ই. এম. গ্রেস

ইংরেজ ক্রিকেটার

এডওয়ার্ড মিলস (ই. এম.) গ্রেস (ইংরেজি: E. M. Grace; জন্ম: ২৮ নভেম্বর, ১৮৪১ - মৃত্যু: ২০ মে, ১৯১১) ব্রিস্টলে জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়কালে অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন ‘দ্য করোনার’ ডাকনামে পরিচিত ই. এম. গ্রেস

ই. এম. গ্রেস
E.M. Grace 001.jpg
১৮৯৩ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে ই. এম. গ্রেস
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামএডওয়ার্ড মিলস গ্রেস
জন্ম(১৮৪১-১১-২৮)২৮ নভেম্বর ১৮৪১
ডাউনএন্ড, দক্ষিণ গ্লুচেস্টারশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু২০ মে ১৯১১(1911-05-20) (বয়স ৬৯)
থর্নবারি, দক্ষিণ গ্লুচেস্টারশায়ার, ইংল্যান্ড
ডাকনামদ্য করোনার
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি স্লো (আন্ডারআর্ম)
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
সম্পর্কডব্লিউ. জি. গ্রেস, জি. এফ. গ্রেস (ভ্রাতৃদ্বয়), ওয়াল্টার গিলবার্ট (কাকাতো ভাই)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
একমাত্র টেস্ট
(ক্যাপ ২২)
৬ সেপ্টেম্বর ১৮৮০ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৭০–১৮৯৬গ্লুচেস্টারশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৩১৪
রানের সংখ্যা ৩৬ ১০,০২৫
ব্যাটিং গড় ১৮.০০ ১৮.৬৬
১০০/৫০ ০/০ ৫/৪৪
সর্বোচ্চ রান ৩৬ ১৯২ *
বল করেছে ১৩,৪৪১
উইকেট ৩০৫
বোলিং গড় ২০.৩৭
ইনিংসে ৫ উইকেট ১৭
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১০/৬৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/– ৩৬৯/১
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৩ আগস্ট ২০১৭

ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি স্লো লেফট আর্ম আন্ডারআর্ম বোলিং করতেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে গ্লুচেস্টারশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি।

প্রারম্ভিক জীবনসম্পাদনা

২৮ নভেম্বর, ১৮৪১ তারিখে ইংল্যান্ডের ব্রিস্টলে ই. এম. গ্রেসের জন্ম। ১৮৬০ ও ১৮৭০-এর দশকের সেরা ক্রিকেটারদের অন্যতম ছিলেন তিনি। তবে, ছোট ভাই ডব্লিউ. জি. গ্রেসের অবিস্মরণীয় ক্রীড়াশৈলীর কারণে তার ক্রীড়াশৈলী ঢাকা পড়ে যায়। গ্রেসের পরিবারে তিনি ‘টেড’ নামে পরিচিত ছিলেন; কিন্তু, বাইরে তিনি কেবলমাত্র সংক্ষিপ্ত নামেই পরিচিতি পেয়েছেন।[১]

তার বড় দুই ভাই ডব্লিউ. জি. গ্রেসফ্রেড গ্রেসের সাথে ১৮৮০ সালে ইংল্যান্ডের পক্ষে একত্রে টেস্ট খেলেন। এর এক সপ্তাহ পরই ফ্রেড গ্রেসের দেহাবসান ঘটেছিল। সংক্ষিপ্তভাবে ই. এম. গ্রেস নামে পরিচিত ছিলেন। তবে, বিতর্কিতভাবে শৌখিন খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত হলেও অর্থের বিনিময়ে খেলার জন্য সমালোচিত হয়েছেন তিনি।

১৫ আগস্ট, ১৮৬২ তারিখে সর্বাপেক্ষা অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন। এমসিসি’র সংগৃহীত ৩৪৪ রানের মধ্যে তিনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ১৯২* রান তোলেন। এরপর তিনি কেন্টের ইনিংসের ৬৯ রানের মধ্যে সবগুলো উইকেট তোলে নেন।[২] খেলাটি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে মর্যাদা পেলেও ১২-জনের ছিল বিধায় আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি মেলেনি।

১৮৬৩ সালের পর জর্জ পারের নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরূপে গ্রেস আমেরিকা সফরে যান। কিন্তু ঐ সফরে হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় তিনি আশানুরূপ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করতে পারেননি। এরপর তিনি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা ছেড়ে দেন ও চিকিৎসক হিসেবে সেবা প্রদানের যোগ্যতা অর্জন করেন। তবে, ১৮৭১ সালে গ্লুচেস্টারশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব গঠনে তিনি পুনরায় মাঠে ফিরে আসেন। ১৯০৯ সালে পদত্যাগের পূর্ব-পর্যন্ত ক্লাবের সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। মূলতঃ গ্রেস ভ্রাতৃদ্বয়ের অনবদ্য প্রচেষ্টার ফসলরূপে গ্লুচেস্টারশায়ার ১৮৭৪, ১৮৭৬ ও ১৮৭৭ সালে চ্যাম্পিয়ন কাউন্টির মর্যাদা পায়। এছাড়াও, ১৮৭৩ সালে যৌথভাবে শিরোপা ভাগাভাগি করে নেয় দলটি।

খেলোয়াড়ী জীবনসম্পাদনা

 
ফ্রেড গ্রেসের আকস্মিক মৃত্যুর পূর্বে ১৮৮০ সালে গ্লুচেস্টারশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব। ডব্লিউ. জি. গ্রেস সম্মুখের বামদিকের মাঝে বসা অবস্থায় রয়েছেন। ফ্রেড গ্রেস (হুপড ক্যাপ) পিছনের সারির বামদিকে তৃতীয়। বিলি মিডউইন্টার (ডব্লিউজি’র ঠিক পিছনে) পিছনে বামদিকের চতুর্থ স্থানে। ই. এম. গ্রেস (দাঁড়িওয়ালা) পিছনে বামদিকের ষষ্ঠস্থানে।

তিন ভাইয়ের সকলেই ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্ট খেলার জন্য মনোনীত হয়েছিলেন। ১৮৮০ সালে ওভালে ঐ টেস্টটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। একই টেস্টে ইংল্যান্ডের পক্ষে তিন ভাইয়ের অংশগ্রহণের বিষয়টি অদ্যাবধি একমাত্র ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।[২] ৫৪ বছর বয়সে ১৮৯৬ সালে অবশেষে গ্রেস গ্লুচেস্টারশায়ার প্রথম একাদশ থেকে বাদ পড়েন। বয়সের ভারে ঋজু হওয়া স্বত্ত্বেও ১৯০৯ সাল পর্যন্ত ক্লাব ক্রিকেটে থর্নবারির পক্ষে খেলেছিলেন তিনি।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ১৮.৬৬ গড়ে ১০,০২৫ রান তুলেন। তন্মধ্যে, ৫টি শতরানের ইনিংস রয়েছে তার। ২০.৩৭ গড়ে ৩০৫ উইকেট নেন। একসময় সকল খেলার পরিসংখ্যান যোগ করে দেখা গেছে যে, তার খেলোয়াড়ী জীবনে ১২,০৭৮ উইকেট ও ৭৬,৭৬০ রান রয়েছে। কেবলমাত্র ১৮৬৩ সালে তিনি ৩৩৯ উইকেট ও ৩,০৭৪ রান পেয়েছিলেন।[৩]

ব্যক্তিগত জীবনসম্পাদনা

‘দি করোনার’ ডাকনামে গ্রেস পরিচিত ছিলেন। কেননা, তিনি গ্লুচেস্টারশায়ারের ক্ষুদ্রতর বিভাগে করোনার হিসেবে কাজ করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে চারবার বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন ও আঠারো সন্তানের জনক ছিলেন তিনি। তার প্রথম স্ত্রী অ্যানি ডেমারারা এলাকায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাদের জ্যেষ্ঠা কন্যা অ্যানি মানসিক জড়তাগ্রস্ত ছিলেন। ১৮৮১ সালের মধ্যে এডিথ, ফ্লোরি, মিনা, সারাহ, অ্যালাইস ও সিবিল নাম্নী কমপক্ষে ছয় কন্যা এবং এডওয়ার্ড ও ফ্রান্সিস নামীয় দুই পুত্র জন্মগ্রহণ করে। ক্রিকেটার হেনরি উইলিসের পুত্র স্টকব্রোকার হেনরি উইলিসকে তার কন্যা মিনা গারট্রুড গ্রেস বিয়ে করেন।[৪][৫] ২০ মে, ১৯১১ তারিখে ৬৯ বছর বয়সে গ্লুচেস্টারশায়ারে ই. এম. গ্রেসের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. Rae, p.199.
  2. Owen 1912
  3. The Memorial Biography of Dr. W. G. Grace, Constable, 1919, pp26-7.
  4. Gloucester Journal, 29 Dec. 1906
  5. http://www.epsomandewellhistoryexplorer.org.uk/1900Bios.html#WILLIS

আরও দেখুনসম্পাদনা

গ্রন্থপঞ্জিসম্পাদনা

বহিঃসংযোগসম্পাদনা

পূর্বসূরী
টম এমেট
বয়োজ্যেষ্ঠ জীবিত ক্রিকেটার
৩০ জুন, ১৯০৪ - ২০ মে, ১৯১১
উত্তরসূরী
জেমস লিলিহোয়াইট