এম. এন. সিঙ্গারাম্মা

ভারতীয় লেখিকা

ড. এম. এন. সিঙ্গারাম্মা (১৯২০–২০০৬) একজন পণ্ডিত, দার্শনিক, লেখিকা ও সামাজিক কর্মী ছিলেন যিনি দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক প্রদেশের মান্দায়ায় জন্মেছিলেন।[১][২] তিনি দর্শন সংক্রান্ত বহু বই ও নিবন্ধ শ্রীদেবী ছদ্মনামে লিখেছেন।[৩] দক্ষিণ ভারতে বেড়ে ওঠা সত্ত্বেও হিন্দির প্রতি তার ভালবাসা তাকে এনে দিয়েছে সম্মান ও প্রশংসা।

ড. এম. এন. সিঙ্গারাম্মা
জন্ম১৯২০
মৃত্যু২০০৬
পেশালেখক

শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

বিহারের ভাগলপুরে অবস্থিত বিক্রমশীলা হিন্দি বিদ্যাপীঠ থেকে ডিলিট ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন তিনি। তিনি প্রয়াগ বিশ্ববিদ্যালয় ও হিন্দি সাহিত্য সম্মেলন, এলাহাবাদ থেকে হিন্দি, সংস্কৃতকন্নড় ভাষায় সাহিত্যরত্ন খেতাব পেয়েছিলেন। এলাহাবাদে অবস্থিত প্র‍য়াগ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে 'মহামহোপাধ্যায়' খেতাব পেয়েছিলেন এম. এন. সিঙ্গারাম্মা। এছাড়া, তিনি চেন্নাইয়ে অবস্থিত দক্ষিণ ভারত হিন্দি প্রচার সংঘ হিন্দি ভাষায় তার অবদানের জন্য তাকে 'প্রবীণ' বলে অভিহিত করেছিল।

প্রকাশনা সম্পাদনা

১৯৪৮ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত হিন্দি, কন্নড় ও তামিল ভাষায় সামাজিক, ধর্মীয় ও দর্শন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আশিটিরও অধিক প্রবন্ধ রচনা করেছেন তিনি। হিন্দি, কন্নড় ও তামিল ভাষায় ধর্ম ও দর্শন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিশটিরও অধিক বই রচনা করেছেন। তার গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে হিন্দি, কন্নড় ও তামিল ভাষার বিভিন্ন জার্নাল ও ম্যাগাজিনে। তিনি দক্ষিণ ভারতীয় দর্শন নিয়ে রচনা করেছেন বিভিন্ন বই। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: বৈষ্ণব ভক্তি, পানশারাত্রা মাথ্রু ইতারা আগামাগালু, গোপুরাদা হিরিমেরামানুজা দর্শনা। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সেমিনার ও কনফারেন্সে দক্ষিণ ভারতীয় দর্শন নিয়ে বিভিন্ন গবেষণাপত্র ও প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছেন।

পুরস্কার ও সম্মাননা সম্পাদনা

ফিলোসফি অব পঞ্চরাত্রা লেখার জন্য ২০০০ সালের মে মাসে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের কাছ থেকে প্রশংসাসংবলিত পত্র পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৯২ সালে তিনি পান মহাত্মা গান্ধী হিন্দি পুরস্কার। ১৯৭১ সালে 'বিদ্যাবিচক্ষণ' উপাধি ও সিলভার শিল্ড পান তামিলনাড়ুর বেদবেদান্ত বৈজয়ন্তী বিদ্যালয় থেকে। ১৯৮৭ ও ২০০২ সালে মান্দায়া জেলা ব্রাহ্মণ সভা কর্তৃক সংবর্ধিত হন। ২০০১ সালে মান্দায়া জেলার ডিসির কাছ থেকে প্রশংসাসংবলিত সনদপত্র পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৮৭ সালে তিনি পেয়েছিলেন সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট ফেলোশিপ। ১৯৮৫-৮৬ সালে কর্ণাটক রাজ্য সরকার কর্তৃক সম্মানিত হয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি সংবর্ধিত হয়েছিলেন দক্ষিণ ভারত হিন্দি প্রচার সভা ও মহিলা সম্মেলন, মান্দায়া কর্তৃক। ১৯৮৩ সালে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সাহচার্যে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৬৪ সালে যমুনালাল বাজাজ পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি।

গবেষণা কর্ম সম্পাদনা

তিনি ১৯৬৮ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত হিন্দি ও কন্নড় ভাষার সাহিত্য নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি গবেষণা করেছেন দক্ষিণ ভারতীয় দর্শন ও ধর্ম নিয়ে। কন্নড়, তামিল, তেলুগু, সংস্কৃত ভাষায় গবেষণা কর্ম চালিয়েছেন। মেলকোটে অবস্থিত সংস্কৃত গবেষণা প্রতিষ্ঠানে দুই বছর গবেষণা করেছেন। তিনি শ্রী ভেল্লুকুদি ভারাদাচার স্বামী, ন্যায় বেদন্ত বিদ্বান কার্পানকার ভেঙ্কটাচারিয়ার ও পি. বি. আন্নাগরাচার স্বামীর মত নামজাদা পণ্ডিতদের অধীনে গবেষণা করেছেন।

সামাজিক কাজ সম্পাদনা

তিনি ১৯৬১ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত মান্দায়ার জেলা হিন্দি সমিতির সংগঠক ছিলেন। এছাড়াও তিনি জেলা হিন্দি প্রচার সমিতির সচিব পদেও কাজ করেছেন। ১৯৮৩ সালে দিল্লিতে তৃতীয় হিন্দি সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।

বেঙ্গালুরুর কন্নড় সাহিত্য পরিষদে ২০ বছর ধরে সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন। সংগঠনটির নারী বর্ষে বক্তৃতা দিয়েছেন এবং প্রবন্ধ লিখেছেন।

মান্দায়ায় হিন্দি কন্নড় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি। এখানে তিনি ত্রিশ বছরেরও অধিক সময় ধরে নারীদের শিক্ষাদান করেছেন।

তিনি 'মহিলা সমাজ' এর হয়ে ২৫ বছরের অধিক সময় ধরে যুক্ত ছিলেন। সংগঠনটির মাধ্যমে নারীদের উন্নতির জন্য কাজ করে গিয়েছেন তিনি।

নারীরা যাতে সমাজে মাথা উঁচু করে বাস করতে পারে, স্বনির্ভর হতে পারে এজন্য আমৃত্যু কাজ করে গিয়েছেন তিনি।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. https://m.famousfix.com/list/people-from-mandya
  2. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৪ মার্চ ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০১৯ 
  3. https://archive.org/stream/pancaratra-agamas/Philosophy of Pancaratras_djvu.txt