সূচকীকরণ

গাণিতিক রাশিকে সূচকে বা ঘাতে উন্নীত করার প্রক্রিয়া
(এক্সপোনেনসিয়েশন থেকে পুনর্নির্দেশিত)


সূচকীকরণ হচ্ছে একটি গাণিতিক প্রক্রিয়া, যা লেখা হয় আকারে যেখানে, -কে বলা হয় ভিত্তি এবং -কে বলা হয় সূচক (exponent) বা শক্তি (power)। যখন একটি ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা, সূচকীকরণ প্রক্রিয়া তখন ভিত্তির পুনরাবৃত্ত গুণফল বোঝায় অর্থাৎ হচ্ছে ভিত্তি কে সংখ্যক বার গুণ করলে যে গুণফল পাওয়া যায় তার সমান।

ভিন্ন ভিন্ন ভিত্তি b এর জন্য y = bx এর লেখচিত্র: ভিত্তি ১০, ভিত্তি e, ভিত্তি ২ এবং ভিত্তি ১/২। প্রতিটি বক্ররেখা (০,১) বিন্দু দিয়ে অতিক্রম কেননা যেকোন অশূন্য সংখ্যাকে ০ শক্তিতে উন্নীত করলে তার মান ১। x = ১ বিন্দুতে y এর মান সংশ্লিষ্ট ভিত্তির সমান কারণ যেকোন সংখ্যার শক্তি ১ হলে তার মান ঐ সংখ্যাটির সমান।

সূচকটি সাধারণত ভিত্তির ডান পাশে উপরে শীর্ষলিপি (superscript) হিসেবে দেখানো হয়। সেক্ষেত্রে, -কে ‘-তম সূচক/শক্তিতে উন্নীত ’, ‘-এর সূচকে/শক্তিতে উন্নীত ’, ‘ এর -তম সূচক/শক্তি’, ‘ টু দ্য -th’, অথবা সবচেয়ে সংক্ষেপে ‘ টু দ্য ’ হিসেবে পড়া হয়।

যে কোন ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা এর জন্য, । এই বৈশিষ্ট্যটিকে অধনাত্মক (ঋণাত্মক) পূর্ণসংখ্যাবিশিষ্ট সূচকের ক্ষেত্রে বিস্তৃত করতে কে -এর সমান হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে; এবং অশূন্য সংখ্যা ও একটি ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা হলে কে হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। বিশেষ করে, হলো ( -এর বিপরীতক) এর সমান।

সূচকীকরণের সংজ্ঞাকে যে কোন বাস্তব বা জটিল সংখ্যাবিশিষ্ট সূচকের জন্য বিস্তৃত করা যায়। পূর্ণ সংখ্যাবিশিষ্ট সূচকের সূচকীকরণ প্রক্রিয়া ম্যাট্রিক্স-সহ অনেক ধরনের বীজগাণিতিক কাঠামোর জন্য সংজ্ঞায়িত করা যায়।

সূচকীকরণ অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়, যার মধ্যে অর্থনীতি, জীববিজ্ঞান, রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান এবং কম্পিউটার বিজ্ঞান অন্তর্ভুক্ত; যেখানে যৌগিক মুনাফা, জনসংখ্যা প্রবৃদ্ধি, রাসায়নিক বিক্রিয়ার গতিবিদ্যা, তরঙ্গের আচরণ এবং পাবলিক-কী ক্রিপ্টোগ্রাফির মতো অনেক প্রয়োগ দেখা যায়।

চিহ্নলিপির ইতিহাস সম্পাদনা

গ্রীক গণিতবিদ ইউক্লিড, ইপোক্রেটিস অব কিওস[১]-কে অনুসরণ করে, power (শক্তি) শব্দটি কোন রেখার বর্গ বোঝাতে ব্যবহার করেন।[২] আর্কিমিডিস সূচকের সূত্র 10a.10b = 10a+b, নির্ণয় ও প্রমাণ করেন, যা ১০-এর শক্তি নিপুণভাবে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় ছিল।[৩][ভাল উৎস প্রয়োজন] নবম শতকে পারস্যের গণিতবিদ মুহাম্মাদ ইবনে মূসা আল-খারিজমি বর্গ বোঝাতে mal এবং ঘন বোঝাতে kahb শব্দ দুটি ব্যবহার করেন, যা পরবর্তীকালে ইসলামি গণিতবিদগণ গাণিতিক চিহ্নলিপিতে যথাক্রমে mk হিসেবে উপস্থাপন করেন, যা পঞ্চদশ শতাব্দীর ভেতর আবু আল-হাসান ইবনে আল-ক্বুরশী আল-বাস্‌তী এর কাজের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়।[৪]

ষোড়শ শতকের শেষ দিকে জোস্ট বার্গি সূচকের জন্য রোমান সংখ্যা ব্যবহার করেন।[৫]

সপ্তদশ শতকের গোড়ার দিকে সূচকীকরণের আধুনিক চিহ্নলিপির প্রথম রূপের সূচনা করেন রেনে দেকার্ত, তার লেখা La Géométrie-তে, সেখানে চিহ্নলিপিটি প্রথম বইয়েই পাওয়া যায়।[৬]

পঞ্চদশ শতকে নিকোলা চ্যুকে সূচকের চিহ্নলিপির একটি রূপ ব্যবহার করেন যা ষোড়শ শতকে হেনরিকুস গ্রামাটিয়ুসমাইকেল স্টিফেল দ্বারাও ব্যবহৃত হয়। ১৫৪৪ সালে মাইকেল স্টিফেল "exponent"- শব্দটি সর্বপ্রথম প্রবর্তন করেন।[৭] ১৬৯৬ সালে স্যামুয়েল জিক indices শব্দটি চালু করেন। ষোড়শ শতকে রবার্ট রেকর্দে square (বর্গ), cube (ঘন), zenzizenzic (চতুর্থ শক্তি), sursolid (পঞ্চম), zenzicube (ষষ্ঠ), second sursolid (সপ্তম), এবং zenzizenzizenzic (অষ্টম)- এই শব্দগুলো ব্যবহার করেন।[৮] Biquadrate শব্দটিও চতুর্থ-শক্তি বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে।

কোন কোন গণিতবিদ (যেমন- আইজ্যাক নিউটন) শুধুমাত্র দুই অপেক্ষা বৃহত্তর শক্তির ক্ষেত্রে সূচক ব্যবহার করতেন, তারা বর্গকে পুনরাবৃত্ত গুণফল হিসেবেই উপস্থাপন করার পক্ষপাতী ছিলেন। এভাবেই তারা বহুপদী লিখতেন, উদাহরণস্বরূপ, ax + bxx + cx3 + d আকারে।

আরেকটি ঐতিহাসিক প্রতিশব্দ, involution[৯], এখন বিরল এবং এর বহুল প্রচলিত অর্থের সাথে সংমিশ্রণ করা অনুচিত।

১৭৪৮ সালে লিওনার্দ অয়লার লিখেছিলেন, "মনে করুন কোন সূচক বা শক্তি এমন যেখানে সূচকটি নিজেই একটি চলক। এটা পরিষ্কার যে এই ধরনের রাশি বীজগাণিতিক ফাংশন নয়, যেহেতু সেক্ষেত্রে সূচক অবশ্যই ধ্রুবক হতে হবে।"[১০] বহিরাগত ফাংশন (transcendental function) এর সূত্রপাতের মাধ্যমে, স্বাভাবিক সূচকীয় ফাংশন, f(x) = ex এর বিপরীত ফাংশন (inverse function) হিসেবে স্বাভাবিক লগারিদম এর আধুনিক পরিচয় এর ভিত্তি স্থাপন করেন অয়লার।

পরিভাষা সম্পাদনা

গাণিতিক অভিব্যক্তি b2 = b . b কে বলা হয় "b এর বর্গ" অথবা "b স্কয়ারড", কারণ কোন বর্গের বাহুর দৈর্ঘ্য b হলে তার ক্ষেত্রফল b2

গাণিতিক অভিব্যক্তি b3 = b . b . b কে বলা হয় "b এর ঘন" অথবা "b কিউব্‌ড", কারণ কোন ঘনবস্তুর বাহুর দৈর্ঘ্য b হলে তার ক্ষেত্রফল b3

সূচক যখন ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা, তখন তা নির্দেশ করে ভিত্তির সংখ্যাটির কতগুলো একত্রে গুণ করা হয়। যেমন, ৩ = ৩ . ৩ . ৩ . ৩ . ৩ = ২৪৩। ভিত্তি ৩ কে ৫ বার পুনরাবৃত্তভাবে গুণ করা হয়, কারণ এখানে সূচক ৫। এখানে, ৩ হচ্ছে base (ভিত্তি), ৫ হচ্ছে exponent (সূচক), ২৪৩ হচ্ছে power (শক্তি) বা আরও সুনির্দিষ্টভাবে, ৫ম ঘাতে/শক্তিতে উন্নীত ৩ (3 raised to the 5th power)

"উন্নীত" (raised) শব্দটি সচরাচর উহ্য থাকে, এবং অনেক সময় "ঘাত/শক্তি" (power) শব্দটিও, সুতরাং 35 কে "3 টু দ্য 5-th" অথবা "3 টু দ্য 5" হিসেবেও পড়া যায়। অতএব, সূচকীকরণ bn-কে "n এর ঘাতে/শক্তিতে উন্নীত b", "b এর n-তম ঘাত", "b টু দ্য n-th", অথবা সবচেয়ে সংক্ষেপে "b টু দ্য n" হিসেবে পড়া যায়।

পূর্ণ সাংখ্যিক সূচক সম্পাদনা

পূর্ণ সাংখ্যিক সূচকবিশিষ্ট সূচকীকরণ প্রক্রিয়াসমূহ সরাসরি মৌলিক গাণিতিক প্রক্রিয়াসমূহ থেকে সংজ্ঞায়িত করা যায়।

ধনাত্মক সূচক সম্পাদনা

নিয়মমাফিকভাবে, ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যার সূচকগুলোকে প্রাথমিক শর্ত দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়।[১১]

 

এবং পুনরাবৃত্তি সম্পর্ক

 

গুণের সংযোগ বিধি অনুসারে, কোন ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা mn হলে,

 

শূন্য সূচক সম্পাদনা

যে কোন অশূন্য সংখ্যাকে শূন্যতম ঘাতে উন্নীত করলে তার মান ১।[১২]

 

এই ধরনের ঘাতের একটি ব্যখ্যা হচ্ছে শূন্য উৎপাদক বা শূন্য সংখ্যক উৎপাদকের গুণফল।

00 এর ব্যাপারটি অবশ্য আরও জটিল, এবং এর কোন মান আরোপ করা হবে কি হবে না ও কত মান ধার্য করা হবে, সেটা কোন প্রসঙ্গে ব্যবহার হচ্ছে তার ওপর নির্ভর করতে পারে।

ঋণাত্মক সূচক সম্পাদনা

যে কোন পূর্ণ সংখ্যা n ও অশূন্য b এর জন্য নিম্নোক্ত অভেদটি প্রযোজ্য:

 

শূন্যকে কোন ঋণাত্মক ঘাতে উন্নীত করা অসঙ্গায়িত, কিন্তু ক্ষেত্রবিশেষে তা অসীম () হিসেবে গণ্য করা হয়।

উপরের অভেদটি সূচকের মানের পরিধি ঋণাত্মক সংখ্যা পর্যন্ত বিস্তৃত করে পাওয়া যায়।

অশূন্য b ও ধনাত্মক n এর জন্য, পুনরাবৃত্তি সম্পর্ক থেকে লেখা যায়

 

এই সম্পর্কটি সকল পূর্ণ সংখ্যা n ও অশূন্য b এর জন্য সংজ্ঞায়িত করলে পাওয়া যায়,

 

এবং আরও সাধারণভাবে, যে কোন অশূন্য b ও অঋণাত্মক পূর্ণ সংখ্যা n এর জন্য,

 

এটি যে সকল পূর্ণ সংখ্যা n এর জন্য সত্য তা খুব সহজেই দেখানো যায়।

অভেদাবলি ও বৈশিষ্ট্যসমূহ সম্পাদনা

ভিত্তি অশূন্য হলে নিম্নলিখিত অভেদাবলি সকল পূর্ণ সংখ্যার সূচকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য:

 

  • সূচকীকরণ প্রক্রিয়া বিনিময়যোগ্য নয়। যেমন, ২ = ৮ ≠ ৩ = ৯।
  • সূচকীকরণ প্রক্রিয়া সংযোগ বিধি মেনে চলে না। যেমন, (২) = ৮ = ৪,০৯৬; কিন্তু ২(৩^৪) = ২৮১ = ২ ৪১৭ ৮৫১ ৬৩৯ ২২৯ ২৫৮ ৩৪৯ ৪১২ ৩৫২। বন্ধনী ছাড়া, শীর্ষলিপির ক্ষেত্রে প্রচলিত ক্রম হচ্ছে ঊর্ধ-নিম্ন (বা ডান-সংযোগ), নিম্ন-ঊর্ধ নয় (বা বাম-সংযোগ);[১৩] তার মানে,  যা সাধারণত নিচের প্রক্রিয়া থেকে ভিন্ন

 

অতএব, এদিক থেকে সূচকীকরণ প্রক্রিয়া যোগ ও গুণ থেকে আলাদা।

গুচ্ছবিন্যাসতত্ত্বীয় ব্যখ্যা সম্পাদনা

অঋণাত্মক পূর্ণ সংখ্যা mn এর জন্য, nm এর মান হবে m সংখ্যক উপাদানবিশিষ্ট একটি সেট হতে n সংখ্যক উপাদানের একটি সেট এর মধ্যে গঠিত ফাংশনের সংখ্যার সমান। এমন ফাংশনগুলোকে n সংখ্যক উপাদানের সেট থেকে m-টুপল (tuples) হিসেবে উপস্থাপন করা যায় (অথবা n বর্ণের কোন বর্ণমালা থেকে m সংখ্যক বর্ণ নিয়ে যতগুলো শব্দ-বিন্যাস গঠন করা যায়)। mn এর কিছু নির্দিষ্ট মানের জন্য এর উদাহরণ নিচের সারণিতে উল্লেখ করা হলো:

nm {1, ..., n} সেট এর উপাদান হতে গঠিত nm -সংখ্যক সম্ভাব্য m-টুপল
  নেই
   
   
   
   
   

বিশেষ ভিত্তিসমূহ সম্পাদনা

দশ এর ঘাতসমূহ সম্পাদনা

দশ ভিত্তিক (দশমিক) সংখ্যা ব্যবস্থায়, ১০ এর পূর্ণ সাংখ্যিক ঘাত/শক্তিকে এর চিহ্ন ও মানের উপর নির্ভর করে ১-অঙ্কটির আগে বা পরে প্রয়োজনমত শূন্য (০) বসিয়ে লেখা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ১০ = ১০০০ এবং ১০−৪ = ০.০০০১।

বৃহৎ বা ক্ষুদ্র সংখ্যা নির্দেশ করতে সংখ্যার বৈজ্ঞানিক প্রতীকে ১০-ভিত্তিক সূচকীকরণ ব্যবহার করা হয়। যেমন, ২৯৯৭৯২৪৫৮ মি./সে. (শূন্যস্থানে আলোর বেগ, মিটার প্রতি সেকেন্ড এককে) সংখ্যাটি লেখা যায় ২.৯৯৭৯২৪৫৮×১০ মি./সে. এবং এরপর এর আসন্ন মান ২.৯৯৮×১০ মি./সে.

এস.আই. পদ্ধতির ১০-ভিত্তিক উপসর্গগুলো বৃহৎ বা ক্ষুদ্র রাশি বর্ণনা করতেও ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, কিলো (kilo) উপসর্গটির মানে ১০, সুতরাং ১ কিলোমিটার হচ্ছে ১০০০ মিটার।

দুই এর ঘাতসমূহ সম্পাদনা

২ এর প্রথম ঋণাত্মক ঘাতগুলো বহুল ব্যবহৃত এবং এদের বিশেষ নাম আছে, যথা- অর্ধেক (half) ও সিকি (quarter)।

২ এর ঘাতসমূহ সেট তত্ত্বেও দেখা যায়, কেননা n-সংখ্যক উপাদানবিশিষ্ট কোন সেট এর শক্তি সেট বিদ্যমান, যা ঐ সেটের সকল উপসেট নিয়ে গঠিত, যার সদস্য সংখ্যা ২n

২ এর পূর্ণ সাংখ্যিক ঘাত কম্পিউটার বিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ। ২n এর ধনাত্মক পূর্ণ সাংখ্যিক ঘাত থেকে কোন n-বিটের দ্বিমিক পূর্ণ সংখ্যার সম্ভাব্য মানের সংখ্যা পাওয়া যায়। যেমন, ১ বাইট এর ২ = ২৫৬ টি ভিন্ন ভিন্ন মান থাকতে পারে। দ্বিমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে যে কোন সংখ্যাকে ২-এর শক্তির সমষ্টি হিসেবে প্রকাশ করা হয়, এবং তা ০ ও ১ এর অনুক্রম (sequence) হিসেবে লেখা হয়। এটি একটি দ্বিমিক বিন্দু দ্বারা বিভক্ত, যেখানে ১ দ্বারা সংখ্যাটিতে ২-এর শক্তি বোঝায়, আর ১ এর অবস্থানের ওপর তার সূচকের মান নির্ভর করে; দ্বিমিক বিন্দুর বাম দিক থেকে ১-এর অবস্থান অনুসারে ক্রমবর্ধনশীলভাবে (০ থেকে শুরু করে) এর অঋণাত্মক সূচক নির্ধারিত হয়, এবং দ্বিমিক বিন্দুর ডান দিক থেকে এর ঋণাত্মক সূচকগুলো নির্ধারিত হয়।

এক এর ঘাতসমূহ সম্পাদনা

এক এর সকল ঘাতের মান ১: ১n = ১।

শূন্য এর ঘাতসমূহ সম্পাদনা

যদি সূচক n  কোন ধনাত্মক সংখ্যা (n > ০) হয়, তবে শূন্য এর n-তম শক্তির মান শূন্য: ০n = ০।

যদি n একটি ঋণাত্মক সংখ্যা (n < ০) হয়, শূন্য এর n-তম শক্তি ০n অসংজ্ঞায়িত, কেননা -n > ০ হলে তা অবশ্যই   এর সমান হতে হবে, এবং উপরের নিয়ম অনুসারে তা  হবে।

কে হয় ১ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয় নতুবা অসংজ্ঞায়িত ধরা হয়।

(-১) এর ঘাতসমূহ সম্পাদনা

n যদি জোড় পূর্ণ সংখ্যা হয়, তাহলে (-১)n = ১।

n যদি বিজোড় পূর্ণ সংখ্যা হয়, তাহলে (-১)n = -১।

এই কারণে (-১) এর ঘাতসমূহ পর্যায়ক্রমিক অনুক্রম প্রকাশের ক্ষেত্রে কার্যকরী।

বৃহৎ ঘাতসমূহ সম্পাদনা

এক অপেক্ষা বৃহত্তর কোন সংখ্যার শক্তির অনুক্রমের সীমা অপসারী প্রকৃতির; অন্যভাবে বলা যায়, এরূপ অনুক্রম সীমাহীনভাবে বাড়তে থাকে।

n → ∞ হলে bn → ∞; যখন b > 1

এটাকে “n এর মান অসীম এর নিকটবর্তী হলে, n এর ঘাতে উন্নীত b এর মান +∞ এর নিকটবর্তী হয়”­- এভাবে পড়া হয়।

কোন সংখ্যার পরমমান এক অপেক্ষা ক্ষুদ্রতর হলে তার শক্তি শূন্যের দিকে অগ্রসর হয়:

n → ∞ হলে bn → 0 যখন |b| < ১

এক এর যে কোন শক্তির মান সর্বদা ১:

bn = ১, সকল n এর মানের জন্য, যদি b = ১ হয়।

(-১) এর শক্তির মান পর্যায়ক্রমে ১ ও -১, যখন n এর মান পর্যায়ক্রমিকভাবে যথাক্রমে জোড় ও বিজোড় হয়, এবং এজন্য n এর মান বাড়ার সাথে সাথে এটি কোন নির্দিষ্ট সীমার নিকটবর্তী হয় না।

কোন সংখ্যার সূচক অসীমের দিকে অগ্রসর হলে যদি ঐ সূচকে উন্নীত সংখ্যাটি পরিবর্তনশীল হয় এবং ১ এর নিকটবর্তী হতে থাকে, তাহলে তার সীমা উপরিল্লিখিত কোন সীমার অনুরূপ না-ও হতে পারে। একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হচ্ছে:

(1 + 1/n)ne যখন n → ∞

অন্যান্য সীমা, বিশেষত, যেসব ক্ষেত্রে সীমা কোন অনির্ণেয় আকার ধারণ করে, তা নিম্নে শক্তির সীমা–তে বর্ণনা করা হয়েছে।

শক্তি ফাংশন সম্পাদনা

 
Power functions for  
 
Power functions for  

 , যেখানে  , এই আকারের ফাংশনকে অনেক ক্ষেত্রে শক্তি ফাংশন বলা হয়ে থাকে। যখন  একটি পূর্ণ সংখ্যা এবং  ,  এর জোড় ও বিজোড় মানের জন্য দুটি প্রাথমিক রেখাগুচ্ছ বিদ্যমান। সাধারণভাবে  হলে, যখন  জোড়, তখন  এর মান  এর মান বৃদ্ধির সাথে সাথে ধনাত্মক অসীমের দিকে অগ্রসর হয়; আবার  এর মান হ্রাসের সাথে সাথেও তা ধনাত্মক অসীমের দিকে অগ্রসর হয়। সকল জোড় শক্তি ফাংশনের লেখচিত্রের সাধারণ আকৃতি  এর সদৃশ,  এর মান বৃদ্ধির সাথে সাথে ক্রমশঃ লেখচিত্রের মধ্যভাগ সমতল হতে থাকে (বক্রতা হ্রাস পায়)।[১৪] যেসব ফাংশনে এ ধরনের প্রতিসাম্য  দেখা যায় তাদের যুগ্ম বা জোড় ফাংশন বলে।

যখন  বিজোড়,  এর অসীমতট এর ন্যায় আচরণ ধনাত্মক  থেকে ঋণাত্মক  এর দিকে গেলে বিপরীতমুখী হয়।  এর জন্য,  এর মান  এর মান বৃদ্ধির সাথে সাথে ধনাত্মক অসীমের দিকে কিন্তু  এর মান হ্রাসের সাথে সাথে ঋণাত্মক অসীমের দিকে অগ্রসর হয়। সকল বিজোড় শক্তি ফাংশনের লেখচিত্রের সাধারণ আকৃতি  এর সদৃশ,  এর মান বৃদ্ধির সাথে সাথে ক্রমশঃ লেখচিত্রের মধ্যভাগ সমতল হতে থাকে (বক্রতা হ্রাস পায়) এবং  এর জন্য বক্ররেখার স্থলে একটি সরলরেখা পাওয়া যায়। যেসব ফাংশনে এ ধরনের প্রতিসাম্য  দেখা যায় তাদের অযুগ্ম/বিজোড় ফাংশন বলে।

 হলে, প্রতি ক্ষেত্রেই বিপরীত অসীমতট-সদৃশ আচরণ লক্ষ্য করা যায়।[১৪]

পূর্ণ সংখ্যার শক্তির তালিকা সম্পাদনা

n1 or not 1 n2 n3 n4 n5 n6 n7 n8 n9 n10
2 4 8 16 32 64 128 256 512 1,024
3 9 27 81 243 729 2,187 6,561 19,683 59,049
4 16 64 256 1,024 4,096 16,384 65,536 262,144 1,048,576
5 25 125 625 3,125 15,625 78,125 390,625 1,953,125 9,765,625
6 36 216 1,296 7,776 46,656 279,936 1,679,616 10,077,696 60,466,176
7 49 343 2,401 16,807 117,649 823,543 5,764,801 40,353,607 282,475,249
8 64 512 4,096 32,768 262,144 2,097,152 16,777,216 134,217,728 1,073,741,824
9 81 729 6,561 59,049 531,441 4,782,969 43,046,721 387,420,489 3,486,784,401
10 100 1,000 10,000 100,000 1,000,000 10,000,000 100,000,000 1,000,000,000 10,000,000,000

মূলদ সূচকসমূহ সম্পাদনা

মূল নিবন্ধ: n-তম মূল

 
উপর থেকে নিচে: x1/8, x1/4, x1/2, x1, x2, x4, x8

কোন সংখ্যা b এর n–তম মূল x এমন একটি সংখ্যা যেন xn = b

যদি b একটি বাস্তব ধনাত্মক সংখ্যা এবং n একটি ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা হয়, তাহলে xn = b এর একটিমাত্র বাস্তব ধনাত্মক সমাধান আছে। এই সমাধানকে বলা হয় b এর মুখ্য n–তম মূল। একে nb-আকারে লেখা হয়, যেখানে √    হলো মূল চিহ্ন।

 এর সমাধান  , এখান থেকে লেখা যায়,

 

যদি n জোড় সংখ্যা এবং b ধনাত্মক হয়, তাহলে xn = b এর দুটি বাস্তব সমাধান বিদ্যমান, যেগুলো b এর ধনাত্মক ও ঋণাত্মক n–তম মূল, এর মানে, b1/n > 0 এবং −(b1/n) < 0 ।

যদি n জোড় সংখ্যা এবং b ঋণাত্মক হয়, সমীকরণটির বাস্তব সংখ্যায় কোন সমাধান নেই।

যদি n বিজোড় সংখ্যা হয়, তবে xn = b এর কেবলমাত্র একটি বাস্তব সমাধান বিদ্যমান, যা ধনাত্মক যদি b ধনাত্মক (b1/n > 0) হয় এবং ঋণাত্মক যদি b ঋণাত্মক (b1/n < 0) হয়।

কোন ধনাত্মক বাস্তব সংখ্যা b–কে কোন মূলদ সূচক u/v এ উন্নীত করলে, যেখানে u একটি পূর্ণ সংখ্যা ও একটি v ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা এবং শুধুমাত্র মুখ্য মূল বিবেচনা করলে পাওয়া যায়,

 

কোন ঋণাত্মক বাস্তব সংখ্যা b–কে মূলদ সূচক u/v এ উন্নীত করলে, যেখানে u/v লঘিষ্ঠ আকারে আছে, সেখানে u জোড় ও v বিজোড় হলে একটি ধনাত্মক বাস্তব সমাধান পাওয়া যায়, কেননা সেক্ষেত্রে bu ধনাত্মক। আবার uv উভয়ই বিজোড় হলে ঋণাত্মক বাস্তব সমাধান পাওয়া যায়, কেননা তখন bu ঋণাত্মক। যেক্ষেত্রে v জোড় (এবং তাহলে u বিজোড়) সেক্ষেত্রে তা বাস্তব সংখ্যার মধ্যে থাকে না, যেহেতু এমন কোন বাস্তব সংখ্যা x নেই যার জন্য x2k = −1 , এক্ষেত্রে  bu/v এর মানে কাল্পনিক একক i ব্যবহার করতে হয়, যা আরও সম্পূর্ণভাবে § জটিল সংখ্যার শক্তি অংশে বর্ণনা করা হয়েছে।

এভাবে আমরা পাই, (-২৭)১/৩ = -৩ এবং (-২৭)২/৩ = ৯। ৪ সংখ্যাটির দুইটি ৩/২-তম শক্তি আছে, যথা ৮ ও -৮; তবে প্রচলিত চিহ্নরীতিতে ৪৩/২ বলতে মুখ্য মূল বোঝায়, এবং তার ফলাফল হচ্ছে ৮। v-তম মূল নির্ণয়ের জন্য u/v–তম শক্তিকে u/v–তম মূলও বলা হয়ে থাকে, এবং জোড় v এর জন্য মূখ্য মূল  বলতে ধনাত্মক সমাধানকেই নির্দেশ করে।

সূচকের অভেদাবলির প্রয়োগের সময় চিহ্ন সংক্রান্ত অস্পষ্টতার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। যেমন-

 

এটা পরিষ্কারভাবেই ভুল। প্রথম সমতা থেকেই সমস্যার শুরু, একটি সহজাতভাবে অস্পষ্ট ক্ষেত্রে আদর্শ  চিহ্নের ব্যবহারের মাধ্যমে- জোড় মূল জানতে চাওয়া - এবং খুব ত্রুটিপূর্ণভাবে শুধুমাত্র প্রচলিত বা মুখ্যমান এর ব্যখ্যার ওপর নির্ভর করা। একই সমস্যা ঘটতে পারে যদি ভুলভাবে করণি/ সার্ড চিহ্ন ব্যবহার করা হয়, যার ফলে ধনাত্মক ফলাফল পাওয়া যায়।

 

এর পরিবর্তে

 

সাধারণভাবে, একই ধরনের সমস্যা জটিল সংখ্যার ক্ষেত্রেও দেখা যায়, যা শক্তি ও লগারিদমিক অভেদাবলির ব্যর্থতা অংশে বর্ণনা করা হয়েছে।

বাস্তব সূচকসমূহ সম্পাদনা

মূলদ ঘাতসমূহকে বাস্তব ঘাত পর্যন্ত বিস্তৃত করে ধনাত্মক বাস্তব সংখ্যার বাস্তব ঘাতে সূচকীকরণকে সংজ্ঞায়িত করা যায়, অথবা আরও সাধারণভাবে নিম্নে বর্ণিত § লগারিদমের মাধ্যমে সূচক এর মতো। এর ফলাফল সর্বদা একটি ধনাত্মক বাস্তব সংখ্যা, এবং পূর্ণ-সাংখ্যিক ঘাতের জন্য উপরে উল্লিখিত অভেদাবলি ও বৈশিষ্ট্যসমূহ, বাস্তব ধনাত্মক ভিত্তিবিশিষ্ট ও ঘাত পূর্ণ সংখ্যা নয়- এমন ক্ষেত্রেও সত্য।

অন্যদিকে, কোন ঋণাত্মক বাস্তব সংখ্যার বাস্তব ঘাতে সূচকীকরণ এর সঙ্গতিপূর্ণ সংজ্ঞা দেওয়া অনেকখানি বেশি দুরূহ, কেননা তা অবাস্তবও হতে পারে এবং কয়েকটি মান থাকতে পারে (দেখুন § বাস্তব সূচকবিশিষ্ট ঋণাত্মক ভিত্তিসমূহ)। কেউ হয়তো এই মানগুলোর মধ্য থেকে মুখ্য মান বেছে নিতে পারেন, কিন্তু কোন অভেদ যেমন,

 ;

এক্ষেত্রে এমন কোন মুখ্য মান নেই যার জন্য অভেদটি সত্য। দেখুন § সূচক ও লগারিদমিক অভেসমূহের ব্যর্থতা । অতএব, ধনাত্মক বাস্তব সংখ্যা নয়- এমন ভিত্তিবিশিষ্ট সূচকীকরণকে সাধারণভাবে বহুমান ফাংশন হিসেবে দেখা হয়।

মূলদ সূচকসমূহের সীমা সম্পাদনা

 
যেহেতু এক্সপোনেনসিয়াল ফাংশন অবিচ্ছিন্ন প্রকৃতির, অভিসারী অনুক্রম (xn) এর জন্য   নির্ণয় করা হয়েছে। এখানে, xn = 1/n এর জন্য প্রদর্শন করা হয়েছে।

যেহেতু কোন অমূলদ সংখ্যাকে মূলদ সংখ্যার অনুক্রমের সীমা হিসেবে প্রকাশ করা যায়, সেহেতু যে কোন বাস্তব ঘাত  x বিশিষ্ট কোন ধনাত্মক বাস্তব সংখ্যা b এর সূচকীকরণকে একই নিয়মে অবিচ্ছিন্নতা বজায় রেখে সংজ্ঞায়িত করা যায়।[১৫]

 

যেখানে সীমা r এর মান ক্রমশঃ x এর নিকটবর্তী হওয়ার ক্ষেত্রে কেবলমাত্র r এর মূলদ মানগুলোই গ্রহণ করা হয়। শুধুমাত্র ধনাত্মক b এর জন্যই এই সীমার অস্তিত্ব আছে। সীমার (ε, δ) সংজ্ঞা ব্যবহার করে দেখানো যায় যে,  bx এর অভীষ্ট শুদ্ধতা অর্জনের জন্য  এর এমন ব্যবধি নির্বাচন করা যায়, যা যথেষ্ট ক্ষুদ্র এবং এতে ঐ ব্যবধির অন্তর্ভুক্ত সকল মূলদ ঘাতের মান অভীষ্ট শুদ্ধতার সীমার মধ্যেই থাকে।

যেমন- যদি x = π হয়, তাহলে মূলদ ঘাতসমূহ দ্বারা আবদ্ধ ব্যবধি নির্ণয়ে এর অনিঃশেষ দশমিক আকার π = ৩.১৪১৫৯… ব্যবহার করে এর মূলদ শক্তি দ্বারা আবদ্ধ ব্যবধির মান নির্ণয় করা যায়।

 ,  ,  ,  ,  ,  এই আবদ্ধ ব্যবধি একটি অনন্য বাস্তব সংখ্যার দিকে অভিসারী হয়, যা  দ্বারা নির্দেশ করা হয়। যে কোন অমূলদ সূচকযুক্ত ধনাত্মক বাস্তব সংখ্যা b এর শক্তি নির্ণয়ের জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়। এভাবে, ফাংশন fb(x) = bx যে কোন বাস্তব সংখ্যা x এর জন্য সংজ্ঞায়িত।

এক্সপোনেনসিয়াল (সূচকীয়) ফাংশন সম্পাদনা

মূল নিবন্ধ: এক্সপোনেনসিয়াল ফাংশন

গুরুত্বপূর্ণ একটি গাণিতিক ধ্রুবক e, যাকে অয়লার সংখ্যা-ও বলা হয়, এর আসন্ন মান ২.৭১৮ এবং এটি স্বাভাবিক লগারিদমের ভিত্তি। যদিও e ভিত্তিক সূচকীকরণকে, নীতিগতভাবে, অন্য যে কোন বাস্তব সংখ্যার সূচকীকরণের মতোই গণ্য করা যায়, তথাপি এ ধরনের সূচকীকরণেরের কতিপয় সুচারু ও কার্যকরী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এসব বৈশিষ্ট্য e ভিত্তিক এক্সপোনেনসিয়ালগুলোকে, মূলদ সূচকের সূচকীকরণের প্রচলিত অর্থ বজায় রেখে, স্বাভাবিক উপায়ে অন্যান্য ধরনের সূচকের সাথে সাধারণভাবে সমন্বয় করতে সহায়তা করে, যেমন- জটিল সংখ্যা বা যুগ্ম ম্যাট্রিক্স।

ফলাফলস্বরূপ, ex প্রতীকটি সচরাচর সূচকীকরণ এর একটি সাধারণ সংজ্ঞা নির্দেশ করে, যা এক্সপোনেনসিয়াল ফাংশন (বা সূচকীয় ফাংশন), exp(x) নামে পরিচিত; একে অনেকগুলো সমতুল্য উপারে সংজ্ঞায়িত করা যায়, উদাহরণস্বরূপ:

 

অন্যান্য ধর্মের মধ্যে, exp এক্সপোনেনসিয়াল অভেদ

 ; মেনে চলে।

এক্সপোনেনসিয়াল ফাংশন x এর সকল পূর্ণ সাংখ্যিক, বাস্তব ও অবাস্তব মানের জন্যই সংজ্ঞায়িত। প্রকৃতপক্ষে, [[ম্যাট্রিক্স ব্যাখ্যামূলক] বর্গ ম্যাট্রিক্সের জন্য সুসংজ্ঞায়িত (সেক্ষেত্রে এক্সপোনেনসিয়াল অভেদ প্রযোজ্য যখন xy বিনিময়যোগ্য), এবং রৈখিক ডিফারেনসিয়াল সমীকরণজোট সমাধানের ক্ষেত্রে কার্যকরী।

যেহেতু exp(1) এর মান ১ এর সমান ও exp(x) এই এক্সপোনেনসিয়াল অভেদ মেনে চলে, এ থেকে দেখানো যায় যে exp(x), কোন পূর্ণ সংখ্যা x এর জন্য ex এর পুনরাবৃত্ত-গুণফল সংজ্ঞার সাথে মিলে যায়, এবং আরও বলা যায় যে, মূলদ শক্তিসমূহ মূলসমূহ (ধনাত্মক) নির্দেশ করে, সুতরাং exp(x) অবিচ্ছিন্নতা ধর্ম দ্বারা সকল বাস্তব x এর জন্য, পূর্ববর্তী শাখাগুলোতে ex এর প্রদত্ত সংজ্ঞার সাথে সমাপতিত হয়।

লগারিদমের মাধ্যমে শক্তির ব্যখ্যা সম্পাদনা

যখন ex কে এক্সপোনেনসিয়াল ফাংশন হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, তখন অন্যান্য বাস্তব সংখ্যা b এর জন্য bx কে, ex এর মাধ্যমে প্রকাশ করা যায়। সুনির্দিষ্টভাবে, স্বাভাবিক লগারিদম ln(x) হচ্ছে এক্সপোনেনসিয়াল ফাংশন ex এর বিপরীত ফাংশন। এই ফাংশন b > 0 এর জন্য সংজ্ঞায়িত, এবং

 ; মেনে চলে।

যদি bx কে লগারিদম ও সূচকের নিয়মাবলি মেনে চলতে হয়, সেক্ষেত্রে প্রত্যেক বাস্তব সংখ্যার জন্য,

 ; অবশ্যই থাকতে হবে।

এটি বাস্তব ঘাতের শক্তি bx এর জন্য বিকল্প সংজ্ঞা হিসেবে ব্যবহার করা যায় এবং মূলদ সূচক ও অবিচ্ছিন্নতার ভিত্তিতে উপরে যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তার সাথে সংগতিপূর্ণ। লগারিদমের সাহায্যে সূচকীকরণের সংজ্ঞার ব্যবহার জটিল সংখ্যা সংক্রান্ত আলোচনার ক্ষেত্রে বহুল প্রচলিত, যা নিম্নে আলোচনা করা হয়েছে।

ঋণাত্মক ভিত্তিবিশিষ্ট বাস্তব ঘাতসমূহ সম্পাদনা

যে কোন ধনাত্মক বাস্তব সংখ্যার শক্তিসমূহ সর্বদাই ধনাত্মক বাস্তব সংখ্যা হয়। তা সত্ত্বেও x = ৪ এর সমাধান হয় ২ অথবা -২। ৪১/২ এর মুখ্যমান ২, কিন্তু -২ সংখ্যাটিও এর একটি বৈধ বর্গমূল। যদি বাস্তব সংখ্যার সূচকীকরণের সংজ্ঞাকে বর্ধিত করে ঋণাত্মক মানও গ্রহণ করা হয়, সেক্ষেত্রে তার আচরণের ধারাবাহিকতা থাকে না।

লগারিদম পদ্ধতি বা মূলদ সূচক পদ্ধতি- দুটোর কোন পদ্ধতিতেই br কে বাস্তব সংখ্যা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যায় না যেখানে b একটি ঋণাত্মক বাস্তব সংখ্যা এবং r যে কোন ইচ্ছামূলক বাস্তব সংখ্যা। প্রকৃতপক্ষে, er সকল বাস্তব সংখ্যা r এর জন্য ধনাত্মক, সুতরাং ln(b) এমন কোন বাস্তব সংখ্যার জন্য সংজ্ঞায়িত নয় যেখানে b ≤ 0।

মূলদ সূচক পদ্ধতি  b এর ঋণাত্মক মানের জন্য ব্যবহার করা যায় না কারণ তা অবিচ্ছিন্নতা ধর্মের উপর নির্ভরশীল। মূলদ সংখ্যা থেকে বাস্তব সংখ্যায় প্রতিটি b > 0 এর জন্য, ফাংশন f(r) = br এর একটি অনন্য অবিচ্ছিন্ন বিস্তৃতি[১৫] দেখা যায়। কিন্তু যখন b < 0, তখন ফাংশন f কোন মূলদ সংখ্যার সেট r, যার জন্য ফাংশনটি সংজ্ঞায়িত, সেখানেও অবিচ্ছিন্ন নয়।

উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক, b= -১। প্রত্যেক বিজোড় স্বাভাবিক সংখ্যার জন্য, -১ এর n–তম মূল হচ্ছে -১। সুতরাং, যদি n একটি বিজোড় ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা হয়, (-১)(m/n) = -১, যদি m বিজোড় হয় এবং (-১)(m/n) = ১, যদি m জোড় হয়। এজন্য কোন মূলদ সংখ্যার সেট q যার জন্য (-১)q = ১, মূলদ সংখ্যার একটি ঘন সেট (dense set); একই কথা (-১)q = -১ এর বেলাতেও খাটে। এর মানে হচ্ছে, এমন কোন সংজ্ঞায়িত মূলদ সংখ্যা q নেই যার জন্য (-১)q ফাংশনটি অবিচ্ছিন্ন।

অন্যদিকে, কোন ঋণাত্মক সংখ্যা b এর ইচ্ছামূলক জটিল শক্তিকে b এর জটিল লগারিদম হিসেবে ধরে নিয়ে সংজ্ঞায়িত করা যায়।

অমূলদ সূচকসমূহ সম্পাদনা

মূল নিবন্ধ: গেলফন্ড-স্নাইডার তত্ত্ব

যদি b একটি ধনাত্মক বাস্তব বীজগাণিতিক সংখ্যা হয়, এবং x একটি মূলদ সংখ্যা হয়, সেক্ষেত্রে bx যে একটি বীজগাণিতিক সংখ্যা তা ওপরে দেখানো হয়েছে। যদি কেউ b এর জন্য যে কোন বীজগাণিতিক সংখ্যা গ্রহণ করে, সেক্ষেত্রেও এটা সত্য; শুধু পার্থক্য এই যে, bx সসীম সংখ্যক কতগুলো বীজগাণিতিক মান গ্রহণ করতে পারে। গেলফন্ড-স্নাইডার তত্ত্ব x অমূলদ (অর্থাৎ, মূলদ সংখ্যা নয়) হলে bx এর প্রকৃতি সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রদান করে। এই তত্ত্ব অনুসারে:

যদি b শূন্য (০) ও এক (১) ব্যতীত একটি বীজগাণিতিক সংখ্যা হয়, এবং x একটি অমূলদ বীজগাণিতিক সংখ্যা হয়, তাহলে bx এর সকল মান ( অসীমভাবে অসংখ্য) বহিরাগত সংখ্যা (transcendental) (অর্থাৎ, বীজগাণিতিক নয়)।

ধনাত্মক বাস্তব ভিত্তিবিশিষ্ট জটিল সূচকসমূহ সম্পাদনা

যদি b একটি ধনাত্মক বাস্তব সংখ্যা এবং z একটি জটিল সংখ্যা হয়, তাহলে bz কে সংজ্ঞায়িত করা হয় এভাবে-

 

যেখানে সমীকরণ ex = b এর অনন্য বাস্তব সমাধান হচ্ছে x = ln(b), এবং e এর জটিল শক্তি এক্সপোনেনসিয়াল ফাংশন দ্বারা সংজ্ঞায়িত, যা জটিল চলকের অনন্য ফাংশন ও এর অন্তরক (derivative) এর সমান, এবং x = 0 হলে এর মান ১।

যেহেতু সাধারণভাবে bz কোন বাস্তব সংখ্যা নয়, কোন রাশি যেমন, (bz)w - পূর্ববর্তী সংজ্ঞা দ্বারা সংজ্ঞায়িত নয়। এর ব্যখ্যা অবশ্যই জটিল সংখ্যার শক্তির নিয়মে করতে হবে, এবং, যদি z বাস্তব অথবা w পূর্ণ সংখ্যা না হয়, রাশিটি সাধারণত bzw এর সমান হয় না; যেমনটা কেউ মনে করে থাকতে পারে।

এক্সপোনেনসিয়াল ফাংশনের বেশ কতগুলো সংজ্ঞা আছে কিন্তু সেগুলো সুসংগতভাবে জটিল সংখ্যার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হয় এবং এক্সপোনেনসিয়াল বৈশিষ্ট্যাবলি মেনে চলে। কোন জটিল সংখ্যা zw হলে, এক্সপোনেনসিয়াল ফাংশনটি  মেনে চলে। সুনির্দিষ্টভাবে, কোন জটিল সংখ্যা  এর জন্য,

 

দ্বিতীয় পদ  এর মান অয়লারের সূত্র থেকে পাওয়া যায়,

 

এই সূত্রটি ত্রিকোণমিতি ও বীজগণিতের সমস্যার যোগসূত্র হিসেবে কাজ করে।

অতএব, কোন জটিল সংখ্যা  হলে,

 

পীথাগোরাসের ত্রিকোণমিতিক অভেদ এর কারণে  এর পরম মান ১। সুতরাং, বাস্তব অংশ  হচ্ছে  এর পরম মান এবং কাল্পনিক অংশ  দ্বারা জটিল সংখ্যা  এর আর্গুমেন্ট (কোণ) নির্দেশ করা হয়।

ধারা সংজ্ঞা সম্পাদনা

এক্সপোনেনসিয়াল ফাংশন যেহেতু তার অন্তরকের সমান ও  মেনে চলে, এর টেইলর ধারা অবশ্যই নিম্নরূপ হবে:

 

এই অসীম ধারাটি, যেটি প্রায়শই যে কোন ইচ্ছামূলক জটিল সূচকের জন্য এক্সপোনেনসিয়াল ফাংশন ez এর সংজ্ঞা হিসেবে গণ্য করা হয়, তা সকল জটিল সংখ্যা z এর জন্য সম্পূর্ণরূপে অভিসারী

যখন z সম্পূর্ণ কাল্পনিক, অর্থাৎ z = iy, যেখানে y বাস্তব, উপরের ধারাটি নিম্নরূপ ধারণ করে:

 ,

যা পুনর্বিন্যস্ত করে লেখা যায় (যেহেতু ধারাটি সম্পূর্ণভাবে অভিসারী)-

 

এই বিস্তারের বাস্তব ও কাল্পনিক অংশদ্বয় যথাক্রমে সাইন ও কোসাইন এর টেইলর বিস্তৃতি, যা শূন্যতে কেন্দ্রীভূত, যার অর্থ অয়লারের সূত্রটি হচ্ছে:

 

লিমিট সংজ্ঞা সম্পাদনা

 
এই অ্যানিমেশনটি পুনরাবৃত্ত গুণের মাধ্যমে প্রদর্শন করে যে, কীভাবে n এর মান (চিত্রে N) ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে থাকলে  এর মান -১ এর দিকে অগ্রসর হয়। k = 0 ... n, এর জন্য  এর মানগুলো হচ্ছে বহুভুজীয় পথের শীর্ষসমূহ, k এর জন্য যার সর্ব বামপ্রান্ত হচ্ছে  । এটা দৃশ্যমান যে, k এর মান ক্রমশ বাড়তে থাকলে  , তার সীমা -১ এর নিকটবর্তী হতে থাকে, যা অয়লারের অভেদ  কেই চিত্রিত করে।

এক্সপোনেনসিয়াল ফাংশন  এর আরেকটি রূপায়ন হচ্ছে  এর সীমা হিসেবে, যখন n এর মান অসীমের দিকবর্তী হয়। এই সংজ্ঞাতে n-তম শক্তিকে পোলার আকৃতিতে পুনরাবৃত্ত গুণ হিসেবে ধরে নিয়ে অয়লারের সূত্রের চিত্রায়নে ব্যবহার করা যায়। যে কোন জটিল সংখ্যাকে পোলার আকৃতি  হিসেবে উপস্থাপন করা যায়, যেখানে r পরম মান ও θ আর্গুমেন্ট। দুটি জটিল সংখ্যা   এর গুণফল  

কোন জটিল সমতলে একটি সমকোণী ত্রিভুজ ধরে নেওয়া যাক, যার শীর্ষগুলি হলো  ,   n এর বৃহৎ মানের জন্য, ত্রিভুজটি একক ব্যাসার্ধ ও ক্ষুদ্র কেন্দ্রস্থ কোণ  রেডিয়ান বিশিষ্ট একটি প্রায় বৃত্তাকার ক্ষেত্র এর আসন্ন মান হিসেবে একটি সংখ্যা বসানো যায় যার পোলার আকৃতি  । সুতরাং, n অসীমের দিকবর্তী হলে  এর সীমা  এর দিকে অগ্রসর হতে থাকে; যা একক বৃত্তটির ওপর ঐ বিন্দুটিকে নির্দেশ করে, ধনাত্মক বাস্তব অক্ষের সাথে যার কোণের পরিমাপ x রেডিয়ান। কার্তেসীয় স্থানাংক ব্যবস্থায় বিন্দুটির স্থানাংক  , সুতরাং  ; যা- আবারও- সেই অয়লারের সূত্রটিই; ধারার সংজ্ঞার মতো এখানেও ত্রিকোণমিতিক ফাংশনের সাথে একই যোগসূত্র বহন করে।

পর্যায়বৃত্তি সম্পাদনা

সমীকরণ  এর সমাধানগুলো  এর পূর্ণ সংখ্যার গুণিতক:

 

এজন্য  যদি এমন একটি জটিল সংখ্যা হয় যেন  , তাহলে প্রত্যেক  যা  কে সিদ্ধ করে তা  থেকে পাওয়া যায়, এর অর্থ,  এর সাথে  এর যে কোন পূর্ণ সংখ্যার গুণিতক যোগ করা হয়:

 

এর মানে, কোন পূর্ণ সংখ্যা k এর জন্য জটিল এক্সপোনেনসিয়াল ফাংশন  , একটি পর্যাবৃত্ত ফাংশন যার পর্যায়  

উদাহরণ সম্পাদনা

 

জটিল সংখ্যার শক্তি সম্পাদনা

অশূন্য জটিল সংখ্যার পূর্ণ-সাংখ্যিক শক্তিসমূহকে উপরের মত পুনঃপুনঃ গুণ বা ভাগের মাধ্যমে সংজ্ঞায়িত করা হয়। যদি i কাল্পনিক এককn একটি পূর্ণ সংখ্যা হয়, তাহলে n কে ৪ দ্বারা ভাগ করলে ভাগফল (পরম মান) ০, ১, ২ নাকি ৩ - সেই অনুসারে in এর মান যথাক্রমে ১, i, ,অথবা -i । এ কারণে, i এর শক্তিসমূহ এককের মূল এর অনুক্রম প্রকাশ করার ক্ষেত্রে কার্যকরী।

ধনাত্মক বাস্তব সংখ্যার জটিল শক্তিকে ওপরের ধনাত্মক বাস্তব ভিত্তিবিশিষ্ট জটিল সূচকসমূহ অংশের মত ex এর মাধ্যমে সংজ্ঞা দেওয়া হয়। এই ফাংশনগুলো অবিচ্ছিন্ন ফাংশন।

এই ফাংশনগুলোকে সাধারণ ক্ষেত্রে তথা ধনাত্মক বাস্তব সংখ্যা নয় এমন অপূর্ণ শক্তির জটিল সংখ্যার ক্ষেত্রে বর্ধিত করতে গেলে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। হয় আমরা বিচ্ছিন্ন ফাংশন এর সংজ্ঞা দিই অথবা বহুমান-বিশিষ্ট ফাংশন এর। তবে দুটোর কোনটাই পুরোপুরি সন্তোষজনক নয়। 

জটিল সংখ্যার মূলদ শক্তি অবশ্যই কোন বীজগাণিতিক সমীকরণের সমাধান হতে হয়। অতএব, সবসময়ই এর একটি সসীম সংখ্যক সম্ভাব্য মান থাকে। উদাহরণস্বরূপ, w = z১/২ , সমীকরণ w২ = z এর সমাধান হতে হবে। কিন্তু যদি w একটি সমাধান হয়, তাহলে  -w ও আরেকটি সমাধান, কেননা (-১) = ১।  মুখ্যমান, যা একটি অনন্য কিন্তু কিছুটা ইচ্ছামূলক সমাধান, সাধারণ নিয়ম মেনে বেছে নেওয়া যায় এবং তা অমূলদ শক্তির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

কোন রিম্যান তলের ওপর জটিল শক্তি ও লগারিদমকে একক-মান ফাংশন হিসেবে নিয়ে আরও স্বাভাবিকভাবে কাজ করা যায়। কোন একটি পৃষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে এদের একক-মান ফাংশন হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। এই মানটি আবার একটি শাখা খণ্ড (branch cut) বরাবর বিচ্ছিন্ন। অনেকগুলো সমাধান থেকে একটিকে মুখ্যমান হিসেবে বেছে নিলে এমন কতগুলো ফাংশন রয়ে যায় যারা অবিচ্ছিন্ন নয়, এবং শক্তির প্রচলিত নিয়মাবলি দ্বারা কাজ করতে গেলে তা আমাদের দিগভ্রান্ত করতে পারে।

জটিল লগারিদমের বহুমান ধর্মের কারণে, জটিল সংখ্যার যে কোন অমূলদ শক্তির অসংখ্য সম্ভাব্য মান থাকে। এগুলো থেকে একটি একক-মানকে মুখ্যমান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়, যে নিয়ম মেনে তা বেছে নেওয়া হয় তার অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, কোন জটিল সংখ্যার বাস্তব অংশ ধনাত্মক ও কাল্পনিক অংশ শূন্য হলে যে মান পাওয়া যায়, তা ওপরে বাস্তব ভিত্তির জন্য বর্ণিত নিয়মে প্রাপ্ত মানের সমান হয়।

কোন বাস্তব সংখ্যাকে জটিল ঘাতে উন্নীত করার প্রক্রিয়া তার অনুরূপ জটিল সংখ্যার জন্য যে প্রক্রিয়া, তা থেকে ভিন্ন। তবে, উভয় ক্ষেত্রেই ধনাত্মক বাস্তব সংখ্যার জন্য মুখ্যমান একই হয়।

ঋণাত্মক বাস্তব সংখ্যার শক্তিসমূহ সবসময় সংজ্ঞায়িত নয়, এমনকি যেখানে সংজ্ঞায়িত সেখানেও এরা বিচ্ছিন্ন। প্রকৃতপক্ষে, তারা শুধুমাত্র সংজ্ঞায়িত যখন তাদের সূচক একটি মূলদ সংখ্যা, যার হর একটি বিজোড় পূর্ণ সংখ্যা। যখন জটিল সংখ্যা নিয়ে কাজ করা হয়, তখন সাধারণত জটিল সংখ্যার প্রক্রিয়াগুলোই ব্যবহার করা হয়।

জটিল ভিত্তিবিশিষ্ট জটিল ঘাতসমূহ সম্পাদনা

কোন জটিল সংখ্যা w (w ≠ 0) ও z হলে, wz চিহ্নলিপিটি log w এর মতই দ্ব্যর্থক বা অস্পষ্ট।

wz এর মান নির্ণয়ের জন্য প্রথমে w এর লগারিদম, log w বেছে নেওয়া যাক। এই মানটি মুখ্যমান  হতে পারে (গতানুগতিক মান, যদি অন্য কোন নির্দেশনা না থাকে), অথবা log w এর অন্য কোন শাখা হতে প্রাপ্ত মানও হতে পারে, যা পূর্বনির্ধারিত থাকে। তাহলে, জটিল এক্সপোনেনসিয়াল ফাংশন ব্যবহার করে লেখা যায়-

 

এই সংজ্ঞাটি, পূর্ববর্তী সংজ্ঞা যেখানে w একটি ধনাত্মক বাস্তব সংখ্যা ও log w এর (বাস্তব) মুখ্যমান ব্যবহার করা হয়, তার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।

যদি z একটি পূর্ণ সংখ্যা হয়, তাহলে wz এর মান log w নির্বাচনের ওপর নির্ভরশীল নয়, এবং তা পূর্ণ-সাংখ্যিক সূচকের সূচকীকরণের ক্ষেত্রে পূর্বে যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

যদি z (z > 0) একটি মূলদ সংখ্যা m/n (লঘিষ্ঠ আকার) হয়, তাহলে log w এর গণনাযোগ্যভাবে অসংখ্য মান (countably infinitely many) হতে wz এর কেবলমাত্র n সংখ্যক ভিন্ন ভিন্ন মান পাওয়া যায়; এই মানগুলো হচ্ছে সমীকরণ sn = wm এর  n সংখ্যক জটিল সমাধান s

যদি z একটি অমূলদ সংখ্যা হয়, তাহলে log w এর গণনাযোগ্য অসংখ্য মান থেকে wz এর অসংখ্য অনেক (infinitely many) ভিন্ন ভিন্ন মান পাওয়া যায়।

জটিল শক্তির হিসাব করা হয় ভিত্তি w কে পোলার আকৃতিতে রূপান্তরের মাধ্যমে, যা নিম্নে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে।

একই রকম একটি কাঠামো চতুষ্টয় ব্যবস্থা (quaternions) এর ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়।

এককের জটিল মূল সম্পাদনা

মূল নিবন্ধ: এককের মূল

 
১ এর তিনটি তৃতীয় মূল

যদি কোন জটিল সংখ্যা w এমন হয় যেন wn = ১, যেখানে n একটি ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা, তাহলে n হচ্ছে এককের একটি n–তম মূল। জ্যামিতিকভাবে, এককের n-তম মূলগুলো কোন জটিল তলে একটি একক বৃত্তের ওপর n–বাহুবিশিষ্ট একটি সুষম বহুভুজের শীর্ষগুলোতে অবস্থিত, যার একটি শীর্ষ, বাস্তব সংখ্যা ১ এর ওপর থাকে।

যদি wn = ১ কিন্তু wk ≠ ১ হয়, সকল স্বাভাবিক সংখ্যা k যেন 0 < k < n এর জন্য, w কে এককের আদি n–তম মূল বলা হয়। -১ হচ্ছে এককের একমাত্র আদি বর্গমূল। এককের চতুর্থ মূলের দুটি আদি মূলের মধ্যে একটি হলো কাল্পনিক একক i; অন্যটি হচ্ছে −i

 সংখ্যাটিকে লঘিষ্ট ধনাত্মক আর্গুমেন্ট-যুক্ত এককের n–তম আদি মূল বলা হয়। (একে কখনো কখনো এককের মুখ্য n–তম মূল বলা হয়, যদিও এই পরিভাষা সর্বজনীন নয় এবং n√১ এর মুখ্যমান, যার মান ১, তার সাথে সংমিশ্রণ অনুচিৎ।)[১৬][১৭][১৮]

এককের অন্যান্য মূলগুলো পাওয়া যায়,

 ; 2 ≤ kn এর জন্য।

যে কোন জটিল সংখ্যার মূল সম্পাদনা

যদিও কোন সাধারণ জটিল লগারিদমের জন্য অসীমভাবে অনেক সম্ভাব্য মান পাওয়া যায়, তবে wq এর জন্য, গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ একটি ক্ষেত্র যেখানে q = ১/n  ও n একটি ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা, সেক্ষেত্রে কেবল সসীম সংখ্যক মান বিদ্যমান। এগুলো হচ্ছে w এর n-তম মূলসমূহ; এরা zn = w সমীকরণটির সমাধানসমূহ। বাস্তব মূলের মত এক্ষেত্রেও দ্বিতীয় মূলকে বর্গমূল ও তৃতীয় মূলকে ঘনমূল বলা হয়।

গণিতে w১/n কে মূলের মুখ্যমান হিসেবে সচরাচর সংজ্ঞায়িত করা হয়, যা প্রচলিত অর্থে, সেই n–তম মূল যার আর্গুমেন্ট এর পরম মান ক্ষুদ্রতম। যখন w একটি ধনাত্মক বাস্তব সংখ্যা, তখন w১/n কে অনন্য ধনাত্মক বাস্তব n–তম মূল হিসেবে সংজ্ঞায়নের প্রচলিত প্রথার সাথে এটি সংগতিপূর্ণ। অন্যদিকে, w যদি ঋণাত্মক বাস্তব সংখ্যা, এবং n একটি বিজোড় পূর্ণ সংখ্যা হয়, তবে অনন্য n–তম মূলটি ক্ষুদ্রতম আর্গুমেন্টযুক্ত n–তম মূল দুটির কোনটিই নয়। এক্ষেত্রে, w১/n এর অর্থ প্রসঙ্গের ওপর নির্ভরশীল হতে পারে, এবং ত্রুটি এড়ানোর জন্য বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হতে পারে।

কোন জটিল সংখ্যা w এর n-তম মূল এর মুখ্যমান w১/n কে এককের n-তম মূলগুলি দ্বারা গুণ করে পাওয়া যায়। যেমন, ১৬ এর চতুর্থ মূলগুলো হচ্ছে- ২, -২, ২i, এবং −২i, কেননা ১৬ এর চতুর্থ মূলের মুখ্যমান ২ ও -২, আর এককের চতুর্থ মূলগুলি হচ্ছে ১, −১, i, এবং −i

জটিল শক্তির গণনা সম্পাদনা

অনেক ক্ষেত্রেই জটিল শক্তিসমূহের গণনা পোলার আকৃতিতে লিখে করলে তা তুলনামূলক সহজতর হয়। প্রত্যেক জটিল সংখ্যা কেই পোলার আকৃতিতে নিম্নরূপে লেখা যায়-

 

যেখানে r একটি অঋণাত্মক বাস্তব সংখ্যা ও θ হচ্ছে z এর (বাস্তব) আর্গুমেন্ট। পোলার আকৃতির একটি সরল জ্যামিতিক ব্যাখ্যা আছে: যদি একটি জটিল সংখ্যা u + iv কোন জটিল সমতলে কার্তেসীয় স্থানাংক ব্যবস্থায় একটি বিন্দু (u, v) কে নির্দেশ করে, তাহলে (r, θ) হচ্ছে পোলার স্থানাংক ব্যবস্থায় ঐ একই বিন্দুটি। তার মানে, r হচ্ছে “ব্যাসার্ধ” r2 = u2 + v2 এবং θ হচ্ছে “কোণ” θ= atan2(v, u)। পোলার কোণ θ এর অর্থ অস্পষ্ট কেননা, 2π এর যে কোন পূর্ণ-সাংখ্যিক গুণিতক θ এর সাথে যোগ করলেও ঐ বিন্দুর অবস্থান একই থাকে। θ এর প্রতিটি মান থেকে সাধারণত ঐ শক্তির সম্ভাব্য ভিন্ন ভিন্ন মান পাওয়া যায়। একটি শাখা খণ্ড (brach cut) ব্যবহার করে সুনির্দিষ্ট একটি মান নির্বাচন করা যায়। মুখ্যমানটি (সবচেয়ে প্রচলিত শাখা খণ্ড) পাওয়া যায় যখন θ এর মান (-π, π] ব্যবধির মধ্যে থাকে। যেসব জটিল সংখ্যার বাস্তব অংশ ধনাত্মক ও কাল্পনিক অংশ শূন্য, তাদের ক্ষেত্রে মুখ্যমান ব্যবহার করে প্রাপ্ত মান অনুরূপ বাস্তব সংখ্যার সমান হয়।

জটিল ঘাত wz নির্ণয়ের জন্য w কে পোলার আকৃতিতে লেখা হয়:

 

এরপর

 

এবং এভাবে

 

যদি z কে ভেঙে c + di আকারে লেখা হয়, তাহলে wz এর সূত্রটি আরও স্পষ্টভাবে লেখা যায়-

 

সর্বশেষ এই সূত্রটি ভিত্তিকে পোলার আকৃতিতে ও ঘাতটিকে কার্তেসীয় আকৃতিতে নিয়ে সহজে জটিল শক্তি নির্ণয়ে সাহায্য করে। এটি এখানে পোলার ও কার্তেসীয় – উভয় আকারেই (অয়লারের অভেদ এর মাধ্যমে) দেখানো হয়েছে।

নিচের উদাহরণগুলিতে মুখ্যমান, যে শাখা খণ্ডে θ এর মান (−π, π] ব্যবধির মধ্যে থাকে, তা ব্যবহার হয়েছে।  হিসাব করার জন্য i কে পোলার আকৃতি ও কার্তেসীয় আকৃতিতে লেখা হয়:

 

অতঃপর, উপরের সূত্রে r = ১, θ = π/২, c = 0, and d = ১ বসিয়ে পাওয়া যায়:

 

অনুরূপভাবে, (−২)৩ + ৪i এর মান নির্ণয়ের জন্য, -২ এর পোলার আকৃতি বের করা হয়,

 

এবং উপরের সূত্র ব্যবহার করে নির্ণয় করা হয়,

 

কোন শাখা ব্যবহৃত হয়েছে তার ওপর জটিল সংখ্যার মান নির্ভর করে। যেমন, যদি পোলার আকৃতি i = ১eπi/২ ব্যবহার করে  নির্ণয় করা হয়, তাহলে নির্ণীত মান পাওয়া যায় e−৫π/২; ওপরে নির্ণীত   এর মুখ্যমান হচ্ছে e−π/2 এর সকল সম্ভাব্য মানের সেট পাওয়া যায় নিম্নরূপে[১৯]:

 

সুতরাং, প্রতিটি পূর্ণ সংখ্যা k এর জন্য  এর অসংখ্য সম্ভাব্য মান থাকতে পারে। তাদের সকলেরই কাল্পনিক অংশ শূন্য বলে কেউ বলতে পারে যে,  এর অসীম সংখ্যক বৈধ বাস্তব মান বিদ্যমান।

শক্তি ও লগারিদমিক অভেদাবলির ব্যর্থতা সম্পাদনা

জটিল শক্তি ও জটিল লগারিদম যেভাবেই একক-মান ফাংশন হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হোক না কেন, ধনাত্মক বাস্তব সংখ্যার জন্য কিছু কিছু শক্তি ও লগারিদমিক অভেদ, জটিল সংখ্যার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হবে। যেমন:

  • অভেদ log(bx) = x ⋅ log b বৈধ যখন, b একটি ধনাত্মক বাস্তব সংখ্যা ও x একটি বাস্তব সংখ্যা। কিন্তু জটিল লগারিদম এর মুখ্য শাখার (principal branch) জন্য পাওয়া যায়,

 

লগারিদমের যে শাখাই ব্যবহার করা হোক, অভেদের একই ধরনের ব্যর্থতা বজায় থাকবে। বড়জোড় এটুকু বলা যেতে পারে যে (যদি কেবলমাত্র এই ফলাফল ব্যবহৃত হয়):

 

লগ-কে বহুমান ফাংশন হিসেবে বিবেচনা করলেও এই অভেদ সিদ্ধ হয় না। log(wz) এর সম্ভাব্য মানগুলো z ⋅ log w এর মানগুলোকে উপসেট হিসেবে ধারণ করে। Log(w) কে, log(w) এর মুখ্য মানের হিসেবে ব্যবহার করে এবং m, n কে যে কোন পূর্ণ সংখ্যা ধরে নিয়ে, উভয় পক্ষের সম্ভাব্য মানগুলো হলো:

 

  • (bc)x = bxcx এবং (b/c)x = bx/cx ; অভেদ দুটি বৈধ যখন bc ধনাত্মক বাস্তব সংখ্যা এবং x বাস্তব সংখ্যা। কিন্তু মুখ্য শাখা ব্যবহার করে গণনা করে দেখানো যায় যে,

 

এবং

 

অন্যদিকে, যখন x একটি পূর্ণ সংখ্যা, সকল অশূন্য জটিল সংখ্যার জন্য অভেদগুলো বৈধ।

সূচকীকরণকে যদি বহুমান ফাংশন হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তাহলে (−১ ⋅ −১)১/২ এর সম্ভাব্য মানগুলি হচ্ছে {১, −১}। অভেদটি সিদ্ধ হলেও, {১} = {(−১ ⋅ −১)১/২} বলাটা ভুল।

  • বাস্তব সংখ্যা xy এর জন্য, (ex)y = exy অভেদটি সিদ্ধ হয়, কিন্তু এটি জটিল সংখ্যার জন্যও সত্য মনে করলে তা কূটাভাস (paradox) সৃষ্টি করে, যা ১৮২৭ সালে ক্লাউসেন আবিষ্কার করেন[২০]: যে কোন পূর্ণ সংখ্যা n এর জন্য, আমরা পাই:
  1.  
  2.  (উভয় পক্ষে  -তম ঘাত নিয়ে)
  3.  ( ব্যবহার করে ও ঘাতের বিস্তার করে)
  4.   ( ব্যবহার করে)
  5.   (e দ্বারা ভাগ করে)

কিন্তু পূর্ণ সংখ্যা n অশূন্য হলে এটি মিথ্যা। ত্রুটি হচ্ছে: সংজ্ঞানুসারে,   হচ্ছে  এর চিহ্নলিপি, একটি প্রকৃত ফাংশন, এবং  হচ্ছে  এর একটি চিহ্নলিপি, যা একটি বহুমান ফাংশন। এজন্য, x = e হলে এই চিহ্নলিপিটি দ্ব্যর্থক। এখানে, ঘাতের বিস্তারের আগেই দ্বিতীয় বাক্যটি হওয়া উচিৎ:

 

অতএব, ঘাতের বিস্তারের সময় অব্যক্তভাবে ধরে নেওয়া হয়েছে  , z এর জটিল মানসমূহের জন্য, যা সঠিক নয়, কেননা জটিল লগারিদম হচ্ছে বহুমান-বিশিষ্ট। অন্য কথায়, ভুল অভেদ (ex)y = exy অবশ্যই  এই অভেদটি দ্বারা প্রতিস্থাপন করতে হবে; যা বহুমান ফাংশনগুলোর মধ্যে একটি প্রকৃত অভেদ।

সাধারণিকরণ সম্পাদনা

মনোয়েড সম্পাদনা

পূর্ণ-সাংখ্যিক ঘাতের সূচকীকরণকে যেকোন গৌণিক মনোয়েড[২১] (multiplicative monoid) এ সংজ্ঞায়িত করা যায়। মনোয়েড হলো একটি বীজগাণিতিক কাঠামো, যা একটি সেট X ও সেটটি গঠনের একটি নিয়ম (“গুণ প্রক্রিয়া”) যা সংযোগ বিধি মেনে চলে, এবং একটি গৌণিক অভেদ (১) নিয়ে গঠিত। সূচকীকরণকে আরোহী পদ্ধতিতে সংজ্ঞায়িত করা হয়-

  •  ; সকল   এর জন্য
  •  ; সকল  ও অঋণাত্মক পূর্ণ সংখ্যা n এর জন্য
  • যদি n একটি ঋণাত্মক পূর্ণ  সংখ্যা হয়, তাহলে  কেবলমাত্র সংজ্ঞায়িত[২২] যদি X সেটে  এর একটি বিপরীতক বিদ্যমান থাকে।

গণিতশাস্ত্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোই মনোয়েড এর অন্তর্ভুক্ত, এর মধ্যে আছে গুচ্ছ (groups) ও চক্র (rings) (গুণের অধীনে), পরেরটির আরও সুনির্দিষ্ট উদাহরণ হলো ম্যাট্রিক্স চক্র (matrix rings) ও ক্ষেত্র (fields)।

ম্যাট্রিক্স ও রৈখিক অপারেটর সম্পাদনা

যদি A একটি বর্গ ম্যাট্রিক্স হয়, তাহলে A কে নিজের সাথেই n–সংখ্যক বার গুণ করলে তার গুণফলকে ম্যাট্রিক্স শক্তি বলে। এছাড়াও,  কে অভেদ ম্যাট্রিক্স[২৩] হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, এবং যদি A বিপরীতযোগ্য (invertible) হয়, তাহলে  

ম্যাট্রিক্স শক্তি অনেক সময়ই বিচ্ছিন্ন গতিশীল ব্যবস্থা (discrete dynamical system) প্রসঙ্গে দেখা যায়, যেখানে ম্যাট্রিক্স A দ্বারা কোন ব্যবস্থার দশা ভেক্টর x থেকে ব্যবস্থাটির পরবর্তী দশা  এ রূপান্তর প্রকাশ করা হয়।[২৪] এটি, উদাহরণস্বরূপ, একটি মার্কভ শৃঙ্খল (Markov chain)এর প্রমিত ব্যাখ্যা। তাহলে,  হচ্ছে দুই ধাপ সময় পর ব্যবস্থাটির দশা, এবং একইভাবে,  হচ্ছে ব্যবস্থাটির দশা, n-সংখ্যক সময় ধাপের পর। ম্যাট্রিক্স শক্তি   হচ্ছে বর্তমান দশা ও n ধাপ পরবর্তী ভবিষ্যত দশার মধ্যে দশান্তর ম্যাট্রিক্স। সুতরাং, ম্যাট্রিক্স শক্তি নির্ণয় কোন গতিশীল ব্যবস্থার বিবর্তনের সমাধানের সমতুল্য। অনেক ক্ষেত্রেই, ম্যাট্রিক্স শক্তি আইগেন-মান ও আইগেন-ভেক্টর ব্যবহার করে উপযুক্তভাবে নির্ণয় করা যায়।

ম্যাট্রিক্স ছাড়াও আরও সাধারণ রৈখিক অপারেটরগুলোর সূচকীকরণ করা যায়। এর একটি উদাহরণ হচ্ছে ক্যালকুলাসের ব্যবকলনীয় অপারেটর, , যেটি ফাংশন  এর ওপর ক্রিয়াশীল একটি রৈখিক অপারেটর, যা একটি নতুন ফাংশন  প্রদান করে। ব্যবকলনীয় অপারেটরের n–তম শক্তিই হচ্ছে n–তম অন্তরক সহগ:

 

এই উদাহরণগুলো রৈখিক অপারেটরের বিচ্ছিন্ন সূচকের জন্য, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই এমন অপারেটরের অবিচ্ছিন্ন সূচকের জন্য শক্তির সংজ্ঞায়ন কাম্য। এখান থেকেই গাণিতিক উপগুচ্ছ (semi-groups) তত্ত্বের সূচনা।[২৫] বিচ্ছিন্ন সূচকযুক্ত ম্যাট্রিক্স শক্তি নির্ণয় করে যেমন বিচ্ছিন্ন গতিশীল ব্যবস্থার সমাধান করা যায়, ঠিক তেমনি অবিচ্ছিন্ন সূচকযুক্ত ম্যাট্রিক্স শক্তি নির্ণয় করে অবিচ্ছিন্ন গতিশীল ব্যবস্থার সমাধান করা যায়। এর উদাহরণের মধ্যে তাপীয় সমীকরণ, শ্রোডিঙ্গার সমীকরণ, তরঙ্গ সমীকরণ সমাধানের পন্থা অন্তর্ভুক্ত এবং অন্যান্য আংশিক ব্যবকলনী সমীকরণ যেখানে সময়ের বিবর্তন আছে তারাও অন্তর্ভুক্ত। বিশেষ একটি ক্ষেত্র যেখানে ব্যবকলনীয় অপারেটরকে অপূর্ণ সংখ্যার শক্তিতে উন্নীত করা হয়, তাকে বলা হয় ভগ্নাংশিক অন্তরক (fractional derivative), যা ভগ্নাংশিক যোগজ (fractional integral) এর সাথে একত্রে ভগ্নাংশিক ক্যালকুলাস (fractional calculus) এর মৌলিক প্রকিয়াসমূহের একটি।

সসীম ক্ষেত্র সম্পাদনা

কোন ক্ষেত্র হচ্ছে একটি বীজগাণিতিক কাঠামো যেখানে গুণ, যোগ, বিয়োগ, ভাগ সবই সুসংজ্ঞায়িত এবং তাদের সমস্ত পরিচিত বৈশিষ্ট্য মেনে চলে। উদাহরণস্বরূপ, বাস্তব সংখ্যাসমূহ একটি ক্ষেত্র গঠন করে, যেমনটা জটিল সংখ্যাসমূহ ও মূলদ সংখ্যাসমূহও করে থাকে। এসব পরিচিত ক্ষেত্রের উদাহরণ, যাদের সবগুলোই অসীম সেট গঠন করে, তাদের থেকে আলাদা ক্ষেত্রও আছে যাদের কেবল সসীম সংখ্যক উপাদান আছে। এর সবচেয়ে সরলতম উদাহরণ হচ্ছে দুটি উপাদানবিশিষ্ট একটি ক্ষেত্র  যেখানে যোগ   দ্বারা এবং গুণ   দ্বারা সংজ্ঞায়িত।

পাবলিক-কী ক্রিপ্টোগ্রাফিতে সসীম ক্ষেত্রে সূচকীকরণের প্রয়োগ রয়েছে। যেমন, সসীম ক্ষেত্রে সূচকীকরণ গণনাগতভাবে সুলভ, কিন্তু বিচ্ছিন্ন লগারিদম (এক্সপোনেনসিয়শনের বিপরীত) গণনাগতভাবে সুলভ নয়; ডিফি-হেলম্যান কী বিনিময়- এ এই বিষয়টি ব্যবহার করা হয়।

কোন সসীম ক্ষেত্র F এর এমন একটি বৈশিষ্ট্য আছে যে সেখানে একটি মৌলিক সংখ্যা p আছে যেন F এর অন্তর্ভুক্ত সকল x এর জন্য  ; অর্থাৎ, x কে p–সংখ্যক বার নিজের সাথে যোগ করলে যোগফল শূন্য। উদাহরণস্বরূপ,  তে মৌলিক সংখ্যা p = 2 এর এই বৈশিষ্ট্য আছে। এই মৌলিক সংখ্যাকে ক্ষেত্রটির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বলা হয়। ধরা যাক, F একটি ক্ষেত্র যার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য p, এবং ফাংশন  বিবেচনা করা যাক যা F এর প্রতিটি উপাদানকে p শক্তিতে উন্নীত করে। একে বলা হয় F এর ফ্রোবেনিয়াস স্ব-রূপান্তর (Frobenius Automorphism)। নবীনের স্বপ্নের অভেদ (Freshman's dream identity)  , এর কারণে এটি ক্ষেত্রটির একটি স্ব-রূপান্তর। ফ্রোবেনিয়াস স্ব-রূপান্তর সংখ্যাতত্ত্বে গুরুত্বপূর্ণ কেননা তা F এর মৌলিক উপগুচ্ছের (prime subfield) মাধ্যমে এর গ্যালোয়া গুচ্ছ (Galois group) তৈরি করে।

বিমূর্ত বীজগণিতে সম্পাদনা

পূর্ণ-সাংখ্যিক সূচকের সূচকীকরণ বিমূর্ত বীজগণিতে মোটামুটি সাধারণ কাঠামোর জন্য সংজ্ঞায়িত করা যায়।

ধরা যাক, X একটি শক্তি-সংযোজনশীল (power-associative) দ্বিমিক প্রক্রিয়াযুক্ত সেট যা গুণ আকারে লেখা যায়। তাহলে X এর যে কোন উপাদান x এবং যে কোন অশূন্য স্বাভাবিক সংখ্যা n এর জন্য, xn , x এর  n –সংখ্যক প্রতিলিপির গুণফল হিসেবে সংজ্ঞায়িত; যা পৌনঃপুনিকভাবে

 ; দ্বারা সংজ্ঞায়িত।

এর নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্য আছে

 

যদি কোন প্রক্রিয়ায় দ্বি-পার্শ্বিক অভেদ উপাদান ১ থাকে, তাহলে x0 কে x এর যে কোন মানের জন্য ১ এর সমান বলে সংজ্ঞায়িত করা হয়।

 [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

যদি কোন প্রক্রিয়ায় দ্বি-পার্শ্বিক বিপরীতক থাকে এবং তা সংযোজনশীল হয়, তাহলে ম্যাগমা (magma) একটি গুচ্ছ হয়। x এর বিপরীতককে x−১ দ্বারা নির্দেশ করা যায় এবং তা সূচকের সকল প্রচলিত নিয়ম মেনে চলে।

 

যদি গুণ প্রক্রিয়াটি বিনিময়যোগ্য হয় (উদাহরণস্বরূপ, আবেলীয় গুচ্ছে), তাহলে নিচের বাক্যটি সত্য:

 

যদি দ্বিমিক প্রক্রিয়াটি যোগ আকারে লেখা হয়, যেমনটা আবেলীয় গুচ্ছের ক্ষেত্রে প্রায়শই করা হয়, তাহলে “সূচকীকরণ হচ্ছে পুনরাবৃত্ত গুণফল”- একে আবার ব্যাখ্যা করা যায় “গুণন হচ্ছে পুনঃপুনঃ যোগ” হিসেবে। এভাবে, সূচকীকরণের উপরিল্লিখিত প্রতিটি সূত্রের সদৃশ একটি রূপ গুণনের সূত্রাবলির মধ্যে পাওয়া যায়।

কোন সেটে কতিপয় শক্তি-সংযোজনশীল দ্বিমিক প্রক্রিয়া সংজ্ঞায়িত থাকলে এবং এর যে কোনটির পুনরাবৃত্তি সম্ভব হলে, কোন প্রক্রিয়াটির পুনরাবৃত্তি হচ্ছে- তার প্রতীকটি ঊর্ধ্বলিপিতে উল্লেখ করাটা প্রচলিত আছে। এভাবে, xn হচ্ছে x ∗ ... ∗ x, আবার x#n is x # ... # x, ∗ এবং # যে প্রক্রিয়াই হোক না কেন।

ঊর্ধ্বলিপি চিহ্ন আরও ব্যবহার করা হয়, বিশেষত গুচ্ছ তত্ত্বে, অনুবন্ধী নির্দেশ করার জন্য। তার মানে, gh = h−1gh , যেখানে gh হচ্ছে কোন একটি গুচ্ছের উপাদান। যদিও অনুবন্ধী আর সূচকীকরণ একই কতগুলো নিয়ম মেনে চলে, তবুও অনুবন্ধী কোনভাবেই পুনরাবৃত্ত গুণফলের উদাহরণ নয়। কোয়ান্ডল (quandle) হচ্ছে একটি বীজগাণিতিক কাঠামো যেখানে অনুবন্ধীর এই নিয়মগুলো কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে।

সেটসমূহে সম্পাদনা

মূল নিবন্ধ: কার্তেসীয় গুণজ

যদি n একটি স্বাভাবিক সংখ্যা এবং A যে কোন একটি সেট হয়, তাহলে An দ্বারা অনেক সময়ই A এর উপাদান দ্বারা গঠিত n-টুপল (n-tuples) সমূহের অনুক্রমিক সেট (set of ordered n-tuples) নির্দেশ করে। এটা An কে কোন সেট {0, 1, 2, ..., n−1} হতে সেট A তে গঠিত ফাংশনগুলোর সেট নির্দেশ করার সমতুল্য; n-টুপল (a0, a1, a2, ..., an−1) ঐ ফাংশনের প্রতিনিধিত্ব করে যা i কে ai এ প্রেরণ করে।  

কোন একটি অসীম অংকবাচক সংখ্যা κ ও একটি সেট A এর জন্য, Aκ প্রতীকটিও κ আকারের সেট হতে সেট A তে গঠিত সকল ফাংশনের সেট বোঝায়। একে কখনো কখনো κA লেখা হয় অঙ্কবাচক সূচকীকরণ থেকে আলাদা করে বোঝানোর জন্য, যার সংজ্ঞা নিম্নে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই সাধারণীকৃত এক্সপোনেনসিয়ালটি সেটের প্রক্রিয়াগুলির জন্য বা অতিরিক্ত কাঠামোযুক্ত সেটসমূহের জন্যও সংজ্ঞায়িত। যেমন, রৈখিক বীজগণিতে, কোন ভেক্টর ক্ষেত্রের প্রত্যক্ষ সমষ্টিকে, যথেচ্ছ সূচক সেটসমূহের মাধ্যমে প্রকাশ করা অর্থবহ। অর্থাৎ, আমরা বলতে পারি,

 ; যেখানে প্রত্যেক Vi একটি ভেক্টর ক্ষেত্র।

তাহলে যদি প্রত্যেক i এর জন্য Vi = V হয়, এর ফলে প্রাপ্ত প্রত্যক্ষ সমষ্টিকে এক্সপোনেনসিয়াল চিহ্নলিপিতে VN, অথবা সরলভাবে VN হিসেবে লেখা যায়, যেখানে প্রত্যক্ষ সমষ্টিকে পূর্বনির্ধারিত হিসেবে মেনে নেওয়া হয়। আবার আমরা সেট N কে একটি অংকবাচক সংখ্যা n দ্বারা প্রতিস্থাপিত করে Vn পেতে পারি, যদিও অংকবাচকতা n বিশিষ্ট কোন সুনির্দিষ্ট প্রমিত সেট নির্বাচন না করলে, এটি শুধুমাত্র সমরূপিতা (isomorphism) পর্যন্তই সংজ্ঞায়িত থাকে। V কে বাস্তব সংখ্যার ক্ষেত্র R ধরে নিলে (কোন ভেক্টর ক্ষেত্র তার নিজের ওপরই প্রযুক্ত বলে মনে করা হয়) এবং n কোন স্বাভাবিক সংখ্যা হলে, আমরা যে ভেক্টর ক্ষেত্র পাই তা রৈখিক বীজগণিতের আলোচনায় সবচেয়ে প্রচলিত, বাস্তব ভেক্টর ক্ষেত্র Rn

যদি কোন সূচকীকরণ প্রক্রিয়ার ভিত্তি একটি সেট হয়, তবে ঐ সূচকীকরণ প্রক্রিয়াটি হচ্ছে কার্তেসীয় গুণজ, যদি অন্যথায় উল্লেখ না থাকে। যেহেতু একাধিক কার্তেসীয় গুণজ হতে একটি n-টুপল তৈরি হয়, যা উপযুক্ত অঙ্কবাচকতা বিশিষ্ট কোন সেটের ওপর একটি ফাংশন দ্বারা উপস্থাপন করা যায়, SN এক্ষেত্রে সোজাসুজি N হতে S এর মধ্যে গঠিত সকল ফাংশনের সেট:

 

এটা অংকবাচক সংখ্যার সূচকীকরণের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এই অর্থে যে, |SN| = |S||N|, যেখানে |X| হলো X এর অঙ্কবাচকতা। যখন “২” কে {০, ১} হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, আমরা পাই, |২X| = ২|X|, যেখানে ২X, সাধারণত X এর শক্তি সেট P(X) দ্বারা নির্দেশ করা হয়।; X এর প্রতিটি উপসেট Y, X এর অন্তর্ভুক্ত ফাংশনের জন্য, xY হলে ১ ও xY হলে ০ মান গ্রহণ করে, অনন্য প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে।

শ্রেণি তত্ত্বে সম্পাদনা

মূল নিবন্ধ: কার্তেসীয় আবদ্ধ শ্রেণি

কোন কার্তেসীয় আবদ্ধ শ্রেণিতে, এক্সপোনেনসিয়াল প্রক্রিয়া ব্যবহার করে যে কোন বস্তুকে আরেকটি বস্তুর ঘাতে উন্নীত করা যায়।  এটা কার্তেসীয় গুণজকে সেটের শ্রেণিতে সাধারণ রূপ দান করে। যদি একটি কার্তেসীয় আবদ্ধ শ্রেণিতে ০ কোন প্রারম্ভিক বস্তু হয়, তাহলে এক্সপোনেনসিয়াল বস্তু ০, যে কোন প্রান্তিক বস্তু ১ এর সাথে সমরূপী হবে।

অংকবাচক ও ক্রমবাচক সংখ্যায় সম্পাদনা

মূল নিবন্ধ: অংকবাচক পাটীগণিতক্রমবাচক পাটীগণিত

সেট তত্ত্বে, অঙ্কবাচক ও ক্রমবাচক সংখ্যার জন্য এক্সপোনেনসিয়াল ফাংশন বিদ্যমান।

যদি κλ অঙ্কবাচক সংখ্যা হয়, κλ দ্বারা λ অঙ্কবাচকতা বিশিষ্ট কোন সেট হতে κ অঙ্কবাচকতার কোন সেটের মধ্যে গঠিত ফাংশনগুলোর সেট বোঝায়।[২৬] যদি κλ সসীম হয়, তাহলে তা সাধারণ পাটীগণিতীয় প্রক্রিয়ার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। যেমন, ২ উপাদানবিশিষ্ট কোন সেট থেকে গঠিত ৩-টুপলের সেট এর অঙ্কবাচকতা ৮ = ২। অঙ্কবাচক পাটীগণিতে, κ0 সর্বদাই ১ (এমনকি যদি κ একটি অসীম সংখ্যা বা শূন্য হয় তবুও)।

অঙ্কবাচক সংখ্যার সূচকীকরণ, ক্রমবাচক সংখ্যার সূচকীকরণ থেকে আলাদা, যার সংজ্ঞা দেওয়া হয় আন্তঃসসীম আরোহের (transfinite induction) সীমা প্রক্রিয়ার সীমার মাধ্যমে।

পুনরাবৃত্ত সূচকীকরণ সম্পাদনা

মূল নিবন্ধ: টেট্রেশন এবং হাইপার-অপারেশন

ঠিক যেমন স্বাভাবিক সংখ্যার সূচকীকরণ পুনরাবৃত্ত গুণন প্রক্রিয়া দ্বারা অনুপ্রাণিত, ঠিক তেমনি পুনরাবৃত্ত সূচকীকরণ এর ভিত্তিতেও একটি প্রক্রিয়ার সংজ্ঞায়ন করা সম্ভব; এই প্রক্রিয়াকে কখনো কখনো হাইপার-৪ (hyper-4) বা টেট্রেশন (tetration) বলা হয়। টেট্রেশন এর পুনরাবৃত্তি করলে তা থেকে আরেকটি প্রক্রিয়া পাওয়া যায়, এবং এভাবে চলতেই থাকে, এই ধারণাকে বলা হয় হাইপার-অপারেশন (hyperoperation)। এই প্রক্রিয়াগুলোর অনুক্রমকে অ্যাকারম্যান ফাংশননুথ এর ঊর্ধ্ব-তীর চিহ্নলিপি দ্বারা প্রকাশ করা হয়। ঠিক যেমন সূচকীকরণ, গুণ প্রক্রিয়া থেকে দ্রুততরভাবে বাড়তে থাকে, যেটা আবার যোগ প্রক্রিয়া থেকে দ্রুততরভাবে বর্ধনশীল; ঠিক তেমনি টেট্রেশন হচ্ছে সূচকীকরণ অপেক্ষা অধিকতর বর্ধনশীল। যোগ, গুণ, সূচকীকরণ এবং টেট্রেশন এর মান (৩,৩) বিন্দুতে নির্ণয় করলে প্রাপ্ত মান যথাক্রমে ৬, ৯, ২৭ এবং ৭ ৬২৫ ৫৯৭ ৪৮৪ ৯৮৭ (= ৩২৭ = ৩৩৩ = ৩)।

শক্তির সীমা সম্পাদনা

শূন্যের শূন্যতম শক্তি থেকে সীমার কতগুলো উদাহরণ পাওয়া যায় যেগুলো অনির্ণেয় আকৃতি এর মত। এই উদাহরণগুলোতে, যেখানে দুই চলকবিশিষ্ট কোন ফাংশন xy এর (০,০) বিন্দুতে সীমার অস্তিত্ব নেই, সেক্ষেত্রেও সীমার অস্তিত্ব আছে, কিন্তু তার মান ভিন্ন। সেক্ষত্রে ফাংশনের কোন বিন্দুগুলোতে তার সীমা বিদ্যমান, তা বিবেচনা করা যেতে পারে।

আরও স্পষ্টভাবে বললে, ধরা যাক কোন ফাংশন f(x, y) = xy , D = {(x, y) ∈ R2 : x > 0} -এ সংজ্ঞায়িত। তাহলে D কে R2 এর উপসেট হিসেবে দেখা যায় (অর্থাৎ, সকল ক্রমজোড় (x, y) যেখানে x, y বর্ধিত বাস্তব সংখ্যা রেখা R = [−∞, +∞], এর অন্তর্ভুক্ত, যা গুণফল টপোলজির (product topology) সাথে অন্বিত ), যা ফাংশনটির ঐ বিন্দুগুলো ধারণ করে যেখানে তার সীমা আছে।

প্রকৃতপক্ষে, D এর সকল আহরণ বিন্দুতেই (accumulation points) f of, এর সীমা আছে, ব্যতিক্রম শুধু (0, 0), (+∞, 0), (১, +∞) এবং (১, −∞)।[২৭] সেই অনুসারে, যখন 0 ≤ x ≤ +∞, −∞ ≤ y ≤ +∞, তখন অবিচ্ছিন্নতার দ্বারা xy এর শক্তিসমূহের সংজ্ঞায়ন করা যায়, এর ব্যতিক্রম ঘটে  00, (+∞)0, ১+∞ and ১−∞ এর ক্ষেত্রে, যেগুলো অনির্ণেয় আকারেই রয়ে যায়।

অবিচ্ছিন্নতার এই সংজ্ঞা মোতাবেক, আমরা পাই:

·       x+∞ = +∞ এবং x−∞ = 0, যখন ১ < x ≤ +∞।

·       x+∞ = 0 এবং x−∞ = +∞, যখন 0 ≤ x < ১।

·       0y = 0 এবং (+∞)y = +∞, যখন 0 < y ≤ +∞।

·       0y = +∞ এবং (+∞)y = 0, যখন −∞ ≤ y < 0।

x এর ধনাত্মক মানের জন্য xy এর সীমা নিয়ে এই মানগুলো পাওয়া যায়। এই পদ্ধতিতে x < 0 হলে,  xy এর কোন সংজ্ঞা পাওয়া যায় না, কেননা, (x, y) জোড় যেখানে x < 0, সেগুলো D এর আহরণ বিন্দু নয়।

অন্যদিকে, যখন n is একটি পূর্ণ সংখ্যা, তখন xn, ঋণাত্মক মানসহ x এর সকল মানের জন্যই অর্থবহ। এতে করে উপরে ঋণাত্মক n এর জন্য যে সংজ্ঞা, 0n = +∞ পাওয়া গিয়েছিল, তা n এর বিজোড় মানের জন্য অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করে, কারণ সেক্ষেত্রে, x যদি ধনাত্মক মানের মধ্য দিয়ে  0 এর নিকটবর্তী হতে থাকে, তাহলে xn → +∞, কিন্তু ঋণাত্মক মানের বেলায় তা নয়।

পূর্ণ-সাংখ্যিক সূচকের সাহায্যে কার্যকর গণনা-প্রক্রিয়া সম্পাদনা

পুনরাবৃত্ত গুণনের মাধ্যমে bn এর মান নির্ণয়ে n − 1 সংখ্যক বার গুণ করতে হয়, কিন্তু এটা আরও সুচারূরূপে নির্ণয় করা যায়, যা নিচের উদাহরণের সাহায্যে দেখানো হয়েছে। ২১০০ এর মান বের করতে হলে, লক্ষ্য করুন যে, ১০০ = ৬৪ + ৩২ + ৪। ক্রমানুসারে নিচের মানগুলো বের করুন:

১. ২ = ৪

২. (২) = ২ = ১৬

৩. (২) = ২ = ২৫৬

৪. (২) = ২১৬ = ৬৫,৫৩৬

৫. (২১৬) = ২৩২ = ৪,২৯৪,৯৬৭,২৯৬

৬. (২৩২) = ২৬৪ = ১৮,৪৪৬,৭৪৪,০৭৩,৭০৯,৫৫১,৬১৬

৭. ২৬৪৩২ = ২১০০ = ১,২৬৭,৬৫০,৬০০,২২৮,২২৯,৪০১,৪৯৬,৭০৩,২০৫,৩৭৬

এই ধাপগুলো ব্যবহার করলে ৯৯ বারের পরিবর্তে কেবল ৮ বার গুণ করতে হয় (যেহেতু শেষ ধাপের গুণফলে দুই বার গুণ করতে হয়)।

সাধারণভাবে, bn এর মান নির্ণয়ে যত বার গুণন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয় তার সংখ্যা, বর্গকরণের মাধ্যমে সূচকীকরণ বা (আরও সাধারণভাবে) সংযোজন-শৃংখল সূচকীকরণ ব্যবহার করে  Θ(log n)-এ কমিয়ে আনা যায়। bn এর জন্য ন্যূনতম-সংখ্যক গুণনের অনুক্রম বের করা (সূচকের জন্য সর্বনিম্ন দৈর্ঘ্যের সংযোজন-শৃংখল ) বেশ কঠিন একটা সমস্যা, যার জন্য এখন পর্যন্ত সর্বোৎকৃষ্ট কোন সমাধান-পদ্ধতি জানা নেই (দেখুন উপসেট সমষ্টি সমস্যা), কিন্তু তুলনামূলকভাবে কার্যকর অনেক অনুসন্ধানমূলক সমাধান-পদ্ধতি রয়েছে।[২৮]

ফাংশনের নামে এক্সপোনেনসিয়াল চিহ্নলিপি সম্পাদনা

কোন ফাংশনের নাম বা প্রতীকের পর পূর্ণ-সংখ্যার ঊর্ধ্বলিপি বসানো, যেন ফাংশনটিকে কোন ঘাতে উন্নীত করা হচ্ছে, এর মানে সাধারণত পুনরাবৃত্ত গুণন না বুঝিয়ে বরং ফাংশন সংযোজন এর পুনরাবৃত্তি বোঝায়। এজন্য,   এর মানে  বোঝানো যেতে পারে; বিশেষত,  সাধারণত  এর বিপরীত ফাংশন নির্দেশ করে। ফ্র্যাকটাল (fractals) এবং গতিশীল ব্যবস্থার (dynamical systems) আলোচনায় পুনরুক্ত ফাংশন (iterated function) এর ধারণা দরকারি। ব্যাবেজই ছিলেন প্রথম যিনি ফাংশনের কার্যকর বর্গমূল  নির্ণয়ের সমস্যা নিয়ে গবেষণা করেছিলেন।

ঐতিহাসিক কারণে ত্রিকোণমিতিক এবং অধিবৃত্তীয় ফাংশনে প্রয়োগের ক্ষেত্রে এই চিহ্নলিপির সুনির্দিষ্ট ও বিচিত্র ব্যাখ্যা রয়েছেঃ ফাংশনের সংক্ষিপ্তরূপের ওপর কোন ধনাত্মক সূচক বসালে ফাংশনটি ঐ ঘাতে উন্নীত বোঝায়, যদিও সূচক -১ হলে তা আবার বিপরীত ফাংশনকে নির্দেশ। তার মানে,  হচ্ছে   এর বন্ধনীমুক্ত সংক্ষিপ্ত রূপ, যেখানে   দ্বারা সাইন এর বিপরীত ফাংশন নির্দেশ করে, একে   ও বলা হয়। প্রতিটি ত্রিকোণমিতিক ও অধিবৃত্তীয় ফাংশন এর বিপরীতকের নিজস্ব নাম ও সংক্ষিপ্তরূপ আছে; উদাহরণস্বরূপ,  ; বিপরীত ফাংশনের জন্য,  । একই রকম প্রথা লগারিদমের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, যেখানে   বলতে সাধারণত  বোঝায়,  নয়।

প্রোগ্রামিং এর ভাষায় সম্পাদনা

প্রোগ্রামিং ভাষাসমূহ সাধারণত সূচকীকরণকে অন্বিত অপারেটর (infix operator) বা (উপসর্গ) ফাংশন হিসেবে প্রকাশ করে থাকে, কেননা এগুলো রৈখিক চিহ্নলিপি যেগুলো ঊর্ধ্বলিপি-সহায়ক নয়।

অন্যান্য অনেক প্রোগ্রামিং ভাষায় সূচকীকরণের জন্য গাঠনিক সহায়তার অভাব আছে, কিন্তু তাদের লাইব্রেরি ফাংশন রয়েছে:

  • pow (x , y): C, C++
  • Math.Pow (x , y): C#
  • math.pow (X , Y): Eang

সাধারণ সূচকীকরণের তুলনায়, নির্দিষ্ট কিছু সূচকের জন্য আরও দ্রুত xy নির্ণয়ের বিশেষ উপায় রয়েছে। এর মধ্যে ক্ষুদ্র ধনাত্মক ও ঋণাত্মক পূর্ণ সংখ্যা (x2 এর বদলে x*x ; x−1 এর বদলে 1/x) এবং মূলসমূহ (x0.5 এর বদলে sqrt(x) ; x1/3 এর বদলে cbrt(x) ) অন্তর্ভুক্ত।

সকল প্রোগ্রামিং ভাষা অবশ্য সূচকীকরণের জন্য একই সংযোজন প্রথা মেনে চলে নাঃ Wolfram language, গুগল অনুসন্ধান এবং অন্য অনেকে ডান-সংযোজন (অর্থাৎ, a^b^c এর মান a^(b^c) হিসেবে বের করা হয়), অনেক কম্পিউটার প্রোগ্রাম যেমন- মাইক্রোসফট অফিস এক্সেল এবং Matlab বামদিকে সংযোজন করে (অর্থাৎ, a^b^c এর মান (a^b)^c হিসেবে বের করা হয়)।

আরো দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Ball, Walter William Rouse (১৮৮৮)। A Short Account of the History of Mathematics (ইংরেজি ভাষায়)। Macmillan। 
  2. "Mathematical notation"www-history.mcs.st-andrews.ac.uk। ২০১৯-০৬-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-০৭ 
  3. "The Sand Reckoner"Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৬-১৭। 
  4. "Al-Qalasadi (1412-1486)"www-history.mcs.st-andrews.ac.uk। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-০৮ 
  5. Cajori, Florian (২০০৭)। A History of Mathematical Notations; Vol I.। Cosimo Classics। পৃষ্ঠা p. 344। আইএসবিএন 1-60206-684-1 
  6. Descartes, René (1596-1650) Auteur du texte (১৬৩৭)। Discours de la méthode pour bien conduire sa raison et chercher la vérité dans les sciences , plus la dioptrique, les météores et la géométrie qui sont des essais de cette méthode (ফরাসি ভাষায়)। 
  7. Stifel, Michael (১৫৪৪)। Arithmetica integra, Liber III (Book 3), Caput III (Chapter 3): De Algorithmo numerorum Cossicorum. (On algorithms of algebra.)। পৃষ্ঠা ২৩৬। 
  8. "World Wide Words: Zenzizenzizenzic"World Wide Words (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-২০ 
  9. "Definition of INVOLUTION"www.merriam-webster.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-২০ 
  10. "Introductio in analysin infinitorum"Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৯-১২। 
  11. Hodge, Jonathan K.; Schlicker, Steven; Sundstrom, Ted (২০১৩-১২-২১)। Abstract Algebra: An Inquiry Based Approach (ইংরেজি ভাষায়)। CRC Press। আইএসবিএন 9781466567061 
  12. Achatz, Thomas (২০০৫)। Technical Shop Mathematics (৩য় সংস্করণ)। Industrial Press। পৃষ্ঠা ১০১। আইএসবিএন 978-0-8311-3086-2 
  13. Robinson, Raphael M. (১৯৫৮)। "A report on primes of the form k · 2n + 1 and on factors of Fermat numbers" (পিডিএফ)Proc. American Mathematical Society। ৯ (৫): ৬৭৭। 
  14. Anton, Howard; Bivens, Irl; Davis, Stephen। Calculus: Early Transcendentals (9th ed.)। John Wiley & Sons। পৃষ্ঠা p. 28। 
  15. Denlinger, Charles G. (২০১১)। Elements of Real Analysis। Jones and Bartlett। পৃষ্ঠা ২৭৮–২৮৩। আইএসবিএন 978-0-7637-7947-4 
  16. Thomas H. Cormen; Charles E. Leiserson; Ronald L. Rivest; Clifford Stein (২০০১)। Introduction to Algorithms (second ed.। MIT Press। আইএসবিএন 978-0-262-03293-3 
  17. Paul Cull; Mary Flahive; Robby Robson (২০০৫)। Difference Equations: From Rabbits to Chaos (Undergraduate Texts in Mathematics ed.)। Springer। পৃষ্ঠা ৩৫১। আইএসবিএন 978-0-387-23234-8 
  18. "Principal Root of Unity"MathWorld 
  19. "Complex number to a complex power may be real"cut-the-knot 
  20. Steiner J, Clausen T, Abel NH (১৮২৭)। ""Aufgaben und Lehrsätze, erstere aufzulösen, letztere zu beweisen"" [Problems and propositions, the former to solve, the later to prove]। Journal für die reine und angewandte Mathematik: ২: ২৮৬–২৮৭। [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  21. Nicolas Bourbaki (১৯৭০)। Algèbre। Springer। 
  22. Bloom, David M. (১৯৭৯)। Linear Algebra and Geometry। পৃষ্ঠা ৪৫। আইএসবিএন 978-0-521-29324-2 
  23. Anton, Howard (২০১০)। Elementary Linear Algebra। অধ্যায় ১: Wiley। আইএসবিএন 0470458216 
  24. Strang, Gilbert (২০০৬)। Linear algebra and its applications (৪র্থ সংস্করণ)। অধ্যায় ৫: Brooks-Cole। আইএসবিএন 0030105676 
  25. Hille Einar, Phillips Ralph S. (১৯৯৬)। Functional analysis and Semi-Groups। American Mathematical Society। আইএসবিএন 0821810316 
  26. Bourbaki, N. (২০০৪)। Elements of Mathematics, Theory of Sets। III.§৩.৫: Springer-Verlag। 
  27. Bourbaki, N. (১৯৪০)। Topologie générale [সাধারণ টপোলজি]। 
  28. Gordon, Daniel M. (১৯৯৮)। "A Survey of Fast Exponentiation Methods"Journal of Algorithms (ইংরেজি ভাষায়)। 27 (1): 129–146। ডিওআই:10.1006/jagm.1997.0913 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা