ঋণ সালিশি বোর্ড হলো একটি সরকারি আইনি সংস্থা, যেটি ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতের বাংলা প্রদেশে গঠন করা হয় অসহায় ও ঋণগ্রস্থ কৃষককে সহায়তা এবং আর্থিক সুবিধা দেয়ার মাধ্যমে নিজেদের জমির দখল নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য।[১]

ইতিহাস সম্পাদনা

পূর্ব বাংলার ভূমিহীন ও নির্যাতিত কৃষককুল ১৯২৮ সালের শেষ দিকে বিশ্বব্যপী চলমান ‘মহামন্দা’ দ্বারা আক্রান্ত হওয়ায় কৃষিপণ্যের মূল্য কমে যাওয়ায় সুদী-কারবারের জালে জর্জড়িত হয়ে পড়ে অর্থলগ্নিকারকদের নিপীড়নে চরমভাবে পর্যুদস্ত হতে থাকে।[২] ফলে লগ্নিকারকরা ঋণগ্রস্তদের জমিজমা ছিনিয়ে নিতে থাকায় অসহায় কৃষকরা তাদের শেষ সম্বল ভিটে-মাটি-জমিটুকু হারিয়ে নিঃস্ব হতে থাকে।[৩] এর প্রেক্ষিতে ১৯৩৫ সালে ‘ঋণ সালিশি বোর্ড’ গঠনের জন্য সুপারিশ করা হয়[৩] এবং পরবর্তীতে ১৯৩৬ সালের বেঙ্গল এগ্রিকালচারাল ডেটরস অ্যাক্ট (১৯৩৬-এর বেঙ্গল অ্যাক্ট ৭)-এর অধীনে ১৯৩৭ সালে সারা বাংলায় প্রায় ১১ হাজার ঋণ সালিশি বোর্ড স্থাপন করা হয়।[৪]

প্রভাব সম্পাদনা

এই আইনের ফলে কৃষকরা সুদখোর মহাজনের কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার সাথে সাথে তাদের হারানো সম্পত্তি ও কৃষি জমি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়;[৫] এমনকি ৪০ বছর পূর্বে সুদের দায়-দেনার কারণে লগ্নীকারী কর্তৃক দখল করে নেয়া জমিও ফেরত পায় সাধারণ কৃষক।[৪] এই আইন প্রণয়নের ফলে জমিদারগণ তাদের প্রজাদেরকে দেয়া ঋণ এবং অন্যান্য দেনা মাফ করে দিতে বাধ্য হোন এবং ফলে তারা কিছুটা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন।[৬]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "'শেরেবাংলার ব্যক্তিত্ব ও দূরদর্শিতা অনুসরণীয়'"দৈনিক আমাদের সময় অনলাইন। ২৬ এপ্রিল ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "মুকুটহীন সম্রাট ফজলুল হক"বাংলা ট্রিবিউন অনলাইন। ২৭ এপ্রিল ২০১৭। ৩১ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  3. "কৃষকের জমি আছে, বাজার নেই"দৈনিক যুগান্তর অনলাইন। ২৯ জুন ২০১৭। ২ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  4. "বাংলার অবিসংবাদিত নেতা শেরে বাংলা"দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন অনলাইন। ২৭ এপ্রিল ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  5. "বাংলার জাতীয় নেতা শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক"ন্যাশনাল নিউজ ২৪ ডটকম অনলাইন। ৩১ অক্টোবর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. "সাক্ষাৎকার : শ্রেণির গণ্ডিতে আটকে ছিলেন না রবীন্দ্রনাথ: বদরুদ্দীন উমর"এনটিভি অনলাইন। ৬ আগস্ট ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৭ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা