উজবেকিস্তানের অর্থনীতি

উজবেকিস্তানের অর্থনীতি খনিজ সম্পদের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। উজবেকিস্তানে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম স্বর্ণ মজুদ রয়েছে। দেশটি প্রতি বছর ৮০ টন সোনা খনি থেকে উত্তোলন করে থাকে যা বিশ্বে সপ্তম শীর্ষস্থানীয়। কপার মজুদে এ দেশের অবস্থান বিশ্বে দশম ও ইউরেনিয়ামের ক্ষেত্রে দ্বাদশ। তন্মধ্যে ইউরেনিয়াম উৎপাদনে এটি সপ্তম স্থান দখল করে আছে।[২][৩][৪] এছাড়াও, তৈল ও গ্যাস উৎপাদিত হয়। উজবেকনেফতেগ্যাস উজবেকিস্তানের জাতীয় গ্যাস কোম্পানি।

উজবেকিস্তানের অর্থনীতি
তাসখন্দের একটি বাণিজ্যিক ভবন
সম (UZS) = ১০০ তিয়িন
পঞ্জিকাবর্ষ
বাণিজ্যিক সংস্থা
সিআ্এসইসিও; পর্যবেক্ষক মর্যাদা - ডব্লিউটিও
পরিসংখ্যান
জিডিপি$১৭০.৩ বিলিয়ন (২০১৪)
জিডিপি ক্রম৭০তম (পিপিপি, ২০১২)
জিডিপি প্রবৃদ্ধি
৭% (প্রকৃত, ২০১৪ প্রাক্কলন)
মাথাপিছু জিডিপি
$৫,৬০০ (২০১৪ প্রাক্কলন)
খাত অনুযায়ী জিডিপি
কৃষি ১৮.৫%, শিল্প কারখানা ৩২%, সেবাখাত ৪৯.৫% (২০১৪ প্রাক্কলন)
১২.১% (সিপিআই, ২০১৪ প্রাক্কলন)
দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থিত জনসংখ্যা
১৭% (২০১১)
৩৬.৮ (২০০৩)
শ্রমশক্তি
১৭.২৪ মিলিয়ন (২০১৪)
পেশা অনুযায়ী শ্রমশক্তি
কৃষি ২৫.৯%, শিল্প কারখানা ১৩.২%, সেবাখাত ৬০.৯% (২০১২ প্রাক্কলন)
বেকারত্ব৪.৯% রাষ্ট্রীয়ভাবে, এছাড়াও ২০% বেকার (২০১৪ প্রাক্কলন)
প্রধান শিল্পসমূহ
বস্ত্র, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, যন্ত্রাংশ নির্মাণ, ধাতব পদার্থ, খনি, হাইড্রোকার্বন, রাসায়নিক পদার্থ
৮৭তম[১]
বৈদেশিক
রপ্তানি$১৩.৩২ বিলিয়ন (২০১৪ প্রাক্কলন)
রপ্তানি পণ্য
জ্বালানী সামগ্রী, তলা, স্বর্ণ, লৌহ ও লৌহবিহীন পদার্থ, খাদ্যসামগ্রী, মেশিনারী, গাড়ী
প্রধান রপ্তানি অংশীদার
 চীন ২৮.০%
 রাশিয়া ১৯.৪%
 কাজাখস্তান ১২.৬%
 তুরস্ক ১১.৯%
 বাংলাদেশ ৮.২%
আমদানি$১২.৫ বিলিয়ন (২০১৪ প্রাক্কলন)
আমদানি পণ্য
মেশিনারি ও যন্ত্রাংশ, খাদ্যসামগ্রী, রাসায়নিক দ্রব্যাদি, লৌহ ও লৌহবিহীন পদার্থ
প্রধান আমদানি অংশীদার
 চীন ২০.৫%
 রাশিয়া ২০.০%
 দক্ষিণ কোরিয়া ১৫.৪%
 কাজাখস্তান ১১.১%
 জার্মানি ৪.৩%
 তুরস্ক ৪.০%
এফডিআই স্টক
অজ্ঞাত
$৮.৭৫১ বিলিয়ন (৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪)
সরকারি অর্থসংস্থান
জিডিপি’র ৭.৫% (২০১৪ প্রাক্কলন)
রাজস্ব$১৮.৬৭ বিলিয়ন (২০১৪ প্রাক্কলন)
ব্যয়$১৯.২৭ বিলিয়ন (২০১৪ প্রাক্কলন)
অর্থনৈতিক সহযোগিতাযুক্তরাষ্ট্র থেকে $১৭২.৩ মিলিয়ন (২০০৫)
বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার
$১৮ বিলিয়ন (৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪ প্রাক্কলন)
মূল উপাত্ত সূত্র: সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক
মুদ্রা অনুল্লেখিত থাকলে তা মার্কিন ডলার এককে রয়েছে বলে ধরে নিতে হবে।

১৯৯৮ থেকে ২০০৩ সালে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ৪% ছিল যা পরবর্তীতে ৭%-৮% পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।[৫] আইএমএফের হিসাবে ২০০৮ সালের জিডিপি ১৯৯৫ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। ২০১৩ সালের তথ্য মোতাবেক মাথাপিছু আয় ১,৯০০ মার্কিন ডলার।[৬]

খাতসমূহ সম্পাদনা

২০১১ সালে তুলা উৎপাদনে বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম ও রপ্তানীতে পঞ্চম বৃহত্তম দেশের মর্যাদা পায়।[৭] এছাড়াও প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা, তামা, তেল, রূপা ও ইউরেনিয়াম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে উত্তোলন করা হয়।[৮]

কৃষিক্ষেত্রে ২৬% উজবেক কাজ করে এবং ২০১২ সালের তথ্য মোতাবেক মোট জিডিপি’র ১৮% ছিল। চাষযোগ্য জমির পরিমাণ মোট আয়তনের ১০% বা ৪.৪ মিলিয়ন হেক্টর। বেকারত্বের হার খুবই কম। গ্রামাঞ্চলে এ হার ২০%। তুলা উৎপাদনকালীন সময়ে ছাত্র-শিক্ষক মাঠে স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে থাকে।[৯] দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্যাংকনোট ছাপানোয় উজবেকিস্তানের তুলা ব্যবহার করা হয়।[১০] উজবেকিস্তানে শিশুশ্রম বিক্রয়ের কারণে তেস্কো,[১১] সিএন্ডএ,[১২] মার্কস এন্ড স্পেন্সার, গ্যাপ ও এইচএন্ডএম উজবেক তুলা ব্যবহার করে না।[১৩] দেশের প্রধান রপ্তানী পণ্য হিসেবে রয়েছে স্বর্ণ ও তুলা।

অবস্থান সম্পাদনা

সিআইএসভূক্ত দেশসমূহের মধ্যে দেশটির মাথাপিছু আয় সর্বনিম্ন।[১৪] বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো উজবেকিস্তানের বাজারে প্রবেশের অন্যতম বাঁধা হিসেবে মুদ্রা বিনিময়কে দেখছেন। ১৯৯৭ সালে দেশের মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৫০% যা ২০০২ সালে ২২%-এ নেমে আসে। ২০০৩ সাল থেকে এ হার ১০%-এর কম ছিল। কঠোর অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণের কারণে ২০০৪ সালে ৩.৮%-এ পরিণত হয়। বিদেশ থেকে পণ্য আমদানীতে উজবেক সরকার বিভিন্ন পন্থায় শর্তাবলী আরোপ করেছেন। তন্মধ্যে, উচ্চমাত্রার আবগারী শুল্ক অন্যতম। ২০১৩ সালে ১১০টি জয়েন্ট স্টক কোম্পানি এতে লেনদেন করে।

২০১০ সালে ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সংরক্ষিত ছিল।[১৫] এইচএসবিসি জরীপে উজবেকিস্তান বিশ্বের ২৬তম দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে পরিচিত।[১৬]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Doing Business in Uzbekistan 2016"World Bank। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১০-২৮ 
  2. Supply of Uranium ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ মে ২০০৮ তারিখে. World Nuclear Association. August 2012.
  3. Uranium resources ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২২ মে ২০০৮ তারিখে. European Nuclear Society
  4. The World Mineral Statistics dataset: 100 years and counting. British Geological Survey
  5. IMF World Economic Outlook Database, October 2007
  6. Field Listing :: GDP – per capita (PPP) ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে. The World Factbook
  7. "The National Cotton Council of America: Rankings"। ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১২ 
  8. "Country Profile: Uzbekistan"। IRIN। ২৭ আগস্ট ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০১০ 
  9. "Programmes | Child labour and the High Street"। BBC News। ৩০ অক্টোবর ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০১০ 
  10. "Uzbekistan: Korean government uses Uzbek cotton to make banknotes"। BS-AGRO। ১২ ডিসেম্বর ২০১৩। ২০ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৫ 
  11. "Tesco Ethical Assessment Programme" (পিডিএফ)। ৬ জুলাই ২০১০ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০১০ 
  12. C&A। "C&A Code of Conduct for Uzbekistan"। C-and-a.com। ২৭ মে ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০১০ 
  13. Saidazimova, Gulnoza (১২ জুন ২০০৮)। "Central Asia: Child Labor Alive And Thriving"। Radio Free Europe/Radio Liberty। ২৭ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০০৮ 
  14. 2011 Investment Climate Statement – Uzbekistan. US Department of State, March 2011
  15. "Uzbekistan" (Russian ভাষায়)। The world bank। ৫ জুন ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৫ 
  16. "the World in 2050" (পিডিএফ)। HSBC। ১২ মে ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৫ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

Uzbekistan: Accession of Uzbekistan to the Free Trade Area (FTA) CIS