উইমেন্স বোট রেস ২০১৪
৬৯তম উইমেন্স বোট রেস প্রতিযোগিতা ২০১৪ সালের ৩০ মার্চ জুডিথ প্যাকার-এর আম্পারিংয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় বোড ক্লাব ও ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় বোড ক্লাব এর কর্মীদের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। ক্যামব্রিজ কর্মীদের সবাই ব্রিটিশ ছিল। অপরদিকে অক্সফোর্ড কমীদের মধ্যে কানাডা, সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের রোয়ার ছিল। অক্সফোর্ড ৫ মিনিট ৫০ সেকেন্ডে চার লেন্থ-এর বিনিময়ে জয়লাভ করে যা ছিল তাদের ২০১৩ সাল থেকে ধারাবাহিক দ্বিতীয় জয়। এটি ক্যামব্রিজের আনুকূল্যে ৪১-২৮ পয়েন্টের একটি সার্বিক রেকর্ড। প্রতিযোগিতাটি হেনলি নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার অংশ হিসাবে ২ কিলোমিটার সহজ পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়।
৬৯তম মহিলা নৌকা বাইচ | |||
---|---|---|---|
তারিখ | ৩০ মার্চ ২০১৪ | ||
বিজয়ী | অক্সফোর্ড | ||
বিজয়ের ব্যবধান | ৪ লেন্থ | ||
জয়লাভের সময় | ৫ মিনিট ৫০ সেকেন্ড | ||
সার্বিক রেকর্ড (ক্যামব্রিজ–অক্সফোর্ড) | ৪১ - ২৮ | ||
আম্পায়ার | জুডিথ প্যাকার | ||
|
পটভূমি
সম্পাদনামহিলাদের এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতাটি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় মহিলা বোড ক্লাব এবং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় মহিলা বোড ক্লাব এর মধে অনুষ্ঠিত একটি গুরুত্বপূর্ণ আট মাঝির নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা, যা ১৯২৭ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বিগত বছরে ক্যামব্রিজকে ৪১-২৭ পয়েন্টে হারিয়ে অক্সফোর্ড চ্যাম্পিয়ন হিসেবে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।[১] এটি ছিল হেনলি নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার অংশ হিসাবে আয়োজিত সর্বশেষ আয়োজন, যা ১৯২৪ সাল থেকে হেনলি রয়েল রিগাটা ব্যবহারের জন্য পাশাপাশি ২ কিলোমিটার (১.২ মাইল) লম্বা টেমস নদীর উপর উল্লেখত স্ট্রেইট পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল।[২] ২০১৫ সালে প্রতিযোগিতাটিকে চ্যাম্পিয়নশীপ পর্যায়ে উন্নীত করা হয়, যা পুরুষদের প্রতিযোগিতা সাথে একই দিনে একই মাঠে আয়োজন করা হয়।[৩]
ক্যামব্রিজের সাত নাম্বার ক্যাথেরিন ফুট মন্তব্য করেন, “প্রশিক্ষনের পরে, আমি একধাপ পিছনে তাকাই এবং চিন্তা করি, ওয়াও! আমি এই মহান ঐতিহ্যের একটি অংশ’, এখানে অন্য কিছু আছে, এই ইভেন্টের জন্য আমি বরং প্রশিক্ষনের চেয়েও বেশি কিছু করতে চাই ।” অপরদিকে অক্সফোর্ডের স্ট্রোক আম্বার ডি ভিরি বলেন, “সমস্ত প্রশিক্ষণ এই উইকএন্ড শেষ হয়েছে। পরের বছর এটি নিঃস্বন্দেহে আকর্ষনীয় হবে এবং এ থেকে আমরা কিছু শিক্ষা পেয়েছি, কিন্তু আমি একজন কর্মী হিসাবে শুধু রোববার সম্পর্কেই ভেবেছি।”[৪] এ বছরের প্রতিযোগিতায় অ্যাম্পায়ার ছিলেন জুডিথ প্যাকার এবং স্পঞ্জর করেন ধারাবাহিকভাকে তৃতীয় বছরের জন্য নিউ ইয়র্ক মেলন ব্যাংক এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসাবে নিউটন ইনভেস্টম্যান্ট ম্যানেজম্যান্ট।[৩][৫]
প্রতিযোগি
সম্পাদনাপ্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য দুটি বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রতিযোগি বাছাই প্রতিযোগিতা ১৯ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। এ বাছাই প্রতিযোগিতা চ্যাম্পিয়নশীপ কোর্সের একাংশ টাইডওয়ে-এ অনুষ্ঠিত হয়, যা ছিল এই প্রতিযোগিতার ইতিহাসে এবারই প্রথম। বাছাই প্রতিযোগিতায় ক্যামব্রিজের নাজ নাজ এবং উইঙ্ক উইঙ্ক নামে দুটি নৌকা (সে নো মোর নামে রিভার্জ নৌকা সহ তিনটি নৌকা) অংশগ্রহণ করে।[৬] অপরদিকে অক্সেফোর্ডের ট্রাইল বোড ক্লিওপেট্রা ও বোডিকা অংশগ্রহণ করে।[৭] অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ পদক বিজয়ী সারাহ উইঙ্কলেজের দ্বারা উভয় বাছাই পরিচালিত হয়।[৭]
ক্যামব্রিজ কর্মীদের গড় ওজন ছিল ৭৩.২ কেজি, যা অক্সফোর্ড কর্মীদের চেয়ে ৪ কেজি বেশি ছিল।[৮] অক্সফোর্ড কর্মীদের মধ্যে তিনজন ২০১৩ সালের কর্মী ২০১৪ সালে পুনরায় অংশগ্রহণ করে; তারা হলেন এ্যালাইস ক্যারিংটন উইন্ডো, ম্যাক্সি কেস্ক ও এনাস্তাসিয়া চিটি। ক্যামব্রিজের নৌকায় দুইজন ডাবল ব্লু ছিলেন; তারা হলেন ক্যারোলিন রেইড ও হলি গেমি, যেখানে চারজন কর্মী পূর্ববতী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিল।[৯] ক্যামব্রিজ কর্মীদের সবাই ব্রিটিশ ছিল। অপরদিকে অক্সফোর্ড কর্মীদের মধ্যে এলিজাবেথ ফেঞ্জ ছিলেন কানাডীয়, এলাইস ক্যারিংটন-উইন্ডো ও ম্যাক্সিস সেস্ক ছিলেন জার্মান-ব্রিটিশ, এন. জি. আইবার্গ এসেছিলেন সুইজারল্যান্ড থেকে এবং লারা সাভারেস ছিলেন আমেরিকান। লারা সাভারেস হার্ভাড ইয়াল রাগেটায় হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে চার বার অংশ নিয়েছিলেন।[৩][১০]
আসন নাম্বার | ক্যামব্রিজ |
অক্সফোর্ড | ||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|
নাম | কলেজ | জাতীয়তা | ওজন | নাম | কলেজ | জাতীয়তা | ওজন | |
বো | ক্যারোলিন রেইড | জেসাস | ব্রিটিশ | ৬৪.৪ কেজি (১৪২ পা) | এলিজাবেথ ফেঞ্জ | কেলগ | কানাডীয় | ৫৮.৬ কেজি (১২৯ পা) |
২ | কেট আশলে | পিটারহাউজ | ব্রিটিশ | ৭৫.০ কেজি (১৬৫ পা) | এলাইস ক্যারিংটন-উইন্ডো | কেলগ | জার্মান/ব্রিটিশ | ৬৭.২ কেজি (১৪৮ পা) |
৩ | হলি গেম | গিরটন | ব্রিটিশ | ৭৪.৬ কেজি (১৬৪ পা) | ম্যাক্সিস সেস্ক (পি) | ম্যাগডালেন | জার্মান/ব্রিটিশ | ৬৪.৮ কেজি (১৪৩ পা) |
৪ | ইসাবেলা বিভান | হুগেস হল | ব্রিটিশ | ৮৭.২ কেজি (১৯২ পা) | লরেন কেদার | এক্সেটার | ব্রিটিশ | ৭৫.৪ কেজি (১৬৬ পা) |
৫ | ক্যাথারিন ফুট | গিরটন | ব্রিটিশ | ৭১.০ কেজি (১৫৭ পা) | এন. জি. আইবার্গ | লিঙ্কন | সুইস | ৭২.৬ কেজি (১৬০ পা) |
৬ | মেলিসা উইলসন | গনভিল এ্যান্ড কেইস | ব্রিটিশ | ৭৭.০ কেজি (১৭০ পা) | লারা সাভারেস | কর্পাস ক্রিস্টি | আমেরিকান | ৭৩.৬ কেজি (১৬২ পা) |
৭ | ক্লাইর ওয়াটকিনস | ক্লার | ব্রিটিশ | ৭২.৬ কেজি (১৬০ পা) | আনাস্টাসিয়া চিটি | প্রেমব্রক | ব্রিটিশ | ৬৯.৪ কেজি (১৫৩ পা) |
স্ট্রোক | এমিলি ডে | এমানুয়েল | ব্রিটিশ | ৬৪.০ কেজি (১৪১ পা) | আম্বার ডি ভিরি | সোমারভিল | ব্রিটিশ | ৭২.০ কেজি (১৫৯ পা) |
নৌকার মাঝি | এসথার মমসিলভিক (পি) | ক্লার | ব্রিটিশ | ৫২.৪ কেজি (১১৬ পা) | এরিন ডব্লিউ. জোন্স | পেমব্রক | ব্রিটশ | ৪৯.৬ কেজি (১০৯ পা) |
উৎস:[৮][১১][১২][১৩] (পি) – বোড ক্লাবের সভাপতি[৩] |
প্রতিযোগিতা
সম্পাদনাক্যামব্রিজ টসে জয়ী হয় এবং বার্কশিরের দিক থেকে শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়, যেখানে অক্সফোর্ডকে বাকিংহার্মশির স্টেশন দেওয়া হয়।[১৪] স্থানীয় সময় বিকাল ৩.০০ টায় আম্বায়ার পাল্মার পতাকা অবনমিত করে প্রতিযোগিতা শুরু করেন।[১৫] উভয় দলের কর্মীদের রেটিং ছিল প্রতি মিনিটে ৪০ স্ট্রোক এবং ৫০০ মিটার (৫৫০ গজ) পরে অক্সফোর্ড ক্যামব্রিজের চেয়ে হাফ-লেন্থ এগিয়ে ছিল। আপার টেমস রোয়িং ক্লাবের মতে, অক্সফোর্ড এক লেন্থ-এর চেয়েও বেশি দুরত্বে এগিয়ে ছিল। ক্যামব্রিজের কর্মীরা ধারাবাহিকভাবে ধাক্কা দেওয়া চেষ্টা করে, তাই সংঘর্ষ এড়াতে উভয় দলের কর্মীদের আম্বায় সতর্ক করে দেন। অক্সফোর্ড তাদের নেতৃত্ব ধরে রাখে এবং চার লেন্থ এগিয়ে থেকে বিজয়ী হয়। এটি ছিল ২০১০ মহিলা নৌকা বাইচের পরে সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয়। তাদের সময় লেগেছিল ৫ মিনিট ৫০ সেকেন্ড, যা ২০০৬ মহিলা নৌকা বাইচের চেয়ে ৬ সেকেন্ড ধীর ছিল।[৩][১৬] এটি ছিল অক্সফোর্ডের ধারাবাহিক দ্বিতীয় এবং শেষ সাতটি প্রতিযোগিতায় ষষ্ঠ জয়[১৭], যা ক্যামব্রিজের অনুকূলে অক্সফোর্ডের ৪১-২৮ পযেন্টের একটি রেকর্ড তৈরি করে।[১]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "Boat Race – Results"। The Boat Race Company Limited। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ "History of the course"। Henley Royal Regatta। ৮ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "Oxford win the 2014 Newton Women's Boat Race"। The Boat Race Company Limited। ৩০ মার্চ ২০১৪। ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ Barretto, Lawrence (২৭ মার্চ ২০১৪)। "Women's Boat Race: Oxford & Cambridge set to renew rivalry"। BBC Sport। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ Morrissey, Helena (৪ এপ্রিল ২০১৫)। "Helena Morrissey: 'Tide turns in favour of boat race women'"। The Daily Telegraph। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ "First CUWBC Tideway Trial VIIIs"। Cambridge University Women's Boat Club। ২৭ জানুয়ারি ২০১৪। ১৭ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ ক খ "Women make history with thrilling trials"। The Boat Race Company Limited। ১৯ ডিসেম্বর ২০১৩। ১৮ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ ক খ "As the Men and Women's Blue Boats Weighed-In Together Yesterday, It Was the Cambridge Men's Crew and Women's Crew That Topped the Scales"। University of Cambridge। ১১ মার্চ ২০১৪। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০১৫।(সদস্যতা প্রয়োজনীয়)
- ↑ "Henley Challenge marks five days to go until the historic Women's Boat Race"। The Boat Race Company Limited। ২৫ মার্চ ২০১৪। ১৬ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ Quarrell, Rachel (৩০ মার্চ ২০১৪)। "Women's boats in arms race to prepare for historic tideway move"। The Sunday Telegraph। পৃষ্ঠা 9।
- ↑ "Women's Boat Race: Oxford beat Cambridge by four lengths"। BBC Sport। ৩০ মার্চ ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ "Crews"। Oxford University Women's Boat Club। ১৫ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ "Henley challenge marks five days to go until the historic women's boat race"। The Boat Race Company Limited। ২৫ মার্চ ২০১৪। ১৬ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ Quarrell, Rachel (৩০ মার্চ ২০১৪)। "Boat Race 2014: Ineradicable Oxford women demolish Cambridge for second year running"। The Daily Telegraph।
- ↑ Longmore, Andrew (৩০ মার্চ ২০১৪)। "Women chart new course"। The Sunday Times। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৫।(সদস্যতা প্রয়োজনীয়)
- ↑ "Light Blues have no answer to Oxford dominance"। Cambridge News। ৩১ মার্চ ২০১৪। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ Lowe, Alex (৩১ মার্চ ২০১৪)। "Oxford claim victory over Cambridge but miss record in women's Boat Race"। The Times। (সদস্যতা প্রয়োজনীয়)