এক দুজে কে লিয়ে
এক দুজে কে লিয়ে (হিন্দি: एक दूजे के लिये, অনুবাদ 'একে অপরের জন্য') হচ্ছে ১৯৮১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি হিন্দি চলচ্চিত্র যেটি পরিচালনা করেন তামিল চলচ্চিত্র শিল্পের খ্যাতনামা পরিচালক কৈলাস বলচন্দ। চলচ্চিত্রটিতে তামিল চলচ্চিত্র শিল্পের সেসময়কার জনপ্রিয় অভিনেতা কমল হাসন তার জীবনের প্রথম হিন্দি চলচ্চিত্র হিসেবে চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেন, সাথে ছিলেন রতি অগ্নিহোত্রী, ইনিও তামিল চলচ্চিত্র শিল্পের অভিনেত্রী ছিলেন। এই চলচ্চিত্রটি পরিচালক বলচন্দের নিজেরই ১৯৭৮ সালের মারো চারিত্রা নামের তেলুগু চলচ্চিত্রের পুনর্নির্মাণ ছিলো। ১৯৮১ সালের বক্স অফিসে এক দুজে কে লিয়ে ব্লকবাস্টার চলচ্চিত্রের মর্যাদা পায়; মোট ১০০ মিলিয়ন রূপী (দেড় মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমান) আয় করে।[১][২] চলচ্চিত্রটির সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন লক্ষ্মীকান্ত-প্যায়ারেলাল জুটি আর গানের কথা লিখেছিলেন আনন্দ বকশী। চলচ্চিত্রটি মুক্তির সঙ্গে সঙ্গেই তুমুল দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছিলো[৩]; ১৩টি ফিল্মফেয়ার মনোনয়নের মধ্যে তিনটিতে জয় এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছিলো এক দুজে কে লিয়ে।
এক দুজে কে লিয়ে | |
---|---|
![]() | |
পরিচালক | কৈলাস বলচন্দ |
প্রযোজক | এল. ভি. প্রসাদ |
রচয়িতা | কৈলাস বলচন্দ |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | লক্ষ্মীকান্ত-প্যায়ারেলাল |
চিত্রগ্রাহক | বি. এস. লোকনাথ |
সম্পাদক | এন. আর. কিট্টু |
মুক্তি | ৫ জুন ১৯৮১ |
স্থিতিকাল | ১৬৩ মিনিট |
ভাষা | হিন্দি |
নির্মাণব্যয় | ১০ মিলিয়ন |
আয় | ₹১০০ মিলিয়ন (ইউএস$ ১.২২ মিলিয়ন)[১] |
কাহিনী
সম্পাদনাতামিলনাড়ুর বসু নামের এক যুবক এবং স্বপ্না নামের এক উত্তর ভারতীয় তরুণীর প্রেম কাহিনী নিয়ে এই চলচ্চিত্রটি।
বসু এবং স্বপ্না গোয়া প্রদেশের একই জায়গায় বসবাস করে, তারা পরস্পর প্রতিবেশী। তারা দুজনেই পুরো পৃথক সংস্কৃতির পরিবার থেকে এসেছে এবং তারা একে অপরের ভাষাও বোঝেনা। তাদের একে অপরের বাবা-মাও একে অপরকে ভিন্ন সংস্কৃতির কারণে দেখতে পারেনা। যখন বসু এবং স্বপ্না তাদের একে অপরের ভালোবাসার কথা তাদের বাবামার কাছে জানায় যখন তাদের বাবামারা এই ভালোবাসা প্রত্যাখ্যান করে।
বসু-স্বপ্না প্রেমযুগলকে একে অপর থেকে আলাদা করার উদ্দেশ্যে তাদের বাবামা একটি পরিকল্পনা আঁটে, এই পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা বসু এবং স্বপ্নাকে তাদের ভালোবাসার জন্য পরীক্ষা দিতে হবে বলে জানায়, ভালোবাসার পরীক্ষা হচ্ছে তারা দুজন এক বছরের জন্য একে অপর থেকে দূরে থাকবে। এক বছর পরও যদি তাদের মধ্যে ভালোবাসা টিকে থাকে তাহলে তারা তখন বিয়ে করার অনুমতি পাবে। এক বছরের ভেতরে তারা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারবেনা বলে জানানো হয়, অর্থাৎ চিঠিও লিখতে পারবেনা এইরূপ শর্ত দেওয়া হয়। বসু স্বপ্না থেকে দূরে যাবার জন্য হায়দ্রাবাদ চলে যায়।
স্বপ্না এবং বসু দুজনেই দুজনকে খুব প্রবলভাবে অনুভব করতে থাকে। বসু হায়দ্রাবাদেই সন্ধ্যা নামের এক তরুণীর সঙ্গে পরিচিত হয়। স্বপ্নার মা স্বপ্নার সঙ্গে সম্পর্ক বানানোর জন্য চক্রম নামের এক ছেলেকে নিয়ে আসে, যদিও স্বপ্নার তাকে ভালো লাগেনা। ম্যাঙ্গালোর শহরে বসুর সঙ্গে চক্রমের দেখা হলে চক্রম বলে যে সে স্বপ্নার হবুস্বামী। বসু রাগ করে সন্ধ্যার কাছে যেয়ে বলে যে সে তার সঙ্গী হতে চায়। সন্ধ্যা পরে জেনে যায় যে বসু স্বপ্নাকে ভালোবাসত, গোয়াতে যেয়ে সে স্বপ্নার সঙ্গে দেখা করে সব কিছুর ব্যাপারে আরো স্বচ্ছ ধারণা লাভ করে।
বসু গোয়া যায়, কিন্তু স্বপ্নার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় সন্ধ্যার ভাইয়ের গুন্ডা দ্বারা আক্রান্ত হয় এবং স্বপ্না একজন গ্রন্থাগারিক যে আগে থেকেই স্বপ্নার ওপর যৌন-নজর দিয়ে আসছিলো দ্বারা ধর্ষিত হয়। বসু এবং স্বপ্না পরে আত্মহত্যা করে।
অভিনয়ে
সম্পাদনা- কমল হাসন - বসু, এস. বসুদেব
- রতি অগ্নিহোত্রী - স্বপ্না
- মাধবী - সন্ধ্যা
- রাকেশ বেদী - চক্রম
- পূর্ণম বিশ্বনাথান - শিবরামকৃষ্ণ, বসুর বাবা
পুরস্কারসমূহ
সম্পাদনাগানের তালিকা
সম্পাদনালক্ষ্মীকান্ত-প্যায়ারেলাল ছিলেন গানগুলোর সুরকার আর গীতি লিখেছিলেন আনন্দ বকশী।
প্রকৃত গানের তালিকা | ||||
---|---|---|---|---|
নং. | শিরোনাম | গীতিকার | কণ্ঠশিল্পী(গণ) | দৈর্ঘ্য |
১. | "তেরে মেরে বিচ মেঁ" | আনন্দ বকশী | লতা মঙ্গেশকর, এস. পি. বালসুব্রহ্মণ্যম | ৫ঃ১৯ |
২. | "হাম তুম দোনো জব মিল জয়েঙ্গে" | আনন্দ বকশী | লতা মঙ্গেশকর এস. পি. বালসুব্রহ্মণ্যম | ৩ঃ১১ |
৩. | "মেরে জীবন সাথী" | আনন্দ বকশী | এস. পি. বালসুব্রহ্মণ্যম, অনুরাধা পৌডওয়াল | ৪ঃ৫৭ |
৪. | "হাম বানে তুম বানে" | আনন্দ বকশী | লতা মঙ্গেশকর এস. পি. বালসুব্রহ্মণ্যম | ৫ঃ১৪ |
৫. | "তেরে মেরে বিচ মেঁ (দুঃখ)" | আনন্দ বকশী | এস. পি. বালসুব্রহ্মণ্যম | ৪ঃ৩৪ |
৬. | "সোলাহ বারাস কি বালি উমার" | আনন্দ বকশী | লতা মঙ্গেশকর, অনুপ জালোটা | ৬ঃ৪৮ |
মোট দৈর্ঘ্য: | ৩০ঃ০৩ |
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "Box Office 1981"। Box Office India। ৩ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০০৯।
- ↑ "'Vishwaroop' gets good response in Hindi belts"। Times of India। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০২-০৩।
- ↑ Srivatsan S। "Why watching 'Ek Duuje Ke Liye' was an unforgetable experience for Tapas Nayak"। দ্য হিন্দু।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে এক দুজে কে লিয়ে (ইংরেজি)