এম. এ. চিদম্বরম স্টেডিয়াম
এম. এ. চিদম্বরম স্টেডিয়াম (তামিল: மு. அ. சிதம்பரம் மைதானம்) চেন্নাই, তামিলনাড়ু, ভারতের একটি ক্রিকেট স্টেডিয়াম। পূর্বে এ স্টেডিয়ামটি চেপবক্কম স্টেডিয়াম নামে পরিচিত ছিল। ১৯১৬ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ভারতের সর্বাপেক্ষা প্রাচীন স্টেডিয়াম হিসেবে অদ্যাবধি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। প্রাক্তন বিসিসিআই সভাপতি এম. এ. চিদম্বরম সম্মানার্থে এ স্টেডিয়ামের নামকরণ হয়েছে। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তামিলনাড়ু ক্রিকেট দল এবং ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের এ বিশেষ অধিকারপ্রাপ্ত দল চেন্নাই সুপার কিংস মাঠটিকে নিজেদের প্রধান মাঠ হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। তিনটি ক্রিকেট বিশ্বকাপের ৭টি খেলা এ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
চেপবক্কম স্টেডিয়াম | |||||
স্টেডিয়ামের তথ্যাবলি | |||||
---|---|---|---|---|---|
অবস্থান | চেপবক্কম, চেন্নাই, তামিলনাড়ু, ভারত | ||||
দেশ | ভারত | ||||
প্রতিষ্ঠা | ১৯১৬ | ||||
ধারণক্ষমতা | ৫০,০০০ (পূর্ণ ধারণক্ষমতা) ৩৮,০০০[১] | ||||
স্বত্ত্বাধিকারী | তামিলনাড়ু ক্রিকেট এসোসিয়েশন | ||||
স্থপতি | নটরাজ এন্ড ভেঙ্কট আর্কিটেক্টস, চেন্নাই হপকিন্স আর্কিটেক্টস, লন্ডন[২] | ||||
প্রান্তসমূহ | |||||
আন্না প্যাভিলিয়ন এন্ড ভি পট্টভিরমন গেট এন্ড | |||||
আন্তর্জাতিক খেলার তথ্য | |||||
প্রথম পুরুষ টেস্ট | ১০-১৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৪: ভারত বনাম ইংল্যান্ড | ||||
সর্বশেষ পুরুষ টেস্ট | ২২-২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩: ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া | ||||
প্রথম পুরুষ ওডিআই | ৯ অক্টোবর ১৯৮৭: ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া | ||||
সর্বশেষ পুরুষ ওডিআই | ৮ অক্টোবর ২০২৩: ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া | ||||
প্রথম পুরুষ টি২০আই | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১২: ভারত বনাম নিউজিল্যান্ড | ||||
সর্বশেষ পুরুষ টি২০আই | ১১ নভেম্বর ২০১৮: ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ||||
একমাত্র নারী টেস্ট | ৭–৯ নভেম্বর ১৯৭৬: ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ||||
প্রথম নারী ওডিআই | ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৪: ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া | ||||
সর্বশেষ নারী ওডিআই | ৫ মার্চ ২০০৭: অস্ট্রেলিয়া বনাম নিউজিল্যান্ড | ||||
প্রথম নারী টি২০আই | ২৩ মার্চ ২০১৬: দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম আয়ারল্যান্ড | ||||
সর্বশেষ নারী টি২০আই | ২৭ মার্চ ২০১৬: ইংল্যান্ড বনাম পাকিস্তান | ||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | |||||
| |||||
৪ এপ্রিল ২০০৮ অনুযায়ী উৎস: ক্রিকইনফো |
অবকাঠামো
সম্পাদনাজুন, ২০০৯ সালে স্টেডিয়ামের পুণঃনির্মাণ কাজে ১৭৫ কোটি রূপী বরাদ্দ দেয়া হয়।[৩][৪] এরফলে আরও ১০,০০০ দর্শকের আসন বৃদ্ধিসহ ২৪টি অতিথি কক্ষ নির্মাণ করা হয়।[৫] লন্ডনের হপকিন্স আর্কিটেক্টস এবং চেন্নাইয়ের নটরাজ এন্ড ভেঙ্কট আর্কিটেক্টস তামিলনাড়ু ক্রিকেট সংস্থার সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়।[২] বর্তমানে এখানে ৩৮,০০০ দর্শকের বসার ব্যবস্থা রয়েছে যা ৪২,০০০-এ বৃদ্ধি পাবে। ৩১ মার্চ, ২০১৫ তারিখে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট অবৈধ নির্মাণের কারণে আই , জে এবং কে ব্লকে খেলা আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে এবং সেগুলো ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয় ।[৬][৭] তিনটি ব্লক মিলিয়ে প্রায় ১২,০০০ আসন ফাঁকা থাকায় ৫০,০০০ ধারণক্ষমতা বিশিষ্ট স্টেডিয়াম এখন ৩৮,০০০ দর্শক ঠাঁই দিতে পারে।
দর্শকদের ভূমিকা
সম্পাদনাচিপকের দর্শকেরা ভারতের সর্বাপেক্ষা সহনশীলতা ও আতিথেয়তার জন্য পরিচিত। এরপর সাঈদ আনোয়ারকে দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করে চিপকের দর্শকগণ। এরপর ১৯৯৯ সালে টেস্ট জয়ের পরও তারা ক্রীড়াসুলভ মনোভাবের পরিচয় দিয়ে পাকিস্তান দলকে দাঁড়িয়ে সম্মান করে।
উল্লেখযোগ্য ঘটনাসমূহ
সম্পাদনা- ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৪ তারিখে এখানে সর্বপ্রথম টেস্ট খেলার আয়োজন করা হয়েছিল।
- ৪ নভেম্বর, ১৯৩৪ তারিখে প্রথমবারের মতো রঞ্জি ট্রফির খেলা অনুষ্ঠিত হয় যাতে মাদ্রাজ ও মহীশূর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল।[৮] মাদ্রাজের এম জে গোপালন এন কার্টিসের বিপক্ষে বল করেছিলেন।
- ১৯৫২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বপ্রথম ভারত দল তাদের ২৪তম টেস্টে ক্রিকেটের ইতিহাসে জয় পায়।[৯]
- ১৯৮২ সালে সেপ্টেম্বর মাসে এই মাঠে শ্রীলঙ্কা জাতীয় ক্রিকেট দল ও ভারতীয় দলের মধ্যে প্রথম টেস্ট অনুষ্ঠিত হয়। দিলীপ মেন্ডিস দুই ইনিংসেই শতরান করেন ও ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন।
- ১৯৮৩ সালে সুনীল গাভাস্কার নিজস্ব ৩০তম টেস্ট সেঞ্চুরি করে ডন ব্র্যাডম্যানের গড়া সর্বাধিক সেঞ্চুরির রেকর্ড ভঙ্গ করে নিজের করে নিয়েছিলেন।[১০]
- ১৯৮৬ সালে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার টেস্টটি টাইয়ে পরিণত হয় যা ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয় ঘটনা ছিল।[১১]
- জানুয়ারি, ১৯৮৮ তারিখে নরেন্দ্র হিরওয়ানি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৮/৬১ লাভ করেন যা ভারতের টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে সেরা ও বৈশ্বিকভাবে তৃতীয় সেরা।[১২] মার্চ, ২০১৬ সাল পর্যন্ত একমাত্র ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট অভিষেকে দশ বা ততোধিক উইকেট লাভের একমাত্র ঘটনারূপে বিবেচ্য। খেলায় তিনি ১৬/১৩৬ পান যা যে-কোন বোলারের অভিষেক টেস্টে সেরা।[১৩]
- ১৫ অক্টোবর, ২০০৪ তারিখে ৫৩২ টেস্ট উইকেট নিয়ে শেন ওয়ার্ন মুত্তিয়া মুরালিধরনের গড়া তৎকালীন বিশ্বরেকর্ড ভঙ্গ করেন।
- এপ্রিল, ২০০৮ সালে বীরেন্দ্র শেওয়াগ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩১৯ রান করেন। সিরিজের প্রথম টেস্টে তিনি মাত্র ২৭৮ বলে ৩০০ তোলেন যা টেস্টের ইতিহাসে দ্রুততম ত্রি-শতকরূপে বিবেচ্য। এরফলে ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান ও ব্রায়ান লারা'র পর তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে দুইবার ত্রি-শতক করার বিরল রেকর্ডের অধিকারী হন। টেস্টের তৃতীয় দিনে তিনি ২৭৫ রান তোলেন যা ১৯৫৪ সালের পর কোন খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহের নজির। নটিংহামে পাকিস্তানের বিপক্ষে ডেনিস কম্পটন দ্বিতীয় দিনে ২৭৩ তুলেছিলেন।[১৪]
- ২০১৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর হোম সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ম টেস্টে করুণ নায়ার নট আউট ৩০৩ রান করেন । তিনি দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে (শেবাগের পরে) ৩০০ রানের গন্ডি স্পর্শ করেন।
২০০৮
সম্পাদনা২০০৮ সালে চেন্নাই টেস্টের শেষ দিনে ভারতের দিকে ৩৮৭ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছিল কেভিন পিটারসেনের ইংল্যান্ড। শেষ দিনে মন্টি পানেসার আর গ্রায়েম সোয়ানের ঘূর্ণি সামলে ১০৬ রানের এক অপরাজিত অনবদ্য ইনিংস খেলেছিলেন 'লিটল জিনিয়াস' শচীন টেন্ডুলকার। তাতেই ম্যাচ জিতে যায় ভারত।[১৫]
প্রথমে ব্যাট করে এখানে অনায়াসে জেতা যায়।
সাঈদ আনোয়ার এর ১৯৪
সম্পাদনা১৯৯৭ সালে ভারতের বিপক্ষে ওডিআইয়ে তৎকালীন ১৯৪ রানের বিশ্বরেকর্ড গড়েন পাকিস্তানের সাঈদ আনোয়ার।[১৬]
টি২০
সম্পাদনা২০১১ আইপিএল
সম্পাদনা২০১১ আইপিএল ফাইনাল এই মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।
২০১২ আইপিএল
সম্পাদনা২০১২ আইপিএল ফাইনাল এই মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।
আন্তর্জাতিক টি২০
সম্পাদনা২০১২ সাল থেকে এখনো অব্দি ২টি আন্তর্জাতিক টি২০ ম্যাচ হয়েছে।
২০১২ সালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে , যেখানে ভারত ১৬৭ রান তাড়া করতে নেমে ১ রানে হেরে যায়। ২ বলে ৬ রান প্রয়োজনে রোহিত শর্মা মাত্র ৪ রানই সংগ্রহ করতে সক্ষম হন।
২০১৮ এর ওয়েস্ট ইন্ডিজ এর বিরুদ্ধে , শিখর ধাওয়ান এর ৯২ রানের অনবদ্য ইনিংসে ভারত ১৮২ রান তাড়া করে ম্যাচ জেতে । ঋষভ পন্থ ৫৮ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন ।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "M A Chidambaram Stadium"।
- ↑ ক খ "Construction Begins at Chennai"। Hopkins Architects। ২৭ নভেম্বর ২০০৯। ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টো ২০১১।
- ↑ "N Srinivasan unanimously elected TNCA President"। Bureau Report। ২৮ জুন ২০০৯। ৭ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টো ২০১১।
- ↑ "Upgradation/Modernisation of M.A.Chidambaram Stadium"। Bureau Report। ১৯ অক্টোবর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টো ২০১১।
- ↑ "New Chepauk stands ready for Pakistan ODI"। The Times of India। Chennai। ১৯ ডিসেম্বর ২০১২। ২৬ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসে ২০১২।
- ↑ "Demolish unauthorised construction in MA Chidambaram stadium says SC"। IBN Live। ৮ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ "Supreme court orders TN to demolish three cheupak stadiums"। Hindustan Times। ১৭ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ Madras v Mysore
- ↑ "England in India, 1951–52"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০ সেপ্টেম্বর ২০০৬।
- ↑ "When Gavaskar upstaged Bradman"।
- ↑ "Where history is made"। ESPNcricinfo। ESPN। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টো ২০১১।
- ↑ "Records / Test matches / Bowling records / Best figures in a innings on debut"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০১৪।
- ↑ "Records / Test matches / Bowling records / Best figures in a match on debut"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০১৪।
- ↑ "Cricinfo – The day the records tumbled"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০০৮।
- ↑ "2001 Eden Test"।
- ↑ PTI (২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১০)। "Sachin becomes first batsman to score 200 in an ODI"। The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১০।
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- Upcoming Matches at Chennai
- Cricinfo - Grounds - MA Chidambaram Stadium
- M.A Chidambaram Stadium Notable Events
- All about Chidambaram stadium
- Players,Teams statistics
- Stadium pictures