উইজডেন ট্রফি ইংল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার টেস্ট সিরিজ জয়ী দলকে প্রদান করা হয়। ১৯৬৩ সালে উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাকের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে প্রথমবারের মতো এ ট্রফির প্রবর্তন ঘটানো হয়। সিরিজটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের ভবিষ্যৎ সফর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হয়। ফলে, এ সফরের সময়সীমা ভিন্নতর হয়ে থাকে। কোন কারণে সিরিজ ড্র হলে ট্রফি দখলকারী দলের কাছেই এটি রাখা হয়।

উইজডেন ট্রফি
ব্যবস্থাপকইসিবি এবং ডব্লিউআইসিবি
খেলার ধরনটেস্ট
প্রথম টুর্নামেন্ট১৯৬৩
শেষ টুর্নামেন্ট২০১৪-১৫
প্রতিযোগিতার ধরনসিরিজ
দলের সংখ্যা ইংল্যান্ড এবং  ওয়েস্ট ইন্ডিজ
বর্তমান ট্রফি ধারক ইংল্যান্ড
সর্বাধিক সফল ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১৩ শিরোপা)
সর্বাধিক রানক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্রায়ান লারা (২,৯৮৩)[]
সর্বাধিক উইকেটক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ কার্টলি অ্যামব্রোস (১৬৪)[]

ইংল্যান্ড ট্রফিটির বর্তমান ধারক। ২০১৫ সালে ১-১ ব্যবধানে সিরিজ ড্র হবার ফলে ২০১২ সালে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে উইজডেন ট্রফি জয় করায় তা অদ্যাবধি নিজেদের অনুকূলে রাখে।

বিখ্যাত ক্রিকেট পুস্তক প্রকাশনা সংস্থা উইজডেনের নাম অনুসারে এ ট্রফির নামকরণ হয়েছে। মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি) এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের (ডব্লিউআইসিবি) অনুমোদনক্রমে জন উইজডেন এন্ড কোং কর্তৃক উইজডেন ট্রফি প্রদান করা হয়।[] বিজয়ের প্রতীক হিসেবে বিজয়ী দলকে উইজডেন ট্রফি প্রদান করলেও পরবর্তীতে লর্ডসের এমসিসি যাদুঘরে তা ফেরৎ পাঠানো হয়।[][] ২০০০ সাল থেকে উইজডেন ট্রফি সিরিজের পাশাপাশি সর্বোচ্চ উইকেট লাভকারী বোলারকে ম্যালকম মার্শাল স্মারক ট্রফি প্রদান করা হচ্ছে।[][] ২০২২ সালে এই ট্রফি রিচার্ডস-বোথাম ট্রফি দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়।[]

উইজডেন ট্রফি

সম্পাদনা

দ্য অ্যাশেজ সিরিজের অনুকরণে এমসিসি ও ডব্লিউআইসিবি’র অনুমোদনক্রমে জন উইজডেন এন্ড কোং প্রথমবারের মতো উইজডেন ট্রফি প্রচলন ঘটায়। ট্রফির উচ্চতা প্রায় ৩০ সেন্টিমিটার। মাঝখানে জন উইজডেনের প্রতিকৃতি রয়েছে।

ট্রফির ফলকে ‘১৯৬৩ সালে ইংল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার টেস্ট সিরিজসহ পরবর্তী টেস্ট সিরিজের জন্য প্রদান করা হবে। উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাকের ১০০তম বার্ষিকী উপলক্ষে উইজডেন কর্তৃক এ ট্রফি প্রদান করা হচ্ছে’।

ম্যালকম মার্শাল স্মারক ট্রফি

সম্পাদনা

ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বোলার ম্যালকম মার্শালের নামানুসারে এ নামকরণ হয়েছে। ২০০০ সাল থেকে সিরিজের শীর্ষস্থানীয় বোলারকে এ ট্রফি প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও ঐ খেলোয়াড় £১,৩৬০ পাউন্ড-স্টার্লিং লাভ করবেন। কিন্তু বোলার যদি ১৯৮৮ সালে মার্শালের গড়া ৩৫ উইকেটের রেকর্ড ভঙ্গ করতে পারেন তাহলে তিনি £৩৪,০০০ পাউন্ড-স্টার্লিং পাবেন।[] নিচের তালিকায় ট্রফি লাভকারী বোলারদের তালিকা দেখানো হয়েছে।

সিরিজ সিরিজে উইকেট সংখ্যা খেলোয়াড়
২০০০ উইজডেন ট্রফি ৩৪ উইকেট (২২০.২ ওভার)  কোর্টনি ওয়ালশ
২০০৩-০৪ উইজডেন ট্রফি ২৩ উইকেট (১৩৯.৫ ওভার)   স্টিফেন হার্মিসন
২০০৪ উইজডেন ট্রফি ২২ উইকেট (১৮৬.১ ওভার)   অ্যাশলে জাইলস
২০০৭ উইজডেন ট্রফি ২৩ উইকেট (১৪৩.৫ ওভার)   মন্টি পানেসর
২০০৯ উইজডেন ট্রফি ১৯ উইকেট   গ্রেম সোয়ান
২০০৯ উইজডেন ট্রফি ১১ উইকেট   জেমস অ্যান্ডারসন
২০১২ উইজডেন ট্রফি ১৪ উইকেট   স্টুয়ার্ট ব্রড
২০১৪-১৫ উইজডেন ট্রফি ১৭ উইকেট (১১৯.২ ওভার)   জেমস অ্যান্ডারসন
উৎস: ক্রিকইনফো.কম. সর্বশেষ হালনাগাদ: ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

১৯৬৩ ট্রফির উদ্বোধন

সম্পাদনা

ইংল্যান্ড সফরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল সিরিজে অন্যতম জনপ্রিয় সফরকারী দলের তালিকায় নিজেদের স্থান করে নেয়।[১০] ওল্ড ট্রাফোর্ডে অনুষ্ঠিত টেস্টে ল্যান্স গিবস ১১ উইকেট তুলে নিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০ উইকেটের ব্যবধানে বিরাট জয় পায়।[১১]

লর্ডসের দ্বিতীয় টেস্ট নাটকীয়ভাবে শেষ হয়।[১২] চূড়ান্ত ওভারের মাধ্যমে সব ধরনের ফলাফল অর্জন সম্ভব ছিল। ইংল্যান্ডের দরকার ছিল মাত্র আট রান ও হাতে ছিল ২ উইকেট। কিন্তু চতুর্থ বলে ডেরেক শ্যাকলটন রান আউট হন। কলিন কাউড্রে তার ভাঙ্গা হাত নিয়ে বাদ-বাকী দুই বল মোকাবেলা না করায় খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়।[১৩] তৃতীয় টেস্টে ফ্রেড ট্রুম্যান ১২ উইকেট পেলে ইংল্যান্ড ২১৭ রানের বিশাল জয় পায়। চতুর্থ টেস্টে চার্লি গ্রিফিথ ৬/৩৬ ও কনরাড হান্ট ১০৮ রান করেন।[১৪] ওয়েস্ট ইন্ডিজ পরবর্তী দুই টেস্টে জয় পায় ও ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে। চূড়ান্ত টেস্টে ব্যাসিল বুচার জয়সূচক রান সংগ্রহ করেন।[১৫]

এ সিরিজটি ব্যাপক সফল হওয়ার প্রেক্ষাপটে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ভবিষ্যতের টেস্ট সিরিজগুলো পুণঃনির্ধারিত করা হয়। এ প্রেক্ষিতে বেশ পূর্বেই ১৯৬৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পুনরায় ইংল্যান্ড সফরে আসে। এভাবেই দ্বি-পক্ষীয় সিরিজের প্রবর্তন ঘটে যাতে একটি মৌসুমে ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে তিনটি টেস্টের সিরিজ খেলে।[১৬]

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Wisden Trophy – England v West Indies – Test matches Most runs"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-০৪ 
  2. "Wisden Trophy – England v West Indians – Test matches Most wickets"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-০৪ 
  3. "The Wisden Trophy"Wisden। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-০৪ 
  4. "Wisden Trophy – Eyes on prize"BBC Sport। ৩০ আগস্ট ২০০০। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-০৪ 
  5. "Tours of Lord's"MCC। ২০০৭-০৮-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-০৪ 
  6. "Marshall honoured with new award"BBC Sport। ২৯ আগস্ট ২০০০। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-০৪ 
  7. "England triumphant after 31 years"Wisden। ৪ সেপ্টেম্বর ২০০০। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-০৪ 
  8. "England v West Indies: Richards-Botham Trophy to replace Wisden Trophy"BBC Sport। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুলাই ২০২০ 
  9. "Marshall honoured with new award"BBC Sport। ২৯ আগস্ট ২০০০। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-০৪ 
  10. "West Indies in England, 1963"Wisden। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-০৬ 
  11. "Wisden Trophy – 1963 1st Test"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-০৪ 
  12. "Beyond the call"Wisden। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-২৯ 
  13. "Beyond the call"Wisden। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-০৪ 
  14. "Wisden Trophy – 1963 5th Test"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-০৪ 
  15. "England v West Indies"Wisden। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-০৪ ; for hard copy Wisden Almanack 1964 – Paperback Edition। Wisden। পৃষ্ঠা 269–315। 
  16. Barclay's World of Cricket – 2nd Edition, 1980, Collins Publishers, আইএসবিএন ০-০০-২১৬৩৪৯-৭, p300.

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা