সাহায্য) - ↑ "স্বাধীনতা পদকের অর্থমূল্য বাড়ছে"। কালেরকন্ঠ অনলাইন। ২ মার্চ ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১৭।
- ↑ "এবার স্বাধীনতা পদক পেলেন ১৬ ব্যক্তি ও সংস্থা"। এনটিভি অনলাইন। ২৪ মার্চ ২০১৬। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১৭।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- এম. হোসেন আলী - বাংলাপিডিয়া হতে সংগৃহীত নিবন্ধ।