উমানন্দ দ্বীপ (অসমীয়া উমা, শিবের স্ত্রী, হিন্দু দেবী পার্বতীর অন্য নাম; এবং আনন্দ, থেকে উদ্ভূত) হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে সবথেকে ছোট নদীদ্বীপ। যা ভারতের উত্তরপূর্বব্রতী একটি রাজ্য আসামের গুয়াহাটিতে অবস্থিত। ব্রিটিশরা এই দ্বীপটিকে এর আকৃতির জন্য ময়ূর দ্বীপ নামে নামকরণ করে।

উমানন্দ দ্বীপ
উমানন্দ দ্বীপ
ভূগোল
স্থানাঙ্ক২৬°১১′৪৭″ উত্তর ৯১°৪৪′৪২″ পূর্ব / ২৬.১৯৬৩৯° উত্তর ৯১.৭৪৫০০° পূর্ব / 26.19639; 91.74500
সংলগ্ন জলাশয়ব্ৰহ্মপুত্ৰ নদ
প্রশাসন

পৌরাণিক কাহিনী সম্পাদনা

হিন্দু শাস্ত্র মতে, শিব তার স্ত্রী পার্বতীর সুখ স্বাচ্ছন্দের জন্য এই দ্বীপ সৃষ্টি করেন। জনপ্রচলিত বিশ্বাস মতে শিব এখানে ভয়ানন্দ রূপে বিরাজমান। কালিকা পুরাণের এক আখ্যান মতে, সতীর মৃত্যুর পর শিব ঘোর তপস্যায় নিমগ্ন ছিলেন। তপস্যা ভেঙ্গে দেওয়ায় ক্রোধিত শিব তার ত্রিনয়নের দ্বারা কামদেবকে উমানন্দের এই স্থানে ভস্ম করেন। এজন্য এর অন্য নাম হচ্ছে ভস্মাঞ্চল (বাংলা/অসমীয়া: ভস্ম, "ছাই"; এবং অচল, "পাহাড়"; আক্ষরিক অর্থে, "ছাইয়ের পাহাড়")।[১]

ইতিহাস সম্পাদনা

ঐতিহাসিক মতে, ১৬৯৪ সালে, আহোম রাজা চুপাৎফা তার মন্ত্রী গড়গঞা সন্দিকৈ ফুকনকে উমানন্দ মন্দির নামে একটি হিন্দু মন্দির নির্মাণের আদেশ দেন। ১৮৯৭ সালে সংগঠিত একটি ভূমিকম্প এই মন্দিরের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। তবে পরবর্তীতে একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী এর পুনঃনির্মাণ করেন। এই মন্দিরে হিন্দু বৈষ্ণব এবং শৈবধর্মের উভয় শৈলীর মিশ্রণ এবং স্পষ্ট নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায়। এখানে গণেশ, শিব, পার্বতী, বিষ্ণু এবং অন্যান্য দেব-দেবীর অসমীয়া শৈলীর মূর্তি রয়েছে। পুনঃনিৰ্মাণ এবং মেরামতের সময়ে এই মন্দিরে কিছু বৈষ্ণবী লিপি ক্ষোদিত করা হয়েছে। উমানন্দ দ্বীপে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন পাথরেও ভাস্কর্যের নমুনা দেখিতে পাওয়া যায়।

উৎসব সম্পাদনা

উমানন্দে মহাশিবরাত্রি ঘটাকরে পালন করা হয়। শিবরাত্রির জন্য উমানন্দ এবং ব্রহ্মপুত্রের তীরে মেলা বসে। এই মন্দিরে সোমবারকে সবচেয়ে পবিত্র দিন হিসেবে গণ্য করা হয়। এবং প্ৰতি অমাবস্যাতে উমানন্দে দূর দূরান্ত থেকে ভক্তদের সমাগম ঘটে।

জীববৈচিত্র্য সম্পাদনা

উমানন্দ দ্বীপ হচ্ছে বিপন্ন প্রজাতির সোনালী বানরের আবাসভূমি।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Umananda island uncovered | India Water Portal"www.indiawaterportal.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০৭